আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

ব্ল্যাকমেইল করে টাকা দাবি

প্রতারক চক্রের দুই নারীসহ ৭ সদস্য গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

নারীর সাথে বিবস্ত্র করে তোলা হয় ছবি

  1. চট্টগ্রামে চক্রের দুই নারীসহ ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় উদ্ধার করা হয় এক ভুক্তভোগীকে। পুলিশ জানায়, ইমো অ্যাপ কিংবা ফেসবুকে প্রথমে পাতানো হয় বন্ধুত্ব। সেই বন্ধুত্বের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হলে দেয় প্রেমের টোপ। আর সেই প্রস্তাবে সাড়া দিলেই দেখা করতে ‘দাওয়াত’ দেওয়া হয় ফাঁকা বাসায়। বাসায় গেলেই নেমে আসে ভয়ঙ্কর বিপদ! বাসায় পৌঁছামাত্র ছুটে আসে পাঁচ যুবক। দুই নারীর সাথে বিবস্ত্র করে তোলা হয় ছবি। এরপর ব্ল্যাকমেইল করে দাবি করা হয় টাকা। চালানো হয় শারীরিক-মানসিক নানা নির্যাতন। মূলত তারা একটি চক্র। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বায়েজিদ বোস্তামী থানার রুপনগর আবাসিক এলাকার আদনান ভিলার তৃতীয় তলার বাসা থেকে এদের গ্রেফতার করা হয়।
    গ্রেফতারকৃতরা হলেন, পুরাতন চান্দগাঁও এলাকার মৃত মো. জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মো. আসিফ (২৩), একই এলাকার মুন্সি মিয়ার ছেলে মো. মোরশেদ (২৯), রাউজান উপজেলার উরগির চর গ্রামের মৃত গোলাম শরীফের ছেলে মো. সাজে শরীফ (৪০), তার স্ত্রী জেসমিন আক্তার (৪০), চন্দনাইশ উপজেলার হাজিরপাড়া গ্রামের বাইট্টা সওদাগরের বাড়ির আব্দুল করিমের ছেলে মো. আবুল হাসেম (৩৫), ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানার পূর্ব ভূজপুর গ্রামের মৃত হাজী কবির আহাম্মদের ছেলে মো. নাসির উদ্দিন (৩৯) এবং বাঁশখালী উপজেলার পুকুরিয়া গ্রামের চা বাগান এলাকার সাহাবুদ্দিনের স্ত্রী ফাতেমা খাতুন (২৬)। অভিযুক্ত সাতজনের বিরুদ্ধে পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, ডিগ্রি পড়ুয়া এক তরুণ অভিযোগ করে ২৩ বছর বয়সী মো. আসিফের সাথে তার ইমো অ্যাপের মাধ্যমে পরিচয় হয় এবং বন্ধুত্ব হয়। গত ২৫ এপ্রিল রাতে আসিফ ওই তরুণকে দেখা করার কথা বলে কৌশলে ঘটনাস্থলে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই ৪ জন পুরুষ এবং দুইজন নারী উপস্থিত ছিলো। ওই বাসায় প্রবেশের সাথে সাথে ভিকটিম তরুণকে বিবস্ত্র করে নারীদের সাথে তার অশ্লীল ছবি-ভিডিও ধারণ করে তারা। এরপর এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। একইসাথে হাতিয়ে নেওয়া হয় তার সাথে থাকা টাকা ও মোবাইল ফোন। কিন্তু টাকা দিতে না পারায় অভিযুক্তরা ভিকটিমকে ওই বাসা থেকে বের করে রুপনগর আবাসিক এলাকার গেইট থেকে একটি সিএনজিতে উঠিয়ে দেয়। এরপর ভিকটিম ওই তরুণ ছাড়া পেয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানায়।
বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় কুমার সিনহা বলেন, এরা ছিনতাইকারীর চেয়েও ভয়ঙ্কর। ছিনতাইকারী শুধু ছিনতাই করে নিয়ে যায়, কিন্তু এরা ছিনতাইয়ের পাশাপাশি ভিকটিমকে মানসিক, শারীরিক অত্যাচারও করে আবার পরিবারের কাছে অর্থও দাবি করে। আমরা ঘটনাস্থল থেকে সাত জনকে গ্রেফতারের পাশাপাশি মো. আরমান নামে এক ভিকটিমকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করেছি।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় হাত–পা বাঁধা অবস্থায় খাইরুন নেছা (৬০) নামের এক বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর মানিকের বাঁধ এলাকার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী হলেন ঐ এলাকার মৃত রজব আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সকালেই মানিকের বাঁধের পাশে পানিতে ভেসে থাকা একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তাঁরা পুলিশে খবর দিলে ভেড়ামারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যা করে হাত–পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। তদন্তে যা বের হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ