আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

জমে উঠছে ফটিকছড়িতে নবীন-প্রবীণের লড়াই

মাসুদুল ইসলাম মাসুদ ফটিকছড়ি প্রতিনিধি:

চট্টগ্রাম জেলা:

 

আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যাচ্ছে ২য় ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। চট্টগ্রাম ফটিকছড়ি উপজেলায় ২ জন চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দাখিল করে যাচাই বাছাই এ মনোনয়ন নিশ্চিত হয়। এরা হলেন আওয়ামী ঘরনার দুই প্রভাবশালী নেতা ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক  নাজিম উদ্দীন মুহুরী এবং উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সদস্য ও সাবেক উত্তর জেলা ছাত্র লীগের সভাপতি বখতেয়ার সাঈদ ইরান।

সিনিয়র ও জুনিয়র একই ঘরনার দুই নেতার মধ্যেই হবে মূল ভোট যুদ্ধ।  এছাড়া পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়বেন মোট ৫ জন। এরা হলেন সাংবাদিক নেতা সৈয়দ জাহেদুল্লাহ কুরাইশী, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান এড. সালামত উল্লাহ চৌধুরী শাহিন, নাজিম উদ্দীন সিদ্দিকী, আনোয়ারুল হক, জসীম উদ্দীন।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন লড়াই হবে  বর্তমান ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান জেবুন নাহার মুক্তা ও  ফটিকছড়ি মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী শারমিন নপুরের মধ্যে। মোট প্রার্থী সংখ্যা ৯ জন। এবার ভোট আমেজ হবে অন্য রকম। ওপর মহলের সিদ্ধান্তের প্রভাব উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, চায়ের দোকানে,পাড়ার মোড়ে মোড়ে উত্তাপ ছড়াচ্ছে।  রাজনীতিতে কার কখন কোথায় উত্থান হয় তা বোঝা বড়ই মুশকিল। দলের হাই কমান্ডের সিদ্ধান্তে  হয়ত কারো কপাল খুলে আবার কারো কপাল পুড়ে। আওয়ামী লীগের দীর্ঘ দিনের সিদ্ধান্ত ছিল দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হবে। এতে যার রাজনীতির ওপর মহলে যত শক্ত  অবস্থান প্রতীক পাওয়া তার জন্য তত নিশ্চিত ছিল। যার হাত যত লম্বা ছিল তার জন্য নৌকা প্রতিক তত সহজ ছিল। অথবা অর্থের একটা প্রভাবও ছিল কিন্তু এইবার প্রতিক বিহীন নির্বাচন সব হিসাব নিকাশ উল্টে দিয়েছে।

 

এইত মাত্র ক’মাস আগে জাতীয় নির্বাচন গেল। উত্তাপ এখনো কমেনি। তার রেশ না কাটতেই শুরু হল উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। জাতীয় নির্বাচনের পাওয়া না পাওয়ার অনেক হিসাব নিকাশ জমা রয়েছে নেতাদের মধ্যে। জাতীয় নির্বাচনেও ছিল এক ভিন্ন চিত্র। দলের সিদ্ধান্তে হয়েছেন একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী। সেই হিসাব মতে ফটিকছড়িতে ছিল একজন হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী।  উপজেলা চেয়ারম্যান পদ হতে পদত্যাগ করে এম পি পদে প্রার্থী হয়েছিলেন এক কালের রাজপথের ত্যাগী নেতা, উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হোসাইন মোহাম্মদ আবু তৈয়ব। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আবু তৈয়ব একাই লড়াই করেছিলেন ফটিকছড়ি পুরো আওয়ামী লীগ, ছাত্র লীগ,যুবলীগ সহ সমস্ত আম জনতার সাথে। ভোটের হিসাব নিকাশে জয় পরাজয়ের ভাগ্য মেনে নিয়ে তিনি পরাজিত প্রার্থী হিসেবে নিজেকে গুটিয়ে রাখেন। নির্বাচনের পরে আবু তৈয়ব কৌশলী পন্থা অবলম্বন করে চুপচাপ থাকেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তার তরমুজ প্রতীকে ভোট পরেন ৩৫ হাজারের মত। পক্ষান্তরে দলীয় মনোনীত নৌকা প্রতিক নিয়ে রফিক কন্যা বিশাল ভোট ব্যবধানে জয়ী হয়ে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হয়। বর্তমান এম পি খাদিজাতুল আনোয়ার সনি চট্টগ্রাম হতে সর্বপ্রথম নারী হিসেবে সরাসরি জনগণের ভোটে জয়ী হয়ে সংসদে পা রাখেন। জাতীয় নির্বাচনের পর পর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচন এম পির জন্য নিঃসন্দেহে একটি বাড়তি স্নায়ুযুদ্ধ। কারণ চেয়ারম্যান প্রার্থী সব আওয়ামী ঘরনার।  আবার দলীয় হাই কমান্ডের সিদ্ধান্ত উপজেলা নির্বাচনে কোনো এম পি সরাসরি কাউকে সমর্থন বা কাজ করতে পারবেন না। সেই দিক হতে তিনি রয়েছেন কিছুটা চাপমুক্ত। তারপরও মানুষের জল্পনা কল্পনার শেষ নেই।  লোকমুখে বিরাজমান মরহুম রফিকুল আনোয়ারের সৃষ্টি আজকের এই বখতিয়ার সাইদ  ইরান। রফিক পরিবারের সাথে রয়েছে ইরানের আন্তরিকতাপূর্ণ সম্পর্ক। সুখে দুঃখে পাশে ছিলেন ইরান। সেই হিসাবে এম পি খাদিজাতুল আনোয়ার সনি কি সিদ্ধান্ত নিবে তার আগ্রহের শেষ নেই ভোটারের। পক্ষান্তরে নাজিম উদ্দীন মুহুরীর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রয়েছে একটি শক্ত অবস্থান। দীর্ঘদিন রয়েছে ফটিকছড়ির মাঠে ময়দানে।  সেই সুযোগ তিনি কতটুকু কাজে লাগাতে পারেন তা ভোটাররা পর্যবেক্ষণ করছেন।
এখন ভোটার বা ভোট বিশ্লেষকের তথ্য মতে হিসাব নিকাশের মধ্যেখানে রয়েছে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তৈয়ব। তথ্যমতে অনেকে বলেন জাতীয় নির্বাচনে পাওয়া আবু তৈয়ব সমর্থনে তরমুজ মার্কার ৩৫ হাজার ভোট যে দিকে ঝুঁকে হয়ত সেই দিকের পাল্লা কিছুটা ভারী বা এগিয়ে থাকবে। এছাড়াও আবু তৈয়বের রয়েছে বিশাল কর্মী বাহিনী। অনেকের ধারণা হয়ত আবু তৈয়বের নির্দেশ পেলে তার নেতা ও কর্মী বাহিনী গুলো সেই দিকেই কাজ করবে। তারপরও ভোটের রাজনীতি বড়ই জটিল ও রাজনীতির শেষ বলতে কিছুই নেই। উপজেলা নির্বাচন ঘিরে উপজেলা ভিত্তিক অনেক আওয়ামী লীগ নেতা তাদের শেষ হিসাব নিকাশ কষতে শুরু করেছেন। কেউ কারো অবস্থান হতে ছাড় দিতে নারাজ।  বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দীন মুহুরী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে আগামীর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কে হবেন সেই হিসাব শুরু হয়েছে। সেই হিসেবে বখতিয়ার সাইদ ইরান রয়েছে হিসাবের বাইরে কারণ তার অবস্থান জেলা পর্যায়ে। তুলনামূলক বয়সে ছোট হিসেবে আগামীর ভবিষ্যৎ হয়ত আরো অনেক বাকি রয়েছে। সবকিছু চাপিয়ে ফটিকছড়ির উপজেলা জেলা নির্বাচনে রয়েছে এবার ভিন্নতা। গতবারের নির্বাচনে হয়ছে শিয়ানে শিয়ানে লড়াই।  আবু তৈয়ব ও নাজিম উদ্দীন মুহুরী ছিল সহযোদ্ধা। জয় পরাজয়ে তেমন হিসাব ছিলনা কারণ মুহুরীর দখলে ছিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এর পদবী। পক্ষান্তরে আবু তৈয়বের লড়াই টা ছিল অস্তিত্বের লড়াই। সেই লড়াইয়ে তিনি জয়লাভ করে ফটিকছড়িতে তার অবস্থান জানান দে কিন্তু এই বার দেখার পালা ফটিকছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে কে জয়ী হয়ে জনপ্রিয়তার অবস্থান জানান দে। সেই অবস্থান জানার জন্য ফটিকছড়ি বাসীকে অপেক্ষা করতে হবে আগামী ২১ মে পর্যন্ত।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

অংশ নিয়েছে প্রায় ৬০০ প্রতিযোগী চট্টগ্রামে এনআইটি উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতায়

বিজ্ঞানমনষ্ক শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা ও দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের যথাযথ প্রয়োগের লক্ষ্যে চট্টগ্রামের মুরাদপুরস্থ’ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এনআইটি)’র উদ্যোগে ১১তম বারের মতো “এনআইটি উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতা-২০২৫” এনআইটি’র অডিটোরিয়ামে শনিবার অনুষ্ঠিত হয়। সকাল সাড়ে ৯টায় উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ কারীগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. রুহুল আমিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন পার্কভিউ হসপিটাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড. এটি. এম. রেজাউল করিম, চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট অধ্যক্ষ মো কামাল হোসেন। সভাপতিত্ব করেন এনআইটি’র চেয়ারম্যান আহসান হাবিব।

প্রতিযোগিতায় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ২৬৪টি বিভিন্ন ধরনের উদ্ভাবনীমূলক প্রকল্প প্রর্দশিত হয়। এতে প্রায় ৬০০ প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রকৌশলী মো. রুহুল আমিন বলেন, আজকের এই প্রতিযোগিতা শুধুমাত্র একটি বিজয়ীর খোঁজ নয়, বরং এটি আমাদের সবার জন্য একটি শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সকলেই নতুন কিছু শিখেছে এবং ভবিষ্যতে আরও বড় উদ্ভাবন নিয়ে আসার অনুপ্রাণিত হয়েছে। প্রতিযোগীতায় শিক্ষার্থীরা প্রমাণ করেছে, আমাদের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে অসীম সম্ভাবনা রয়েছে। প্রত্যেকটি প্রকল্পই আলাদা এবং একেকটি নতুন চিন্তার প্রতিফলন। উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতা শুধু একটি ইভেন্ট নয়; এটি হলো কারিগরি শিক্ষার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টির সবচাইতে কার্যকর মঞ্চ।

ড. এটি. এম. রেজাউল করিম বলেন,দক্ষতা একজন মানুষকে কর্মবাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে এবং তাকে স্বনির্ভর করতে সাহায্য করবে। উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের সেই দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং কার্যকরী সমস্যা সমাধানের রুপরেখা তৈরী করে। অধ্যক্ষ মো কামাল হোসেন বলেন, এই প্রতিযোগিতায় উত্থাপিত সাশ্রয়ী ও টেকসই সমাধানগুলো কৃষি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে আমূল পরিবর্তন আনতে সক্ষম। আমাদের তরুণরা প্রমাণ করেছেন যে তাদের মেধা ও সৃজনশীলতাই দেশকে ‘আধুনিক বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের মূল চালিকাশক্তি।


ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির চেয়ারম্যান আহসান হাবিব বলেন, উদ্ভাবন শুধু প্রযুক্তির খেলনা নয়, উদ্ভাবন হল মানুষের জীবনকে সহজ ও অর্থপূর্ণ করার হাতিয়ার। আজকের এই ছোট ছোট ধারণাগুলোই আগামী দিনের বড় বড় শিল্প ও সামাজিক পরিবর্তনের বীজ বপন করছে।প্রতিযোগীতায় মোট ২৬৪ টি প্রজেক্ট অংশ নেয়। প্রজেক্ট সমুহকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে বিভিন্ন মানদন্ডে বিচার বিশ্লেষণ করার জন্য মূল্যায়ন দলে ছিলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. এ. কে. এম. মাঈনুল হক মিয়াজী, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এর পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. এইচ.এম

. এ আর মারুফ,চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের পদার্থবিদ্যা বিভাগের এসোসিয়েট প্রফেসর ও বিভাগীয় প্রধান মো. দিদারুল আলম মজুমদার। চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট এর সিভিল ডিপার্টমেন্ট প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান প্রকৌশলী মো জাহাঙ্গীর আলম, কম্পিউটার বিভাগের চীফ ইন্সট্রাক্টর প্রকৌশলী মেহেদী, ইলেকট্রিক্যাল বিভাগ চীফ ইন্সট্রাক্টর প্রকৌশলী সুজিত কুমার বিশ্বাস, মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট এর চীফ ইন্সট্রাক্টর প্রকৌশলী নুরুননবী।

বিচারক প্যানেল প্রজেক্ট সমুহ মূল্যায়ন সম্পন্ন করেন। মূল্যায়নে প্রাপ্ত নাম্বারের ভিত্তিতে টপ টেন নির্ধারণ করে পুরস্কার হিসেবে ১ম,২য় ও ৩য় স্থান অর্জন কারীর মধ্যে যথাক্রমে ৫০ হাজার, ৩০ হাজার ও ২০ হাজার নগদ অর্থ ও ক্রেস্ট পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়া ইমার্জিং প্রজেক্ট হিসেবে চতুর্থ থেকে ১০ম স্থান অর্জনকারীদেরও ৫ হাজার নগদ অর্থ ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। সমাপনী পর্বে সকল অংশগ্রহণকারীকে সনদ বিতরণ করা হয়।

চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে লাগেজে মিলল ৯০ লাখ টাকার সিগারেট

চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মালিকানাহীন ছয়টি লাগেজ থেকে ৮০০ কার্টন মন্ড ব্র্যান্ডের সিগারেট জব্দ করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। শনিবার সকাল ১১টার দিকে বিমানবন্দরের এরাইভাল হলের লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড কর্নারের পাশ থেকে এসব লাগেজ উদ্ধার করা হয়। জব্দ হওয়া সিগারেট প্রতি কার্টন ১১ হাজার ২৫০ টাকা মূল্য ধরে মোট ৯০ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়েছে।

কাস্টমস সূত্র জানায়, লাগেজগুলোর সঙ্গে কোনো যাত্রীর নাম, ট্যাগ বা মালিকানার কাগজপত্র ছিল না। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও কেউ লাগেজের দাবি না করায় সেগুলোকে কাস্টমস আইন অনুযায়ী পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরে লাগেজ খুলে ৮০০ কার্টন সিগারেট পাওয়া যায় এবং তা জব্দ করা হয়।

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, লাগেজগুলো দীর্ঘ সময় ধরে মালিকবিহীন অবস্থায় ছিল। কেউ দায়িত্ব না নেওয়ায় সেগুলো পরিত্যক্ত ঘোষণা করে জব্দ করা হয়েছে। বিমানবন্দরে চোরাচালান ঠেকাতে নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে এবং অভিযান চলমান থাকবে বলে তিনি জানান।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ