আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

সিন্ডিকেটের কবলে চট্টগ্রামের চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে মসলার বাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

দেশের বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে মসলার বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে একের পর এক বেড়েই চলেছে জিরা, এলাচ, গোলমরিচ, দারুচিনি, লবঙ্গসহ প্রায় সব মসলার দাম। ব্যবসায়ীদের দাবি, ডলারের দাম বৃদ্ধি ও সরবরাহ ঘাটতির কারণেই মসলার দাম বাড়ছে। তবে পুরো মসলার বাজারই এখন সিন্ডিকেটের কবলে। এরাই গত এক সপ্তাহে জিরা, এলাচ ও লবঙ্গের মতো মসলার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। অথচ এসব মসলা আমদানি হয়েছে তিন থেকে চার মাস আগে। দীর্ঘদিন ধরেই চাল-ডাল-আটাসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। সে তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে এলাচ দানা, জিরা, লবঙ্গ, মরিচ, হলুদ, ধনিয়াসহ বিভিন্ন প্রকারের মসলা।এদিকে মসলার বাজার অস্থির করার বিষয়টি তদারকি করতে শিগগির অভিযান পরিচালনার কথা বলেছে প্রশাসন।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলার সংকট ও ডলারের দাম বাড়ার কারণে এখন মসলার দাম অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। মসলাজাতীয় পণ্যের দাম দুই কারণে বাড়ছে। প্রথমত, দেশে এখন চলছে ডলার সংকট। ডলারের অভাবে এলসি করা যাচ্ছে না। একইভাবে বেড়েছে ডলারের দামও। দ্বিতীয়ত, আন্তর্জাতিক বাজারে মসলার দাম বেড়েছে। এর প্রভাব পড়ছে দেশের বাজারেও। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে এলাচের দাম।
গতকাল শনিবার খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে বড় দানার ভালো মানের প্রতি কেজি এলাচ চার হাজার থেকে চার হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এক সপ্তাহ আগে এই এলাচের কেজি বিক্রি হয়েছে তিন হাজার ৮০০ টাকায়। ছোট দানার প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার ৮০০ টাকায়। গত সপ্তাহে একই মানের এলাচ তিন হাজার ৫৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহে লবঙ্গের দাম ছিল এক হাজার ২০০ টাকা। এখন একই লবঙ্গ বিক্রি হয়েছে এক হাজার ৪০০ টাকায়। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি জিরা বিক্রি হয়েছে মানভেদে ৫৫৭ টাকায়, যা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকায়। গত সপ্তাহে যে গোলমরিচ প্রতি কেজি ৭৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল, এখন তা ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি দারুচিনি ৪০০ টাকা, হলুদ ৩১০ টাকা, কালিজিরা ৩২০ টাকা, কিশমিশ ৮০০ টাকা, তেজপাতা ১২০ টাকা আর সাদা সরিষা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। কেজিতে ৫০ থেকে ৮০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি জয়ত্রী বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার টাকায়।
ভারতের রফতানির ঘোষণার পরও চট্টগ্রামের বাজারে কোথাও পণ্যের দাম কমার লক্ষণ নেই। বরং প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে। পাইকারি বাজারে ভালোমানের ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭২ থেকে ৭৫ টাকায়। আর খুচরা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়। যা আগে ছিল ৭০ টাকার নিচে। পাইকারি বাজারে দেশীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকার বেশি দামে। খুচরা বাজারে দেশীয় পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৭৫ টাকার বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে মানভেদে পাঁচ টাকা কম-বেশি।
অথচ চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তথ্য বলছে, বছরের প্রথম পাঁচ মাসেই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পর্যাপ্ত মসলাজাতীয় পণ্য আমদানি হয়েছে। সুতরাং সরবরাহ ঘাটতির কোনো কারণ নেই। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) নেতারা বলছেন, কোরবানির বাড়তি চাহিদাকে কেন্দ্র করে কয়েক গুণ বেশি মুনাফা করতেই অসাধু ব্যবসায়ীরা মসলার দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ৫ মাসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ২৪ হাজার ২৬৭ মেট্রিক টন এলাচ, ৪১ হাজার ৩৪৬ মেট্রিক টন জিরা, ৩২ হাজার ১৭০ মেট্রিক টন লবঙ্গ এবং ২৯ হাজার ৬৪৬ মেট্রিক টন গোল মরিচ আমদানি হয়েছে। এটি গত বছরের এ সময়ে আমদানির তুলনায় অনেক বেশি।
কাস্টমসের কর্মকর্তারা জানান, পর্যাপ্ত পরিমাণে মসলাজাতীয় পণ্য আমদানি করা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব কাস্টমস থেকে পণ্য খালাস করা হচ্ছে। যাতে বাজারে কোনো ধরনের কৃত্রিম সংকট তৈরি না হয়। মূলত ভারত থেকে জিরা ও এলাচ, ইন্দোনেশিয়া, চীন, ভিয়েতনাম ও গুয়েতেমালা থেকে দেশে লবঙ্গ ও দারুচিনি আমদানি করা হয়। এতদিন এসব দেশে উৎপাদন কম হওয়ার অজুহাত দেখালেও এখন এর সঙ্গে নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে টাকার বিপরীতে ডলারের দর বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি।
বাড়তি দাম নিয়ে বাংলাদেশ মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি অমর কান্তি দাশ বলেন, মসলার বড় একটি অংশ আসে ভারত থেকে। বর্তমানে সেখানে জিরা, এলাচসহ কয়েকটি মসলা পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। তাছাড়া ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় আগের তুলনায় আমদানি খরচ বেড়ে গেছে। এসবের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে দামের ওপর।
অন্যদিকে খাতুনগঞ্জের মসলা ব্যবসায়ী কামরুল হাসান বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে কিছু কিছু মসলার দাম বেড়েছে। মসলাকে বিলাসবহুল পণ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই এ পণ্য আমদানিতে প্রায় ৫০ শতাংশের বেশি শুল্ক দিতে হয়। পাশাপাশি ডলারের দাম বাড়ায় মসলার বাজার চড়া। এ কারণে এলাচসহ সব ধরনের মসলার দাম বেড়েছে।
তবে ব্যবসায়ীদের এ দাবি মানতে নারাজ ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগের সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন। তিনি বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা সবসময় সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। এখনও কোরবানির ঈদ আসতে প্রায় এক মাস বাকি। এরই মধ্যে তারা মসলার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। দাম বাড়ার জন্য তারা ডলারের দাম বৃদ্ধি ও সরবরাহ ঘাটতির কথা বলছে। এগুলো অযৌক্তিক কথা। কারণ বর্তমানে যেসব মসলা বাজারে আছে, তা কয়েক মাস আগে আমদানি করা। সেসব মসলা তো বর্তমান বাড়তি দামের ডলারে কেনা নয়। তাই ডলারের দামের প্রভাব এসব পণ্যের ওপর এখনই পড়ার কথা নয়। এগুলো তাদের অজুহাত ছাড়া আর কিছু নয়। প্রশাসনের কঠোরতার অভাব ও নিয়মিত বাজার তদারকি না থাকার কারণেই ভোক্তাকে বাড়তি দামে মসলা কিনতে হচ্ছে।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, প্রতি বছর কোরবানি ঈদকে টার্গেট করে অসাধু ব্যবসায়ীরা মসলা পণ্যের দাম ইচ্ছামতো বাড়িয়ে দেয়। এবারও একই পথে হাঁটছে তারা। এরই মধ্যে কারসাজি করে কেনা দামের তুলনায় কয়েক গুণ বাড়তি দামে এলাচ বিক্রির প্রমাণ পেয়েছি আমরা। বেশ কয়েকজনকে শনাক্ত করে জরিমানাও করা হয়েছে। মসলার বাজার নিয়ে কারসাজিতে কারা জড়িত, সেটি চিহ্নিত করতে বড় পরিসরে শিগগির অভিযান পরিচালনা হবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রামে সবজির বাজার চড়া, কমেনি পেঁয়াজের ঝাঁঝ

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

চট্টগ্রামের বাজারগুলোতে ফের সবজরি দাম বেড়ে গেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দর আবারও উর্ধমূখী। নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজার ও কাজির দেউড়ি বাজার এবং বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ দোকানে দর যাচাই করে এ চিত্র পাওয়া গেছে। এদিকে পেঁয়াজের দাম পাইকারিতে কমলেও খুচরায় এর প্রভাব পড়েনি। তবে মাছ-মাংসসহ অন্যান্য পণ্যের দাম অপরিবর্তিত আছে।বিক্রেতারা বলেছেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা সবজির দাম আড়ত পর্যায়ে বেশি হওয়ায় খুচরায় এর প্রভাব পড়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের শেষে দেশি পেঁয়াজ পাইকারিতে প্রতিকেজি মানভেদে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় পৌঁছেছিল। কিন্তু গত দুইদিনে কেজিতে অন্তঃত ৩০ থেকে ৪০ টাকা কমেছে। এরপরও খুচরায় প্রতিকেজি পেঁয়াজ ১১৫-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারির হিসেবে পেঁয়াজের দর খুচরায় প্রতিকেজি ১০০ টাকার মধ্যে থাকার কথা ছিল। কিন্তু গত সপ্তাহে বেশি দামে কেনা পেঁয়াজ মজুত রয়ে যাওয়ায় তাদের বাড়তি দামে বেচতে হচ্ছে।বাজারে দেশি রসুন ৮০ থেকে ১১০ টাকা, চায়না রসুন ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, চায়না আদা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, ভারতীয় আদা মান ভেদে ১৪০ থেকে ১৬০ দরে বিক্রি হয়েছে।

এদিকে শীতকালীন অধিকাংশ সবজি গত সপ্তাহে প্রতিকেজি ৬০ টাকার মধ্যে নেমে এসেছিল। কিন্তু বেশ কয়েকটি সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি দেখা গেছে। বাজারে টমেটো মানভেদে ৭০ থেকে ১০০ টাকা, নতুন শিম ৮০ থেকে ১০০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁকরোল, দেশি পটল, দেশি গাজর, দেশি শসা, ছোট করলা প্রতিকেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স, চিচিঙ্গা, কচুর লতি, কচুরমুখী, লাউ, চালকুমড়া ৫০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব সবজির দাম গত সপ্তাহে ৫০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে ছিল।তবে ফুলকপি-বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৬০ টাকা, মূলা ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগের মতোই আছে। শালগমের দাম কেজিতে ২০ টাকা কমে ৬০ টাকা হয়েছে। বগুড়ার নতুন আলুর দাম কেজিতে অন্তঃত ৪০ টাকা কমে প্রতিকেজি ৪০ টাকায় এবং

মুন্সীগঞ্জের পুরোনো আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা, বগুড়ার পুরনো আলু ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা, প্রতি হালি কাঁচা কলা ৪০ টাকা, পেঁপে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।অন্যান্য সবজির মধ্যে কাঁচামরিচের দাম কমে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ধনেপাতা ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শীতকালীন লাল শাক-পালং শাকসহ অন্যান্য সব ধরনের শাক আঁটিপ্রতি ২০-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে সয়াবিন তেল ছাড়া অন্যান্য মুদিপণ্যের দামে তেমন হেরফের হয়নি। সরকারিভাবে নির্ধারিত প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯৮ টাকা ও খোলা সয়াবিন তেল ১৭২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।এছাড়া ছোট মসুর ডাল ১৪০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ৯০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১২০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৪৫ টাকা, খেসারি ডাল ৯০ টাকা, বুটের ডাল ৬০ টাকা, ছোলা ১১০ টাকা, মাষকলাই ডাল ১২০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১১০ টাকা ও খোলা চিনি ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুই কেজির প্যাকেট আটা ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১২০ টাকা, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯৮ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৭২ টাকা, কৌটাজাত ঘি ১৪৫০ থেকে ১৫৫০ টাকা, খোলা ঘি ১২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মসলার মধ্যে এলাচ প্রতিকেজি ৪ হাজার ৭৫০ টাকা, দারুচিনি ৫০০ টাকা, লবঙ্গ ১২৮০ টাকা, সাদা গোলমরিচ ১৩৫০ টাকা ও কালো গোলমরিচ ১১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।


চালের মধ্যে মোটা চাল ব্রি-২৮ ও স্বর্ণা প্রতিকেজি ৬৪-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল ৭২ থেকে ৮৫ টাকা, মানভেদে প্রতি কেজি নাজিরশাইল চাল ৭৫ থেকে ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতিকেজি লালতীর, এসিআই, স্কয়ার কোম্পানির প্যাকেট পোলাও চাল ১৫৫ টাকা, খোলা পোলাও চাল মানভেদে ৯০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
বাজারভেদে ব্রয়লার মুরগি ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকা, লেয়ার ৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০ থেকে ৫৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। হাঁসের মধ্যে দেড় কেজি ওজনের প্রতি পিস দেশি হাঁস ৫০০ টাকা, দুই কেজি ওজনের চীনা হাঁস প্রতি পিস ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

গরুর মাংস প্রতিকেজি ৭৮০ থেকে ৯০০ টাকা, খাসির মাংস ১২০০ টাকা এবং ছাগল ১১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া প্রতি ডজন লাল ডিম ১২০ টাকা থেকে কমে ১১০ টাকা, সাদা ডিম ১২০ থেকে ১২৫ টাকা ও দেশি হাঁসের ডিম ১৯০ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।মাছের মধ্যে লইট্যা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা, আইড় ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা, চিংড়ি (বাগদা ও গলদা) প্রকারভেদে ৭৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া খাল-নদী ও চাষের মাছের মধ্যে রুই ও কাতলা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, ছোট আকারের পাবদা ৪০০ টাকা, মাঝারি সাইজের ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, পুঁটি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, সরপুঁটি ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া বড় সাইজের ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা,

নাইলোটিকা ২২০ থেকে ২৮০ টাকা, কৈ ২০০ থেকে ২২০ টাকা এবং পাঙাস ও সিলভার কার্প ১৮০ থেকে ২৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।বাজারে এখন ইলিশ আর তেমন নেই। তবে ৭-৮টি মিলে ওজনে এক কেজি হয় এমন কিছু ইলিশ এখনও সীমিত আকারে পাওয়া যাচ্ছে। সেগুলো কেজিপ্রতি ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চট্টগ্রামে স্কুল ও দোকানে আগুন

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

চট্টগ্রাম মহানগরীর ইপিজেড থানাধীন কলসি দিঘির পাড় উত্তর রেল গেট এলাকায় একটি কেজি স্কুল ও পাশের দোকানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার ভোরে হযরত শাহ আলী কেজি স্কুল ও দোকানে আগুন লাগে।

সিইপিজেড ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার শাহাদাত হোসেন জানান, ভোরে খবর পেয়ে সোয়া ৬টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে। প্রায় ৪০ মিনিটের চেষ্টায় সকাল পৌনে ৭ টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। তবে দ্রুত পদক্ষেপে প্রায় ৫ লাখ টাকার মালামাল উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে, তা জানা যায়নি।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ