আজঃ রবিবার ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

অর্থনৈতিকভাবে সরকারের উন্নয়নের চিত্র ভুয়া-আমীর খসরু

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়নের যে চিত্র এতদিন সরকার দিয়েছে, সেটা একটা ভুয়া চিত্র বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। সাম্প্রতিক সময়ে উদঘাটন হওয়া দেশের পণ্য রফতানির তথ্যে গরমিল নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগের অর্থনৈতিক উন্নয়নের নামে দেশবাসীর সঙ্গে কতবড় প্রতারণা করেছে, সেটা ক্রমান্বয়ে বেরিয়ে আসছে। গতকাল শনিবার সকালে নগরীর মেহেদিবাগে নিজ বাসভবনে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে এ প্রতিক্রয়া জানান আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল মাসের মধ্যে রফতানি হয়েছে ৪৭ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু গত ৩ জুলাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, সংশোধনের পর তা ১৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার কমে ৩৩ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ ১৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার রফতানির হিসেব ওলটপালট হয়ে গেছে।
এর প্রতিক্রিয়ায় সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির যে চিত্র, উন্নয়নের যে চিত্র, যেগুলোর কথা বলে দেশের মানুষের ভোটাধিকার, মানবাধিকার, আইনের শাসন, জীবনের নিরাপত্তা কেড়ে নেওয়া হয়, সেই উন্নয়নের চিত্র ক্রমান্বয়ে উন্মোচিত হচ্ছে। সেই চিত্র হচ্ছে একটা ভুয়া চিত্র। ১৪ বিলিয়ন ডলার ভুয়া রফতানি দেখানো হয়েছে, তার ফলশ্রুতিতে কী হয়েছে? আপনার প্রবৃদ্ধি বেশি দেখানো হয়েছে, অর্থনীতির সঙ্গে জিডিপির গ্রোথ বেশি দেখানো হয়েছে, ব্যালেন্স অব পেমেন্টের একটা ভিন্ন চিত্র দেখানো হয়েছে বা দেখাচ্ছে। বস্তুতপক্ষে অর্থনীতির যে মানদণ্ডগুলো আছে, সবগুলোতেই এটার একটা প্রতিফলন আছে।
১৪ বিলিয়ন ডলার বাদ দিলে অর্থনীতির চিত্র কী দাঁড়ায়- সেই ব্যাখা চেয়ে তিনি বলেন, এতদিন পর ধরা পড়ল ১৪ বিলিয়ন রফতানিতে নেই অর্থাৎ দেশের প্রবৃদ্ধি কমে যাচ্ছে, উৎপাদন কমে যাচ্ছে, মিল-ফ্যাক্টরিগুলোতে উৎপাদন ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। দুর্নীতি-লুটপাট করে জনগণকে ধোঁকা দেওয়ার যে প্রবৃত্তি আওয়ামী লীগের হয়ে গেছে, তার প্রতিফলন ছাড়া এটা আসলে আর কিছুই নয়। চৌদ্দ বিলিয়ন ডলার ভুয়া রফতানির চিত্র দেখানোর ফলে বিবিএসের রিপোর্টগুলো নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠে গেছে, এগুলোর সত্যতা সম্পর্কে প্রশ্ন উঠে গেছে।
দেশের অর্থনীতিকে ‘আওয়ামী মার্কা আর্টিফিশিয়াল লুটপাটের অর্থনীতির মডেল’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, কল-কারখানায় গ্যাস নেই, বিদ্যুৎ নেই। ব্যাংক থেকে তারা টাকা নিতে পারছে না, কারণ ব্যাংকের টাকা সরকার নিয়ে যাচ্ছে, না হলে সরকারপন্থি লোকজন বিদেশে পাচার করে যাচ্ছে। আবার ব্যাংকের টাকার সুদও বাড়িয়ে দিয়েছে। শেয়ারবাজার বলেন, ব্যাংক বলেন, ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনগুলো- সব খালি করে ফেলেছে। খালি করে টাকাটা বাইরে পাচারের কারণে রিজার্ভ কমতে কমতে একেবারে তলানিতে এসে গেছে। রিজার্ভ ঠিক রাখার জন্য আমদানি করতে দিচ্ছে না। আমদানি করতে না দেওয়ার কারণে দ্রব্যমূল্য বাড়ছে, সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই যে একটা আর্টিফিশিয়াল আওয়ামী মার্কা লুটপাটের অর্থনীতির মডেল তারা দাঁড় করিয়েছে, এটা ক্রমান্বয়ে উন্মোচিত হয়ে যাচ্ছে।
বিএনপির শীর্ষ নেতা আমীর খসরু বলেন, শুধু চৌদ্দ বিলিয়ন ডলার ভুয়া রফতানি আয় নয়, এটাই একমাত্র ফিগার নয়, বিভিন্ন খাত থেকে আরও বিভিন্ন ফিগার বেরিয়ে আসবে ক্রমান্বয়ে। তাহলে দেশ আজ অর্থনৈতিকভাবে কোথায় দাঁড়িয়ে আছে? রাজনৈতিকভাবে তো দেশ ধ্বংস হয়ে গেছে। ভোটাধিকার, আইনের শাসন, মানবাধিকার- কিছুই নেই। কিন্তু অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়নের যে চিত্র এতদিন সরকার দিয়েছে, সেটা যে একটা কতবড় ভুয়া চিত্র, প্রতারণার চিত্র, সেটাও ক্রমান্বয়ে বেরিয়ে আসছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান জামায়াতে যোগ দিলেন

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জামায়াতে যোগ দিয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান। শনিবার ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

জামায়াত আমিরের উপস্থিতিতে মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নীতি ও আদর্শ, দেশপ্রেম এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অবিচল অবস্থানের প্রতি গভীর আস্থা ও সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি সংগঠনের প্রাথমিক সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন।

আওয়ামিলীগের সাবেক পৌর কাউন্সিলর জুলফিকার মিয়ার বিএনপিতে যোগদান।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

লালমোহন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী জুলফিকার মিয়া বিএনপিতে যোগদান করেছেন। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি ঢাকায় বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ভোলা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম) এর বাসায় গিয়ে ফুল দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান সম্পন্ন করেন।

এ সময় মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ তাকে দলে স্বাগত জানান। দলীয় একটি সূত্র বলছে, আগাম রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে সামনে রেখে জুলফিকার মিয়ার এই যোগদান বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করবে বলে সকলে মনে করছেন।

অন্যদিকে বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে আওয়ামিলীগের এমপি নুরনবী চৌধুরী শাওন কর্তৃক নির্যাতিত, নিষ্পেষিত বিএনপির অনেক ত্যাগি নেতারা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। নাম জানাতে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন- বিএনপির এমন দিন আসবে কখনো চিন্তাও করিনি। তবে কী আওয়ামিলীগ দিয়ে বিএনপির ত্যাগীদের আবার নির্যাতনের স্বীকার করতে চায় মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ? কেন আমরা এতদিন নির্যাতিত ছিলাম? এই দিন দেখার জন্য?

এ বিষয়ে জুলফিকার মিয়াকে একাধিকবার ফোন করলে তার মুঠো ফোনটি বন্ধ দেখায়। তবে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে তার এই সিদ্ধান্ত ঘিরে আলোচনা সমালোচনার শুরু হয়েছে। কেউ কেউ মনে করছে; এভাবে আওয়ামিলীগ দ্বারা বিএনপি সাজাতে থাকলে ভোটের মাঠে এর প্রভাব বিস্তার করবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ