আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

অর্থনৈতিকভাবে সরকারের উন্নয়নের চিত্র ভুয়া-আমীর খসরু

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়নের যে চিত্র এতদিন সরকার দিয়েছে, সেটা একটা ভুয়া চিত্র বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। সাম্প্রতিক সময়ে উদঘাটন হওয়া দেশের পণ্য রফতানির তথ্যে গরমিল নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগের অর্থনৈতিক উন্নয়নের নামে দেশবাসীর সঙ্গে কতবড় প্রতারণা করেছে, সেটা ক্রমান্বয়ে বেরিয়ে আসছে। গতকাল শনিবার সকালে নগরীর মেহেদিবাগে নিজ বাসভবনে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে এ প্রতিক্রয়া জানান আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল মাসের মধ্যে রফতানি হয়েছে ৪৭ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু গত ৩ জুলাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, সংশোধনের পর তা ১৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার কমে ৩৩ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ ১৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার রফতানির হিসেব ওলটপালট হয়ে গেছে।
এর প্রতিক্রিয়ায় সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির যে চিত্র, উন্নয়নের যে চিত্র, যেগুলোর কথা বলে দেশের মানুষের ভোটাধিকার, মানবাধিকার, আইনের শাসন, জীবনের নিরাপত্তা কেড়ে নেওয়া হয়, সেই উন্নয়নের চিত্র ক্রমান্বয়ে উন্মোচিত হচ্ছে। সেই চিত্র হচ্ছে একটা ভুয়া চিত্র। ১৪ বিলিয়ন ডলার ভুয়া রফতানি দেখানো হয়েছে, তার ফলশ্রুতিতে কী হয়েছে? আপনার প্রবৃদ্ধি বেশি দেখানো হয়েছে, অর্থনীতির সঙ্গে জিডিপির গ্রোথ বেশি দেখানো হয়েছে, ব্যালেন্স অব পেমেন্টের একটা ভিন্ন চিত্র দেখানো হয়েছে বা দেখাচ্ছে। বস্তুতপক্ষে অর্থনীতির যে মানদণ্ডগুলো আছে, সবগুলোতেই এটার একটা প্রতিফলন আছে।
১৪ বিলিয়ন ডলার বাদ দিলে অর্থনীতির চিত্র কী দাঁড়ায়- সেই ব্যাখা চেয়ে তিনি বলেন, এতদিন পর ধরা পড়ল ১৪ বিলিয়ন রফতানিতে নেই অর্থাৎ দেশের প্রবৃদ্ধি কমে যাচ্ছে, উৎপাদন কমে যাচ্ছে, মিল-ফ্যাক্টরিগুলোতে উৎপাদন ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। দুর্নীতি-লুটপাট করে জনগণকে ধোঁকা দেওয়ার যে প্রবৃত্তি আওয়ামী লীগের হয়ে গেছে, তার প্রতিফলন ছাড়া এটা আসলে আর কিছুই নয়। চৌদ্দ বিলিয়ন ডলার ভুয়া রফতানির চিত্র দেখানোর ফলে বিবিএসের রিপোর্টগুলো নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠে গেছে, এগুলোর সত্যতা সম্পর্কে প্রশ্ন উঠে গেছে।
দেশের অর্থনীতিকে ‘আওয়ামী মার্কা আর্টিফিশিয়াল লুটপাটের অর্থনীতির মডেল’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, কল-কারখানায় গ্যাস নেই, বিদ্যুৎ নেই। ব্যাংক থেকে তারা টাকা নিতে পারছে না, কারণ ব্যাংকের টাকা সরকার নিয়ে যাচ্ছে, না হলে সরকারপন্থি লোকজন বিদেশে পাচার করে যাচ্ছে। আবার ব্যাংকের টাকার সুদও বাড়িয়ে দিয়েছে। শেয়ারবাজার বলেন, ব্যাংক বলেন, ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনগুলো- সব খালি করে ফেলেছে। খালি করে টাকাটা বাইরে পাচারের কারণে রিজার্ভ কমতে কমতে একেবারে তলানিতে এসে গেছে। রিজার্ভ ঠিক রাখার জন্য আমদানি করতে দিচ্ছে না। আমদানি করতে না দেওয়ার কারণে দ্রব্যমূল্য বাড়ছে, সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই যে একটা আর্টিফিশিয়াল আওয়ামী মার্কা লুটপাটের অর্থনীতির মডেল তারা দাঁড় করিয়েছে, এটা ক্রমান্বয়ে উন্মোচিত হয়ে যাচ্ছে।
বিএনপির শীর্ষ নেতা আমীর খসরু বলেন, শুধু চৌদ্দ বিলিয়ন ডলার ভুয়া রফতানি আয় নয়, এটাই একমাত্র ফিগার নয়, বিভিন্ন খাত থেকে আরও বিভিন্ন ফিগার বেরিয়ে আসবে ক্রমান্বয়ে। তাহলে দেশ আজ অর্থনৈতিকভাবে কোথায় দাঁড়িয়ে আছে? রাজনৈতিকভাবে তো দেশ ধ্বংস হয়ে গেছে। ভোটাধিকার, আইনের শাসন, মানবাধিকার- কিছুই নেই। কিন্তু অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়নের যে চিত্র এতদিন সরকার দিয়েছে, সেটা যে একটা কতবড় ভুয়া চিত্র, প্রতারণার চিত্র, সেটাও ক্রমান্বয়ে বেরিয়ে আসছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।আহত ওসমান হাদীর সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এছাড়া চিকিৎসা কার্যক্রম নিবিড়ভাবে তদারকি করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন।


একই সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত ও ব্যাপক তদন্ত চালিয়ে হামলায় জড়িত সবাইকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ, প্রত্যক্ষদর্শীর তথ্য গ্রহণ, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা এবং হামলার পেছনে কোনো সংগঠিত পরিকল্পনা থাকলে তা উন্মোচনের জন্য তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে বলেছেন।

নির্বাচনী প্রচারণাকালে ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান নির্বাচনী প্রচারণাকালে ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হয়েছে। দুপুরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

জুলাই ঐক্যের অন্যতম সংগঠক ইস্রাফিল ফরায়েজী জানিয়েছেন,নির্বাচনী প্রচারণাকালে তাকে গুলি করা হয়। এর আগে, গত নভেম্বর মাসে দেশি-বিদেশি ৩০টি নম্বর থেকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি পেয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন হাদি। ১৪ নভেম্বর ফেসবুকে একটি পোস্টে তিনি জানিয়েছিলেন, তাকে হত্যা, তার বাড়িতে আগুনসহ তার মা, বোন ও স্ত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছে।

ওসমান হাদি ইতিমধ্যে তার ভেড়িফাইড ফেইস বুকে লিখেছিলেন, গত তিন ঘণ্টায় আমার নম্বরে আওয়ামী লীগের খুনিরা অন্তত ৩০টা বিদেশি নম্বর থেকে কল ও টেক্সট করেছে। যার সামারি হলো- আমাকে সর্বক্ষণ নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। তারা আমার বাড়িতে আগুন দেবে। আমার মা, বোন ও স্ত্রীকে ধর্ষণ করবে এবং আমাকে হত্যা করবে।

আজ শুক্রবার ১২ ডিসেম্বর গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।জুলাই ঐক্যের অন্যতম সংগঠক ইস্রাফিল ফরায়েজী জানিয়েছেন-নির্বাচনী প্রচারণাকালে তাকে গুলি করা হয়।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ