আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

বোয়ালখালী বাচা চেয়ারম্যান নিখোঁজ ১৪ বছর

এম মনির চৌধুরী রানা

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ১০ নং করলডাঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বাচার সন্ধান চান পরিবারের সদস্যরা। বাচার ছোট ভাই মো. হামিদুল হক মান্নান বলেছেন, ‘গুমের শিকার ভাইকে মেরে ফেলেছেন নাকি বেঁচে আছে। অন্তত সেই বিষয়টি আমাদের নিশ্চিত করুন।’ আজ সোমবার (১২ আগস্ট) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে গুমের শিকার নজরুল ইসলাম বাচার সন্ধান চেয়ে মানববন্ধন করেন দক্ষিণ জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান।
হামিদুল হক মান্নান বলেন ২০১০ সালের ৮ নভেম্বর আমার ভাই গুম হয়েছেন। অনেক খোঁজা খুঁজির পরও কোনো সন্ধান পাইনি। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর আমাদের অনেক নেতাকর্মী আয়নাঘর থেকে বের হয়েছেন। আরো অনেক নেতাকর্মী এখনো গুম রয়েছেন। তাই তাদের মধ্যে যদি আমার ভাই বেঁচে থাকেন তাহলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টার কাছে সন্ধান চাই। আমার ভাই গুমের শিকার। তাঁকে সাদা পোশাকে নিয়ে গেছেন। আমার ভাইয়ের কোনো সন্ধান পেয়ে থাকেন তাহলে জানাবেন। আর আমার ভাইকে যদি মেরে ফেলেন সেটাও একটু জানাবেন। আমরা অপেক্ষায় আছি। গত ১৪ বছর ধরে অপেক্ষা করেছি। এ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আকুল আবেদন করছি। শুধু এটাই জানতে চাচ্ছি, আমার ভাইকে মেরে ফেলেছে নাকি বেঁচে আছে। দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান বলেন আজ ছাত্র জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে আমরা মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশে মুক্তভাবে প্রেসক্লাবের সামনে দাঁড়িয়েছে। গত ১৪ ধরে শেখ হাসিনা সরকার মানুষকে গুম করে, খুন করে ক্ষমতায় ঠিকে থাকতে পারে নাই। তিনি আরো বলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে একটাই আবেদন। আমাদের নেতাকর্মী যারা গুমের শিকার হয়েছেন তাদের সন্ধান দিন, তাদের ফিরিয়ে দিন। আজ ছাত্র-জনতার আকাঙ্খা এ বাংলাদেশের সকল মানুষ তাদের ন্যায্য অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকবে৷ কোনো কেউ গুম-খুন হবে না। অপরাধীরা দেশের প্রচলিত আইনে বিচারের মুখোমুখি হবে। ‘তিনি বেঁচে না থাকলে কঙ্কাল হলেও দেন। দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম বলেন ১৪ বছর আগে বোয়ালখালী বিএনপির তখনকার সভাপতি এবং করলডাঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বাচাকে গুম করা হয়। এখনো পর্যন্ত তাঁর সন্ধান পাইনি। আমরা বলতে চাই, আমাদের প্রিয় নেতাকে আমাদের হাতে ফিরিয়ে দিন। পরিবারের হাতে ফিরিয়ে দেন। যদি তিনি বেঁচে না থাকেন তাহলে অন্তত কঙ্কাল হলেও দেন৷ তিনি আরো বলেন খুনি হাসিনা দেশের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। আমরা আহ্বান করবো প্রিয় নেতা বাচা চেয়ারম্যানসহ যারা গুম হয়েছেন তাদের সকলকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। যারা আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে, গুম করেছে তাদের বিচার করতে হবে৷ আমাদের অনেক ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছে শেখ হাসিনা। এরপর এখন দেশ থেকে পালিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ৮ নভেম্বর গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে সাদা পোষাকধারী প্রশাসন পরিচয়ে তুলে নেন চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং করলডাঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বাচা। এরপর থেকে ১৪ বছরেও তাঁর সন্ধান পাননি পরিবারের সদস্যরা।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় হাত–পা বাঁধা অবস্থায় খাইরুন নেছা (৬০) নামের এক বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর মানিকের বাঁধ এলাকার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী হলেন ঐ এলাকার মৃত রজব আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সকালেই মানিকের বাঁধের পাশে পানিতে ভেসে থাকা একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তাঁরা পুলিশে খবর দিলে ভেড়ামারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যা করে হাত–পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। তদন্তে যা বের হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ