
নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত পেরিয়ে মিয়ানমার থেকে আসা পশু নিয়েই নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের চাকঢালায় বসে গরু-মহিষের হাট। সপ্তাহের ২ দিনই এ অবস্থা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। অথচ এ বাজারের আশেপাশে রয়েছে দায়িত্বশীল কতৃপক্ষ বুধবার (৯ অক্টোবর) সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে এ তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য মতে, বাংলাদেশ-মিয়ানমারে স্থল সীমান্তের ৪৪ পিলার থেকে ৫০ নম্বর পিলার পর্যন্ত দীর্ঘ সীমান্তের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার অংশে পশুর হাট বসে শুধুমাত্র চাকঢালা বাজারে। যেটি উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে। যা মিয়ানমার সীমান্ত থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে। যে কারণে চোরাকারবারীরা নিরাপদ ও অধিক সুবিধা এ বাজার কেন্দ্রিক চোরাকারবার চালিয়ে আসছে বেপরোয়া ভাবে।
বুধবার ( ৯ অক্টোবর) সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে বিজিবি টহল থাকায় দুপুর সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত চাকঢালায় পশুর হাট বসে নি। বিজিবির জোয়ানরা দুপুরে খাবার খেতে যাওয়া মাত্রায় কয়েক ধিক থেকে প্রায় ১শ মিয়ানমার থেকে অবৈধ পথে আনা মহিষের পাল বাজারে ঢুকায় চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের সদস্যরা।
যার মধ্যে শুধু মেহেরপুর সড়ক দিয়ে আসে অর্ধশত বিশালাকারের মহিষ। অন্যান্য সড়ক দিয়ে মিলে আসে আরো বেশ পশু।

সূত্রমতে, হাট সকাল সাড়ে ১১টায় শেষ হওয়ার কথা, সে পশুর হাট চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
সূত্রে আরো জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে যাচ্ছে, সার, তেল, মুরগি, ডিম মাছ, চাল, ঔষধ, পলথিন, কীটনাশকসহ, বিস্কুট সহ কয়েকশ প্রকারের বাংলাদেশী পণ্য।
আর এ সব চোরাচালানে জড়িত রয়েছে,
চিহ্নিত ও আলোচিত ব্যক্তিরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ পশু এবং মালামাল আনা-নেয়ার জন্যে সড়ক ব্যবহার হচ্ছে ৫ টি। মেহেরপুর সড়ক, হামিদিয়া পাড়া সড়ক, দক্ষিণ মৌলভীরকাটা সড়ক, নিকুছড়ি থেকে সোনাইছড়ি সড়ক, ছালামী পাড়া শাহ আলমের দোকানের পাশ হয়ে লাইটে গোড়া সড়ক, আলী মেম্বার-অইক্যের ঘোনা সড়ক হয়ে লাইটে গোড়া সড়ক, মৌলভীকাট রাবার ড্যাম-ভামো ও শামশুর ঘোনা হয়ে ছালামীপাড়া খামারপাড়া অংকপাড়া হয়ে লাইটের গোড়া সড়ক। স্থানীয় ৮ ম শ্রেণির ছাত্র আবদুশ শুক্কুর এ প্রতিবেদককে বলেন,
আগে বিজিবি টহল বেশী ছিল, এখন কম। রাত যত গভীর হয় চোরাকারবার তত বাড়ে। এখানে নেতা থেকে শুরু করে অনেকেই এই কারবারে জড়িত।
চাকঢালা বাজার ব্যবসায়ী, শামশুর আলম, ছৈয়দ আলম ও ছব্বির আহমদ বলেন, বিশেষ করে চাকঢালা বাজারের রশিদের মাধ্যমে সব পশু বৈধতা পাচ্ছে৷ গরু, মহিষ ও ছাগলসহ অনেক পণ্য। মিয়ানমার কেন্দ্রিক স্বশস্ত্র ২ টি গোষ্ঠী
নিজেদের খাদ্য জোগান দিতে চোরাকারবারে জড়িয়ে পড়ায় এপারের বিজিবি সদস্যরা হিমশিম খাচ্ছেন প্রতিরোধে। ওপারে খোলা এপারে বাধা এ অবস্থায়
চোরকারবারীরা গোপনে পায়ে হেটে বা মোটর বাইকে চড়ে ওপারের কারবারীদের সাথে আতাত করে এ সব অপকর্ম চালিয়ে আসছে।
তাদের দাবী, সীমান্তে বিজিবির অস্থায়ী তল্লাশি ক্যাস্প বসিয়ে নজরদারী বাড়ালে এ চোরাকারবার বন্ধ হবে। তাদের দ্বিতীয় দাবী, এ দেশের বিজিবি, পুলিশ, নেতা, গোয়েন্দা, সাংবাদিক, আনসার শিক্ষক ও ইমামদের সমন্বয়ে তদারকিসহ পাহারা বসালে ১ সপ্তাহের মধ্যে চেরাকারবার বন্ধ হবে।
এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবির জোন কমান্ডারের বক্তব্য জানার জন্য ফোন করা হলে ফোন রিসিভ না করাই কথা বলা সম্ভব হয়নি।তবে গত ২৯ সেপ্টেম্বর নাইক্ষ্যংছড়ির স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে জোন কমান্ডার লেঃ কর্ণেল মোঃ সাহল অহমদ নোবেল বলেছেন, চোরাকারবারীরা দেশের শক্র-জাতির শত্রু। তাদের কোন ছাড় দেওয়া যাবেনা।সীমান্ত রক্ষী বিজিবি সদস্যরা কঠোর অবস্থানে থেকে অভিযান চলমান রেখেছে।
