আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

যৌতুক বন্ধে ইমাম-খতিবদেরকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে :ধর্ম উপদেষ্টা।

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

: ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, যৌতুক বন্ধে ইমাম-খতিবদেরকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে। বিভিন্ন ফোরামে ইমাম-খতিবদের কথা বলার যে সুযোগ রয়েছে সেটা কাজে লাগাতে হবে। শনিবার সকালে চট্টগ্রামের এলজিইডি ভবনের কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী মিলনায়তনে মুসলিম নিকাহ রেজিস্ট্রারদের সাথে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ মুসলিম নিকাহ রেজিস্ট্রার ফোরামের উদ্যোগে বাল্যবিবাহ নিরোধকল্পে কনের স্থায়ী ঠিকানার কাজী কর্তৃক বিবাহ ও তালাক নিবন্ধন আইন প্রণয়ন এবং বাংলাদেশ সরকারের সংস্কার কমিশন কর্তৃক বিবাহ নিবন্ধন ফী তিনভাগে ভাগ করার বিষয়ে এ মতবিনিময় সভা আয়োজন করে।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, যৌতুক দেওয়া-নেওয়া অপরাধ। যৌতুক সমাজের অভিশাপ। এরূপ শ্লোগান সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুনে কাঙ্খিত ফল পাওয়া যাবে না। যৌতুক নিরুৎসাহিত করতে ইমাম-খতিবদেরকে কথা বলতে হবে। খতিব, ইমাম কিংবা কাজীদের নানা ফোরামে কথা বলার সুযোগ রয়েছে। এই সুযোগকে যৌতুক বন্ধে কাজে লাগাতে হবে। তিনি বাল্যবিবাহ রোধে নিকাহ রেজিস্ট্রার ফোরামের দাবীসমূহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরবেন বলে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
ধর্ম উপদেষ্টা আরো বলেন, বিবাহ নিবন্ধনের সময় কাজী ও সহকারীরা অনেক সময় সরকারি বিধান না মেনে অতিরিক্ত ফি আদায় করে। এ ধরনের কার্যকলাপ বন্ধ করতে হবে এবং ফি আদায়ের রশিদ দিতে হবে। তিনি নিকাহ রেজিস্ট্রারদের সরকারি বিধি মোতাবেক ফি আদায়ের অনুরোধ করেন। এছাড়া, উপদেষ্টা বাংলাদেশ মুসলিম নিকাহ রেজিস্ট্রার ফোরামকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে রাখার অনুরোধ জানান।

চট্টগ্রাম যুগ যুগ ধরে অবহেলিত উল্লেখ করে ড. খালিদ বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়ক মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিবছর এই সড়কে দুর্ঘটনায় অনেক মানুষ মারা যায়। সাম্প্রতিক সময়ে এই সড়কে খুবই দুঃখজনক একটি ঘটনা ঘটেছে। এটা নিয়ে বিভিন্ন ¯’ানে মানববন্ধন হ”েছ। তিনি এই সড়কের উন্নয়নে নিরলস কাজ করে যা”েছন বলে জানান। এছাড়া, অল্পদিনের মধ্যে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক ছয় লেনে উন্নীত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

ফোরামের সভাপতি কাজী ছৈয়দ মুহাম্মদ আবু ছাঈদের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হক, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাসান আলীসহ ফোরামের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য প্রদান করেন।

এ সভায় ফোরামের নেতৃবৃন্দ বাল্যবিবাহ বন্ধে কনের স্থায়ী ঠিকানায় কাজী অফিসে বিবাহ নিবন্ধন, বিবাহ নিবন্ধন ফি তিনভাগে ভাগ করার সুপারিশ বাতিল এবং বিবাহ নিবন্ধনে বরের বয়স ২০ ও কনের বয়স ১৬ করাসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন। এ অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্তরের নিকাহ রেজিস্ট্রাররা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মশা নিধনে আমেরিকান প্রযুক্তির লার্ভিসাইড বিটিআই ব্যবহার শুরু চসিকের।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন প্রথমবারের মতো মশা নিয়ন্ত্রণে আমেরিকান প্রযুক্তির লার্ভিসাইড বিটিআই ব্যবহারের কার্যক্রম শুরু করেছে। সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের নির্দেশক্রমে সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় ৩৯ নং দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ড কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি শুরু হয়। কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব মো. আশরাফুল আমিন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মোঃ শরফুল ইসলাম মাহি, কীটতত্ত্ববিদ রাশেদ চৌধুরী এবং অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) মশা নিয়ন্ত্রণে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করে নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর আগে গত ২৬ মার্চ নগরীর ১৭ নম্বর বাকলিয়া ওয়ার্ডের সৈয়দ শাহ রোডের সামনের খালে পরীক্ষামূলকভাবে বিটিআই লার্ভিসাইড প্রয়োগ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকে আজ থেকে ওয়ার্ড পর্যায়ে বিটিআই প্রয়োগ শুরু করল চসিক।

চসিকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত ফগিং, লার্ভিসাইড ছিটানো, নালা–নর্দমা পরিষ্কার, আবর্জনা অপসারণ এবং জনসচেতনতা কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে। নতুন প্রজন্মের আমেরিকান প্রযুক্তির বিটিআই ব্যবহারে মশার লার্ভা ধ্বংসে আরও কার্যকর ফল পাওয়া যাবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।

বিটিআই হলো একটি প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন ব্যাকটেরিয়াভিত্তিক লার্ভিসাইড, যা বিশেষভাবে মশা, ব্ল্যাক ফ্লাই ও ফাঙ্গাস গ্ন্যাটের লার্ভা দমনে ব্যবহৃত হয়। এটি পানিতে প্রয়োগ করার পর লার্ভা খাদ্যের সঙ্গে বিটিআই গ্রহণ করে এবং ব্যাকটেরিয়ার উৎপাদিত ক্রিস্টাল প্রোটিন টক্সিন লার্ভার পরিপাকতন্ত্রে কার্যকর হয়ে তাদের দ্রুত নিধন ঘটায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বিটিআই মানুষের শরীর, গৃহপালিত প্রাণী, মাছসহ অন্যান্য পরিবেশবান্ধব প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর নয়; এমনকি উদ্ভিদ ও জলজ বাস্তুতন্ত্রেও কোনো বিষাক্ত প্রভাব ফেলে না। বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গু, জিকা ও চিকুনগুনিয়ার মতো বাহক–বাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে এটি একটি নিরাপদ ও বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত সমাধান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের দোয়া মাহফিল খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায়

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রেস ক্লাবের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা, সিনিয়র সাংবাদিক এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

দোয়া মাহফিলে বক্তারা বলেন, দেশের গণমাধ্যমের উন্নয়ন, সাংবাদিক সমাজের কল্যাণ এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বেগম খালেদা জিয়া ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অবদান চট্টগ্রামের সাংবাদিক সমাজ চিরদিন স্মরণ করবে। বক্তারা ঐতিহাসিক অবদান স্মরণ করতে গিয়ে উল্লেখ করে বলেন, ১৯৭৮ সালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের উন্নয়নে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ২ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছিলেন।

১৯৮০ সালে বায়েজিদের শেরশাহ এলাকায় সাংবাদিকদের আবাসনের জন্য সাংবাদিক হাউজিং সোসাইটি-তে ১৬ একর জমি বরাদ্দ দেন, যা ১৯৮১ সালে বিচারপতি আব্দুস সাত্তার সরকারের আমলে তা রেজিস্ট্রি করা হয়। ১৯৯৪ সালে প্রেস ক্লাবের আর্থিক সংকট মোকাবিলায় তৎকালীন মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমানের অনুরোধে প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ১৫ লাখ টাকা অনুদান প্রদান করেছিলেন।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের শৃঙ্খলা ও ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মইনুদ্দীন কাদেরী শওকত বলেন, বেগম খালেদা জিয়া প্রেস ক্লাবের জন্য অসামান্য অবদান রেখেছেন। আমি অতীতে তাকে আজীবন সদস্যপদ দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলাম, কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি। এখন আবারও অনুরোধ জানাই—বেগম খালেদা জিয়াকে প্রেস ক্লাবের আজীবন সদস্যপদ প্রদান করা হোক।

দোয়া মাহফিলে দেশ ও জাতির শান্তি, কল্যাণ ও স্থিতিশীলতার পাশাপাশি বেগম খালেদা জিয়ার সুস্বাস্থ্য কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন শাহ আনিস জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন।
দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন প্রেস ক্লাবের অন্তবর্তী কমিটির সদস্য মুস্তফা নঈম, চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান, প্রেস ক্লাবের সাবেক লাইব্রেরি সম্পাদক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলামসহ অন্য সদস্যরা।মাহফিল শেষে বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘায়ু ও সুস্থতার জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ