আজঃ রবিবার ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫

কালুরঘাট সেতুতে মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন, বরখাস্ত ৪ রেলকর্মী।

এম মনির চৌধুরী রানা চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের কালুরঘাট রেলসেতুতে পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় ঘটে যাওয়া ভয়াবহ দুর্ঘটনার তদন্তে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। প্রাথমিক তদন্তে গাফিলতির প্রমাণ পাওয়ায় সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে চারজন রেলকর্মীকে।

আজ শুক্রবার (৬ জুন) সকালে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করিম সিদ্দিকী বিষয়টি নিশ্চিত করেন। বরখাস্ত হওয়া রেলকর্মীরা হলেন চট্টগ্রাম হেড কোয়ার্টারের ট্রেন গার্ড সোহেল রানা, লোকোমাস্টার গোলাম রসুল, সহকারী লোকোমাস্টার আমিন উল্লাহ এবং অস্থায়ী গেটকিপার মাহবুব (টিএলআর)।

ঘটনার তদন্তে গঠিত কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও)। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন—ডিএমই (লোকো), ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার-১ এবং বিভাগীয় চিকিৎসক (পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম)। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এই কমিটিকে।

উল্লেখ্য, গতকাল বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাত সোয়া ১০টার দিকে চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুর বোয়ালখালী অংশে পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে সেতুতে আটকে থাকা বেশ কয়েকটি যানবাহনের সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুইজন নিহত হন, যাদের মধ্যে একজন মাত্র দুই বছর বয়সী শিশু।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানা গেছে, দুর্ঘটনার সময় সেতুর ওপর একটি গাড়ি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে নষ্ট হয়ে গেলে যানজটের সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামমুখী পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি সংকেত না মেনে সেতুর দিকে এগিয়ে আসে। ফলে সেতুর ওপর থাকা অটোরিকশা, একটি মাইক্রোবাস ও কয়েকটি মোটরসাইকেল ট্রেনের ধাক্কায় দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এই ঘটনায় রেলওয়ের সিগনাল ব্যবস্থাপনা ও ট্রেন পরিচালনায় চরম গাফিলতির বিষয়টি আবারও সামনে উঠে এসেছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরই দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় গভীর রাতে স্বর্ণের দোকানে দুর্ধর্ষ ডাকাতি

পাবনা প্রতিনিধিঃ পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমণিষা বাজারে বুধবার গভীর রাতে একদল দুর্ধর্ষ ডাকাত দল চার-পাঁচ টি স্বর্ণের দোকানে ও একটি বাড়িতে ডাকাতি করে।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অষ্টমণিষা বাজারের শ্রী রতন কুমার কর্মকার, তপন কুমার কর্মকার, উত্তম কুমার কর্মকার, ইউসুফ আলী ও আত্তাব আলীর স্বর্ণের দোকানগুলোর তালা ভেঙে দুর্বৃত্ত ডাকাত দল প্রায় ৩০/৩২ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা ডাকাতি করে নিয়ে যায়। পরে ডাকাত দল রতন কুমার কর্মকারের বাড়ির ভিতর প্রবেশ করে তার স্ত্রী ও ছেলে রঞ্জন কর্মকার কে মারধর করে আরও ১০ ভরি স্বর্ণ ও ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় ডাকাত দল।

শ্রী রঞ্জন কুমার কর্মকার বলেন,একটি ডাকাত দল বাজারে নেমে দুই নৈশপ্রহরীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে প্রথমেই বেঁধে ফেলেন।রতন কর্মকার বলেন, ‘ডাকাতেরা বাড়িতে ঢুকতেই আমি তিন তলায় উঠে প্রতিবেশীদের ফোন করি। কিন্তু কেউ আসেনি। পরে দীপকে ফোন করলেও বের হতে পারেনি, কারণ তার দরজার সামনে দুইজন অস্ত্রধারী দাঁড়িয়ে ছিল।’

তারপর প্রায় ১০-১২ জনের একটি ডাকাত দল প্রথমে স্বর্ণের দোকানগুলোতে হামলা চালায় এবং কিছুক্ষণ পরে তারা তাদের বাড়িতে প্রবেশ করে সবাইকে অস্ত্রের মুখে স্বর্ণালংকার ও টাকা পয়সা সব লুট করে। তার মা স্বর্ণের গহনা খুলে দিতে দেরি করলে তাকে অনেক মারধর করে। রঞ্জন কর্মকার বাধা দিলে তাকেও বেদম প্রহার করা হয়। দুর্ধর্ষ ডাকাত দলের হাতে দুইটি আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র সহ সাপল,লোহার রড ছিলো বলে তারা জানান।

স্থানীয়রা আরও জানান,দুর্ধর্ষ ডাকাত দল স্পিডবোট যোগে গভীর রাতে বাজারে এসে স্বর্ণের দোকানগুলোতে ডাকাতি করে গুমানী নদীর ভাটির দিকে চলে যায়।

খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (চাটমোহর,ভাঙ্গুড়া সার্কেল) আবু বকর সিদ্দিক, পাবনা ডিবির ওসি রাশিদুল ইসলাম, ডিবির একটি টিম এবং ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ভাঙ্গুড়া থানার ওসি মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কারা জড়িত, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মামলা প্রক্রিয়াধীন।’

পাবনা ডিবি পুলিশের ওসি রাশিদুল ইসলাম বলেন, ‘এটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের কাজ। খুব শিগগিরই ডাকাত চক্রকে গ্রেপ্তার করা হবে।’অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলছে। তদন্তে বিস্তারিত জানা যাবে।’

মহিলা ডিগ্রী কলেজ ভাঙ্গুড়ায় অভিভাবক সমাবেশ

পাবনা প্রতিনিধিঃ পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার পৌর সদরে- নারী শিক্ষায় পাবনা জেলায় অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ ভাঙ্গুড়া মহিলা ডিগ্রী কলেজে অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ভাঙ্গুড়া মহিলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ জনাব মোঃ মোস্তফা কামাল এর সভাপতিত্বে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সিনিয়র প্রভাষক মোঃ লুৎফর রহমান এর সঞ্চালনায় শুরুতেই কোরআন ও গীতা পাঠের মধ্যে দিয়ে অধ্যক্ষ জনাব মোঃ মোস্তফা কামাল স্যারের স্বাগত বক্তব্য দিয়ে অভিভাবক সমাবেশ শুরু হয়।

প্রথমেই অভিভাবক কলেজ ছাত্রী ২য় বর্ষের মানবিক বিভাগের মোছাঃ রিয়া খাতুন এর মাতা দুলারি বেগম বলেন কলেজে প্রতি বিষয়ে প্রতি সপ্তাহে একটি করে টিউটোরিয়াল পরীক্ষা নিতে হবে,তবেই মেয়েরা পড়াশোনা বেশি বেশি করবে।

প্রথম বর্ষের মানবিক বিভাগের কৃতি ছাত্রী মোছা রিদনা আহমেদ এর পিতা মোঃ রাসেল আহমেদ বলেন প্রকৃত শিক্ষা তখনই হবে যখন মেয়েরা পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা দীক্ষা নিবে,যেমন প্রতিদিনের ক্লাসের পড়া ক্লাসে শেষ করবে,তারপর কলেজ ক্যাম্পাসে বার্ষিক খেলাধুলা, কম্পিউটার,লাইব্রেরিতে পড়াশোনা করবে,বার্ষিক শিক্ষা সফরের যাবে,এভাবেই প্রকৃত শিক্ষা লাভ করবে একজন শিক্ষার্থী।

১ম বর্ষ মানবিক, আফসনা খাতুন এর বাবা মোঃ আফসার আলী বলেন, পিতা-মাতার পরই ছাত্রীর অভিভাবক তার শিক্ষকমন্ডলীরা,কোন শিক্ষকই চায়না তার ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশোনা না করে।প্রত্যেক শিক্ষকই চায় সকল ছাত্র-ছাত্রীরা ভালো পড়াশোনা করে যেন মানুষের মত মানুষ হয়।

অভিভাবক সমাবেশে ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে লেখাপড়ার বিষয়ে বক্তব্য দেন অত্র কলেজের রসায়ন বিভাগের সিনিয়র প্রভাষক আলহাজ্ব মোঃ মিজানুর রহমান,
ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা জন্য কলেজ এর বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে অভিভাবকদের অবহিত করেন যে প্রতিটা ছাত্রী প্রতিদিন যেন সকল বিষয়ে ভালো পড়াশোনা করে প্রতিদিন কলেজের ক্লাসে আসে এই বিষয়ে প্রত্যেক অভিভাবক খেয়াল করবেন,তখন অবশ্যই প্রত্যেক ছাত্রী ভালো পড়াশোনা করে ভালো জীবন গড়বে।

পরিশেষে অত্র কলেজের অধ্যক্ষ জনাব মোঃ মোস্তফা কামাল স্যার সকল ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবক সবার উদ্দেশ্যে একটি কথাই বলেন,যে অভিভাবক,ছাত্রী ও শিক্ষকমন্ডলী সবাই কে একসাথে লেখাপড়ার সকল বিষয়ে সতর্ক হয়ে একমত হতে হবে,তবেই ছাত্র-ছাত্রীরা প্রকৃত শিক্ষা পাবে।আরো উপস্থিত ছিলেন অত্র কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য মোঃ এহতেশান হায়দার মন্টু সহ অত্র কলেজের সকল শিক্ষক-কর্মচারী, ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকবৃনন্দ।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ