আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রাম বন্দরের পেমেন্ট পদ্ধতিতে যুগান্তকারী পরিবর্তন

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

  1.  দেশের সবচেয়ে বড় সমুদ্র বন্দর-চট্টগ্রাম বন্দরের পেমেন্ট পদ্ধতিতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (সিপিএ) এবং ইস্টার্ন ব্যাংকের (ইবিএল) পারস্পরিক সহযোগিতায় বন্দরে চালু হয়েছে এপিআই প্রযুক্তিভিত্তিক সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় ও নিরাপদ ডিজিটাল পেমেন্ট পদ্ধতি।

    গত শনিবার রাতে চট্টগ্রাম মহানগরের তারকা হোটেল রেডিসন ব্লু বে ভিউতে আয়োজিত জাঁকজমকপূর্ণ এক অনুষ্ঠানে নতুন এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম. সাখাওয়াত হোসেন।
    অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন উপদেষ্টা এই উদ্যোগকে স্মার্ট এবং দক্ষ আগামীর যাত্রায় একটি সাহসী এবং সময়োপযোগী পদক্ষেপ উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরে ডিজিটাল গভর্নেন্স বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষের অঙ্গীকারের প্রতিফলন ঘটেছে। ফলে বন্দরের পেমেন্ট পদ্ধতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।
    উপদেষ্টা বলেন, নতুন এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে গ্রাহকরা যেকোন স্থান থেকে ভ্যাট, এআইটি, ওয়েলফেয়ার চার্জসহ অন্যান্য পেমেন্ট সহজেই সম্পন্ন করতে পারবেন। স্বয়ংক্রিয়ভাবে পেমেন্ট কনফার্মেশন লাভ করবেন। অডিটের ক্ষেত্রেও স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে। সর্বোপরি বন্দরের জট এবং পরিচালন ব্যয় হ্রাস পাবে। টার্ন-এরাউন্ড সময় কমে আসবে। দীর্ঘসূত্রিতার অবসান ঘটবে।
    অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ডিজিটাল পেমেন্ট পদ্ধতির সফল প্রবর্তন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং ইস্টার্ন ব্যাংকের কার্যকর সহযোগিতার প্রমাণ। উদ্ভাবন, স্বচ্ছতা এবং সেবার ক্ষেত্রে উৎকর্ষতা অর্জনে এটি একটি অভিন্ন প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। আমি অধিকতর দক্ষতা অর্জনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। যা একটি স্মার্ট ও ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত নগরী বিনির্মাণে আমাদের ভিশনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।
    চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস. এম. মনিরুজ্জামান বলেন, আমাদের বর্তমান পেমেন্ট পদ্ধতি যথেষ্ট দক্ষ হলেও তা মূলত ম্যানুয়াল পদ্ধতি নির্ভর। ইস্টার্ন ব্যাংকের সঙ্গে আমাদের পার্টনারশিপের মাধ্যমে আমরা একটি সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়, সুরক্ষিত এবং স্বচ্ছ পেমেন্ট কাঠামো উপহার দিতে পেরেছি।
    ইবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী রেজা ইফতেখার জানান, বাংলাদেশের সমুদ্রপথ বাণিজ্যে চট্টগ্রাম বন্দর মেরুদণ্ড স্বরূপ। ইবিএল-পাওয়ার্ড প্ল্যাটফর্মটি ডিজিটাল ভবিষ্যতে প্রবেশের ক্ষেত্রে একটি সাহসী পদক্ষেপ। এটা শুধুমাত্র সিস্টেম আপগ্রেডই নয়, বরং রাজস্ব আদায় এবং সেবা প্রদানে নতুন এক দৃষ্টিভঙ্গি।
    অনুষ্ঠানে ইবিএলের পক্ষ থেকে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ শাহীন, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিওও ওসমান এরশাদ ফয়েজ, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং কর্পোরেট ব্যাংকিং প্রধান রিয়াদ মাহমুদ চৌধুরী, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ট্রেজারি বিভাগ প্রধান মেহদী জামান, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং রিটেইল ও এসএমই ব্যাংকিং প্রধান এম. খোরশেদ আনোয়ার, ট্রানজেকশন ব্যাংকিং প্রধান মো. জাবেদুল আলম, ডিজিটাল আর্থিক পরিষেবা বিভাগ প্রধান আহসান উল্লাহ চৌধুরী এবং কম্যুনিকেশন্স ও এক্সটার্নাল এফেয়ার্স বিভাগ প্রধান জিয়াউল করিম প্রমূখ।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক গ্রেফতার

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় নবম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক কে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। কথিত প্রেমিকের নাম বুলবুল (২০)। তিনি উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের চাচকিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলী ফকিরের ছেলে।রবিবার(৭ ডিসেম্বর) সকালে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে চাচকিয়া বিলের মধ্য নিয়ে গিয়ে ওই স্কুল ছাত্রী কে তার প্রেমিক বুলবুল সহ বন্ধুরা মিলে দলবদ্ধ ভাবে ধর্ষণ করে।

এ ঘটনায় শনিবার রাতে ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে ভাঙ্গুড়া থানায় ধর্ষণ মামলা রজ্জু করেন। মামলায় তথিত প্রেমিক বুলবুল সহ ৪ জন কে আসামি করা হয়।

ধর্ষণের খবর পেয়ে এএসপি সার্কেল (চাটমোহর) আবু বক্কার সিদ্দিক ও থানার ওসি মোঃ শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

জানা গেছে, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর সঙ্গে বুলবুল এর প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। ঘটনার দিন গত শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে ওই স্কুল ছাত্রীকে চাচকিয়া বিলের মধ্যে ডেকে নিয়ে গিয়ে বুলবুল তার বন্ধু সোহানুজ্জামান ও তাওহিদ মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এসময় তারা মেয়েটির অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে এবং ঘটনাটি কাউ কে জানালে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরদিন শনিবার দুপুরে ঘটনা জানার পর ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত বুলবুল কে দুপুরে পাবনা আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাবনা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

সাঘাটায় নবযোগদানকৃত ইউএনও আশরাফুল কবীরকে সাংবাদিকদের ফুলেল শুভেচ্ছা

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় নবযোগদানকৃত উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশরাফুল কবীরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা। বৃহস্পতিবার সকালে ইউএনও কার্যালয়ে এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।

সাংবাদিকরা ইউএনওকে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানান এবং সাঘাটার সার্বিক উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তাঁর সাফল্য কামনা করেন। এসময় ইউএনও আশরাফুল কবীর সাংবাদিকদের শুভেচ্ছা গ্রহণ করে বলেন,
“সাঘাটার উন্নয়ন ও জনসেবার মানোন্নয়নে প্রশাসন ও গণমাধ্যম পরস্পরের পরিপূরক। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সংবাদকর্মীদের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”তিনি আরও বলেন,সাঘাটা উপজেলার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একটি জনবান্ধব প্রশাসন গড়ে তুলতে চাই। এ কাজে গণমাধ্যমের গঠনমূলক ভূমিকা অব্যাহত থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”

শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সাংবাদিকরা নতুন ইউএনওর সঙ্গে বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা, প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং স্থানীয় সমস্যাবলি নিয়ে মতবিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় মহলে ধারণা করা হচ্ছে, ইউএনও আশরাফুল কবীরের যোগদানে সাঘাটা উপজেলায় প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড আরও গতিশীল হবে এবং উন্নয়ন কার্যক্রমে নতুন দিগন্ত যুক্ত হবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ