আজঃ শুক্রবার ১৪ মার্চ, ২০২৫

চট্টগ্রামে পেঁয়াজের বাজারে আগুন নেপথ্যে খাতুনগঞ্জের সিন্ডিকেট ব্যাবসায়ীরা

টিটু বড়ুয়া সুরঞ্জিত

বানিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের বাজারে আগুন, সিন্ডিকেট সদস্যদের মধ্যে চরম অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। ভারত সরকার পেঁয়াজের রপ্তানি মূল্য বেঁধে দেয়ার খবর প্রচার হওয়ার পরপরই দেশের পাইকারি বাজারে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে অতি মুনাফাখোর পাইকারি এই সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা।

দেশের বাজারে এখনো বাড়তি দামের পেঁয়াজ ঢোকেনি। অথচ এরই মধ্যে আমদানি ও দেশি- দুধরনের পেঁয়াজের দাম রাতারাতি বেড়ে গেছে। খুচরায় প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম এখন ১৪০ টাকা। এমন আকাশচুম্বী দামে আবারও ভোক্তার গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে পেঁয়াজ।

খুচরা বাজার ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূলত গত সোমবার দাম হঠাৎ এক লাফে কেজিপ্রতি ১৫ থেকে ২৫ টাকা বেড়ে যায়। বাজারে এখন দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত। অথচ গত রবিবারও এ পেঁয়াজ ১১৫ টাকাতে পাওয়া গেছে। অর্থাৎ মাত্র এক রাতের ব্যবধানেই পণ্যটির দাম লাগামছাড়া বেড়েছে, যা বেশির ভাগ ভোক্তার নাগালের বাইরে।

কাজির দেউরি বাজারের ব্যবসায়ী মনির আহমদ বলেন, ‘রোববার ভারতে দাম বেড়েছে- এমন খবরের কারণে পাইকারদের কাছ থেকে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১১৫ টাকায় কিনছি।’ তিনি বলেন, ‘দাম বাড়ার খবরে আমদানি করা পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে না। দাম বাড়ানোর জন্য মজুত করে রেখেছেন পাইকাররা।

খাতুনগঞ্জের পাইকার লোকমান হোসেন বলেন, ‘পূজার ছুটির কারণে বেশ কয়েকদিন বন্দর বন্ধ ছিল। তখন থেকেই দেশে পেঁয়াজের ঘাটতি শুরু হয়। এরমধ্যে আমদানি মূল্য বাড়ানোর খবরে বাজার একদম অস্থির হয়ে গেছে। বাজারে পেঁয়াজের সঙ্কট দেখা দিয়েছে।

যদিও ভারতে নতুন দাম ঘোষণার পর সেই পেঁয়াজ এখনও দেশে এসে পৌঁছায়নি। অর্থাৎ আগের দামে আমদানি করা পেঁয়াজই এখন বাজারে, তবুও দাম বেড়েছে অস্বাভাবিকভাবে। যৌক্তিক কারণ ছাড়াই এভাবে অতিরিক্ত দাম বাড়িয়েছেন কতিপয় ব্যবসায়ী। তারা এই কারসাজি করে ভোক্তার পকেট থেকে স্বল্প সময়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে ক্রেতারা অভিযোগ করেছেন।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বাড়তি দামে আমদানি করা পেঁয়াজ আসতে আরও তিন থেকে চারদিন সময় লাগবে। এরমধ্যে বাজারে যত পেঁয়াজ কেনাবেচা হবে, তা আগের দামেই কেনা।
জানা গেছে, ভারতে প্রতি টন পেঁয়াজের দাম ৮০০ ডলার হলে কেজিপ্রতি এর রপ্তানিমূল্য পড়বে ৬৭ রুপি। আগে ভারতের রপ্তানিকারকরা অনির্ধারিত মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারলেও নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশটির ব্যবসায়ীদের সরকার নির্ধারিত দামেই পেঁয়াজ বিক্রি করতে হবে। আগে পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। তখন থেকেই বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজের এক আড়তদার বলেন, বর্তমানে খাতুনগঞ্জে যেসব পেঁয়াজ রয়েছে সেগুলো বাজার পর্যন্ত আসতে খরচ পড়েছে কেজিপ্রতি ৭০ টাকা। কিন্তু ভারত রপ্তানিমূল্য বেঁধে দেয়ার ঘোষণার পর থেকে প্রতি কেজিতে অন্তত ৩৫ টাকা মুনাফা করছেন আমদানিকারকরা।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন বলেন, দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজার ব্যবসায়ীদের মর্জির ওপর নির্ভর করে। তারা একেক সময় একেক অজুহাতে দাম বৃদ্ধি করেন। এখন বলছেন, ভারত রপ্তানিমূল্য বাড়িয়েছে তাই দাম বেড়েছে। বাজারে বর্তমানে যেসব পেঁয়াজ আছে, সেগুলো তো দুই সপ্তাহ আগে আমদানি করা। প্রশাসনের উচিত পেঁয়াজের ক্রয় ও বিক্রয়মূল্য যাচাই করে অভিযান পরিচালনা করা।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রাম মহানগরে প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে বন্দরের আহবান

চট্টগ্রাম মহানগরের জলাবদ্ধতা নিরসন এবং প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে নগরবাসীর সচেতনতা ও সরাসরি অংশগ্রহণ ছাড়া এ সমস্যার দীর্ঘ স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। এ সমস্যা সমাধানে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীর ৩৬ টি খাল ও নালা দিয়ে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ পলিথিন, প্লাস্টিক বোতল,

কাপড়সহ বিভিন্ন বর্জ্য কর্ণফুলী নদীতে পড়ে, যা নদীর পরিবেশের জন্য মারাত্নক হুমকি সৃষ্টি করছে। বর্জ্যের কারণে নগরীর জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং কর্ণফুলী নদীর নেভিগেশন চ্যানেলের নাব্যতা হ্রাস পাচ্ছে ফলে ড্রেজিং কাজে সরকারের সময় ও অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। প্লাস্টিক বর্জ্য খালের মুখে জমা হয়ে পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করছে, ফলে জলাবদ্ধতার সমস্যা দিন দিন প্রকট হচ্ছে। গৃহস্থালী বর্জ্য নালা নর্দমায় ফেলায় পানি দূষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং রোগ জীবাণুর বিস্তার ঘটাচ্ছে।

দূষণের ফলে কর্ণফুলী নদীর জীব বৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে এবং নদীভিত্তিক অর্থনীতি ও জীবিকা নিবাহের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এ বিষয়ে প্রাচ্যর রানী খ্যাত বন্দর নগরী চট্টগ্রামকে রক্ষার জন্য নগরবাসীকে সচেতন করার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক লিফলেট বিতরণ করা হয়। উক্ত বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সদস্য (হারবার ও মেরিন) ক্যাপ্টেন আহমেদ আমিন আবদুল্লাহ, (জি), বিএসপি, পিএসসি, বিএন, চীফ হাইড্রোগ্রাফার,চবক সচিব,চবক সহ চবক এর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও চবক এর স্কাউট সদস্যরা চবক স্কুল কলেজে এই চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা ও প্লাস্টিক দূষণের নেতিবাচক প্রভাব এর লিফলেট বিলি করেন।

পরিবেশ রক্ষায় চট্টগ্রামে চালু হয়েছে “ক্লিন বাংলাদেশ প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ কর্নার”

নগরীর জলাবদ্ধতা ও প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় ক্লিন বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন-এর সহযোগিতায় যাত্রা শুরু করলো “প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ কর্নার”। মাহে রমজান উপলক্ষ্যে চালু হওয়া এই বিশেষ কর্মসূচির মাধ্যমে ব্যবহৃত প্লাস্টিক ও পলিথিনের বিনিময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বিতরণ করা হচ্ছে।চকবাজার কাঁচাবাজারের সামনে শুক্রবার আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এই সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী সংগঠনের প্রতিনিধি, সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা ও সাধারণ জনগণ।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বলেন পরিবেশ রক্ষা ও জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধানে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার। ক্লিন বাংলাদেশ-এর এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়, কারণ এটি জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নগর পরিচ্ছন্নতার জন্য একটি বাস্তবসম্মত সমাধান দিচ্ছে। আমরা চাই এই কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত হোক এবং নগরবাসী প্লাস্টিক বর্জ্যের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আরও সচেতন হোক।
ক্লিন বাংলাদেশ-এর প্রতিষ্ঠাতা শওকত হোসেন জনি বলেন আমাদের শহরের অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো প্লাস্টিক বর্জ্য ও জলাবদ্ধতা। আমরা সবাই জানি, নালা ও ড্রেনগুলো প্লাস্টিকের কারণে বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। আমরা চেয়েছি সমস্যার একটি কার্যকর সমাধান দিতে—যেখানে পরিবেশ রক্ষা ও মানবিক সহায়তা একসাথে করা যায়। তাই, ‘প্লাস্টিক আনুন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিন’ এই ধারণা নিয়ে আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। এটি শুধু প্লাস্টিক দূষণ রোধ করবে না, বরং নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য রমজানের সময়ে সহায়তা হিসেবে কাজ করবে।
রমজান মাসব্যাপী প্রতি শুক্রবার ও শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নগরীর চকবাজার, বহদ্দারহাট ও আগ্রাবাদ কাঁচাবাজারের সামনে এই কার্যক্রম চলবে। ব্যবহৃত প্লাস্টিক ও পলিথিন জমা দিয়ে চনা, ছোলা, খেজুর, ছিড়া, আলু, পেঁয়াজ, ডিমসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সংগ্রহ করতে পারবেন সাধারণ জনগণ।

এই আয়োজন সফলভাবে পরিচালনা করছেন ক্লিন বাংলাদেশ-এর সাধারণ সম্পাদক তানভীর রিসাত ও টিম লিড করছে ইমন, আলভি, জাহিদ, প্রমি, তানজিফা। পাশাপাশি সদস্য হিসেবে কাজ করছে সাকিব, ইয়াজ, মুনতাসির, পার্থ। উক্ত অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, মহানগর বিএনপির যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক বাদশা, বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও রাজনীতিবিদ মনিরুল ইসলাম ইউসুফ ও বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।ক্লিন বাংলাদেশ আশা করছে, এই উদ্যোগ নগরবাসীর মধ্যে প্লাস্টিক ব্যবহারের কুফল সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করবে এবং পরিবেশবান্ধব অভ্যাস গড়ে তুলতে সহায়তা করবে।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ