আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

আজ ঢাকায় আওয়ামী লীগ-বিএনপি উভয় দলের সমাবেশ

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

সমাবেশ ও শান্তি সমাবেশের নামে বিএনপি-আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি শোডাউনে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা হলেই তাৎক্ষণিক অ্যাকশনে নামবে পুলিশ। তাণ্ডব সৃষ্টিকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল নিক্ষেপ, এমনকি প্রয়োজনে রাবার বুলেটও ছুড়বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে বুধবার সকাল থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়মিত সদস্যের পাশাপাশি প্রায় ১০ হাজার রিজার্ভ ফোর্স মাঠে নামছে। তবে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করলে পুলিশ তাতে কোনো ধরনের বাধা দেবে না।

এদিকে দেশের প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশস্থল এবং এর আশপাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সব কর্মকর্তা ও সদস্যকে সর্বোচ্চ সহনশীলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করার কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কেউ যাতে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের পাতা ফাঁদে পা না দেয় সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার তাগিদ রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্য অতিউৎসাহী হয়ে যাতে অহেতুক অ্যাকশনে না নামে সে বিষয়টিও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তীক্ষè নজরে রাখবেন।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এডিসি পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা জানান, বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সমাবেশের এক দিন আগে সোমবার রাতে রাজধানীর মগবাজারের ককটেল বিস্ফোরণ এবং এতে একজন আহত হওয়ার ঘটনা উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। দীর্ঘদিন পর নির্বাচনের আগে ফের বোমাবাজি ফিরে এলো কিনা তা নিয়ে গোয়েন্দারা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এটি ক্ষমতা প্রদর্শনের মহড়া, নাকি ভীতি সৃষ্টির পায়তারা গোয়েন্দারা তা নিবিড়ভাবে খতিয়ে দেখছে। একই সঙ্গে এর নেপথ্যে রাজনৈতিক কোনো পক্ষকে ফাঁসানোর ঘটনা রয়েছে কিনা সে বিষয়টিও খুঁজে দেখবে গোয়েন্দারা।

এদিকে বিএনপির সমাবেশ এবং আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রস্তুতি নিয়ে সোমবার দুপুরের পর থেকে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত র‌্যাব-পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কয়েক দফা বৈঠক করেন। সেখানে উপস্থিত থাকা কয়েকজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, নাশকতা ও বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে সর্বশক্তি প্রয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়। যারা সরাসরি নাশকতা চালাবে শুধু তাদের বিরুদ্ধেই নয়, নেপথ্য মদদদাতাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। সমাবেশ চলাকালে কোথাও কোনো অরাজক পরিস্থিতি বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে সংশ্লিষ্ট জোনের দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তারা তা নিয়ন্ত্রণে গাফিলতি প্রদর্শন করলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে আগাম সতর্ক করা হয়েছে।

ডিএমপির অপরাধ বিভাগের একজন ডিসি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিএনপি-আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ নিয়ে তারা যথেষ্ট চাপে রয়েছে। কেননা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তাদের সমাবেশস্থল বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে এক লাখ মানুষের জমায়েত করার টার্গেট নিয়েছে। একই দিনে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির সমাবেশ থেকে এক দফা আন্দোলনের চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণার সময় বড় শোডাউনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। অথচ দু’টি সমাবেশস্থলের দূরত্ব গুগল ম্যাপ অনুযায়ী মাত্র ১.১ কিলোমিটার। আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে এক লাখ মানুষ জড়ো হলে এ ঢল ফকিরাপুল ছাড়িয়ে নয়া পল্টনের কাছাকাছি গিয়ে পৌঁছাবে। আবার বিএনপির সমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হলে তার ঢেউ আরামবাগে আছড়ে পড়বে। বুধবার দুপুরে মাত্র এক ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি সমাবেশ শান্তিপূর্ণ রাখা তাদের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ।

তবে পুলিশ প্রধান (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, পুলিশ আইন ও বিধি অনুযায়ী তাদের দায়িত্ব পালন করবে। পুলিশ এখন ইন্টেলিজেন্স-নির্ভর কাজ করে। আগাম তথ্যের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়। এ কারণে গত কয়েক বছর ধরে দেশে তেমন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে জাতীয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেছে। কোথাও যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি না হয় সে ব্যাপারে আগাম ব্যবস্থা নিতে মাঠপর্যায়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যদি কেউ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে চায় তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে, কে কোন রাজনৈতিক দলের কর্মী তা বিবেচনা করবে না পুলিশ।

আইজিপি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো বাধা দেওয়া হবে না। তবে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করলে কেউ পার পাবে না। যারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে বলে পুলিশের কাছে সন্দেহ হচ্ছে, এরই মধ্যে তাদের গতিবিধি এবং সার্বিক কার্যক্রম মনিটরিং করছে। তাদের বিষয় গোয়েন্দা নজরদারিও জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া সমাবেশের দিন ফেসবুক এবং ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে কেউ যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটনার অপচেষ্টা চালাতে না পারে সে বিষয়ে পুলিশ সজাগ রয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা গেছে, নয়া পল্টন, মতিঝিল, কাকরাইলের নাইট অ্যাঙ্গেল ক্রসিং, ফকিরাপুল, দৈনিক বাংলা ও বায়তুল মোকাররমের চারপাশসহ নগরীর প্রায় তিন ডজন পয়েন্টে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। স্পর্শকাতর স্পটে মোতায়েন থাকবে গোয়েন্দা ওয়াচম্যান এবং ডিবির ভিডিও ও স্টিল ক্যামেরাম্যানরা। যে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ও নাশকতার ছবি, ভিডিও ফুটেজ এবং তথ্য সংগ্রহ করবে তারা। যাতে এসব ঘটনায় জড়িতদের পরবর্তীতে সহজেই শনাক্ত করা যায়।

এদিকে নির্ধারিত এ স্পটগুলো বাইরেও রাজধানীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে। কেননা কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসার পথে কিংবা সেখান থেকে ফিরে যাওয়ার সময় রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা কোথায় কোন ধরনের বিশৃঙ্খলার অপচেষ্টা চালাবে তা গোয়েন্দাদের অজানা। তাই র‌্যাব-পুলিশের নিয়মিত টিমের পাশাপাশি পিকেট, মোবাইল, দাঙ্গা ও স্টাইকিং রিজার্ভ ফোর্সের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। যাতে তারা যে কোনো জরুরি মুহূর্তে দ্রুত যে কোনো পয়েন্টে ছুটে গিয়ে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারে।

বুধবার সকাল থেকে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে তল্লাশি চৌকি বসানো হচ্ছে। কর্মসূচির স্পটমুখী কারও গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে তাকে থামিয়ে দেহ তল্লাশি করা হবে। রাজনৈতিক নেতাকর্মী বহনকারী যানবাহনে লাঠিসোঁটা-ধারাল অস্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্র বা বিস্ফোরকদ্রব্য বহনের খবর পাওয়া গেলে তা আটক করবে পুলিশ। তবে অবৈধ কোনো কিছু পাওয়া না গেলে তা তাৎক্ষণিক ছেড়ে দেওয়া হবে।

এদিকে খোদ আওয়ামী লীগের প্রথম সারির অনেক নেতাও বিশৃঙ্খলা এড়িয়ে কাছাকাছি স্পটে দু’টি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। তাদের ভাষ্য, নির্বাচনের আগ মুহূর্তে বিএনপিকে রাজপথ ছেড়ে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কেননা তারা এ সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন সময় জ্বালাও-পোড়াও-বোমাবাজিসহ নানা ধরনের তাণ্ডব চালিয়েছে। সারা দেশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। তাই এবার সে সুযোগ পেলে একই ধরনের অপতৎপরতা চালাতে পারে। তাই বিএনপিকে রাজপথ থেকে হটিয়ে না দেওয়ার কোনো বিকল্প পথ নেই। তবে দলের নেতাকর্মীরা যাতে কোনোভাবে কোনো বিশৃঙ্খলায় জড়িয়ে না পড়ে সে ব্যাপারে তাদের সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে প্রথম সারির নেতারা দাবি করেছেন।

অন্যদিকে সমাবেশের নামে সন্ত্রাস ও অরাজকতা করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। মঙ্গলবার সকালে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় এ কথা বলেন মন্ত্রী। ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় আসা যাবে না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, কেবল নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তন সম্ভব। এ সময় বিএনপি-জামায়াতের অগ্নি সন্ত্রাস প্রতিরোধে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার আহ্বান জানান আসাদুজ্জামান খান কামাল।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান জামায়াতে যোগ দিলেন


সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন


বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জামায়াতে যোগ দিয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান। শনিবার ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

জামায়াত আমিরের উপস্থিতিতে মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নীতি ও আদর্শ, দেশপ্রেম এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অবিচল অবস্থানের প্রতি গভীর আস্থা ও সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি সংগঠনের প্রাথমিক সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন।

আওয়ামিলীগের সাবেক পৌর কাউন্সিলর জুলফিকার মিয়ার বিএনপিতে যোগদান।


সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন


লালমোহন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী জুলফিকার মিয়া বিএনপিতে যোগদান করেছেন। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি ঢাকায় বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ভোলা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম) এর বাসায় গিয়ে ফুল দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান সম্পন্ন করেন।

এ সময় মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ তাকে দলে স্বাগত জানান। দলীয় একটি সূত্র বলছে, আগাম রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে সামনে রেখে জুলফিকার মিয়ার এই যোগদান বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করবে বলে সকলে মনে করছেন।

অন্যদিকে বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে আওয়ামিলীগের এমপি নুরনবী চৌধুরী শাওন কর্তৃক নির্যাতিত, নিষ্পেষিত বিএনপির অনেক ত্যাগি নেতারা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। নাম জানাতে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন- বিএনপির এমন দিন আসবে কখনো চিন্তাও করিনি। তবে কী আওয়ামিলীগ দিয়ে বিএনপির ত্যাগীদের আবার নির্যাতনের স্বীকার করতে চায় মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ? কেন আমরা এতদিন নির্যাতিত ছিলাম? এই দিন দেখার জন্য?

এ বিষয়ে জুলফিকার মিয়াকে একাধিকবার ফোন করলে তার মুঠো ফোনটি বন্ধ দেখায়। তবে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে তার এই সিদ্ধান্ত ঘিরে আলোচনা সমালোচনার শুরু হয়েছে। কেউ কেউ মনে করছে; এভাবে আওয়ামিলীগ দ্বারা বিএনপি সাজাতে থাকলে ভোটের মাঠে এর প্রভাব বিস্তার করবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।


সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ