
ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসার ও অডিটর বাবর আলী ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে গফরগাঁও খায়রুল্লাহ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বাংলাদেশের মহাহিসাব নীরিক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, হিসাব মহানিয়ন্ত্রক এবং ডিভিশনাল হিসাব কর্মকর্তার বরাবরে বহুবার ঘুষ- দূর্নীতির অভিযোগ করেছেন । কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাই নেয়া হচ্ছে না জানা গেছে।
সরাসরি ঘুষের অভিযোগ থাকায় উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসার আশরাফুল ইসলাম ও অডিটর বাবর আলী ভূইয়াকে বিধি মোতাবেক সাময়িক বরখাস্ত করা প্রয়োজন ছিল অথবা বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো দরকার ছিল কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা না করে তাদেরকে অবাধ ঘুষ-দূর্নীতি চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন।
ঘুষের বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষ বিষয় । কিন্তু কিছু অভিযোগ ডকুমেন্টারি সহজেই প্রমাণিত । যেমন – সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী একই কর্মস্থলে ৩ বছরের বেশী সময় কর্মরত থাকতে পারেন না।
কিন্তু বাবর আলী ভূঁইয়া একযুগের বেশী সময় ধরে কর্মরত রয়েছেন , মাঝখানে স্বল্প সময়ের জন্যে অন্যত্র বদলী হলেই উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে বশীভূত করে পুনরায় গফরগাঁও উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসেই বদলী নিয়ে চলে আসেন । একই কর্মস্থলে একযুগের বেশী সময় ধরে কর্মরত থাকা কিংবা একই কর্মস্থলে বার বার বদলী হয়ে আসা সরকারী চাকুরীবিধির পরিপন্থী । খায়রুল্লাহ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট শিক্ষক অভিযোগ করার পর ঘুষখোর অডিটর বাবর আলী ভূইয়াকে ফুলবাড়িয়া উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে তড়ঘড়ি বদলী করে তাকে রক্ষা করা হয়েছে। আশরাফুল ইসলামকেও ঢাকায় বদলী করে রক্ষার চেষ্টা চলছে বলে জানা গিয়েছে ।
উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসার জনাব মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম কর্মস্থলে অবস্থান করেন না । তিনি ঢাকার উত্তরা থেকে অগ্নিবীণা ট্রেনে এসে কয়েক ঘণ্টা পরেই আবার ঢাকার উত্তরায় চলে যান। সরকারী বিধি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান প্রধানের কর্মস্থলে পরিবার সহ সার্বক্ষণিক অবস্থান করা বাধ্যতামূলক । এছাড়া একজন নিম্ন বেতন ভোগী কর্মকর্তা প্রতিদিন ঢাকার উত্তরা থেকে CNG ও ট্রেন যোগে হাজার টাকা খরচ করে অফিস করার অর্থ সংস্থানও তদন্তের বিষয় । বাবর আলী ভূঁইয়া কর্তৃক সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে” হিন্দুর বাচ্চা, মালোয়ানের বাচ্চা ” বলে গালি-গালাজ করার বিষয়টি সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখলেই বুঝা যাবে। আজকাল পানের দোকানেও সিসি ক্যামেরা লাগানো থাকে, যদি গফরগাঁও উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে সিসি ক্যামেরা লাগানো না থাকে তবে বুঝতে হবে বিষয়টি উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
এবিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রয়োজন।
বিগত ০৫/০৪/২০২৩ খ্রি: তারিখে গফরগাঁও উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসার আশরাফুল ইসলাম ও অডিটর বাবর আলী ভূইয়ার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং হিসাব মহানিয়ন্ত্রক বরাবরে খায়রুল্লাহ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় একজন শিক্ষক কর্তৃক আনীত ঘুষ ও দূর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করেন ডিসিএ ময়মনসিংহ কর্তৃপক্ষ । জানা গিয়েছে যে তদন্তকারী দল আগের দিন রাতে মোবাইলে অভিযোগকারী শিক্ষককে তদন্তে উপস্থিত থাকার জন্যে নির্দেশ করেন – যা বিধি বহির্ভূত । তদন্তের বিধি অনুযায়ী কমপক্ষে ৭ দিন আগে উভয়পক্ষকে লিখিত ভাবে তদন্তে উপস্থিত থাকার জন্যে নোটিশ প্রদান করতে হবে এবং নোটিশের সাথে অভিযোগের সত্যায়িত কপি, উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনামা, তদন্তকারী দলের নাম,পদবী সংযুক্ত করে দিতে হয় । কিন্তু এক্ষেত্রে তা না করার রহস্য কি ?
চণ্ডিপাশা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী শাহেব আলী ভালুকা হিসাবরক্ষণ অফিসের ঘুষ-দূর্নীতি নিয়ে বাংলাদেশ মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক বরাবরে অভিযোগ করলে ডিসিএ, ময়মনসিংহকে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়। সেখানেও তারা শাহেব আলীকে আগের দিন সন্ধ্যায় মোবাইলে পরদিন তদন্তে উপস্থিত থাকার জন্যে নির্দেশ প্রদান করেন ।

ডিসিএ কর্তৃক তদন্তের বিধিমালা লংঘন করার মানে কী ?
০৫ /০৪/২০২৩ তারিখের তদন্তে কি গফরগাঁও উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসার আশরাফুল ইসলাম ও অডিটর বাবর আলী ভূইয়ার ঘুষ-দুর্নীতি ও দূর্নীতি কি প্রমাণিত হয়েছে ? যদি প্রমাণিত হয়ে থাকে, তবে বিধি মোতাবেক উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসার আশরাফুল ইসলাম ও অডিটর বাবর আলী ভূইয়াকে চাকুরীচ্যূত করে তাঁদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা প্রয়োজন ছিল আর ঘুষ-দুর্নীতি প্রমাণিত না হলে খায়রুল্লাহ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন ছিল কিন্তু এ পর্যন্ত কারো বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ার রহস্য কি ?
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায় যে, ঘুষ – দূর্নীতির অভিযোগে অডিটর বাবর আলী ভূইয়াকে ফুলবাড়িয়া উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে বদলী করা হয়েছে – ঘুষখোরদেরকে বদলী করার কোন আইন আছে কি ?
উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসার আশরাফুল ইসলামকেও কি বদলী করে রক্ষা করা হবে ?
সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, গফরগাঁও উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসার আশরাফুল ইসলাম ও অডিটর বাবর আলী ভূইয়ার বিরুদ্ধে ঘুষ – দূর্নীতির মামলা করার জন্যে হিসাব বিভাগের উর্ধতন কতৃপক্ষের নিকট বার বার গফরগাঁও উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসার আশরাফুল ইসলাম ও অডিটর বাবর আলী ভূইয়ার তথ্য চেয়ে অদ্যাবধি তথ্য পাননি।