আজঃ মঙ্গলবার ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫

চাঁদপুরে গণজোয়ার সৃষ্টি করতে মাঠে তৎপর ঈগল প্রতীকের প্রার্থীরা।

এস আর শাহ আলম চাঁদপুর:

চাঁদপুরের ৫টি আসনের মধ্যে চারটি আসনেই আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে ভোটারদের গণজোয়ার সৃষ্টির জন্য ক্রমোশ নির্বাচনী মাঠ গরম করতে সুক্ষ্ম পরিকল্পনা নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে উঠছেন ঈগল প্রতীকের প্রার্থীরা। ওপেন সিক্রেট হলেও তাদের উৎসাহ যোগাচ্ছেন আওয়ামীলীগের গ্রুপিং রাজনীতির স্বীকার একাংশ নেতাকর্মী। এ তালিকায় প্রতিনিয়ত যোগ হচ্ছে নব্য ও হাইব্রিডদের ভীড়ে দলের অবমূল্যায়িত, অবহেলিত ও কোনঠাসা নেতাকর্মীরা দাবী ভোটারদের।

২০ ডিসেম্বর বুধবার সকালে চাঁদপুরের কয়েকটি নির্বাচনী এলাকা পর্যবেক্ষণকালে ভোটারদের সাথে কথা বললে তারা এসব তথ্য জানিয়েছেন।

চাঁদপুর-২ মতলব উত্তর ও দক্ষিণ আসনে ঈগল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী এম ইসফাক আহসান। তিনি আওয়ামীলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য। ইতিমধ্যেই তিনি সংবাদ সম্মেলন, সভা, গণসংযোগের মধ্য দিয়ে নিজেকে আসনটিতে ভোটারদের কাছে মেলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁর বিশ্বাস জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে ভোটাররা উন্নয়নের স্বার্থে দল-মত-নির্বিশেষে সবাই তাকেই ঈগল প্রতীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন।

এই আসনটিতে আওয়ামীলীগের নৌকার প্রার্থী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। তিনি আসনটি থেকে নির্বাচিত হয়ে একসময় মন্ত্রীও ছিলেন। বর্তমানে তিনি আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ভোটের মাঠে এই প্রবীণ দাপুটে নেতাকে হারানোর স্বপ্ন অনেকটা দুস্বপ্ন বলেও মন্তব্য অনেকের।

এদিকে চাঁদপুর-৩ সদর-হাইমচর এবং চাঁদপুর-৪ ফরিদগঞ্জ আসনে ঈগল প্রতীকে হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী ড. শামসুল হক ভূঁইয়া। তিনি জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি এবং ফরিদগঞ্জ আসন হতে নির্বাচিত সংসদ সদস্যও ছিলেন। বর্তমানে তিনি আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদের নির্বাহী সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিগত সময়ে চাঁদপুর শহরের হাসানআলী মাঠে আওয়ামীলীগের এক জনসভায় দলের খোঁজ খবর নিতে ভিডিও কনফারেন্সে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা নিজে সরাসরি ড. শামসুল হক ভূঁইয়ার নাম উচ্চারণ করে সাথে কথা বলতে চেয়েছিলেন এবং বলেওছিলেন। এতে স্পষ্ট দলের হাইকমান্ডে তাঁর অগাধ সুসম্পর্ক রয়েছে। এছাড়াও রাজনীতির মাঠে তিনি প্রবীণ লোক এবং নির্বাচন সম্পর্কে ভালো অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যাক্তিত্বও। ইতিমধ্যেই সংবাদ সম্মেলন ও সভাসহ নানাভাবেই এবার দু’টি আসনেই তিনি ঈগল প্রতীকের জয়ের মালা পড়তে কর্মপরিকল্পনা সাজিয়েছেন।

ড. শামসুল হক ভূঁইয়া মনে করেন, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের উদাহরণ হিসেবে এবারের নির্বাচন সবার মনে জায়গা করে নিবে। কাজেই সবাই ভোট কেন্দ্রে এসে দু’টি ঈগল প্রতীকে ভোট দিয়ে নিজেদের বিজয় উল্লাস প্রকাশ করবে।

তবে তার শক্ত প্রতিপক্ষ হিসেবে চাঁদপুর-৩ আসনে গোছালো নির্বাচনী মাঠে ড. দীপু মনির। তিনি আসনটি হতে টানা ৩ বার নির্বাচিত হয়েছেন। এরমধ্যে মন্ত্রীত্বের দায়িত্বই পালন করেছেন দুবার। বড় বড় রাঘব বোয়ালদের একাংশ চেষ্টা করেও টানা চতুর্থ বারে দলীয় প্রতীক নৌকার মনোনয়ন পাওয়া থেকে তাকে বঞ্চিত করতে পারেননি। কাজেই তাঁর আসনে ঈগল প্রতীক আদৌ প্রভাব ফেলতে পারবে কিনা এ নিয়ে সজাগ নৌকার কর্মীসমর্থকগণ।

অপরদিকে চাঁদপুর-৪ ফরিদগঞ্জ আসনটিতে ক্লিন ইমেজে রয়েছেন সাংবাদিক শফিকুর রহমান। যার কারনে অনেক মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকা সত্ত্বেও শেখ হাসিনা তাকেই আসনটিতে পুনরায় নৌকার মনোনয়ন দিয়েছেন। যারা মনে প্রাণে নৌকা প্রতীকের ভক্ত তারা দলে মান-অভিমান ও সামান্য মনমানিল্য কোনভাবে হয়ে থাকলেও তা চাপা রেখেই তার সাথে এক সুরে এক হয়ে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করবে এমনটাই তিনি মনে করছেন। কাজেই ভোটের মাঠে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঈগল প্রতীক এ আসনে চমক দেখাতে পারবেন কিনা তা স্পষ্ট নয়।

এদিকে চাঁদপুর-৫ হাজীগঞ্জ শাহরাস্তি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল প্রতীক নিয়ে বেশ জোরেসোরেই মাঠে নেমেছেন গাজী মাঈনুদ্দিন। তিনি হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি নৌকা প্রতীকে এর আগেও নির্বাচন করে জয়লাভ করেছেন। তবে সেটি হচ্ছে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচন। যেই চেয়ার থেকে তিনি এমপি হওয়ার দৌঁড়ে এগিয়ে যেতে ইতিপূর্বেই পদত্যাগ করেছেন। তাছাড়া প্বার্শবর্তী উপজেলা বর্তমানে তার নির্বাচনী এলাকা শাহরাস্তিতেও তিনি নেতাকর্মীদের সাথে বেশ ভালো যোগাযোগ রেখেছেন। কাজেই দল মত নির্বিশেষে সকলে এক ও অভিন্ন হয়ে আসনটিতে পরিবর্তন আনতে ঈগল প্রতীকের বিজয় নিশ্চিত করবে বলে তার কর্মী সমর্থকরা মনে করছেন।

গাজী মাঈনুদ্দিন বলেন, তৃণমূলের চাহিদার প্রেক্ষিতে এমপি পদে প্রার্থীতা করছি। ভোটের মাঠে বিজয় নিশ্চিত করার কৌশল ও অভিজ্ঞতা দু’টোই আমার রয়েছে। তাই উৎসাহ উদ্দিপনা নিয়ে সবাইকে ভোট কেন্দ্রে এসে ঈগল প্রতীকে ভোট দিতে অনুরোধ জানাচ্ছি।

এই আসনে এবারও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মহান মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম। তাঁর গ্রহণযোগ্যতা আওয়ামীলীগসহ সবার কাছেই। অনেকেই তাই মনে করেন, যতদিন তিনি বেঁচে থাকবেন আসনটিতে তার বিকল্প তিনি নিজেই। এ আসনটি হতে নির্বাচিত হয়ে তিনি মন্ত্রীত্বের দায়িত্বও পালন করেছিলেন। কাজেই নির্বাচনী মাঠে তিনি প্রবীণ এবং দক্ষ। সেক্ষেত্রে আসনটিতে ঈগল প্রতীকের প্রার্থী শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে বেড়িয়ে আসতে পারবে কিনা সেই সমীকরণ বড়ই জটিল।

উল্লেখ্য, চাঁদপুরের ৫টি আসনে চাঁদপুর-১ কচুয়া আসন বাদে বাকি চারটি আসনেই একজন করে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। এছাড়াও প্রতিটি আসনে নৌকার প্রার্থীর প্রতিপক্ষ হিসেবে ঈগল ছাড়াও একাধিক প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। যারা প্রত্যেকেই ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের ভোট চেয়ে প্রচারণা শুরু করেছেন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

বোয়ালখালীতে বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে ৩২ টি চেক বিতরণ

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্টের উদ্যোগে বোয়ালখালীতে ৩২ টি বৌদ্ধ প্রতিষ্ঠানে চেক বিতরণ করা হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর বিকাল ৪টায় শাকপুরা প্রজ্ঞাবংশ বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এ উপলক্ষে এক সভা বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্টের ট্রাষ্টি রূবেল বড়ুয়া হৃদয় এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন- চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ও চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ঐক্য ফ্রন্ট বোয়ালখালী উপজেলা শাখার সভাপতি পল্টু কান্তি বড়ুয়া ও সমাজকর্মী রাজীব বড়ুয়ার উপস্থাপনায় এতে আশির্বাদক ছিলেন- শাকপুরা সার্বজনীন তপোবন বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত বসুমিত্র মহাস্থবির, ভদন্ত বিপস্সী মহাথের, ভদন্ত পরমানন্দ মহাস্থবির, ভদন্ত দীপানন্দ থেরো। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন -চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব আজিজুল হক চেয়ারম্যান,

জেলার সদস্য মোঃ শওকত আলম, বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক হাজী ইছহাক চৌধুরী, সাবেক সদস্য সচিব হামিদুল হক মান্নান চেয়ারম্যান, পৌরসভা বিএনপি সাবেক আহবায়ক শহীদুল্লাহ চৌধুরী, সাবেক প্রচার সম্পাদক সরোয়ার আলমগীর, বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, শওকত আলী চেয়ারম্যান, আবদুল আওয়াল মঞ্জু, শাকপুরা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আজম খান, পৌরসভা বিএনপি নেতা হাজী আবু আকতার, বোয়ালখালী উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মোঃ ইকবাল হোসেন, প্যানেল চেয়ারম্যান হাসান চৌধুরী, শ্রমিক দল নেতা মোঃ মোঃ ইলিয়াসসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ,

বোয়ালখালী সম্মিলিত বৌদ্ধ পরিষদের সভাপতি প্রকৌশলী জয়সেন বড়ুয়া, বাংলাদেশ বৌদ্ধ ঐক্য ফাউন্ডেশন বোয়ালখালী উপজেলা শাখার সভাপতি বিকাশ বড়ুয়া, বৈদ্যপাড়া পঞ্চরত্ন স্মৃতি পরিষদের সভাপতি দেশপ্রিয় বড়ুয়া, প্রদীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ঐক্য ফ্রন্ট মহানগর-জেলা ও উপজেলা শাখার নেতা কমল জ্যোতি বড়ুয়া,তাপস বড়ুয়া , সুমন বড়ুয়া, রনি বড়ুয়া চৌধুরী, বিপ্লব বড়ুয়া, প্রকৌশলী দিক্ষিত বড়ুয়া, অর্ণব বড়ুয়া,সুমন বড়ুয়া ছোটন বড়ুয়া,পিপলু বড়ুয়া সহ বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহার/ মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ বলেছেন- বাংলাদেশ সম্প্রতির মেলবন্ধ, এদেশে সকল ধর্মের সহবস্থান ছিল -আছে- থাকবে। তাই ধর্মীয় সৌহার্দ্য বজায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এরিই ধারাবাহিকতায় আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট আমাকে নির্বাচিত করুন আমি আপনাদের সকলের আশির্বাদ প্রার্থী। তিনি এসময় বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্টের ট্রাস্টি রূবেল বড়ুয়ার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন এখন সরকারী টাকা দপ্তরে গিয়ে আনতে হয়না, রূবেল বড়ুয়াই সরকারী টাকা নিয়ে আপনাদের নিকট হাজির। তার এ কর্মযজ্ঞকে আপনাদের আশির্বাদে রাখতে হবে।

ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক গ্রেফতার

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় নবম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক কে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। কথিত প্রেমিকের নাম বুলবুল (২০)। তিনি উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের চাচকিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলী ফকিরের ছেলে।রবিবার(৭ ডিসেম্বর) সকালে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে চাচকিয়া বিলের মধ্য নিয়ে গিয়ে ওই স্কুল ছাত্রী কে তার প্রেমিক বুলবুল সহ বন্ধুরা মিলে দলবদ্ধ ভাবে ধর্ষণ করে।

এ ঘটনায় শনিবার রাতে ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে ভাঙ্গুড়া থানায় ধর্ষণ মামলা রজ্জু করেন। মামলায় তথিত প্রেমিক বুলবুল সহ ৪ জন কে আসামি করা হয়।

ধর্ষণের খবর পেয়ে এএসপি সার্কেল (চাটমোহর) আবু বক্কার সিদ্দিক ও থানার ওসি মোঃ শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

জানা গেছে, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর সঙ্গে বুলবুল এর প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। ঘটনার দিন গত শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে ওই স্কুল ছাত্রীকে চাচকিয়া বিলের মধ্যে ডেকে নিয়ে গিয়ে বুলবুল তার বন্ধু সোহানুজ্জামান ও তাওহিদ মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এসময় তারা মেয়েটির অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে এবং ঘটনাটি কাউ কে জানালে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরদিন শনিবার দুপুরে ঘটনা জানার পর ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত বুলবুল কে দুপুরে পাবনা আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাবনা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ