আজঃ রবিবার ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫

ঝালকাঠিতে জাল ভোটের অভিযোগে ৯ জনকে কারাদন্ড

মশিউর রহমান রাসেল ঝালকাঠি প্রতিনিধি

ঝালকাঠি জেলার দুটি সংসদীয় আসনে জাল দেয়ার
চেস্টার অভিযোগে ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং একটি কেন্দ্রে জালভোটকে কেন্দ্র করে ৩০ মিনিটি ভোট গ্রহণ বন্ধ রাখার মধ্য দিয়ে বিকাল চারটায় ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জেলার ২৩৭ টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ রবিবার সকাল ৮টায় শুরু হয়ে বিকাল
চারটায় শেষ। ভোট প্রদানের গড় হার ৪৭% বলে জানিয়েছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম ও পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুলজেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ আবদুস সালেক, নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করছেন। কেন্দ্রের বাহিরে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব সদস্যরা স্টাইকিং
ফোর্স হিসেবে টহল দিয়েছে। নলছিটি উপজেলার মগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক শাহীনের নেতৃত্বে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের কাছ থেকে ৫৪ টি ব্যালট lপেপার জোর পূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে জাল ভোট দেয়ার চেস্টা করলে এ নিয়ে হট্টোগোল হলে ৩০ মিনিটি ভোট গ্রহণ বন্ধ রাখা হয়। এ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মোঃ মোফাজ্জেল হোসেন হাওলাদার বিষয়টি
লিখিতভাবে নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটানিং অফিসারকে জানিয়েছেন। নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটানিং অফিসার নজরুল ইসলাম বলেন, জাল ভোট দেয়ার চেস্টাকে কেন্দ্র করে ওই কেন্দ্রে ৩০ মিনিট ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে আবার ভোট গ্রহণ স্বাভাবিক করে। পরবর্তীতে জেলা রিটানিং কর্মকর্তার সাথে পরামর্শ করে পরবর্তীআইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সকাল ১১ টারদিকে ঝালকাঠি সদর উপজেলার পাকমহর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়ার অভিযোগে মেহেদেী হাসান সোহাগ (৩৫) পিতা তোফাজ্জেল হোসেন নামে এক যুবককে ৬ মাসের কারাদন্ড প্রদাণ করে ভ্রাম্যমান আদালত। এছাড়া রাজাপুর উপজেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়ার অভিযোগে চারজনকে ১৫ দিন করে কারাদন্ড প্রদান করে ভ্রাম্যান আদালত। এ ছাড়া রাজাপুর ইদ্রপাশা কেন্দ্রে সুখি আক্তার নামে এক নারীতে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়াও নলছিটি উপজেলায় ১জনকে কারাদন্ড ও ২জনকে অর্থদন্ড দেয়া হয়েছে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে।ঝালকাঠির দুটি আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ৫৪ হাজার ১৬৪ জন।
ঝালকাঠি ১ আসনে মোট ভোটার ২১২০০৮ জন এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১০৭৮৬০ জন এবং নারী ১০৪১৪৫ জন এবং হিজরা ৩ জন। ঝালকাঠি ০২ আসনে মোট ভোটার ৩৪২১৫৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৭৩৯০০ জন এবং নারী ভোটর ১৬৮২৫৪ জন, হিজড়া ২জন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রামে কাস্টমস কর্মকর্তাদের গাড়িতে হামলার সময় ‘গুলি কর, গুলি কর’ শব্দ

P চট্টগ্রাম মহানগরের কাস্টমসের দুই কর্মকর্তার উপর হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ডবলমুরিংয় থানাধীন সিডিএ আবাসিক এলাকার ১ নম্বর সড়কে চৌধুরী সুপারশপের সামনে এ ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা হঠাৎ প্রাইভেটকার থামিয়ে চাপাতি দিয়ে গাড়ির গ্লাস ভাঙে এবং ‘গুলি কর, গুলি কর’ চিৎকার করে প্রাণনাশের ভয় দেখায়।হামলার শিকার হলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান খান ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (এআরও) বদরুল আরেফিন।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে হামলার শিকার রাজস্ব কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, অফিস যাওয়ার পথে হঠাৎ বিপরীত দিক থেকে একটি মোটরসাইকেলে তিনজন এসে আমাদের গাড়ির গতিরোধ করে। তারপর তারা চাপাতি দিয়ে গাড়ির গ্লাস ভেঙে ফেলে। এসময় একজন আরেকজনকে বলতে থাকেন, ‘গুলি কর, গুলি কর’। পরে প্রাণ বাঁচাতে গাড়ি থেকে নেমে দৌড়াতে থাকি। তিনি আরও বলেন, হামলাকারীদের তিনজনের মধ্যে দুজন হেলমেট পরিহিত ছিল, আকেরজন হেলমেট পরেনি। হামলার পর তারা মোটরসাইকেল নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

রাজস্ব কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, গত অক্টোবরে তার মোবাইল ফোনে কল দিয়ে হুমকি দেয়া হয়। পরে বন্দর থানায় নিরাপত্তা চেয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছিল। এর একমাস পরেই এই হামলা হয়েছে বলে জানান তিনি।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের পশ্চিম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার হোসাইন মোহাম্মদ কবির ভূঁইয়া বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। ফুটেজ পর্যালোচনা করে হামলাকারীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। একটি মোটরসাইকেলে তিনজন এসে হামলা চালিয়েছে। প্রাথমিক ধারণা, এটি পূর্ব শত্রুতার জেরে ভয়ভীতি দেখানোর উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। যদিও হামলার সময় ‘গুলি কর, গুলি কর’ চিৎকার করা হয়েছিল, কোনো গুলি করা হয়নি। আমরা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। এই ঘটনায় এখনও মামলা দায়ের হয়নি; কাস্টমস কর্মকর্তারা চাইলে মামলা করতে পারেন, নতুবা পুলিশ মামলার প্রক্রিয়া শুরু করবে।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার এইচ এম কবির বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। আমাদের দুজন কর্মকর্তা কাস্টমস গোয়েন্দা অফিস থেকে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে যাওয়ার পথে তাদের উপর হামলা হয়েছে। তাদের গাড়ির গ্লাস ভেঙে ফেলা হয়েছে। কে বা কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তা এখনও নিশ্চিত নয়। এ ধরনের হামলা আমাদের জন্য শঙ্কার বিষয়। আমরা আশা করি রাষ্ট্র আমাদের নিরাপত্তা দিবে।

কুষ্টিয়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় হাত–পা বাঁধা অবস্থায় খাইরুন নেছা (৬০) নামের এক বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর মানিকের বাঁধ এলাকার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী হলেন ঐ এলাকার মৃত রজব আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সকালেই মানিকের বাঁধের পাশে পানিতে ভেসে থাকা একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তাঁরা পুলিশে খবর দিলে ভেড়ামারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যা করে হাত–পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। তদন্তে যা বের হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ