আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

নির্মূল কমিটির ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বক্তারা

নিউজ ডেস্ক

গত তিন দশকে নির্মূল কমিটি ধর্মনিরপেক্ষ মানবিক রাষ্ট্র ও
সমাজ গঠনের বৃহত্তম নাগরিক আন্দোলনে পরিণত হয়েছে

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে শহীদজননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে ১০১ জন বরেণ্য নাগরিক কর্তৃক স্বাক্ষরিত এক ঘোষণার মাধ্যমে সূচিত হয়েছিল একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির এক দুর্গম অভিযাত্রা। বহু বাধাবিঘœ, জেল-জুলুম-হত্যা মোকাবেলা করে গত তিন দশকে নির্মূল কমিটি ধর্মনিরপেক্ষ মানবিক রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনের বৃহত্তম নাগরিক আন্দোলনে পরিণত হয়েছে এবং বিস্তার লাভ করেছে পাঁচটি মহাদেশে। আমাদের আন্দোলন ও সংগ্রামের তিন দশকের অধিক সময়ে বহু সাফল্য রয়েছে।
বক্তারা আরো বলেন, নির্মূল কমিটির ধারাবাহিক আন্দোলনের কারণে ’৭১-এর গণহত্যাকারীদের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়েছে এবং শীর্ষস্থানীয় যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদন্ড কার্যকর হয়েছে। তবে আমাদের প্রধান দাবি-জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দর্শন, ৩০ লক্ষ শহীদের স্বপ্নের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য এখনও আমাদের আন্দোলন করতে হচ্ছে। বিএনপি’র মদদে ’৭১-এর গণহত্যাকারী, মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক জামায়াত-শিবির চক্র এখনও মহাদর্পে রাজনীতির অঙ্গনে বিচরণ করার পাশাপাশি ’৭১-এর পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে এবং বাংলাদেশকে দ্বিতীয় পাকিস্তান বানাবার জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনার উপর বার বার আঘাত করছে। বিশেষভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাদীপ্ত বাঙালির আবহমান সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য জঙ্গি মৌলবাদী সন্ত্রাসীদের উপর্যুপরি তান্ডব ও হামলায় বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তির ঐক্যবদ্ধতার বিকল্প নেই এবং অতীব জরুরী হয়ে পড়েছে সকল দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভুলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রশ্নে আপোষহীন থাকার ঐক্যবদ্ধ প্রক্রিয়ার।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ২৪ জানুয়ারি, বিকেল ৫টায় জামালখানস্থ চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বর থেকে র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালি শেষে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস. রহমান হলে সংগঠনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি লেখক-সাংবাদিক শওকত বাঙালির সভাপতিত্বে “সংবিধানের মর্যাদা প্রতিষ্ঠার নাগরিক আন্দোলন” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তির সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্র ট্রাস্টের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. অলিদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন-উপদেষ্টাম-লির সদস্য স্বপন সেন, কার্যকরী সভাপতি মুক্তিযুদ্ধ গবেষক অধ্যাপক ড. আলা উদ্দিন, সহ-সভাপতি স্বাধীনতা সংগ্রামী মানিক চৌধুরীর সুযোগ্য সন্তান, আওয়ামী লীগ নেতা দীপংকর চৌধুরী কাজল, মো. হাবিবউল্ল্যা চৌধুরী ভাস্কর, সহ-সাধারণ সম্পাদক এ.কে.এম জাবেদুল আলম সুমন, কাজী রাজিশ ইমরান, সুমন চৌধুরী, আবদুল মান্নান শিমুল, মিথুন মল্লিক, সূচিত্রা গুহ টুম্পা, সাহাব উদ্দিন আওরঙ্গজেব (আঙুর), আবু সাঈদ সুমন, রুবেল আহমেদ বাবু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ান, আবু মো. আরিফ, রাহুল দত্ত, মো. মাহাতাব হোসেন সজিব, মাহমুদুল করিম, মরিয়ম আক্তার মুক্তা, অর্থ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুবেল পাল, সহ-অর্থ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রক্তিম বিশ্বাস, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শিক্ষিকা সৈয়দা তাহমীনা সুলতানা, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শুভ্রদেব কর, প্রচার ও গণমাধ্যম সম্পাদক সাংবাদিক আহমেদ কুতুব, সহ-প্রচার ও গণমাধ্যম সম্পাদক রুবেল চৌধুরী, প্রকাশনা সম্পাদক রাজীব চৌধুরী রাজু, আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. সাহাব উদ্দিন, শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক প্রণব দাশ, সহ-শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক সৈকত দাশ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অনিন্দ্য মজুমদার অথৈ, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুমন সায়েদ সিদ্দিকি, দফতর সম্পাদক অসিত বরণ বিশ্বাস, কার্যনির্বাহী সদস্য নাছিমা আকতার, নাজমুল হক ভূইয়া রাজিব, শওকত খান, জয়নুদ্দীন জয়, আখতার হোসেন, কাজী রোকনুজ্জামান রোকন, রাকিব হাসান, লুৎফর রহমান জুয়েল, শৈবাল দাশ, অনিন্দ্য দেব, জিয়াউল হক জিবলু, ডবলমুরিং থানা শাখার আহ্বায়ক হুমায়ুন ছগির মহন, সদস্য সচিব জাহেদুল আলম মুরাদ, খুলশি থানা শাখার আহ্বায়ক মোস্তফা আমির, যুগ্ম আহ্বায়ক জাহেদুল আলম, বাঁশখালী থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন, জাগরণের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আলোকচিত্রী কমল দাশ, সহ-সভাপতি প্রবাল চৌধুরী মানু, চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল সাইমুন, সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াহিদুর রহমান সুজন, দপ্তর সম্পাদক জামশেদ উদ্দীন, গ্রন্থণা ও প্রকাশনা সম্পাদক মোস্তফা আমান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ তারেক, উপ-দপ্তর সম্পাদক তৌহিদুল করিম ইমন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আমিনুর রহমান রাশেদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-সম্পাদক গোবিন্দ দত্ত, গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন উপ-সম্পাদক ইমরুল কায়েস, উপ-ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক জাহেদ অভি, আহমেদ সাঈদী ইফাজ, আব্দুল্লাহ আল বোরহান, মো. ইরফানুল হক রেজা, মোহাম্মদ কাসরুল ইসলাম, কে.এইচ.এম মিসকাত, মো. নাফিস উদ্দিন আবির, মো. মনির হাওলাদার, মোহাম্মদ আলমগীর, ফয়সাল মাহমুদ জয়, দুর্জয় বড়ুয়া, শাওন বিশ্বাস, আদিত্য চৌধুরী, সৌমেন দাশ রনি, রতেœশ্বর দাশ জিতু, রিংকু দাশ রনী, সামাদ নাহিয়ান, মো. নাজিম উদ্দিন আজাদ, ইঞ্জিনিয়ার রাজিব দাশ, ইফতি সিকদার, আমিনুল ইসলাম রাশেদ, মো. তারেক রহমান, মো. আব্বাস উদ্দিন, মো. সায়েদ হোসেন রিফাত, জামশেদ উদ্দীন, জয় সেন গুপ্ত প্রমুখ।
সভার প্রধান অতিথি দেশবরেণ্য মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে নির্মূল কমিটির আন্দোলন যেভাবে সফলতা পেয়েছে, ঠিক সেভাবে বাঙালিত্বের আন্দোলনেও নির্মূল কমিটিকে ভূমিকা রাখতে হবে। সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলন আন্দোলনে নির্মূল কমিটিকে সম্পৃক্ত হওয়ার আহবান জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে শওকত বাঙালি বলেন, নির্মূল কমিটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে জাতীয় নির্বাচনসমূহের আগে ‘রাজাকারমুক্ত সংসদ চাই’ এই দাবিতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অভিযাত্রা শিরোনামে ব্যাপক প্রচারাভিযান চালিয়েছে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটে নি। আশার কথা, এবারই সম্পূর্ণভাবে জাতীয় সংসদ রাজাকারমুক্ত হয়েছে। এতে আমাদের আন্দোলনের গুরুত্ব ও দায়িত্ব আরো অনেক বেড়ে গেছে।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, রাজনীতিক, শহীদ পরিবারের সদস্য, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভার পূর্বে আনন্দ র‌্যালী জামাল খান সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রেসক্লাবে এসে শেষ হয় এবং শহীদ জননীর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ‘খুঁজি তাঁরে’ শীর্ষক অনুষ্ঠান।


চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে গাঙ্গেয় বদ্বীপের সংগীত ব্যক্তিত্ব যোগী স্বপন কুমার দাশ’র রচিত আধ্যাত্মিক ও দেহতত্ত্ব বিষয়ক গান নিয়ে ‘খুঁজি তাঁরে’ শীর্ষক গত ৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সাংবাদিক কিরন শর্মার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রদীপ প্রজ্জ্বলক ও প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম এর পরিচালক মো.মাহফুজুল হক। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের পর প্রখ্যাত সাধক শ্রীমৎ স্বামী সত্যানন্দ ব্রহ্মচারী’জীকে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে ‘খুঁজি তাঁরে’ অনুষ্ঠানটি উৎসর্গ করা হয়।

বিশেষ অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযুদ্ধা রাখাল চন্দ্র ঘোষ (যুদ্ধকালিন কমান্ডার), আব্দুর রহিম (লোক ও মরমি শিল্পী), রূপম ভট্টাচার্য (সাংবাদিক), স ম জিয়াউর রহমান(সাংবাদিক), দিদারুল ইসলাম (সংগীত পরিচালক ও কন্ঠ শিল্পী), তন্দ্রা দাশগুপ্তা, সংগীত শিল্পী সঞ্জয় রক্ষিত সহ প্রমুখ। সংবর্ধিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত

ছিলেন পাপিয়া আহমেদ (সংগীত প্রযোজক বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম), অপু বর্মন (সংগীত শিল্পী বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন এবং সংগীত শিক্ষক জেলা শিল্পকলা একাডেমি, চট্টগ্রাম), অপু সেনগুপ্ত (বিশিষ্ট গীতিকার বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন), দীপ্ত দত্ত সংগীত শিল্পী (বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন)।

অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন, খ্যাতনামা মরমি কন্ঠ শিল্পী শিমুল শীল, বাউল শিল্পী বাবুল শীল, অভিষেক দাশ, বাউল জুয়েল দ্বীপ, শিউলী চৌধুরী, আনন্দ প্রকৃতি(মো:তৌহিদুল ইসলাম), আধাত্মিক শিল্পী সুরনাথ, কাওয়ালী শিল্পী মেঘলা। ওস্তাদ মোহনলাল দাশ স্মৃতি প্রতিযোগিতার সেরা কন্ঠ শিল্পী বাঁধন ঘোষ, ইন্দ্রিলা ঘরজা, মিম দাশ, অধরা চৌধুরী রাত্রি, আরাধ্যা মজুমদার, সৈয়দ রাসতিন, অরূপ কুমার শীল, ঊর্মি নাগ সংগীত পরিবেশন করেন।

যন্ত্র সংগীত শিল্পীতে ছিলেন- কীবোর্ডে রুবেল ঘোষ, অক্টোপ্যাডে পাপন, তবলায় উৎস, বাংলা ঢোলে হৃদয় বাঁশিতে নিলয়। সংগীত তত্বাবধানে যোগী স্বপন কুমার দাশ, অনুষ্ঠান তত্বাবধানে মো: মোহসীন(সাধারণ সম্পাদক, ওস্তাদ মোহনলাল দাশ স্মৃতি সংসদ)। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মো: সাইফুর রহমান ও ববিতা ইসলাম।

তারা রক্তাক্ত হাতে ক্ষমতায় এসেছিল রক্তাক্ত হাতেই বিদায় নিয়েছে : জামায়াত আমির।

ক্ষমতায় না গিয়েও অনেকে ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ৫ আগস্ট বিপ্লবের পরদিন থেকে একটি গোষ্ঠী প্রভাব বিস্তারের জন্য জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। চাঁদাবাজি, দুর্নীতি অব্যাহত রেখেছে। ক্ষমতায় না গিয়েও অনেকে ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে। প্রশাসনের ওপর প্রভাব বিস্তার করছে।

শুক্রবার দুপুর ২টায় ৮ দলের উদ্যোগে আয়োজিত চট্টগ্রাম বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।তিনি আরও বলেন, আমরা ৮ দলের বিজয় চাই না, ১৮ কোটি মানুষের বিজয় চাই। সেই আকাঙ্খার বিজয় হবে কুরআনের মাধ্যমে। চট্টগ্রাম থেকে ইসলামের বিজয়ের বাঁশি বাজানো হবে। আগামীর বাংলাদেশ হবে কুরআনের বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, গাড়ি দিয়ে পালানোর সাহস তারা হারিয়ে ফেলেছিল। সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবিকে এই অপকর্মে লাগানোর চেষ্টা করেছিল। দেশের সবকিছু তারা ধ্বংস করেছিল। ফ্যাসিবাদ বিদায় নিলেও দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়নি। ফ্যাসিবাদকে নতুন করে রুখে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না।

জামায়াতের আমির বলেন, তারা নিজেদের উন্নয়ন করেছিল। রাস্তাঘাট তৈরি করেছিল রডের বদলে বাঁশ দিয়ে। বাংলাদেশের টাকা লুট করে সিঙ্গাপুরে গিয়ে তারা ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে। শাপলা চত্বরে অসংখ্য মাওলানাকে হত্যা করা হয়েছিল। এরপর কুখ্যাত প্রধানমন্ত্রী বলেছিল রঙ দিয়ে শুয়ে ছিল। তারা রক্তাক্ত হাতে ক্ষমতায় এসেছিল রক্তাক্ত হাতেই বিদায় নিয়েছে।
আন্দোলনরত ৮ দলের ৫ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথের লড়াই অব্যাহত থাকবে ঘোষণা দিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ইসলামি দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই ঐক্য আমাদেরকে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত নিয়ে যাবে। প্রয়োজনে আবারও ৫ আগস্ট সংঘটিত হবে বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি।

৮ দলের প্রধানদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির আমির অধ্যক্ষ মাওলানা সরওয়ার কামাল আজিজী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম আনোয়ারুল ইসলাম চাঁন।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশের ইসলামি শক্তিকে কেউ নিস্তব্ধ করতে পারবে না। আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামপন্থীদের। এখানে কোনো ষড়যন্ত্র বরদাস্ত করা কবে না।তিনি বলেন, আসুন আমরা ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে চট্টগ্রামকে ইসলামের ঘাঁটি বানাই। চট্টগ্রামের মাটি ইসলামের ঘাঁটি। ৮ দলের এই শক্তি ক্ষমতায় গেলে আপনারই দেশ শাসন করবেন। কারও দাদার শক্তিতে এ দেশ আর চলবে না।

এটিএম আজহার বলেন, বাংলাদশ এমন পর্যায়ে দাঁড়াবে বিদেশিরা এখানে পড়ালেখা করতে আসবে। আসুন আমরা সবাই মিলে সেই দেশ গড়ি।খেলাফতে মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, আগামীতে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের বিজয়ের মাধ্যমে কোরআনের শাসন শুরু হবে। সোনার বাংলাদেশ দেখা শেষ, ডিজিটাল বাংলাদেশ দেখা শেষ- এবার আল কোরআনের বাংলাদেশ দেখতে চাই, ইসলামের বাংলাদেশ দেখতে চাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশে আমাদের অধিকার চাই, মালিকানা কায়েম করতে চাই। গরিব মেহনতী মানুষকে ইসলামের বার্তা পৌঁছে দিতে চাই। ইসলাম যে বৈষম্যহীনের কথা বলা হয়েছে। পুঁজিবাদর অর্থ ব্যবস্থা করব দিয়ে কোরআনের অর্থ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে হবে।

মামুনুল হক বলেন, বাংলাদেশে কোরআনের অর্থ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে নিজেদের অধিকার ও মালিকানা কায়েম করতে। পুঁজিবাদী অর্থ ব্যবস্থার কবর তৈরি করে সেই ধ্বংস স্তূপের ওপর আল্লাহর কুরআনের ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হবে ইনশাআল্লাহ। আমাদের বিগত দিনগুলো শুধু উন্নয়নের গল্প শুনানো হয়েছে। কিন্তু নিজেরাই হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেছে।

সাধারণ কেটে খাওয়া মানুষের কোন পরিবর্তন হয়নি। এই তো উন্নয়ন। বাংলার মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ উল্লেখ করে মামুনুল হক বলেন, দলীয় প্রতীকে ভোট দেওয়ার পাশাপাশি হ্যাঁ ভোটের বাক্স ভরতে হবে। নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা দেখা দিলে সরকারকে তার দায় নিতে হবে। এসময় তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেন।
সমাবেশে ৮ দলের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির নায়েবে আমির আলহাজ¦ মাওলানা আব্দুর রহমান চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের যুগ্ম

সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মুন্সি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব আলাউল্লাহ আমিন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব আল্লামা মুফতি মুসা বিন ইজহার, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আলী উসমান, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান, খেলাফত মজসিলের যুগ্ম মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সাল, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক আহসানুল্লাহ ভূঁইয়া, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য আলহাজ¦ শাহজাহান চৌধুরী, ইসলামী আন্দোলন

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুফতি রেজাউল আববার, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরী আমির মুহাম্মদ জান্নাতুল ইসলাম, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চট্টগ্রাম মহানগরী সহ-সভাপতি এডভোকেট আব্দুল মোতালেব, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আবু মুজাফফর মোহাম্মদ আনাছ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগর আমির মাওলানা এমদাদ উল্লাহ সোহাইল, খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি অধ্যাপক খুরশিদ আলম এবং বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি চট্টগ্রাম মহানগর আমির মাওলানা জিয়াউল হোসাইন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ