আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

৬৯ এর গণঅভূত্থানের শহীদ হারুনের রাষ্ট্রীয়স্বীকৃতির দাবি

ওবায়দুর রহমান, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

১৯৬৯ সালের গণঅভূত্থ্যানে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে শহীদ আজিজুল হক হারুনের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছেন গণআন্দোলনের তাঁর রাজনৈতিক সহযোদ্ধা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট আবুল কালাম মুহাম্মদ আজাদ।
বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট আবুল কালাম মুহাম্মদ আজাদ বলেন, ২৭ জানুয়ারি আসলেই আমরা একটা অনুষ্ঠান করি। একটা আলোচনা হয়, শহীদ হারুন বেদীতে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও দোয়ার মধ্যে দিয়ে হারুনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন কিন্তু আজ পর্যন্ত রাষ্ট্রীয়ভাবে তার কোন গেজেট হয় নাই। আগামী হারুন দিবসের পূর্বেই শহীদ হারুনের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও গেজেটের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় শহীদ হারুন স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে স্থানীয় হারুন পার্কে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের আলোচনা সভায় অতিথি থেকে তিনি এসব দাবি জানান।
এর আগে দিবসটি উপলক্ষে শহীদ হারুনবেদিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে।
শহীদ হারুন স্মৃতি পরিষদের আহবায়ক অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ও সংগঠনের সদস্য সচিব এম এ হাইয়ের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন শহীদ আজিজুল হক হারুনের ছোট ভাই শফিকুল আলম চাঁন মিয়া, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলী আহম্মদ খান পাঠান সেলভী, অচিন্তপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আহমদ উল্লাহ আঃ হাই, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আঃ মুন্নাফ, উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল গফুর, গৌরীপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এডভোকেট জসীম উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রহিম উদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমান মজনু, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক শিউলী চৌধুরী, উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক মনসুর আহমেদ মিলন ও শহীদ হারুন স্মৃতি সংসদের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ভিপি ফজলুল হকের সন্তান রাজিবুল হক প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ১৯৬৯ সালে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ১১ দফা আন্দোলনের সময় ঢাকা নবকুমার ইনস্টিটিউটের ছাত্র মতিউর রহমান পুলিশের গুলিতে শহীদ হলে সারাদেশে ছাত্র আন্দোলনের নতুন মাত্রা তুঙ্গে ওঠে। আর এই বিক্ষোভের জের ধরেই ২৭ জানুয়ারি সোমবার সকাল ১১টায় ময়মনসিংহের গৌরীপুর শহরে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে তৎকালীন থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ও কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি ফজলুল হকের নেতৃত্বে গৌরীপুর কলেজ থেকে ছাত্ররা একটি বিশাল মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের মধ্যবাজার ধানমহালের কাছে আসামাত্রই তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক এম. এ সামাদের নির্দেশে আন্দোলনরত ছাত্রদের মিছিলের ওপর দাঙ্গা পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। ওই সময় মিছিলের অগ্রভাগে থাকা পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই শহীদ হন ছাত্রনেতা গৌরীপুর কলেজের বাণিজ্য বিভাগের ২য় বর্ষের মেধাবী ছাত্র আজিজুল হক হারুন।
শহীদ হারুনের বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চন্ডীপাশা ইউনিয়নের ছামারুল্লাহ্ গ্রামের মৃত মিয়া বক্স ও মাতা খাতুন্নেছার পুত্র। শহীদ হারুনরা ছিলেন ৬ ভাই ও ৩ বোন। তার মাঝে এক ভাই বেঁচে আছেন। নান্দাইল-আঠারবাড়ি সড়কের পাশেই ৬৯’র গণ-আন্দেলনে শহীদ আব্দুল আজিজুল হক হারুন চিরনিদ্রায় শুয়ে আছেন। তার জরাজীর্ণ কবরটি এলাকার লোকজনের সহায়তায় কিছু ইট দিয়ে বেষ্টনী করে টাইলস করে রাখা হলেও এখন আর কেউ এর খোঁজ রাখে না।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চাকুরী স্থায়ী হচ্ছেনা চট্টগ্রাম ওয়াসার কর্মচারীদের, কাফনের কাপড় পরে বিক্ষোভ।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

দীর্ঘদিন কাজ করার পরও চাকুরী স্থায়ী না করে নতুন করে জনবল নিয়োগের উদ্যোগে কাফনের কাপড় পরে চট্টগ্রাম ওয়াসার সামনে বিক্ষোভ করেছেন দৈনিক ভিত্তিতে কর্মরত কর্মচারীরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম ওয়াসার মূল ফটকের সামনে অবস্থান নেন তারা।
আন্দোলনের বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (প্রশাসন) শারমিন আলমের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, মামলা থাকার পরও ওয়াসায় দৈনিক ভিত্তিতে কর্মরতদের স্থায়ী না করে উল্টো নতুন করে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। দীর্ঘদিন কাজ করার পরও তাদের স্থায়ী না করে নতুন করে জনবল নিয়োগের উদ্যোগ পরিকল্পিত। এসময় তারা অনতিবিলম্বে স্থায়ী নিয়োগের দাবি জানান।

তারা আরও বলেন, ওয়াসার ক্রান্তিকালে আমাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের বৈধতা দেওয়ার পরে অন্যদের নিয়োগ দিতে হবে। মামলা চলমান থাকার পরও কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি করে বিজ্ঞপ্তি ছাড়ে। হাইকোর্টকে অমান্য করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রতিবাদে আমরা এখানে মিলিত হয়েছি। বিগত বছরগুলোতেও আমরা বৈষম্যের শিকার ছিলাম এখনও বৈষম্যের শিকার। চট্টগ্রাম ওয়াসায় বিভিন্ন পদে অস্থায়ী ভিত্তিতে কর্মরত আছেন দুই শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী।

চন্দ্রগঞ্জ থানা পরিদর্শন করেন নবাগত পুলিশ সুপার মো:আবু তারেক

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

লক্ষ্মীপুর জেলার সদ্য যোগদান করা পুলিশ সুপার জেলার বিভিন্ন থানা পরিদর্শন ও থানায় কর্মরত অফিসারদের সাথে সৌজন্যে সাক্ষাৎ করেন।
তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানা আকস্মিক পরিদর্শন করেন লক্ষ্মীপুর জেলার নবাগত পুলিশ সুপার মোঃ আবু তারেক। এসময় চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ও কর্মরত সবাই ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

থানা পরিদর্শনকালে পুলিশ সুপার ফোর্সদের থাকার ব্যারাক ও বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন এবং সকল পুলিশ সদস্যদের সাথে কুশল বিনিময় করেন। এছাড়াও সকল পুলিশ সদস্যদের আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন।

উল্লেখ্য চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মোরশেদ আলম চলতি মাসের ৬ তারিখে এ থানায় যোগদান করেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ