আজঃ মঙ্গলবার ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫

রঙিন ফুলকপির চাহিদা ও দামে লাভবান কৃষক শহীদুল্লাহ

চাহিদা ও দামে লাভবান কৃষক শহীদুল্লাহ ওবায়দুর রহমান, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

একই খেতে সবুজ পাতার ভেতর থেকে দেখা যাচ্ছে দুই ধরণের রঙিন ফুলকপি। একটির রং হলুদ, অপরটির রং গোলাপি। বাজারের চাহিদা ও দামে লাভবান কৃষক মোঃ শহীদুল্লাহ । ময়মনসিংহের গৌরীপুরে এই প্রথম রঙিন ফুলকপি চাষ করে তাক লাগিয়েছেন তিনি।
উপজেলার তাঁতকুড়া গ্রামে বাড়ি মোঃ শহীদুল্লাহর। তিনি তার বাড়ির পাশে ৬৫ শতক জমির ২০ শতক জমিতে রঙিন ফুলকপি আর ৫ শতক জমিতে রেড ক্যাবেজ (বাঁধাকপি) ও ৪০ শতক জমিতে সাদা ফুলকপির চাষ করেছেন।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, এ উপজেলায় এই প্রথম দুটি জাতের রঙিন ফুলকপির চাষ করা হয়েছে। হলুদ রঙের ফুলকপির নাম ক্যারোটিনা আর গোলাপি রঙের ফুলকপির নাম ভ্যালেন্টিনা। এই উপজেলায় ২০ শতক জমিতে এই রঙিন ফুলকপির চাষ করা হয়েছে। এটি দেখতেও সুন্দর। সাদা ফুলকপির চেয়ে রঙিন ফুলকপিতে পুষ্টিগুণও বেশি। গতানুগতিক সাদা রঙের চেয়ে রঙিন ফুলকপির বাজারমূল্য বেশি।
গত রোববার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে তাঁতকুড়া গ্রামের মোঃ শহীদুল্লাহর খেতে দেখা গেছে, কিছুটা লম্বা সবুজ পাতার আড়ালে ফুটে আছে হলুদ ও গোলাপি রঙের রঙিন ফুলকপি।
কৃষক মোঃ শহীদুল্লাহ জানান, তিনি উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের মাধ্যমে এই রঙিন জাতের ফুলকপির বীজ আনেন। রঙিন দুই জাতের ফুলকপি সাধারণ ফুলকপির মতোই পরিচর্যা করতে হয়। অল্প জমিতে এই ফুলকপি চাষ করে বেশি লাভ পাওয়া যায়। রঙিন ফুলকপি চাষে বাড়তি কোন শ্রম ও খরচ নেই। সাধারণ ফুলকপি চাষের মতো শ্রম ও টাকা খরচ হয়। রঙিন ফুলকপি প্রতিটি ৬০-৭০ টাকা বিক্রি করেছেন আর সাদা ফুলকপি প্রতিটি ২৫-৩০ টাকা বিক্রি করছেন বলেও তিনি জানান।
প্রতিদিনই বিভিন্ন জায়গা থেকে রঙিন ফুলকপির ফলন দেখতে দর্শনার্থীরা ভিড় করেন বলেও তিনি জানান।
মোঃ শহীদুল্লাহ আরও জানান, এবার তিনি ২০ শতক জমিতে রঙিন ফুলকপি, ৫ শতক জমিতে রঙিন বাঁধাকপি ও ৪০ শতক জমিতে সাদা ফুলকপি চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। তিনি আনুমানিক ২ লক্ষ টাকা বিক্রি করবেন এই ফুলকপি।
শ্রীরামপুর গ্রামের বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম বলেন, রঙিন ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষ করছে তাই দেখতে আসছি। দেখতেও সুন্দুর। বাজারে এই ফুলকপির চাহিদার পাশাপাশি সাদা ফুলকপির চেয়ে দামেও বেশি।
নন্দীগ্রামের কৃষক আঃ জলিল রিপন বলেন, আগে তো সাদা ফুলকপি দেখছি। এইবারই প্রথম শহীদুল্লাহ ভাই রঙিন ফুলকপি করছেন। তা দেখে আমরা উৎসাহিত হয়েছি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারি সুমন চন্দ্র সরকার বলেন, বৃহত্তম ময়মনসিংহ অঞ্চলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় মোঃ শহীদুল্লাহকে এই প্রদর্শনীটি দিয়েছি। এখানে বেগুনি ও হলুদ রঙের ফুলকপি ও রঙিন বাঁধাকপি (রেড ক্যাবেজ) দেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে নতুন সবজি চাষে কৃষককে উদ্বুদ্ধ করা ও অধিক লাভবান হতে পারে এটা নিশ্চিত করা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন জলি বলেন, মোঃ শহীদুল্লাহ একজন আদর্শ কৃষক। তিনি সবসময় ব্যতিক্রমী কিছু করতে চায়। রঙিন ফুলকপি সাদা ফুলকপির তুলনায় অধিক পরিমাণে সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর। বাজারে এই ফুলকপির চাহিদা রয়েছে। এটি বাজারে ৬০-৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এতে রয়েছে বিটা-কেরোটিন ও এন্থোসায়োনিন্স যা রোগ প্রতিরোধ করে থাকে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

দেশ বদলাতে থ্রি জিরো থিওরি আদর্শ মডেল: চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার

চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন বলেছেন, দেশ বদলাতে তথা পৃথিবী বদলাতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর থ্রি জিরো থিওরি একটি আদর্শ মডেল। এ মডেল অনুসরণ করে আমাদের তরুণ সমাজ কাজ করলে দেশে যেমন ক্ষুধা এবং বেকারত্ব দূর হবে, তেমনি মানবজাতি জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বেঁচে থাকবে।
কমিশনার রোববার চট্টগ্রামের জেলা তথ্য অফিস

আয়োজনে চট্টগ্রাম যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অডিটোরিয়ামে ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই সব কথা বলেন।বিভাগীয় কমিশনার বলেন, আজকের বিশ্বে তরুণদের জন্য সম্ভাবনা ও সুযোগের ক্ষেত্র দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। বর্তমানে শুধু চাকরির পিছনে ছুটে সীমাবদ্ধ না থেকে নিজেদের যোগ্যতা, সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে উদ্যোক্তা হতে হবে।

সভপতির বক্তব্যে মোঃ বোরহান উদ্দীন বলেন, যুবক-যুবতীদের নিজেরা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার এবং পরিবারের লোকদেরকে ভোট দিতে উৎসাহিত করেন। তিনি বলেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে নির্বাচন উৎসব হবে। এই উৎসবে সকল প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আশা করে সরকার। এজন্য নির্বাচনী পরিবেশকে অবাধ, সুষ্ঠু ও ভয়হীন করার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

জেলা তথ্য অফিস, চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোঃ বোরহান উদ্দীন সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ আবুল বাশার, আঞ্চলিক তথ্য অফিস, চট্টগ্রামের সিনিয়র তথ্য অফিসার বাপ্পী চক্রবর্তী, সরকারি শারীরিক শিক্ষা কলেজের অধ্যক্ষ এস এম গিয়াসউদ্দিন বাবর, আব্দুল বারী প্রমূখ বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন । যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণরত প্রায় ১৫০ জন প্রশিক্ষণার্থী এবং প্রিন্ট ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ঠাকুরগাঁওয়ে নবাগত পুলিশ সুপারের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা

ঠাকুরগাঁওয়ে নবাগত পুলিশ সুপার বেলাল হোসেনের সাথে স্থানীয় সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৭ ডিসেম্বর রবিবার দুপুর ১২টায় জেলা পুলিশ সুপারের কনফারেন্স রুমে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।এসময় পুলিশ সুপার বেলাল হোসেন বলেন, মিডিয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষের বাকস্বাধীনতা একমাত্র মিডিয়ার মাধ্যমেই রক্ষা করা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের সেবা করাই আমার প্রথম কাজ। মাদক সব অপরাধের মূল উৎস। তাই যেকোনো মূল্যে সমাজকে মাদকমুক্ত করতে হবে। এসময় যানজট, মাদকমুক্ত করতে ও বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন পুলিশ সুপার।


এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) খোদাদাদ হোসেন,সহকারী পুলিশ সুপার রাণীশংকৈল সার্কেল স্নেহাশীষ কুমার দাস, ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবের সভাপতি মনসুর আলী, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লুৎফর রহমান মিঠু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান তানু সহ জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।উল্লেখ্য,গত ২৯ নভেম্বর বেলাল হোসেন ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ