আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে মতবিনিময় সভা

শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলার কোন বিকল্প নেই ঃ জেলা প্রশাসক চট্টগ্রাম

ডেস্ক নিউজ:

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার (সিজেকেএস) সভাপতি আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেছেন, আমাদের দেশে ফুটবল ও ক্রিকেট খেলা খুবই জনপ্রিয় হলেও ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস, ভলিবল ও দাবা খেলার জনপ্রিয়তার কমতি নেই। শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলার কোন বিকল্প নেই। এ লক্ষ্যে চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলার ১৯১টি ইউনিয়নে খেলার মাঠ তৈরীর কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মাঠগুলো পুরোপুরি খেলার উপযোগী হয়ে গেলে তৃণমূল থেকে আমরা খেলোয়ার তৈরী করতে পারবো এবং তাদের মাধ্যমে সব ধরণের খেলা উপজেলা ও জেলা হয়ে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে পারবো। এ জন্য রমজান পরবর্তী প্রত্যেক স্কুল-কলেজে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে কমপক্ষে ২টি খেলায় অংশ নিতে হবে। আজ ১২ মার্চ মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত খেলাধুলার মানোন্নয়ন ও প্রসারে সকল উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মান ও দক্ষতা সম্পন্ন খেলোয়ার তৈরী করার জন্য আন্তঃওয়ার্ড, আন্তঃ ইউনিয়ন, পৌর ও উপজেলা ভিত্তিক খেলাধুলার পাশাপাশি আন্তঃ স্কুল-আন্তঃকলেজ পর্যায়ে বছরে ৮টি না হলেও কমপক্ষে ৪টি ইভেন্টে খেলাধুলার আয়োজন করতে হবে। আমরা এ ব্যাপারে একটি ক্যালেন্ডার করবো। বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতা শেখ কামাল গোল্ডকাপ ফুটবল, ক্রিকেট ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস, ভলিবল ও দাবা টুর্ণামেন্টের পাশাপাশি বিভাগীয় কমিশনার কাপ, জেলা প্রশাসক কাপ, মেয়র কাপ বা এলাকার গুণী ব্যক্তিদের নামে খেলাধুলার আয়োজন করতে হবে। সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাথে সম্পৃক্ত রাখতে হবে। প্রত্যেক উপজেলায় একটি ক্রীড়া সংস্থার কার্যালয় ও শিল্পকলার জন্য একটি করে রুম রাখার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণকে নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক।
সিজেকেএস সভাপতি বলেন, ফান্ড বাড়লে খেলাধুলার মান বৃদ্ধি পাবে। এ জন্য উপজেলা পর্যায়ে পূর্বের একাউন্ট বন্ধ করে দিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক মিলে যৌথ ব্যাংক একাউন্ট করতে হবে। খেলাধুলার মানোন্নয়নে এডিপি, টিআর, কাবিখা থেকে ও জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার ধর্ণাঢ্য ব্যক্তিদের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার ফান্ড বৃদ্ধি করা যেতে পারে। প্রত্যেক উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতিকে জেলা ক্রীড়া সংস্থার কাউন্সিলর করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রস্তাব প্রেরণের তাগিদ দেন তিনি।
সভায় সিজেকেএস সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দিন বলেন, সুস্থ সবল জাতি গঠনে খেলাধুলার গুরুত্ব অপরিসীম। আমাদের ছেলে-মেয়েরা পড়ালেখার নামে কোথায় যাচ্ছে, র্কা সাথে মিশছে, কোন, পরিবেশে মিশছে তা প্রত্যেক অভিভাবককে খোঁজ-খবর রাখতে হবে। মাদক ও অন্যান্য অপকর্ম থেকে দুরে রাখতে সন্তানদেরকে পড়ালখার পাশাপাশি বিভিন্ন খেলাধুলায় পারদর্শী করে তুলতে হবে। ক্রীড়াঙ্গনকে যত বেশি সক্রিয় ও সমৃদ্ধ করতে পারবো ততই ভবিষ্যৎ প্রজন্ম অনৈতিক ও অপকর্ম থেকে বিরত থাকবে। জিরো থেকে শুরু করলে আমরা ভালো করতে পারবো।
তিনি বলে, শুধু টুর্ণামেন্টে অংশ নিলে হবে না, নিয়মিত খেলাধুলা করতে হবে। উপজেলা পর্যায় থেকে যে সকল খেলোয়ার উঠে আসবে তাদেরকে আমরা সিজেকেএস-এ খেলার সুযোগ সৃষ্টি করে দেব। উপজেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিতব্য ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় আর্থিক অনুদানের ঘোষনা দেন আ.জ.ম নাছির।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার (সিজেকেএস) সভাপতি আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন সিজেকেএস সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দিন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব মোঃ আবদুল মালেক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সাদি-উর রহিম জাদিদ ও সিজেকেএস যুগ্ম সম্পাদক অহিদ সিরাজ চৌধুরী ¯^পনসহ প্রত্যেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সিজেকেএস সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রামে স্কুল ও দোকানে আগুন

চট্টগ্রাম মহানগরীর ইপিজেড থানাধীন কলসি দিঘির পাড় উত্তর রেল গেট এলাকায় একটি কেজি স্কুল ও পাশের দোকানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার ভোরে হযরত শাহ আলী কেজি স্কুল ও দোকানে আগুন লাগে।

সিইপিজেড ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার শাহাদাত হোসেন জানান, ভোরে খবর পেয়ে সোয়া ৬টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে। প্রায় ৪০ মিনিটের চেষ্টায় সকাল পৌনে ৭ টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। তবে দ্রুত পদক্ষেপে প্রায় ৫ লাখ টাকার মালামাল উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে, তা জানা যায়নি।

মশা নিধনে আমেরিকান প্রযুক্তির লার্ভিসাইড বিটিআই ব্যবহার শুরু চসিকের।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন প্রথমবারের মতো মশা নিয়ন্ত্রণে আমেরিকান প্রযুক্তির লার্ভিসাইড বিটিআই ব্যবহারের কার্যক্রম শুরু করেছে। সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের নির্দেশক্রমে সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় ৩৯ নং দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ড কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি শুরু হয়। কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব মো. আশরাফুল আমিন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মোঃ শরফুল ইসলাম মাহি, কীটতত্ত্ববিদ রাশেদ চৌধুরী এবং অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) মশা নিয়ন্ত্রণে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করে নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর আগে গত ২৬ মার্চ নগরীর ১৭ নম্বর বাকলিয়া ওয়ার্ডের সৈয়দ শাহ রোডের সামনের খালে পরীক্ষামূলকভাবে বিটিআই লার্ভিসাইড প্রয়োগ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকে আজ থেকে ওয়ার্ড পর্যায়ে বিটিআই প্রয়োগ শুরু করল চসিক।

চসিকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত ফগিং, লার্ভিসাইড ছিটানো, নালা–নর্দমা পরিষ্কার, আবর্জনা অপসারণ এবং জনসচেতনতা কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে। নতুন প্রজন্মের আমেরিকান প্রযুক্তির বিটিআই ব্যবহারে মশার লার্ভা ধ্বংসে আরও কার্যকর ফল পাওয়া যাবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।

বিটিআই হলো একটি প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন ব্যাকটেরিয়াভিত্তিক লার্ভিসাইড, যা বিশেষভাবে মশা, ব্ল্যাক ফ্লাই ও ফাঙ্গাস গ্ন্যাটের লার্ভা দমনে ব্যবহৃত হয়। এটি পানিতে প্রয়োগ করার পর লার্ভা খাদ্যের সঙ্গে বিটিআই গ্রহণ করে এবং ব্যাকটেরিয়ার উৎপাদিত ক্রিস্টাল প্রোটিন টক্সিন লার্ভার পরিপাকতন্ত্রে কার্যকর হয়ে তাদের দ্রুত নিধন ঘটায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বিটিআই মানুষের শরীর, গৃহপালিত প্রাণী, মাছসহ অন্যান্য পরিবেশবান্ধব প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর নয়; এমনকি উদ্ভিদ ও জলজ বাস্তুতন্ত্রেও কোনো বিষাক্ত প্রভাব ফেলে না। বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গু, জিকা ও চিকুনগুনিয়ার মতো বাহক–বাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে এটি একটি নিরাপদ ও বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত সমাধান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ