আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

দুবাই পৌঁছাবে ২২ এপ্রিল ২৩ নাবিকের মধ্যে ২১ জন ফিরবেন চট্টগ্রামে

দুবাইয়ের পথে এমভি আবদুল্লাহ চারপাশে লোহার কাঁটাতারসহ বাড়তি নিরাপত্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

 জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পাওয়া বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ দুবাইয়ের পথে রয়েছে। আগামী ২২ এপ্রিল দুবাইয়ের আল হারমিয়া বন্দরে নোঙর করবে বলে জানা গেছে। জাহাজের ২৩ জন নাবিকের দুজন দুবাইয়ে সাইন অফ করার কথা জানিয়েছেন। বাকি ২১ নাবিকের জাহাজটি নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আসার কথা রয়েছে। দুবাইয়ের পথে থাকা এমভি আবদুল্লাহ এখনও সাগরের ঝুঁকিপূর্ণ অংশে থাকায় বাড়তি নিরাপত্তা নিয়েছে; জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত জাহাজটি আগামী ২২ এপ্রিল সেখানকার আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছানোর আশা করছে।গতকাল সোমবার জাহাজের মালিকপক্ষ কবির গ্রুপ এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, নতুন করে জলদস্যুদের হামলার শিকার না হতে প্রয়োজনীয় সব রকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কয়লাবাহী জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের দিকে এগিয়ে চলেছে।শিল্প গ্রুপটির জাহাজের অবস্থান বিষয়ক দৈনিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
এতে বলা হয়, এখনও ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায়’ থাকায় সেখানে চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।এর অংশ হিসেবে এমভি আবদুল্লাহর রেলিংয়ের চারপাশে লোহার কাঁটাতার, ডেকে ফায়ার হোস, জাহাজে নিরাপত্তার জন্য সংরক্ষিত এলাকা সিটাডেল, ইমার্জেন্সি ফায়ার পাম্প এবং সাউন্ড সিগন্যাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
কেএসআরএমের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নাবিকেরা কখন সাইন অফ করবেন বা জাহাজ কীভাবে পরবর্তী ভয়েজগুলোতে যাত্রা করবে সেটি পরের বিষয়। আমরা আপাতত নাবিকদের সুস্থভাবে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি উদযাপন করছি। ঈদ এবং নববর্ষের আনন্দের সাথে নাবিকদের সুস্থভাবে মুক্তি পাওয়ার বিষয়টি ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে বলে জানান তারা।
জিম্মি নাবিকদের উদ্ধৃতি দিয়ে চট্টগ্রামের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, জলদস্যুরা এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে। তারা সব বিষয়ে নাবিকদের তটস্থ রাখত। গত ১২ মার্চ মোজাম্বিক থেকে আরব আমিরাতে যাওয়ার সময় ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে এমভি আবদুল্লাহ। জাহাজটি জিম্মি করে সোমালিয়ার উপকূলে নেওয়া হয়। ৯ দিনের মাথায় জলদস্যুরা মুক্তিপণের জন্য যোগাযোগ শুরু করে। দর কষাকষির পর ৩২ দিনের মাথায় ২৩ নাবিকসহ জাহাজটি মুক্তি পায়।কবির গ্রুপের মিডিয়া ফোকাল পার্সন মিজানুল ইসলাম বলেন, জাহাজ ২২ এপ্রিল দুবাই পৌঁছাবে। যাত্রাপথে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
গত রোববার দুপুরে এমভি আবদুল্লাহর চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খানের দেওয়া ফেইসবুক পোস্টের একটি ছবিতে মুক্ত নাবিকদের পাশে অপারেশন আটলান্টার কমান্ডোদের দেখা যায়। গত সোমবার বিকেলে ইইউএনএভিএফওআর অপারেশন আটলান্টা মিশন তাদের টুইট বার্তায় এমভি আবদুল্লাহকে পাহারা দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার ছবি প্রকাশ করে।
এরপর রাতে কবির গ্রুপ তাদের প্রতিবেদনে জানায়, নিরাপদ এলাকায় না পৌঁছা পর্যন্ত ইইউএনএভিএফওআর এর য্দ্ধুজাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে পাহারা দিয়ে নিয়ে যাবে।
সোমালি উপকূল পেরিয়ে এডেন উপসাগর হয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৌঁছাবে এমভি আবদুল্লাহ। এরমধ্যে এডেন উপসাগর পর্যন্ত সাগর নিরাপদ নয়। এছাড়া সমুদ্র পথে নিরাপত্তা ঝুঁকি মূল্যায়নকারী এবং ঝুঁকি হ্রাসে পরামর্শদাতা এমব্রেই গার্ডিয়ান সার্ভিস নামের যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের সেবা নিয়েছে জাহাজের মালিক পক্ষ এসআর শিপিং।
এর আগে গত শনিবার গভীর রাতে ৩২ দিন সোমালিয়া জলদস্যুদের হাতে জিম্মি থাকা এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি মুক্তি পায়। বিপুল অংকের অর্থ পরিশোধের পর জাহাজটিকে মুক্তি দেয় দস্যুরা। তবে ঠিক কী পরিমাণ ডলার পরিশোধ করতে হয়েছে সেই সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ছোট্ট সী প্ল্যান থেকে ফেলা বস্তাগুলোর সাইজ দেখে ডলারের পরিমাণ যে অনেক হবে তা বোঝা যাচ্ছিল। ডলার ভর্তি তিনটি বস্তা সী প্ল্যান থেকে ফেলতে দেখা যায়। হলদে ব্যাগে ভরে সাগরে ফেলা ডলার স্পিডবোটে থাকা জলদস্যুরা তুলে নেয়। তারা ডলারের জন্য বেশ কয়েকটি স্পিড বোট নিয়ে সেখানে অবস্থান করছিল। ওই সময় জাহাজটিও কাছে নোঙর করা ছিল। জাহাজের ক্যাপ্টেনসহ নাবিকদের সকলকে ডেকে এনে লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। উপরে যখন সী প্ল্যান চক্কর মারছিল তখন ডেকে লাইনে দাঁড় করানো নাবিকদের পেছন থেকে অস্ত্র তাক করে রাখা হয়েছিল। সী প্ল্যান থেকে নাবিকদের সকলে সুস্থ আছে এমনটি নিশ্চিত হওয়ার পর ডলারের বস্তা ফেলা হয়। পুরো চিত্রটির ভিডিও ধারণ করে দস্যুদের সাথে জাহাজে দোভাষী হিসেবে কাজ করা সোমালিয়ান; যে নিজে মুক্তিপণ নিয়ে দর কষাকষিসহ পুরো প্রক্রিয়ার প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করে। তৃতীয় একটি পক্ষের মাধ্যমে দস্যুদের সাথে সমঝোতা করা হয়। বীমা কোম্পানি দস্যুদের দাবি অনুযায়ী অর্থ পরিশোধ করে। অবশ্য জাহাজটির এই ধরনের দুর্যোগে বীমা সহায়তার জন্য জাহাজ মালিককে সংশ্লিষ্ট বীমা কোম্পানির সাথে সম্পাদিত চুক্তি মোতাবেক প্রতি বছর বড় অংকের ‘কিডন্যাপ অ্যান্ড র‌্যানসম’ প্রিমিয়াম পরিশোধ করে আসতে হয়েছে। দস্যুদের সাথে দর কষাকষির পুরো প্রক্রিয়ায় বীমা কোম্পানি সক্রিয় ছিল বলে সংশ্লিষ্টদের উদ্ধৃতি দিয়ে চট্টগ্রামের সিনিয়র ক্যাপ্টেন আতিক ইউ খান জানান। নাবিকদের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি জানান, সী প্ল্যান থেকে ডলারভর্তি ব্যাগ ফেলার পর দস্যুরা তা সংগ্রহ করে জাহাজে ওঠে। গত শনিবার বিকাল তিনটা–চারটার মধ্যে তাদের হাতে ডলার পৌঁছে যায়। পরে প্রায় আট ঘণ্টা ধরে সকলে মিলে ডলারগুলো গোনে। ডলারগুলো আসল কিনা পরীক্ষা–নিরীক্ষা করিয়ে আনা হয়। ডলার গুনে পরিমাণ মতো পাওয়ার পর নিজেরা ভাগবাটোয়ারা করে। ডলার পাওয়ার প্রায় আট ঘণ্টা পর শনিবার রাত ১২টা নাগাদ দস্যুরা জাহাজ থেকে নেমে যায়। এর পরপর জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের হারমিয়া বন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন নৌবাহিনীর দুটি যুদ্ধজাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে পাহারা দিয়ে সোমালিয়ার সমুদ্রসীমা পার করে দেয়। জাহাজটি এখন সোমালিয়া এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাঝামাঝি রয়েছে। আগামী ২২ এপ্রিল এমভি আবদুল্লাহ দুবাইয়ের হারমিয়া পৌঁছাবে বলে গতকাল কেএসআরএমের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুর রহমান আজাদীকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, দুজন নাবিক দুবাইয়ে সাইন অফ করবেন। বাকি ২১ জন জাহাজ নিয়ে চট্টগ্রাম ফিরবেন। এজন্য নাবিকদের ফিরতে আরো বেশ কয়েকদিন সময় লাগতে পারে।
জানা গেছে, এমভি আবদুল্লাহ গত বছর কেএসআরএমের বহরে যুক্ত হয়। এর আগে জাহাজটির নাম ছিল এমভি গোল্ডেন হক। জাহাজটি প্রায় ৬০ হাজার টন খোলা পণ্য পরিবহন করতে পারে। বর্তমানে দুবাইয়ের পথে থাকা এই জাহাজটি ২২ এপ্রিল হারমিয়া বন্দরে পৌঁছার পর জাহাজে থাকা কয়লা খালাস করবে। এরপর জাহাজটি নতুন কোনো ভয়েজ শুরু না করে চট্টগ্রাম ফিরে আসতে পারে। এর আগে ২০১০ সালে একই কোম্পানির জাহাজ এমভি জাহান মনি জলদস্যুদের কবলে পড়ে। মুক্তিপণ পাওয়ার পর ১০০ দিন পর এমভি জাহান মনি নাবিকসহ মুক্তি পেয়েছিল।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

শান্তিতে নোবেল বিজয়ী নার্গিস ইরানে গ্রেপ্তার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

শান্তি নোবেল পুরস্কার বিজয়ী নার্গিস মোহাম্মাদিকে ইরানি নিরাপত্তা বাহিনী গ্রেপ্তার করেছে। এ মাসের শুরুর দিকে মৃত্যুবরণ করা একজন আইনজীবীর স্মরণসভায় যোগ দেওয়ার সময় ২০২৩ সালের এ নোবেল বিজয়ীকে আটক করা হয় বলে তার সমর্থকেরা জানিয়েছেন।

২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে কারামুক্তির অস্থায়ী অনুমতি পান মোহাম্মাদি। মোহাম্মাদির ফাউন্ডেশন এক্স (পূর্বে টুইটার)-এ দেওয়া এক পোস্টে জানিয়েছে- একজন আইনজীবীর স্মরণসভায় তিনি যোগ দিয়েছিলেন। ঐ আইনজীবীকে গত সপ্তাহে তার কার্যালয়ে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।

নার্গিস মোহাম্মাদি বহু বছর ধরে ইরানে মানবাধিকার ও নারী স্বাধীনতার পক্ষে সংগ্রাম করে আসছেন এবং বারবার কারারুদ্ধ হয়েছেন। তার গ্রেপ্তার বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

বোয়ালখালীতে বিলুপ্ত পথে কালোজিরা ধানের আবাদ।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বোয়ালখালীতে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে কৃষকের ঐতিহ্যবাহী কালোজিরা ধানের আবাদ। এক সময় কৃষকরা বিভিন্ন ধানের পাশাপাশি এই কালো জিরা ধানের চাষও করত। অন্যান্য ধানের চেয়ে খরচ বেশি ও ফলন কম হওয়ায় কালো জিরা ধান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে কৃষকরা। ফলে এই কালো জিরা ধানের জায়গা দখল করে নিয়েছে উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান। আধুনিক উচ্চ ফলনশীল জাতের ধানের প্রতি কৃষকদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং বীজের অভাবেও এই ঐতিহ্যবাহী ধানের আবাদ হ্রাস পাচ্ছে বলে জানান উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকেরা জানান । তবে সরকারিভাবে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা কিংবা প্রদর্শনী পাওয়া গেলে ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথ থেকে উত্তরনের সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তারা।

বুধবার বিকেলে বোয়ালখালীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, আমন মৌসুমে সর্বত্রই চাষ হয়েছে বিভিন্ন জাতের উচ্চ ফলনশীল ধানের। কালো জিরা ধানের চাষ একে বারেই নেই বললেই চলে। হাতে গুনা কয়েকজনে এই চাষ করেছে তাও সীমিত আকারে। তবে সুখের কথা, বিচ্ছিন্নভাবে কম পরিমাণে হলেও বিলুপ্তপ্রায় কালোজিরা ধানের চাষ করেছেন সারোয়াতলীর কৃষক নুরুল আলম , করলডেঙ্গার কৃষক কাওসার, পোপাদিয়া কৃষক আনোয়ার।

তিনি বলেন, একসময় প্রতিটি কৃষক পরিবারের ঐতিহ্য ছিলো সুগন্ধিযুক্ত কালোজিরা, বিন্নী, কাশিয়াবিন্নি, সরুসহ নানান জাতের ধান। এ ধান কাটার সময়কে ঘিরে গ্রাম বাংলা মেতে উঠত নবান্নের উৎসবে। এ চিকন চাল দিয়ে পিঠা-পুলি, পোলাও, বিরিয়ানি, খিচুড়ি, ক্ষির, পায়েস, ফিরনি ও জর্দাসহ আরও সুস্বাদু মুখরোচক নানা ধরনের খাবার তৈরী করে খাওয়ানো হতো পাড়া প্রতিবেশীদের । আবহমান বাংলার ঐতিহ্য অনুযায়ী শ্বশুরবাড়িতে জামাই এলে জামাই পাতে সুগন্ধিযুক্ত চিকন চালের ভাত দিয়ে আপ্যায়ন করা হতো। বর্ণাঢ্য পরিবার থেকে শুরু করে নিন্ম মধ্যবিত্ত হলে ও একবেলা অবশ্যই এই চালের ভাত রান্না করা হতো। সেইসব এখন অতীত দিনের স্মৃতি। ক্রমবর্ধমান খাদ্যের চাহিদা মেটাতে সারাদেশ থেকেই হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতিবান্ধব এ সমস্ত জাতের দেশি ধান।

কৃষকরা জানান , কালোজিরা ধানের ফলন হয় কম। কানিপ্রতি অন্য জাতের ধান যেখানে ৮০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০ আড়ি উৎপাদন হয় সেখানে এ জাতের ফলন হয় সর্বোচ্চ ৩০ আড়ি পর্যন্ত। তবে বাজারে দাম দ্বিগুণ পাওয়া যায়। প্রতি কেজি চাল ৮০ থেকে ১২০ টাকা বিক্রি করা যায় । লাভের কথা মাথায় রেখে কৃষকেরা আমন ধানে বেশি আগ্রহী হলে ও এখন ও গ্রামের গৃহস্থ পরিবারের কাছে এ ধানের কদর সবসময়ই রয়েছে। আর তাছাড়া হাট বাজারে এখন আর এই চাল পাওয়া যায় না। এখন প্রায় বিলুপ্তের পথে ঐতিহ্যবাহী এসব সুগন্ধি ধান।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, গত ৫ বছর পূর্বে বোয়ালখালীতে ২৫ হেক্টর কৃষি জমিতে কালোজিরা ধান চাষ হতো। বর্তমানে ৫ হেক্টর জমিতে এ ধানের চাষ করেছেন কৃষকেরা। স্থানীয়ভাবে ‘কালোজিরা ধানের আবাদ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে কৃষি অফিসার মো. শাহানুর ইসলাম বলেন, বর্তমানে আমন ধানের অনেক উচ্চ ফলনশীল জাত রয়েছে, যে গুলোর ফলন অনেক বেশী এবং রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম। অন্যান্য উচ্চ ফলনশীল জাতের তুলনায় কালোজিরা ধানের ফলন কম হয়। ফলন কম হলেও বাজারে এর দাম বেশি থাকে, খরচ বেশি হওয়ার কারণে কৃষকরা এ চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ