আজঃ শনিবার ১৭ মে, ২০২৫

রাজাখালী খেয়াঘাটে সেতু নির্মাণের দাবিতে  মহাসড়কে এলাকাবাসীর  মানববন্ধন

মশিউর রহমান রাসেল, ঝালকাঠি প্রতিনিধি।।

নলছিটি-বাকেরগঞ্জ সংযুক্ত করতে জোলাখালি সেতু নির্মাণের দাবিতে বরিশাল -পটুয়াখালী মহাসড়কের রাজাখালী (জোলাখালি) খেয়াঘাট এলাকায় আজ বুধবার ১৭ এপ্রিল সকালে  মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারক লিপি প্রদান করেছে এলাকাবাসী।
নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের জোলাখালি এবং বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরাদি ইউনিয়ন এর পশ্চিম চরাদি এবং খাসের হাট বাজার  এলাকার সংযোগ স্থাপনের জন্য জোলাখালি এলাকায় খায়রাবাত নদীতে একটি সেতু নির্মানের দাবি জানিয়ে ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়ন এর সীমান্তবর্তী একটি এলাকা বাকেরগঞ্জের চরাদি এবং খাসের হাট, খায়রাবাদ নদী যেটিকে এই উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে। সেখানে অন্তত ১০-১৫ হাজার লোকের বসবাস। কিন্তু চিকিৎসার  জন্য তাদের নদী পারাপারের একমাত্র ভরসা বৈঠা বাওয়া একটি মাত্র নৌকা। তাও জোলাখালি খেয়াঘাটে সন্ধ্যা ০৭ টার পর বন্ধ,আর খাসের হাট খেয়া ১০ টার পর বন্ধ হয়ে যায়।
নদী বেষ্ঠিত এবং বরিশাল পটুয়াখালী  মহা সড়ক এর সাথে সংযুক্ত না হওয়ার কারনে মালামাল বা রোগী পরিবহনে তেমন গাড়িও চলাচলের ব্যবস্থা নেই।বরিশাল নিতে হলেও তাদের একমাত্র পথ রানিরহাট ব্রিজ হয়ে যাওয়া, কিন্তু ততক্ষনে রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে যায়।একটি সেতুর অভাবে তাদেরকে প্রায় পনের কিলোমিটার বাড়তি পথ ঘুরতে হয়,যারফলে মুমূর্ষু অবস্থায় রোগীদের বাচানোও সম্ভব হয় না।
এছাড়াও এই বিচ্ছিন্ন এলাকাটিতে ব্যবসা বানিজ্যে অন্যতম সমস্যা পন্য পরিবহনে, যদি ছোট্ট এই সেতুটি নির্মাণ করা হয় তাহলে পন্য পরিবহনে ভোগান্তি লাঘব হলে ব্যাবসা বানিজ্য সম্প্রসারণের সুযোগ হবে।
এছাড়াও  চরাদি থেকে প্রায় সকল ছাত্র ছাত্রীদের দপদপিয়া স্কুল এবং কলেজে পড়ালেখা করতে খেয়া পার হয়ে আসতে হয়।যাদের সব সময়ই অনেক ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয়,বিশেষ করে বর্ষাকালে সেই ঝুঁকি বেড়ে যায় কয়েক গুন।অনেক সময়ই পা পিছলে পরে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে, বই খাতা নস্ট হয়ে যাচ্ছে।
মানববন্ধনে নলছিটির বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করা সমাজকর্মী বালী তূর্য বলেন, চরাদী এলাকাটি বাকেরগঞ্জের অধীনে হলেও তাদের ওঠাবসা,পড়াশোনা  সব নলছিটির দপদপিয়ার সাথে।কিন্তু ছোট একটি সেতুর অভাবে দীর্ঘদিন এই জনপদের মানুষ অবর্ননীয় কস্টে এবং ভোগান্তিতে রয়েছেন।এদের বাচ্চাদের পড়ালেখায় ঝুঁকি, চিকিৎসা করাতে ঝুঁকি, যাতায়াতে ঝুঁকি, এত ঝুঁকি নিয়ে তারা কিভাবে মূল ধারায় সংযুক্ত হবে। যদি এখানে সেতুটি নির্মান করা হয় তাহলে এটি বরিশাল বিভাগের এবং মূল মহাসড়কের সাথে সংযুক্ত হয়ে গেলেই তাদের ব্যাপক বৈপ্লবিক পরিবর্তন হবে।কৃষি এবং শিল্পের ব্যাপক উন্নয়ন হবে,এতে স্থানীয়দের জীবনধারার ব্যাপক উন্নয়ন হবে।বর্তমান সরকার, উন্নয়নের সরকার, তাই আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যাতে দ্রুতই এই সমস্যাটির সমাধান করা হয়।
এছাড়াও চরাদি এলাকার সমাজসেবক মো:ফিরোজ আলম বলেন,ছোট বেলা থেকেই এই একটি সেতুর অভাবে অবর্ননীয় কস্টে এবং ভোগান্তিতে জীবন কাটছে আমাদের।বৃদ্ধ, গর্ভবতী নারীদের চিকিৎসার জন্য বরিশালে নিতেও ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হয়।এক প্রকার বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো হওয়ায় আমরা বিভাগীয় শহর এবং মহাসড়কের পাশে থেকেও সুবিধাবঞ্চিত হচ্ছি।আমরা এখানে দ্রুত একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানাই।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন চরাদী এলাকার জুয়েল সিকদার,কামাল সিকদার,তোফায়েল ফকির,জাকির সিকদার,রুবেল মৃধা,হুমায়ুন সিকদার,কবির হোসেন মাঝী।
মানববন্ধন শেষে বরিশাল জেলা প্রশাসক ও বরিশাল -০৬ সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য বরাবর স্মারক লিপিও পেশ করা হয়।
ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধনে প্রায় তিন শতাধিক লোক উপস্থিত ছিলেন। সরেজমিনে  জোলাখালি খেয়াঘাটে এবং খাসেরহাট খেয়াঘাট ঘুরে দেখে স্থানীয়দের সাথে কথা বলতে গেলে তাদের দূর্ভোগের করুন চিত্র ফুটে ওঠে।
এই সেতুটি ঝালকাঠি -০২ এবং বরিশাল -০৬ দুই সংসদীয় আসনের সংযোগ  হওয়ায় উভয় সংসদ সদস্যই জনগণের এই প্রানের দাবিটি বাস্তবায়ন করতে যথাযথ চেষ্টা করবেন বলে প্রত্যাশা সকলের।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

নেত্রকোনায় পাহাড় না কেটেই রাস্তায় উন্নয়ন।

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার লেংঙ্গুরা ইউনিয়নের একটি পুরোনো পাহাড়ি পথকে চলাচলযোগ্য করতে গিয়ে বন ও পরিবেশ ধ্বংসের অভিযোগ উঠলেও স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, প্রকৃতপক্ষে কোনো পাহাড় কাটা হয়নি, কাটা হয়নি গাছও। সাম্প্রতিক কালবৈশাখী ঝড়ে উপড়ে পড়া গাছগুলো সরিয়েই রাস্তাটি সংস্কারের কাজ চলছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লেংঙ্গুরা ইউনিয়নের কাঁঠালবাড়ী সুবেন ঘাঘড়ার টিলা থেকে চৈতানগর মহসিন মেম্বারের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ১ দশমিক ১২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পথ কয়েক দশক ধরে পাহাড়ি জনগোষ্ঠী এবং পর্যটকদের যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বর্ষায় কাঁদায় মাখা পিচ্ছিল এই পথে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে। দীর্ঘদিনের দাবি পূরণে স্থানীয় প্রশাসন কাবিখা প্রকল্পের আওতায় রাস্তাটির সমতলকরণ ও মাটি ফেলার কাজ শুরু করেছে।

লেংঙ্গুরা ইউপি চেয়ারম্যান ও কলমাকান্দা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সাইদুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, “এটি বহু পুরোনো চলাচলের রাস্তা। এখানে কোনো নতুন পাহাড় কাটা হয়নি। ঝড়ে ভেঙে পড়া কিছু গাছ রাস্তা থেকে সরিয়ে সংস্কারকাজ চলছে। এলাকাবাসীর বহুদিনের চাওয়া ছিল এই পথটি উন্নয়ন করার—এখন সেটিই বাস্তবায়ন হচ্ছে।”

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, পাহাড়ের গা ঘেঁষা পুরোনো এই পথে মাটি ফেলে সমান করা হয়েছে। আশপাশে পাহাড় কাটা বা গাছ কাটার কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি। স্থানীয় বাসিন্দারাও জানিয়েছেন, এটি পুরোনো পথ, নতুন করে কিছুই ধ্বংস করা হয়নি।

এই পথে হেঁটে যাচ্ছিলেন নব্বই বছরের ক্ষুদ্র নৃ-জাতিগোষ্ঠীর সদস্য সুবেন মানখিন। তিনি বলেন, “আমি ছোটবেলা থেকে এই রাস্তা দিয়ে বাবা-দাদার সঙ্গে চলাফেরা করেছি। অনেক কষ্ট করে চলতে হতো। এখন রাস্তা সংস্কার হওয়ায় আমরা খুব খুশি।”

স্থানীয়রা—তপন সাংমা, চুহিন হাজং, জুই ঘ্রা, পীযূষ বণিক ও রফিকুল ইসলাম—সবাই বলেন, “এটি পুরোনো রাস্তা, নতুন করে কিছুই কাটা হয়নি। বরং আমাদের চলাচলের সুবিধার জন্য যেই পথে আমরা আগে চলতাম, সেটাই উন্নয়ন করা হচ্ছে। এজন্য আমরা উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।” একইসঙ্গে তারা রাস্তা পাকাকরণের দাবি জানান সরকারের কাছে।

এ বিষয়ে লেংঙ্গুরা বনবিভাগের বিট অফিসে কর্মরত বনরক্ষী আখতারুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত বলেন, “এই রাস্তা পাহাড়ি জনগোষ্ঠী ও পর্যটকদের যাতায়াতের একমাত্র পথ। পুরোনো রাস্তাটিকে কাবিখা প্রকল্পের আওতায় সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন করে কোনো পাহাড় কাটা হয়নি।”

স্থানীয়দের অভিমত, উন্নয়ন প্রকল্পে পরিবেশ সংরক্ষণ ও জনগণের স্বার্থ—উভয়কেই সমান গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এই প্রকল্পে সেই ভারসাম্য বজায় রেখেই কাজ হচ্ছে বলে তারা মত দিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে চট্টগ্রামে আনন্দ মিছিল।

‘বোয়ালখালী নাগরিক সমাজ’ নামে একটি সংগঠন চট্টগ্রামের কালুরঘাটে সড়কসহ রেলসেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করায় আনন্দ মিছিল করেছে। তারা প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।বৃহস্পতিবার সকালে বিদ্যমান শতবর্ষী কালুরঘাট সেতুর পশ্চিম প্রান্ত থেকে মিছিল শুরু হয়ে পূর্ব প্রান্তে গিয়ে শেষ হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।

মিছিল শেষে বোয়ালখালী-কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুস্তফা নঈমের সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক মোহাম্মদ আলীর পরিচালনায় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য দেন সাংবাদিক সৈয়দ জাকির হোসাইন, মনজুর মোর্শেদ, প্রকৌশলী মো. ইকবাল, শহিদুল্লাহ চৌধুরী, এস এম সেলিম, মোহাম্মদ রফিক, হাজী আবু আকতার, আ ন ম ইলিয়াস, নুরুল আবছার, ফায়াজ মেহের, ইব্রাহিম তালুকদার, গোলাম হোসেন নান্নু ও ইব্রাহিম চৌধুরী মানিক।

সভায় মুস্তফা নঈম বলেন, একটি সেতুর জন্য বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ আমরা অপেক্ষায় ছিলাম। বোয়ালখালী-কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদ ২০১৩ সাল থেকে নতুন সেতুর দলমত নির্বিশেষে একটি প্লাটফর্মে এনে এ জনদাবিকে জোরালো করে। সেই বহুল প্রত্যাশিত কালুরঘাট রেল ও সড়ক সেতু নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়েছে। এজন্য আমরা শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। একইসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।এর আগে, বুধবার (১৪ মে) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চট্টগ্রাম সফরে এসে কালুরঘাট রেল ও সড়ক সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ