আজঃ মঙ্গলবার ২০ মে, ২০২৫

জমে উঠছে ফটিকছড়িতে নবীন-প্রবীণের লড়াই

মাসুদুল ইসলাম মাসুদ ফটিকছড়ি প্রতিনিধি:

চট্টগ্রাম জেলা:

 

আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যাচ্ছে ২য় ধাপে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। চট্টগ্রাম ফটিকছড়ি উপজেলায় ২ জন চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দাখিল করে যাচাই বাছাই এ মনোনয়ন নিশ্চিত হয়। এরা হলেন আওয়ামী ঘরনার দুই প্রভাবশালী নেতা ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক  নাজিম উদ্দীন মুহুরী এবং উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সদস্য ও সাবেক উত্তর জেলা ছাত্র লীগের সভাপতি বখতেয়ার সাঈদ ইরান।

সিনিয়র ও জুনিয়র একই ঘরনার দুই নেতার মধ্যেই হবে মূল ভোট যুদ্ধ।  এছাড়া পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়বেন মোট ৫ জন। এরা হলেন সাংবাদিক নেতা সৈয়দ জাহেদুল্লাহ কুরাইশী, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান এড. সালামত উল্লাহ চৌধুরী শাহিন, নাজিম উদ্দীন সিদ্দিকী, আনোয়ারুল হক, জসীম উদ্দীন।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন লড়াই হবে  বর্তমান ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান জেবুন নাহার মুক্তা ও  ফটিকছড়ি মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী শারমিন নপুরের মধ্যে। মোট প্রার্থী সংখ্যা ৯ জন। এবার ভোট আমেজ হবে অন্য রকম। ওপর মহলের সিদ্ধান্তের প্রভাব উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, চায়ের দোকানে,পাড়ার মোড়ে মোড়ে উত্তাপ ছড়াচ্ছে।  রাজনীতিতে কার কখন কোথায় উত্থান হয় তা বোঝা বড়ই মুশকিল। দলের হাই কমান্ডের সিদ্ধান্তে  হয়ত কারো কপাল খুলে আবার কারো কপাল পুড়ে। আওয়ামী লীগের দীর্ঘ দিনের সিদ্ধান্ত ছিল দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হবে। এতে যার রাজনীতির ওপর মহলে যত শক্ত  অবস্থান প্রতীক পাওয়া তার জন্য তত নিশ্চিত ছিল। যার হাত যত লম্বা ছিল তার জন্য নৌকা প্রতিক তত সহজ ছিল। অথবা অর্থের একটা প্রভাবও ছিল কিন্তু এইবার প্রতিক বিহীন নির্বাচন সব হিসাব নিকাশ উল্টে দিয়েছে।

 

এইত মাত্র ক’মাস আগে জাতীয় নির্বাচন গেল। উত্তাপ এখনো কমেনি। তার রেশ না কাটতেই শুরু হল উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। জাতীয় নির্বাচনের পাওয়া না পাওয়ার অনেক হিসাব নিকাশ জমা রয়েছে নেতাদের মধ্যে। জাতীয় নির্বাচনেও ছিল এক ভিন্ন চিত্র। দলের সিদ্ধান্তে হয়েছেন একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী। সেই হিসাব মতে ফটিকছড়িতে ছিল একজন হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী।  উপজেলা চেয়ারম্যান পদ হতে পদত্যাগ করে এম পি পদে প্রার্থী হয়েছিলেন এক কালের রাজপথের ত্যাগী নেতা, উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হোসাইন মোহাম্মদ আবু তৈয়ব। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আবু তৈয়ব একাই লড়াই করেছিলেন ফটিকছড়ি পুরো আওয়ামী লীগ, ছাত্র লীগ,যুবলীগ সহ সমস্ত আম জনতার সাথে। ভোটের হিসাব নিকাশে জয় পরাজয়ের ভাগ্য মেনে নিয়ে তিনি পরাজিত প্রার্থী হিসেবে নিজেকে গুটিয়ে রাখেন। নির্বাচনের পরে আবু তৈয়ব কৌশলী পন্থা অবলম্বন করে চুপচাপ থাকেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তার তরমুজ প্রতীকে ভোট পরেন ৩৫ হাজারের মত। পক্ষান্তরে দলীয় মনোনীত নৌকা প্রতিক নিয়ে রফিক কন্যা বিশাল ভোট ব্যবধানে জয়ী হয়ে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হয়। বর্তমান এম পি খাদিজাতুল আনোয়ার সনি চট্টগ্রাম হতে সর্বপ্রথম নারী হিসেবে সরাসরি জনগণের ভোটে জয়ী হয়ে সংসদে পা রাখেন। জাতীয় নির্বাচনের পর পর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচন এম পির জন্য নিঃসন্দেহে একটি বাড়তি স্নায়ুযুদ্ধ। কারণ চেয়ারম্যান প্রার্থী সব আওয়ামী ঘরনার।  আবার দলীয় হাই কমান্ডের সিদ্ধান্ত উপজেলা নির্বাচনে কোনো এম পি সরাসরি কাউকে সমর্থন বা কাজ করতে পারবেন না। সেই দিক হতে তিনি রয়েছেন কিছুটা চাপমুক্ত। তারপরও মানুষের জল্পনা কল্পনার শেষ নেই।  লোকমুখে বিরাজমান মরহুম রফিকুল আনোয়ারের সৃষ্টি আজকের এই বখতিয়ার সাইদ  ইরান। রফিক পরিবারের সাথে রয়েছে ইরানের আন্তরিকতাপূর্ণ সম্পর্ক। সুখে দুঃখে পাশে ছিলেন ইরান। সেই হিসাবে এম পি খাদিজাতুল আনোয়ার সনি কি সিদ্ধান্ত নিবে তার আগ্রহের শেষ নেই ভোটারের। পক্ষান্তরে নাজিম উদ্দীন মুহুরীর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রয়েছে একটি শক্ত অবস্থান। দীর্ঘদিন রয়েছে ফটিকছড়ির মাঠে ময়দানে।  সেই সুযোগ তিনি কতটুকু কাজে লাগাতে পারেন তা ভোটাররা পর্যবেক্ষণ করছেন।
এখন ভোটার বা ভোট বিশ্লেষকের তথ্য মতে হিসাব নিকাশের মধ্যেখানে রয়েছে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তৈয়ব। তথ্যমতে অনেকে বলেন জাতীয় নির্বাচনে পাওয়া আবু তৈয়ব সমর্থনে তরমুজ মার্কার ৩৫ হাজার ভোট যে দিকে ঝুঁকে হয়ত সেই দিকের পাল্লা কিছুটা ভারী বা এগিয়ে থাকবে। এছাড়াও আবু তৈয়বের রয়েছে বিশাল কর্মী বাহিনী। অনেকের ধারণা হয়ত আবু তৈয়বের নির্দেশ পেলে তার নেতা ও কর্মী বাহিনী গুলো সেই দিকেই কাজ করবে। তারপরও ভোটের রাজনীতি বড়ই জটিল ও রাজনীতির শেষ বলতে কিছুই নেই। উপজেলা নির্বাচন ঘিরে উপজেলা ভিত্তিক অনেক আওয়ামী লীগ নেতা তাদের শেষ হিসাব নিকাশ কষতে শুরু করেছেন। কেউ কারো অবস্থান হতে ছাড় দিতে নারাজ।  বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দীন মুহুরী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে আগামীর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কে হবেন সেই হিসাব শুরু হয়েছে। সেই হিসেবে বখতিয়ার সাইদ ইরান রয়েছে হিসাবের বাইরে কারণ তার অবস্থান জেলা পর্যায়ে। তুলনামূলক বয়সে ছোট হিসেবে আগামীর ভবিষ্যৎ হয়ত আরো অনেক বাকি রয়েছে। সবকিছু চাপিয়ে ফটিকছড়ির উপজেলা জেলা নির্বাচনে রয়েছে এবার ভিন্নতা। গতবারের নির্বাচনে হয়ছে শিয়ানে শিয়ানে লড়াই।  আবু তৈয়ব ও নাজিম উদ্দীন মুহুরী ছিল সহযোদ্ধা। জয় পরাজয়ে তেমন হিসাব ছিলনা কারণ মুহুরীর দখলে ছিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এর পদবী। পক্ষান্তরে আবু তৈয়বের লড়াই টা ছিল অস্তিত্বের লড়াই। সেই লড়াইয়ে তিনি জয়লাভ করে ফটিকছড়িতে তার অবস্থান জানান দে কিন্তু এই বার দেখার পালা ফটিকছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে কে জয়ী হয়ে জনপ্রিয়তার অবস্থান জানান দে। সেই অবস্থান জানার জন্য ফটিকছড়ি বাসীকে অপেক্ষা করতে হবে আগামী ২১ মে পর্যন্ত।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

বাংলাদেশ ঠিকাদার সমিতি -চট্টগ্রাম,রহমতগঞ্জের আহ্বায়ক কমিটি গঠন।

বাংলাদেশ ঠিকাদার সমিতি -চট্টগ্রাম,রহমতগঞ্জের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সর্বস্তরের ঠিকাদারদের অনাস্থাজনিত কারণে বাংলাদেশ ঠিকাদার সমিতি, চট্টগ্রাম জোন, রহমতঞ্জ চট্টগ্রামের বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত করে উক্ত এডহক কমিটি

অনুমোদন দেয়া হয়। বাংলাদেশ ঠিকাদার সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সামছুল কাউনাইন(কুতুব) স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে চট্টগ্রাম জোনাল কমিটি বিলুপ্ত করে প্রস্তাবিত ৩ সদস্য বিশিষ্ট এডহক কমিটি আগামী ৬ মাসের জন্য অনুমোদন দেয়া হয়। কমিটির তিন সমদস্য হলেন,মেসার্স ইমাম হোসেনের স্বত্তাধিকারী মোহাম্মদ ইমাম হোসেন, মেসার্স হাবিব এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী

মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, মেসার্স ঐশী এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী এস.এম. আবু ছালেহ। চিঠিতে অনুমোদিত এডহক কমিটি ৬ মাসের মধ্যে সমিতির কার্যক্রম সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করার পাশাপাশি যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচনের মাধ্যমে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি নির্বাচিত করার কথা বলা হয়।

উল্লেখ্য বাংলাদেশ ঠিকাদার সমিতির (রেজিঃ নং-টি.ও-৩২৮(১৬)-৯৪) এর আওতাধীন বাংলাদেশ ঠিকাদার সমিতি, চট্টগ্রাম জোন, রহমতঞ্জ।

ভোলা- বরিশাল সেতু দ্রুত বাস্তবায়নসহ ৮ দাবি নিয়ে মানববন্ধন

চট্টগ্রামস্থ ভোলাবাসীর সর্ব ঐক্য মানববন্ধন সোমবার বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। ভোলা জেলা সমিতি-চট্টগ্রাম এর সহযোগিতায় মানববনআধন থেকে ৮ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।

দাবিগুলো হলো, ভোলা-বরিশাল সেতুর কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন, চট্টগ্রামে অবস্থানরত সকল ভোলাবাসীর সুবিধার্থে ইলিশা-মতিরহাট ফেরী ঘাটের কাজ বাস্তবায়ন, ভোলার প্রত্যেক ঘরে ঘরে গ্যাস লাইন দ্বারা ভোলায় উত্তোলিত গ্যাস সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ, নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষায় ভোলার চতুর্দিকে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ,

বিদ্যমান জরাজীর্ণ চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকারি মেডিকেল কলেজ ও উন্নতমানের হাসপাতাল স্থাপন, পর্যটন শিল্পের বিকাশে সরকারি উদ্যোগ, গ্যাস ভিত্তিক শিল্প কলকারখানা স্থাপন, চরাঞ্চলের উন্নয়নে গবেষণা ভিত্তিক উদ্যোগ।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রামস্থ ভোলাবাসির সর্ব ঐক্য মানববন্ধন বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক লায়ন আতিকুল্লাহ বাহার। যুগ্ম আহবায়ক মো: ফিরোজ চৌধুরীর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, সাংবাদিক কিরন শর্মা, সদস্যসচিব- মাহবুবুর রহমান সেলিম, যুগ্ম সচিব আলী আজগর, সদস্য (অর্থ) কাঞ্চন মাঝি,সদস্য (মিডিয়া) নুরুন্নবী শাওনসহ ৪৮ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি। মানবন্ধনে ভোলা জেলা সমিতি-চট্টগ্রাম সহ ভোলার ২৫ টি পেশাজীবী সংগঠন অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধনে বক্তাগণ বলেন -অন্তবর্তী সরকার ভোলা – বরিশাল সেতু আগামী জানুয়ারি ২০২৬ উদ্বোধন করার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এজন্য একনেকে ১৭ হাজার কোটি টাকা অনুমোদন দেয়ার জন্য মানব বন্ধন
থেকে সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়।

জেলা ভোলায় প্রাকৃতিক গ্যাস খনি রয়েছে। এখানকার গ্যাস সম্পদ রয়েছে ব্যবহারের জন্য জনপদের মানুষ দাবিদার।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ