আজঃ শুক্রবার ২০ জুন, ২০২৫

ভারতের পরে রাশিয়ার তেল সস্তা মূল্যে পাকিস্তানে পৌঁছেছে 

ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকেই বিশেষ ছাড়ে রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কিনছে ভারত। সেই তেল ভারতে পরিশোধিত হয়ে আবার ইউরোপ, আমেরিকাতে পৌঁছচ্ছে। এতে লাভ হচ্ছে ভারতের সংস্থাগুলোর। অপরদিকে পাকিস্তানের অবস্থা এখন খুবই করুণ। আকাশছোঁয়া দাম হয়েছে পেট্রোলের।

এদিকে রাশিয়ান অপরিশোধিত তেলের প্রতীক্ষিত কার্গো ৫০ হাজার টন তেল নিয়ে রোববার পাকিস্তানের করাচি পোর্ট ট্রাস্টে নোঙর করেছে। রাশিয়ার কাছ থেকে ছাড়ে পাওয়া এই তেল ওমানের বন্দর হয়ে পাকিস্তানের জলসীমায় পৌঁছেছে।

পাকিস্তান স্টেট অয়েলের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, রাশিয়ান অপরিশোধিত পণ্য বহনকারী একটি কার্গো জাহাজ রোববার ভোর ৩টায় করাচি পোর্ট ট্রাস্ট (কেপিটি) এখতিয়ারে পৌঁছেছে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে কেপিটিতে নোঙর করেছে।

তিনি বলেন, সোমবার (আজ) থেকে অপরিশোধিত তেল অফলোড করার প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং পাকিস্তান রিফাইনারি লিমিটেড (পিআরএল) স্টোরে সংরক্ষণ করা হবে।

ওই কর্মকর্তা বলেন, অপরিশোধিত তেল পরিশোধন করার পর তেলের গুণমান, ফলন, পরিবহন খরচ এবং বাণিজ্যিক কার্যকারিতা নিয়ে সরকারের কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। প্রতিবেদনের অনুমোদনের পর, সরকার রাশিয়ার সাথে জিটুজি দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিতে যাবে।

পাকিস্তানি কর্মকর্তা বলেন, রাশিয়ান কার্গো এক লাখ টন অপরিশোধিত তেল বহনকারী একটি পাইলট জাহাজ ২৭-২৮ মে ওমানে পৌঁছানোর কথা ছিল। তবে সেটি সময়সূচি পিছিয়ে ৭ জুন ডুকম ওমানি বন্দরে পৌঁছায়।

পরে ওমান থেকে ৫০ হাজার টন ধারণক্ষমতার একটি ছোট জাহাজে রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ পাকিস্তানে অপরিশোধিত পণ্য পরিবহনের ব্যবস্থা করে। জাহাজটি ডুকমে ফিরে যাবে এবং ২০ জুনের মধ্যে অবশিষ্ট ৫০ হাজার টন অপরিশোধিত তেল পাকিস্তানে আনবে।

পাকিস্তান তার অপরিশোধিত তেলের ৭০ শতাংশ আমদানি করে। এগুলো পিআরএল, ন্যাশনাল রিফাইনারি লিমিটেড, পাক আরব রিফাইনারি লিমিটেড এবং বাইকো পেট্রোলিয়াম পরিশোধন করে।

বাকি ৩০ শতাংশ স্থানীয়ভাবে উৎপাদন এবং পরিশোধন করে অ্যাটক রিফাইনারি লিমিটেডসহ স্থানীয় শোধনাগারগুলো। বৈশ্বিক মূল্যবৃদ্ধির মধ্যে পাকিস্তান তার তেল আমদানির উৎসকে বৈচিত্র্য আনতে চাইছে বলে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

ইউক্রেনে হামলার পর বহুমুখী নিষেধাজ্ঞায় পড়েছে রাশিয়া। এমন অবস্থায় বিশ্বের অপরিশোধিত তেলের অন্যতম উৎপাদক দেশটি ব্যাপক ছাড়ে তেল বিক্রি করছে। ভারত ব্যাপকভাবে রাশিয়া থেকে তেল ক্রয় বাড়িয়েছে। অর্থনৈতিক সংকটে থাকা পাকিস্তানও রাশিয়া থেকে তেল ক্রয়ের চেষ্টা করছে।

প্রাথমিকভাবে এক লাখ টন তেল নেবে পাকিস্তান। সেটি ঠিকভাবে বাস্তবায়ন হলে চুক্তি বাড়াবে দুই দেশ। ব্যাংক অব চায়নার মাধ্যমে চীনা মুদ্রা ইউয়ানে রাশিয়াকে তেলের মূল্য পরিশোধ করবে পাকিস্তান।

সূত্র: দ্য নিউজ পিকে

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

হজ্জ: হৃদয়ের দিগন্তে আলেয়ার মতো জ্বলে ওঠা আত্মশুদ্ধির আলোকপাঁজর।

যখন কোটি কোটি হৃদয় এক সুরে উচ্চারণ করে—”লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক”, তখন আকাশ-বাতাসও থমকে দাঁড়ায়। হজ্জ তখন আর শুধু একটি ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা থাকে না; হয়ে ওঠে আত্মার এক অভূতপূর্ব অভিষেক, পবিত্রতার এক অনন্য মহাসম্মিলন। মানুষের জীবনচক্রে এমন কোনো অধ্যায় নেই, যেখানে হজ্জের মত একান্ত ও গভীর আত্মসংশোধনের উপলক্ষ পাওয়া যায়।

ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের শেষতম অথচ সর্বোচ্চ স্তম্ভটি যেন এক অলৌকিক আহ্বান। এই আহ্বান আসে আকাশ পেরিয়ে হৃদয়ের গহীনে, যেখানে মানুষ সমস্ত পরিচয়ের অহংকার ছুঁড়ে ফেলে আত্মবিসর্জনের শুদ্ধতম অবস্থানে পৌঁছে যায়। ধনী-গরিব, রাজা-ভিখারী—সবাই একসঙ্গে দাঁড়ায় কা’বার চৌহদ্দিতে। এক রঙের পোশাক, এক কণ্ঠের ধ্বনি, এক দিকের সেজদাহ—হজ্জ আমাদের শেখায় বিশ্বমানবতার মহাঐক্য।

Oplus_0

এই হজ্জের সূচনা সেই ইতিহাসের গভীর থেকে, যেখানে পিতা ইবরাহিম (আ.) তাঁর একমাত্র পুত্র ইসমাঈল (আ.)-কে আল্লাহর আদেশে কুরবানি করতে উদ্যত হয়েছিলেন। যে কা’বা ঘর তাঁর হাতে নির্মিত, সেই ঘরের চারপাশেই আজ কোটি মানুষের কান্না, তাওয়াফ, প্রার্থনা, নিঃশ্বাস। কত শত বছর পেরিয়ে গেছে, তবুও ইবরাহিম (আ.)-এর সেই আহ্বান—“আসো, তোমার প্রভুর ঘরে”—আজও প্রতিধ্বনিত হয় মিনার বাতাসে, আরাফার স্তব্ধতায়।

হজ্জ মানুষকে শিখিয়ে দেয় কীভাবে নতজানু হতে হয় এক মহান সত্তার সামনে। সেখানে নেই কোনো অহংকার, নেই কোনো রাজকীয়তা, নেই কোনো পার্থিব শ্রেষ্ঠত্ব—আছে কেবল আত্মবিসর্জন, কেবল ফিরে আসা, এক অনবদ্য অনুতাপে নিজের ভুলগুলো মুছে ফেলার ইচ্ছা। হজ্জ যেন একটি জীবন্ত দিগন্ত, যেখানে মুমিন তার অতীতকে পেছনে ফেলে নতুন এক আলোয় উদিত হয়।

যারা হজ্জ করেন, তারা ফিরে আসেন অন্য রকম হয়ে। চোখে থাকে এক গভীর শান্তি, কণ্ঠে থাকে বিনয়ের ঝরনা, হৃদয়ে থাকে নতুন করে জীবন শুরু করার স্পর্ধা। হজ্জ যেন এক স্বর্গীয় পুনর্জন্ম—যেখানে মানুষ নিজেকে ফিরে পায় আরও পবিত্র, আরও সত্যনিষ্ঠ এক মানুষ হিসেবে।

হজ্জের প্রতিটি ধাপে, প্রতিটি সূর্যোদয়ে ও প্রতিটি অশ্রুজলে ফুটে ওঠে ইসলামের অন্তর্নিহিত সৌন্দর্য—যেখানে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টিই জীবনের চূড়ান্ত সাফল্য। এমন ইবাদত এই পৃথিবীতে আর নেই, যা এতো সরল, অথচ এতো গভীর; এতো নিরব, অথচ এতো প্রভাবশালী।

এই ইবাদতের মাহাত্ম্য কেবল আখিরাতের প্রাপ্তিতে নয়, বরং দুনিয়ার জীবনেও এটি এক নতুন আবর্তন। হজ্জের পর এক মুসলিম যদি সত্যিকার অর্থে পরিবর্তিত না হন, তবে সেই সফর কেবল ভ্রমণই থেকে যায়। কিন্তু যিনি অন্তর দিয়ে হজ্জ করেন, তাঁর জীবনের প্রতিটি অধ্যায় হয়ে ওঠে যেন এক চলমান তাওয়াফ—আল্লাহর দিকে ফিরে ফিরে আসার অবিরাম সাধনা।

হজ্জ তাই কেবল একটি ইবাদত নয়, এটি এক জীবনদর্শন, একটি নিরব বিপ্লব, যা মানুষের ভেতরের অন্ধকার দূর করে এনে দেয় আলোর নিরবধি ছায়া।

“হজ্জ হলো এক আধ্যাত্মিক উল্লম্ফন—যেখানে মুমিন তার সমস্ত ভার ঝেড়ে ফেলে হালকা হয়ে যায় আল্লাহর রহমতের আকাশে।”

যেখানে উম্মাহর দেহে যন্ত্রণা, সেখানে ফিলিস্তিন এক রক্তাক্ত হৃৎপিণ্ড।

“মুমিনগণ এক দেহের মতো—যদি দেহের এক অঙ্গ ব্যথিত হয়, গোটা শরীর তার ব্যথায় কাঁপে।” — (হাদীস, সহীহ মুসলিম।ফিলিস্তিন—পৃথিবীর মানচিত্রে ক্ষুদ্র এক ভূখণ্ড। অথচ ইতিহাসের সবচেয়ে ভারী অশ্রুগুচ্ছে নাম লিখিয়ে রেখেছে বহু শতাব্দী ধরে। গাজার ধূলোমলিন বাতাসে আজ আর বালুকণার ঘ্রাণ নেই, সেখানে শুধু বারুদের গন্ধ। আকাশে প্রজাপতির বদলে ড্রোন, শিশুর খেলনার স্থানে রকেটের ধ্বংসাবশেষ। ফিলিস্তিন আজ একটি জাতির নয়, বরং গোটা উম্মাহর হৃদয়ে গেঁথে থাকা এক দীর্ঘতর আর্তনাদ।

প্রতিদিন সূর্য ওঠে, কিন্তু গাজার মানুষ দেখে না আলো—দেখে ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া স্বজনের হাত। প্রতিটি ভোর যেন এক নতুন শোকাবহ অধ্যায়। ঘুম ভাঙে বোমার শব্দে, আবার ঘুম পাড়ায় কান্নার চাপে। মৃত শিশুদের জন্য কাঁদে পৃথিবীর বিবেক, আর মুসলিম উম্মাহর মাঝে জন্ম নেয় এক প্রশ্ন—আমরা কী এখনো এক দেহ, নাকি শুধুই নামের উম্মাহ?

রাসূল (সা.) বলেছেন, “তোমরা যদি এক দেহের মতো না হও, তবে তোমাদের ঈমান অপূর্ণ।” কিন্তু আজ ফিলিস্তিন যখন পুড়ে যায়, আমরা দাঁড়িয়ে থাকি কেবল নীরব প্রত্যক্ষদর্শী হয়ে। বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো তাদের নিজস্ব স্বার্থের পাল্লায় ফিলিস্তিনকে মাপে। আর মুসলিম রাষ্ট্রগুলো—তারা হয়তো সম্মেলন ডাকে, বিবৃতি দেয়, দোয়া করে। কিন্তু ফিলিস্তিনের শিশুরা কি তাতে বাঁচে?

আমরা কি ফিলিস্তিনিদের জন্য শুধু আহারে ব্যস্ত, নাকি অন্তরে তাদের বেদনা বয়ে চলেছি? যদি তারা আমাদের ভাই হয়, তবে কেন আমাদের প্রতিবাদ এত মৃদু? কেন আমাদের জবান এত জড়তা পূর্ণ, কেন আমাদের হৃদয় এত নির্লিপ্ত?

এই কলাম কোনো সাময়িক রাজনীতি বা সংবাদ বিশ্লেষণ নয়—এ এক অভ্যন্তরীণ আত্মপ্রকাশ। এক লেখকের নয়, এক মুসলিমের হাহাকার। ফিলিস্তিনকে আজ দয়ায় নয়, দায়িত্বে দেখতে হবে। এই ভূমি আমাদের কেবল দুঃখ দেয় না—এ আমাদের ঈমানের আয়না। সেখানে দেখা যায়, আমরা কতটা মুসলিম, কতটা মানুষ।

গাজা যখন পোড়ে, তখন মক্কার বাতাসও কাঁদে।
জেরুজালেম যখন কাঁদে, তখন মদিনার মসজিদও শিউরে ওঠে।
কিন্তু আমরা কি কান পেতে শুনি সেই কান্না?

‘এক উম্মাহ, এক দেহ’—এই পবিত্র বাণী যেন আর কেবল হাদীসের পাতায় না থাকে।
এই বাণী হোক হৃদয়ের স্পন্দন। যেন ফিলিস্তিনের কান্না আমাদের রাতের ঘুম কেড়ে নেয়,
জেগে তোলে আমাদের বিশ্বাস, উদ্দীপনা, প্রতিবাদ—আর সর্বোপরি, ভালোবাসা।

কারণ ফিলিস্তিন এখন শুধু নির্যাতনের নাম নয়, এ এক রক্তাক্ত হৃৎপিণ্ড, যা উম্মাহর বুকে প্রতিনিয়ত ধুকপুক করে।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ