
আগামীকাল ঈদ। ঈদ-উল-আযহাকে সামনে রেখে নেত্রকোনায় জমে উঠেছে ঈদের শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জেলা-উপজেলার বিভিন্ন মার্কেট ও দোকানগুলোতে পছন্দের পণ্য কিনতে ভিড় করছেন সব শ্রেণি-পেশার মানুষরা। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে মালিকরা নিজেদের দোকানগুলোকে সাজিয়েছেন বর্ণিল সাজে।
আজ (১৬ জুন) রবিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলার পৌর শহর, বারহাট্টা বাজার, মোহনগঞ্জ পৌর শহর, কলমাকান্দা বজার এলাকায় ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। বিপনিবিতান গুলোতে বাহারি পোশাক ছাড়াও জুতা ও প্রসাধনীর দোকানে ভিড় বেড়েছে। অনেকে পোশাকের সঙ্গে ম্যাচিং জুয়েলারিও কিনে নিচ্ছেন। আবার ক্রেতাদের সামাল দিতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। ভিড় চোখে পড়েছে দর্জির দোকানগুলোতেও।

নেত্রকোনা পৌর শহরের সোনালী বস্ত্র বিতানের মালিক রনু সাহা জানান, ‘এবার ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে নতুন নতুন শাড়ি ও থ্রিপিসের কালেকশন তুলেছি। গরমকে প্রাধান্য দিয়ে বাহারি ডিজাইনের পোশাকে নতুনত্ব আনা হয়েছে। বিক্রিও তুলনামূলক ভাল হচ্ছে।
বারহাট্টা উপজেলা সদরের বর্ষা বস্ত্র বিতানের মালিক লিটন দত্ত জানান, এবারের ঈদুল আযহায় শেষ মুহূর্তে এসে বেচাকেনা বেশ ভালোই হচ্ছে। ক্রেতারা তাদের পছন্দের পোশাক কিনছেন। দামটাও অনেকটা সাধ্যের মধ্যে পাচ্ছে ক্রেতারা। সব কিছুর দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় এর প্রভাব কাপড়ের ওপরও পড়েছে।’

নেত্রকোনা পৌর শহরের সাতপাই এলাকা থেকে শপিং করতে আসা গৃহবধূ আছমা বেগম, মুন্নী আক্তার ও কলেজ শিক্ষার্থী ফরিদা ইয়াসমিন জানান, ‘এবার মার্কেটে পছন্দের সবকিছুই পাওয়া যাচ্ছে। দাম অনেকটা বেশি হলেও পছন্দের শাড়ি ও জামাকাপড় কেনা যাচ্ছে। তবে বৃষ্টির কারণে দোকানগুলো ঘুড়ে ঘুড়ে দেখা সম্ভব হচ্ছে না। যে দোকানে ডুকছি পছন্দ না হলেও সেখান থেকে নিতে হচ্ছে।’
তারা আরও বলেন, ‘ঈদুল ফিতরের সময় আমরা কিনেছি অনেক কিছু তাই ঈদ-উল-আযহায় স্বল্প পরিসরে কিছু কিনে নিচ্ছি।’
কসমেটিক ব্যবসায়ী নূরুল হক জানান, দোকানে ক্রেতারা ভীড় করছেন। কিন্তু জিনিসপত্র দেখে পছন্দ হলেও দাম অতিরিক্ত হওয়ায় বেশিরভাগ ক্রেতারাই নিচ্ছেন না। এর কারণ হিসাবে তিনি বলেন, আগে যে জিনিসের দাম ১শত টাকা ছিল বর্তমান সেটার দাম ১৫০টাকা। ক্রেতারা আগের দামেই জিনিস নিতে চাচ্ছেন। কিন্তু আগের চেয়ে এখন দাম বাড়ার বিষয়টা তারা মানতে রাজি না। সেজন্য আমাদের অবস্থা খারাপ।’
বারহাট্টা গোপালপুর বাজারের মুন টেইলার্সের মালিক স্বদেশ সরকার জানান, আগামীকাল ঈদ তাই নতুন অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। এখন শুধু ডেলিভারি দিচ্ছি। সময় মতো ডেলিভারি দিতে আমরা সারারাত কাজ করছি।
আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ে নেত্রকোনা জেলা পুলিশ জানায়, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় দিনরাত কাজ করছে জেলা পুলিশ। পশুরহাট, মার্কেটগুলো ও রাস্তার মোড়ে মোড়ে পুলিশের টহল চলছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে পুলিশ সবাইকে নিরাপদে কেনাকাটার নিরাপত্তার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। আশা করছি কোনও ধরণের অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটবে না।