আজঃ বুধবার ২৫ জুন, ২০২৫

জয়পুরহাট:

জয়পুরহাট জেলাও রাসেলস ভাইপারের ঝুঁকির আওতাধীন

মোঃ গোলাম মোর্শেদ প্রতিনিধি পাঁচবিবি জয়পুরহাট।

পাঁচবিবি:

এক সময়ের বিলুপ্ত বিষধর সাপ রাসেল ভাইপার ক্রমেই যেন রাজত্ব গেড়ে বসতে শুরু করেছে দেশব্যাপী। বরেন্দ্র এলাকা ছেড়ে সাপটির খোঁজ মিলছে বরিশাল, পটুয়াখালী, চাঁদপুর এমনকি ঢাকার আশপাশেও। অস্তিত্ব মিলেছে ২৫ জেলায়। চলতি বছর এ সাপের কামড়ে মারা গেছেন ১০ জন।

রাসেল ভাইপার দেখতে অনেকটা অজগরের বাচ্চার মতো। ছোট ও সরু লেজের সরীসৃপটি দৈর্ঘ্যে তিন থেকে পাঁচ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। মাথা চ্যাপ্টা, ত্রিভুজাকার এবং ঘাড় থেকে আলাদা। শরীরজুড়ে অনেকটা চাঁদের মতো গাঢ় বাদামি গোল গোল দাগ। দৈহিক এই বৈশিষ্ট্যের কারণে শুকনো পাতা বা ধান ক্ষেতের মধ্যে খুব সহজেই লুকিয়ে রাখতে পারে নিজেকে। রাসেল ভাইপার সাপ চন্দ্রবোড়া বা উলুবোড়া নামেও পরিচিত।

সাধারণত সাপ মানুষকে এড়িয়ে চললেও ঠিক উল্টো স্বভাব রাসেল ভাইপারের। নিজেকে বিপন্ন মনে করলেই করে বসে আক্রমণ। আক্রমণের ক্ষেত্রে এটি এত ক্ষিপ্র যে, ১ সেকেন্ডের ১৬ ভাগের ১ ভাগ সময়ে শেষ করতে পারে পুরো প্রক্রিয়া। ক্ষেপে গেলে শব্দ করে প্রচণ্ড জোরে। ঠিক যেন প্রেসার কুকারের মতো।

রাসেল ভাইপারের বিষ হেমাটোটক্সিক, যার কারণে ছোবল দিলে আক্রান্ত স্থানে পঁচন ধরে। ছোবলের পাঁচ মিনিটের মধ্যে ফুলে যায় ক্ষতস্থান। এর বিষ নষ্ট করে দিতে পারে ফুসফুস, কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ।

বেশির ভাগ সাপ ডিম পাড়লেও রাসেল ভাইপার বাচ্চা দেয়। গর্ভধারণ শেষে স্ত্রী রাসেল ভাইপার সাধারণত ২০ থেকে ৪০টি বাচ্চা দেয়। তবে ৮০টি পর্যন্ত বাচ্চা দেয়ার রেকর্ডও আছে। একদিকে উচ্চ প্রজনন ক্ষমতা, অন্যদিকে বেজি, গুইসাপসহ প্রকৃতি থেকে সাপের শত্রু বিলীন হয়ে যাওয়া সেইসঙ্গে ইঁদুর, ব্যাঙসহ সাপের পর্যাপ্ত খাবারের উপস্থিতি থাকায় বাড়ছে রাসেল ভাইপার।

বন্যপ্রাণী ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলেন,
“দেশের সব অঞ্চলে শিয়াল, গুইসাপ ও বেজি দেখলেই লোকজন মেরে ফেলছেন। তারা জানেন না, এটির উপকারিতা কত! এ কারণেই রাসেল ভাইপারের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। কারণ তার খাদক নেই। ইকো সিস্টেমে ব্রেক হয়ে গেছে।”

দেশে একটা সময় বিলুপ্ত বলা হলেও দেশজুড়ে এখন মাথাব্যাথার কারণ হয়ে উঠেছে রাসেল ভাইপার। বরেন্দ্র অঞ্চলের বাসিন্দা হলেও সাপটির রাজত্ব এখন দেশের অন্তত ২৫টি জেলায়। পৌছে গেছে চাঁদপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী পর্যন্ত। সব চেয়ে বেশি আনাগোন মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, শরীয়তপুরসহ পদ্মা, মেঘনা ও যমুনার অববাহিকায়, যার ছোবলে চলতি বছর এরই মধ্যে মারা গেছেন অন্তত ১০ জন, যাদের অধিকাংশই কৃষক এবং জেলে।

পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী ছাড়া মাঠে কাজ করা এবং সাপে কাটার পর গ্রামীণ জনপদ এখনও ঝাড়ফুঁকের মতো কুসংস্কার থেকে মুক্ত না হওয়ার মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। যদিও উপজেলা পর্যায়ে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম না থাকারও অভিযোগ আছে।

বন্যপ্রাণী ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘সাপ দংশন করলে দ্রুত হাসপাতালে যাওয়া উচিত। ওঝার বাড়িতে গিয়ে অনেকে সময় নষ্ট করেন। এতে বিষক্রিয়া পুরোপুরি প্রকাশ পেয়ে গেলে আইসিইউ সাপোর্ট ছাড়া রোগীকে বাঁচানো যাবে না।’

স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে অ্যান্টিভেনম উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত দেয়া আছে। যেসব এলাকায় সাপের উপদ্রব বেশি, সেসব জায়গায় সংরক্ষিত আছে। এনসিডির (নন কমিউনিকেবল ডিজিজ) সঙ্গে যোগাযোগ করলে সেটি পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।

দেশে বছরে চার লাখেরও বেশি মানুষকে সাপে কাটে, যাদের মধ্যে সাত হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২৩ জুন) বেলা ১১ টার সময় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নুরুল ইসলাম। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) আঞ্জুমান সুলতানা, সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মতিউর রহমান, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কাঞ্চন দাশ,  সহ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় এলাকার বিভিন্ন সমস্যা, যেমন – মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ,

চোরাচালান প্রতিরোধ, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ, বাল্য বিয়ে বন্ধে পদক্ষেপ এবং অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়াও, সভার আলোচ্য বিষয়গুলির মধ্যে রাস্তাঘাটের নিরাপত্তা, যানজট নিরসন, এবং জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়টিও ছিল। 

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করা হয় এবং অপরাধ দমনে আরো কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। বিশেষ করে, বাল্য বিয়ে, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও চোরাচালান প্রতিরোধে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো এবং জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়াও, নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে আরো তৎপর হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

চট্টগ্রামে করোনায় কেড়ে নিল আরও দুইটি প্রাণ।

চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত নারীসহ দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের একজনের বয়স ৮০ বছর এবং নারীর বয়স ৯৫ বছর। তারা বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন বলে জানা গেছে। চলতি মাসে সংক্রমণ শুরুর পর এ নিয়ে চট্টগ্রামে করোনায় মোট ছয়জনের মৃত্যু হলো। সোমবার চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত শনিবার (২১ জুন)

বিকেলে নগরীর অ্যাপোলো ইমপেরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন- কাজী আব্দুল আউয়াল (৮০) ও রাবেয়া খাতুন (৯৫)।
চট্টগ্রাম নগরীর ফিরিঙ্গিবাজার এলাকার বাসিন্দা ছিলেন রাবেয়া খাতুন। নোয়াখালী জেলায় বাড়ি হলেও আব্দুল আউয়াল চট্টগ্রাম নগরীতেই বসবাস করতেন।বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন

অবস্থায় তারা করোনায় আক্রান্ত হন বলে জেলা সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন।এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় নগরীর বিভিন্ন ল্যাবে ১২০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে চারজনের শরীরে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজন চট্টগ্রাম নগরীর বাসিন্দা।
এ নিয়ে চট্টগ্রামে মোট ৭৮ জন করোনায় আক্রান্ত হলেন আর ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ৬৯ জনই নগরীর বাসিন্দা। মৃত ছয়জনের মধ্যে তিনজন নগরীর এবং তিনজন বিভিন্ন উপজেলার।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ