আজঃ বৃহস্পতিবার ১৩ মার্চ, ২০২৫

জয়পুরহাট:

জয়পুরহাট জেলাও রাসেলস ভাইপারের ঝুঁকির আওতাধীন

মোঃ গোলাম মোর্শেদ প্রতিনিধি পাঁচবিবি জয়পুরহাট।

পাঁচবিবি:

এক সময়ের বিলুপ্ত বিষধর সাপ রাসেল ভাইপার ক্রমেই যেন রাজত্ব গেড়ে বসতে শুরু করেছে দেশব্যাপী। বরেন্দ্র এলাকা ছেড়ে সাপটির খোঁজ মিলছে বরিশাল, পটুয়াখালী, চাঁদপুর এমনকি ঢাকার আশপাশেও। অস্তিত্ব মিলেছে ২৫ জেলায়। চলতি বছর এ সাপের কামড়ে মারা গেছেন ১০ জন।

রাসেল ভাইপার দেখতে অনেকটা অজগরের বাচ্চার মতো। ছোট ও সরু লেজের সরীসৃপটি দৈর্ঘ্যে তিন থেকে পাঁচ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। মাথা চ্যাপ্টা, ত্রিভুজাকার এবং ঘাড় থেকে আলাদা। শরীরজুড়ে অনেকটা চাঁদের মতো গাঢ় বাদামি গোল গোল দাগ। দৈহিক এই বৈশিষ্ট্যের কারণে শুকনো পাতা বা ধান ক্ষেতের মধ্যে খুব সহজেই লুকিয়ে রাখতে পারে নিজেকে। রাসেল ভাইপার সাপ চন্দ্রবোড়া বা উলুবোড়া নামেও পরিচিত।

সাধারণত সাপ মানুষকে এড়িয়ে চললেও ঠিক উল্টো স্বভাব রাসেল ভাইপারের। নিজেকে বিপন্ন মনে করলেই করে বসে আক্রমণ। আক্রমণের ক্ষেত্রে এটি এত ক্ষিপ্র যে, ১ সেকেন্ডের ১৬ ভাগের ১ ভাগ সময়ে শেষ করতে পারে পুরো প্রক্রিয়া। ক্ষেপে গেলে শব্দ করে প্রচণ্ড জোরে। ঠিক যেন প্রেসার কুকারের মতো।

রাসেল ভাইপারের বিষ হেমাটোটক্সিক, যার কারণে ছোবল দিলে আক্রান্ত স্থানে পঁচন ধরে। ছোবলের পাঁচ মিনিটের মধ্যে ফুলে যায় ক্ষতস্থান। এর বিষ নষ্ট করে দিতে পারে ফুসফুস, কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ।

বেশির ভাগ সাপ ডিম পাড়লেও রাসেল ভাইপার বাচ্চা দেয়। গর্ভধারণ শেষে স্ত্রী রাসেল ভাইপার সাধারণত ২০ থেকে ৪০টি বাচ্চা দেয়। তবে ৮০টি পর্যন্ত বাচ্চা দেয়ার রেকর্ডও আছে। একদিকে উচ্চ প্রজনন ক্ষমতা, অন্যদিকে বেজি, গুইসাপসহ প্রকৃতি থেকে সাপের শত্রু বিলীন হয়ে যাওয়া সেইসঙ্গে ইঁদুর, ব্যাঙসহ সাপের পর্যাপ্ত খাবারের উপস্থিতি থাকায় বাড়ছে রাসেল ভাইপার।

বন্যপ্রাণী ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলেন,
“দেশের সব অঞ্চলে শিয়াল, গুইসাপ ও বেজি দেখলেই লোকজন মেরে ফেলছেন। তারা জানেন না, এটির উপকারিতা কত! এ কারণেই রাসেল ভাইপারের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। কারণ তার খাদক নেই। ইকো সিস্টেমে ব্রেক হয়ে গেছে।”

দেশে একটা সময় বিলুপ্ত বলা হলেও দেশজুড়ে এখন মাথাব্যাথার কারণ হয়ে উঠেছে রাসেল ভাইপার। বরেন্দ্র অঞ্চলের বাসিন্দা হলেও সাপটির রাজত্ব এখন দেশের অন্তত ২৫টি জেলায়। পৌছে গেছে চাঁদপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী পর্যন্ত। সব চেয়ে বেশি আনাগোন মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, শরীয়তপুরসহ পদ্মা, মেঘনা ও যমুনার অববাহিকায়, যার ছোবলে চলতি বছর এরই মধ্যে মারা গেছেন অন্তত ১০ জন, যাদের অধিকাংশই কৃষক এবং জেলে।

পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী ছাড়া মাঠে কাজ করা এবং সাপে কাটার পর গ্রামীণ জনপদ এখনও ঝাড়ফুঁকের মতো কুসংস্কার থেকে মুক্ত না হওয়ার মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। যদিও উপজেলা পর্যায়ে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম না থাকারও অভিযোগ আছে।

বন্যপ্রাণী ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘সাপ দংশন করলে দ্রুত হাসপাতালে যাওয়া উচিত। ওঝার বাড়িতে গিয়ে অনেকে সময় নষ্ট করেন। এতে বিষক্রিয়া পুরোপুরি প্রকাশ পেয়ে গেলে আইসিইউ সাপোর্ট ছাড়া রোগীকে বাঁচানো যাবে না।’

স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে অ্যান্টিভেনম উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত দেয়া আছে। যেসব এলাকায় সাপের উপদ্রব বেশি, সেসব জায়গায় সংরক্ষিত আছে। এনসিডির (নন কমিউনিকেবল ডিজিজ) সঙ্গে যোগাযোগ করলে সেটি পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।

দেশে বছরে চার লাখেরও বেশি মানুষকে সাপে কাটে, যাদের মধ্যে সাত হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চমেক হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা বন্ধ

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। জরুরি বিভাগেও স্বাভাবিক সেবা মিলছে না। এতে দূর-দূরান্ত থেকে শত, শত রোগী ও তাদের স্বজনদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তবে হাসপাতালের অন্যান্য চিকিৎসা কার্যক্রম সীমিতভাবে চালু আছে। সেখানে ইন্টার্ন চিকিৎসক ছাড়া অন্যরা রোগীদের সেবা দিচ্ছেন।

বুধবার ভোর থেকে প্রতিদিনের মতো রোগীরা চমেক হাসপাতালের বহির্বিভাগে আসতে থাকেন। সকাল গড়াতেই শত, শত রোগীর ভিড় জমে যায়। কিন্তু বহির্বিভাগের টিকিট কাউন্টার থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে প্রথমে অনেক রোগী হতচকিত হয়ে পড়েন। পরে আস্তে আস্তে জানা যায়, চিকিৎসকেরা কর্মবিরতি পালন করছেন। এরপরও চিকিৎসার আশায় রোগী ও তাদের স্বজনরা বহির্বিভাগের সামনে জড়ো ছিলেন।
জানা গেছে, এমবিবিএস-বিডিএস ডিগ্রিপ্রাপ্ত ছাড়া কাউকে নামের আগে ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার করতে না দেওয়াসহ পাঁচদফা দাবিতে সারাদেশে একযোগে কর্মবিরতি শুরু করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। চট্টগ্রামে তাদের সঙ্গে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতাল, ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, মেরিন সিটি এবং সাউদার্ন মেডিকেলের শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরাও এ কর্মসূচি পালন করছেন। তবে দুপুরে এ সংক্রান্ত রীটের ওপর শুনানি শেষে হাইকোর্টের এক রায়ে বলা হয়েছে, এমবিবিএস (ব্যাচেলর অব মেডিসিন, ব্যাচেলর অব সার্জারি) ও বিডিএস (ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জারি) ডিগ্রিপ্রাপ্ত ছাড়া অন্য কেউ তাদের নামের আগে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না।

চমেক হাসপাতালে গৃহিণী মর্জিনা বেগম এসেছেন কক্সবাজার থেকে। তার শরীরে টিউমার অস্ত্রোপচারের কথা ছিল। কিন্তু চিকিৎসকের দেখা না পেয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানালেন মর্জিনা ও তার মা তৈয়বা বেগম। মর্জিনা বলেন, আজকে (বুধবার) টিউমার অপারেশনের কথা ছিল। গত সোমবার এসেছিলাম। তখন কিছু পরীক্ষা দিয়েছিল। বলেছিল, আজ (বুধবার) রিপোর্ট নিয়ে ডাক্তারকে দেখাতে। আজ রিপোর্ট নিয়ে এসে দেখি কাউন্টার থেকে টিকিটই দিচ্ছে না। সকাল ৭টায় এসেছি। আমাদের বেশি হয়রানি করা হচ্ছে। এভাবে হয়রানি করার কোনো মানে হয় না। এর আগে তিনদিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। একটা প্যারাসিটামলও দেয়নি।
তৈয়বা বেগম বলেন, একবার কক্সবাজার আসতে-যেতে দুইজনের এক হাজার টাকার বেশি খরচ হয়ে যায়।

আমরা গরীব মানুষ। না হলে ক্লিনিকে নিয়ে অপারেশন করে ফেলতাম, সরকারি হাসপাতালে আসতে হতো না। এভাবে হয়রানি করা হলে আমরা যাব কোথায় ?
কন্ঠনালীতে সমস্যা নিয়ে কর্ণফুলী উপজেলা থেকে আসা আব্দুল হক বেলা ১২টার দিকে বলেন, সকাল ৮টা থেকে বসে আছি। টিকিট দিচ্ছে না। ডাক্তারদের দেখছি না। নার্সদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলছে ডাক্তার না দেখলে আমরা কী করবো।
রাঙ্গুনিয়া থেকে আসা হৃদরোগে আক্রান্ত বৃদ্ধ আনিসুল হক বলেন, ধর্মঘটের কথা যদি আগে আমাদের বলে দিত আমরা আসতাম না। কেউ কোনো কথা বলছে না। ধর্মঘট চলছে, সেটাও কেউ বলছে না। রোজা-রমজানের দিন, কত কষ্ট করে এসেছি। একবার আসতে-যেতে ৮০০ টাকা গাড়িভাড়া চলে যায়।
পায়ে ফ্র্যাকচার নিয়ে নগরীর আতুরার ডিপো এলাকা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা জিসান সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বলেন, আউটডোরে টিকিট কাউন্টার বন্ধ। ডাক্তাদের কাউকে দেখছি না। এখন বাসায় চলে যাচ্ছি।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, হাসপাতালের বহির্বিভাগে সমস্যা হচ্ছে। সেখানে রোগীদের পুরোপুরি চিকিৎসা সেবা দেয়া যাচ্ছে না। তবে জরুরি বিভাগ, বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিটে সেবা চালু আছে। সিনিয়র ডাক্তাররা সেবা দিচ্ছেন স্বাভাবিকভাবে। আইসিইউ সেবাও চালু আছে।

রাজশাহী বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের ডিডিকে বরিশালে বদলি

রাজশাহী বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের উপপরিচালক (ডিডি) রোজী খন্দকারকে বদলি করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে দালালদের মাধ্যমে জমা দেওয়া ফাইলের কাজ আগে করা ও সেবাগ্রহীতাদের হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে এ অভিযোগের তদন্ত চলছে।

তদন্ত চলাকালে সম্প্রতি পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল নূরুল আনোয়ার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাঁকে বরিশালে বদলি করা হয়েছে। আর বরিশাল বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের ডিডি আবু নোমান মো. জাকের হোসেনকে রাজশাহীতে পদায়ন করা হয়েছে।

এর আগে গত ২০ নভেম্বর সকালে ভুক্তভোগীরা পাসপোর্ট অফিসের অনিয়ম দূর করার দাবিতে মানববন্ধন করেন। এতে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। পরে তাঁরা ডিডি রোজী খন্দকারের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি রাজশাহীর নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগও দেন।

পরে এ নিয়ে তদন্ত শুরু করে পাসপোর্ট অধিদপ্তর। সম্প্রতি তদন্ত কমিটির সদস্যরা রাজশাহী সার্কিট হাউসে বসে ভুক্তভোগীদের বক্তব্য শোনেন। এরপরই ডিডিকে বদলি করা হয়।

এ বিষয়ে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের পরিচালক এ কে এম মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘তিনি (রোজী খন্দকার) আর সেখানে নেই। তালে বদলি করা হয়েছে। তিনি এখন বরিশালে অফিস করেন।’এদিকে ডিডি রোজী খন্দকারকে বদলি করায় খুশি রাজশাহীর নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন,

‘পাসপোর্ট অফিসের ব্যাপক অনিয়মের বিরুদ্ধে আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম। উল্টো ডিডি আমাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেন। আমরা তাঁকে বদলির দাবি করেছিলাম। তাঁকে বদলি করায় আমরা খুশি। বর্তমানে পাসপোর্ট অফিসে হয়রানি ছাড়াই কাজ হচ্ছে বলে আমরা জেনেছি।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ