আজঃ শুক্রবার ১৪ মার্চ, ২০২৫

পদ্মা সেতুর মতো গুরুত্ব দিয়ে লাইফ সাপোর্টে বেঁচে থাকা কালুরঘাট সেতু নির্মানের দাবি

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

দক্ষিণ চট্টগ্রামের অন্যতম যোগাযোগের মাধ্যম কালুরঘাট সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করার দাবি জানিয়েছে বোয়ালখালী-কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদ। পদ্মা সেতুর মতো গুরুত্ব দিয়ে কালুরঘাট সেতু নির্মাণে সর্ব্বোচ্চ নজর রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে পরিষদের নেতারা। গতকাল রোববার সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে বোয়ালখালী-কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদের উদ্যেগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। কালুরঘাট সেতু নির্মাণে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে ঋণচুক্তির পর নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বোয়ালখালী-কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদের আহবায়ক আবদুল মোমিন বলেন, দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষের অন্যতম প্রাণের দাবি কালুরঘাট সেতু নির্মাণে একটি অগ্রগতি হয়েছে। গত ২৭ জুন দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে ঋণচুক্তি স্বাক্ষরসহ সর্বশেষ যে অগ্রগতি সেটা গত এক দশকের ধারাবাহিক কর্মপ্রচেষ্টার ফলাফল, যার সঙ্গে বোয়ালখালী-কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদসহ সর্বস্তরের মানুষের সংযুক্তি আছে।
সেতু নির্মাণের কার্যক্রমের ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় আর যেন অনাকাঙ্খিত কোনো জটিলতা সৃষ্টি না হয় সেজন্য আমাদের সবাইকে সোচ্চার ভূমিকা পালন করতে হবে। অর্থায়ন জটিলতা কেটে যাবার মধ্য দিয়ে সেতু বাস্তবায়নের কার্যক্রমে প্রত্যাশিত যে গতি এসেছে, সেটা যেন বহাল থাকে। একনেকের অনুমোদন, দরপত্রসহ আনুষাঙ্গিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আগামী ছয় মাস অর্থাৎ চলতি বছরের মধ্যেই যেন সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়।
অদৃশ্য সুতোর জালে কালুরঘাট সেতুর দাবিটি আটকা পড়ার কথা উল্লেখ করে আবদুল মোমিন বলেন, সেতুর দাবি সামনে আনার পর সরকারেরও বিষয়টির ওপর দৃষ্টি আসে। গত ১০ বছরে কয়েক দফা অর্থায়ন নিয়ে আলোচনা, নকশা প্রণয়ন এবং সরকারি পর্যায়ে এ সংক্রান্ত বিভিন্ন পদক্ষেপ আমরা গণমাধ্যমের কল্যাণে ও আমাদের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ মারফতে জেনে এসেছি।
তিনি আরও বলেন, সেতুর কাজের অগ্রগতি পাওয়ার পর বোয়ালখালী-পটিয়াসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষের মধ্যে যে প্রাণসঞ্চার হয়েছে, মানুষ যেভাবে আশায় বুক বেঁধেছে, অনাকাঙ্খিত জটিলতা কিংবা কালক্ষেপণের কারণে সেটা যেন চরম হতাশায় পরিণত না হয়, সেদিকে দৃষ্টি রেখে সজাগ থাকার জন্য আমরা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
বর্তমান কালুরঘাট সেতুকে লাইফ সাপোর্টে রেখে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, কর্ণফুলী নদীর ওপর যে কালুরঘাট রেলসেতু আছে, সেটা প্রায় ১০০ বছরের পুরনো ও জরাজীর্ণ। আশির দশক থেকেই বারবার জোড়াতালি দিয়ে এ সেতুকে এখন পর্যন্ত ট্রেন ও যান চলাচলের জন্য কোনোভাবে ঠিক করে রাখা হয়েছে। অনেকটা লাইফ সাপোর্টে রেখে যেভাবে প্রাণ বাঁচিয়ে রাখা হয়, সেভাবে সেতুটিকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে।
গত একবছর ধরে জোড়াতালির সংস্কার কাজের জন্য সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। বিকল্প উপায়ে ফেরি দিয়ে মানুষ পারাপার করতে গিয়ে ইতোমধ্যে একাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া দশকের পর দশক কালুরঘাট সেতুতে আটকা পড়ে কত মর্মান্তিক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছে মানুষ, কত প্রসূতির, কত সংকটাপন্ন রোগীর প্রাণ গেছে- সে কথা বলাবাহুল্য, যা থেকে এখনও মুক্তি মেলেনি বোয়ালখালী-পটিয়ার মানুষের।
বোয়ালখালী-কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক মুস্তফা নঈম বলেন, দক্ষিণ রাঙ্গুনীয়ার বসবাসকারী মানুষদের প্রায় ৬৪ মাইল ঘুরে চট্টগ্রামে আসতে হয়। কালুরঘাট সেতু হলে অন্তত ৪০ মাইল দূরত্ব কমবে। তাছাড়া কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন হলে বান্দরবানের সঙ্গেও ২০ কিলোমিটার রাস্তার দূরত্ব কমবে। এছাড়া কৃষিভিত্তিক অর্থনৈতিক অঞ্চলও গড়ে উঠবে দক্ষিণ চট্টগ্রামে।
সংগঠনের সদস্য সচিব রমেন দাশগুপ্ত বলেন, ২০১৪ সালের শুরুতে বোয়ালখালী-কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদের কার্যক্রম শুরু হয়। এর মধ্য দিয়েই সেতুর দাবি প্রথম জনসম্মুখে আসে। চুক্তি সইয়ের মধ্য দিয়ে বহুল প্রত্যাশিত কালুরঘাট সেতু নির্মাণে চূড়ান্ত অগ্রগতি হয়েছে। দীর্ঘসময় পর হলেও লাখও মানুষের প্রাণের দাবি বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। পদ্মাসেতুর প্রত্যেকটি পিলারকে যেভাবে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে ঠিক সেভাবে কালুরঘাট সেতুকে সর্ব্বোচ্চ নজরে রাখা উচিত।
সেতু বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য উত্তম সেন গুপ্ত বলেন, কালুরঘাট সেতু হলে শুধুমাত্র বোয়ালখালী বা পটিয়াবাসী উপকার পাবে সেটা নয়, সেতু হলে পুরো চট্টগ্রামবাসী এর সুফল ভোগ করবে। দক্ষিণ চট্টগ্রামসীর মধ্যে একটি প্রাণসঞ্চার হয়েছে। সেটা যাতে আবার হতাশায় পরিণত না হয় আমাদের সবাইকে সেদিক দিয়ে খেয়াল রাখতে হবে।
এ সময় বোয়ালখালী-কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদের সমন্বয়কারী আলমগীর মোরশেদ বাবু, অমল কান্তি নাথ, উজ্জ্বল সরকার, সেহাব উদ্দিন সাইফু, নেছার আহমেদ খান, তপন দাশগুপ্ত, সাদেকুর রহমান সবুজ, সাংবাদিক নুরুল আবসার, রণজিৎ চৌধুরী বাচ্চু ও প্রকৌশলী সিঞ্চন ভৌমিক উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

দেশব্যাপী নারী হেনস্থার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের মানববন্ধন

দেশব্যাপী নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, নিপীড়ন, ধর্ষণ, অনলাইনে হেনস্তা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক অবনতি ও বিচারহীনতার প্রতিবাদে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে চট্টগ্রামে কেন্দ্র ঘোষিত মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল।

আজ সোমবার (১০ মার্চ) সকালে চট্টগ্রামে স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মানববন্ধন করেছে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল এবং পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ছাত্রদল । এসময় প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি প্রাঙ্গণে মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদল নেতা মোঃ আরমান হোসেন, মোঃ মানিক রতন তানিম, সামির হায়দার, হৃদয় মোল্লা, আহসান আলমগীর চৌধুরী, সামিরা নুর সহ নেতৃবৃন্দ।

পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি প্রাঙ্গণে মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদল নেতা
রিয়াদুল হক রিয়াদ, আতিক, জিসান সহ ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ।

আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের মাসিক কল্যাণ ও অপরাধ সভা অনুষ্ঠিত

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের হেডকোয়ার্টারে সোমবার (১০ মার্চ) আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মাসিক কল্যাণ ও অপরাধ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত কল্যাণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ড. মো.নাজমুল করিম খান।

উক্ত কল্যাণ সভায় পুলিশ কমিশনার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারগণ এবং উপ-পুলিশ কমিশনারগণসহ পুলিশের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ পুলিশের সার্বিক কল্যাণ এবং শৃঙ্খলা নিয়ে তাদের মূল্যবান মতামত প্রদান করেন। এছাড়াও গত মাসে পুলিশের ওয়ারেন্ট তামিল এবং ভাল কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ মাননীয় পুলিশ কমিশনার পুলিশ সদস্যদের মধ্যে অর্থ পুরস্কার বিতরণ করেন।

পুলিশ কমিশনার ঈদের কেনাকাটা নির্বিঘ্ন করতে এবং ছিনতাই প্রতিরোধে জিএমপি পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটকে নির্দেশনা প্রদান করেন এবং ঈদে ঘরে ফেরা যাত্রীদের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে ট্রাফিক বিভাগকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন। এছাড়াও তিনি মুলতবি মামলার দ্রুত নিষ্পন্ন করণ এবং ওয়ারেন্ট তামিলে আরো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। সাধারণ মানুষ যাতে কোন ভাবেই হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে সতর্কদৃষ্টি রাখতে সবাইকে নির্দেশনা দেন। পরিশেষে সকলের সর্বাঙ্গীর মঙ্গল কামনা করে অনুষ্ঠান সমাপ্তি করেন।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ