আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

রূপগঞ্জে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে উদ্ধারকৃত তিনটি বোমা নিষ্ক্রিয়

মাহাবুবুর রহমান রনি, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো পৌরসভার বরপা আড়িয়াবো এলাকার একটি চার তলা ভবনে অভিযান চালিয়ে উদ্ধারকৃত তিনটি বোমা নিষ্ক্রিয় করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। জঙ্গি আস্তানার খবর পেয়ে গতকাল ২জুলাই মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় আড়িয়াবো এলাকার জাকির হোসেনের বাড়িতে তারা এ অভিযান চালায়। অভিযানে পুলিশ, অ্যান্টি টেরোরিজম ও সোয়াদ ইউনিটের সদস্যরা অংশ নেয়।

জানা গেছে, গত মার্চ মাসে রূপগঞ্জের তারাবো পৌরসভার আড়িয়াবো গ্রামের জাকির হোসেনের চার তলা বাড়ির তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাট আনসারউল্লাহ বাংলা টিমের(এবিটি) সক্রিয় একজন সদস্য ভাড়া নেয়। সেখানে তিনি তার দুই সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে বসবাস করেন। এলাকায় কিংবা আশপাশের কারো সঙ্গে যোগাযোগ না করেই তিনি তার মতো বসবাস করে আসছিলেন। বাড়ির মালিক জাকির হোসেনের গ্রামের বাড়ি ব্রা²ণবাড়িয়া জেলায়। তিনি সৌদী প্রবাসী। তবে এবিটির সদস্যের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের পুলিশ সুপার (মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস) সানোয়ার হোসেন জানান, গতকাল ২জুলাই মঙ্গলবার সকাল থেকেই এটিইউর একটি দল নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের বরপা আড়িয়াবো এলাকায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে চারতলা একটি বাড়ি ঘেরাও করে রাখে। নেত্রকোণা জেলার জঙ্গি ঘটনায় জঙ্গি সংগঠনের সদস্য একজন নারীকে কক্সবাজার থেকে গ্রেফতার করা হয়। ওই নারীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এলাকাবাসী জানায়, গত আট বছর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সৌদি প্রবাসী জাকির হোসেন নামের এক ব্যক্তি চার তলা এই ভবনটি নির্মাণ করে ভাড়া দেন। অনেক সময় অপরিচিত লোকজনের এ বাড়িতে আসা-যাওয়া করতে দেখা গেছে। নেত্রকোণার জঙ্গির ঘটনার পর গত ৩/৪ দিন ধরে তাদেরকে এ বাড়িতে দেখা যায়নি। জাকির হোসেনের পাশাপাশি তার স্ত্রী বকুলী বেগমও এ বাড়িতে আসা যাওয়া করতেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা সহকারী পুলিশ সুপার (‘গ’-সার্কেল) হাবিবুর রহমান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এ অভিযান পরিচালনা করে। উদ্ধারকৃত তিনটি বোমার একটি বোমা বিষ্ফোরণের আশঙ্কায় ভবনের ভেতরেই তাদের ফ্ল্যাটে বিষ্ফোরিত করে নিষ্ক্রিয় করা হয়। অপর দু’টি বোমা ভবনের পাশে খালি মাঠে গর্ত করে বিশেষ প্রক্রিয়ায় বিষ্ফোরিত করে নিষ্ক্রিয় করা হয়।
সোয়াদের কমান্ডার শাহেদ আহমেদ বলেন, তিনটি ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস(আইইইডি) বোমা উদ্ধার করা হয়। এই বোমা তাৎক্ষণিক উদ্ভাবিত বোমা। তাৎক্ষণিক উদ্ভাবিত বিস্ফোরক বলতে প্রচলিত সামরিক পদ্ধতি অপেক্ষা অন্য কোনও উপায়ে নির্মিত বোমা হতে পারে। এটি একটি বিস্ফোরক ব্যবস্থার সাথে সংযুক্ত একটি আর্টিলারি শেলের মতো সামরিক বিস্ফোরক নির্মিতও হতে পারে।
রূপগঞ্জ থানা ওসি দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় হাত–পা বাঁধা অবস্থায় খাইরুন নেছা (৬০) নামের এক বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর মানিকের বাঁধ এলাকার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী হলেন ঐ এলাকার মৃত রজব আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সকালেই মানিকের বাঁধের পাশে পানিতে ভেসে থাকা একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তাঁরা পুলিশে খবর দিলে ভেড়ামারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যা করে হাত–পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। তদন্তে যা বের হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ