আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

জামালপুর:

জামালপুরে বন্যার পানি বিপদ সীমার ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত

কামরুজ্জামান কানু জামালপুর:

জামালপুর:

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

টানা ভারীবর্ষণ ও উজান থেকে ঢলে আসায় জামালপুরের যমুনা-ব্রহ্মপুত্রসহ সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে জেলা নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। জেলাব্যাপী বিরাজ করছে বন্যা আতঙ্ক।ইতোমধ্যে তিনটি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও বাড়িতে পানি উঠেছে।

ভারী বৃষ্টিপাত ও বন্যার পানির চাপে রাস্তাঘাট ভেঙে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। বন্যার কারণে বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের হাজারো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ।গত ২৪ ঘণ্টায় বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে ৬৩ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভরী বৃষ্টিপাত ও বন্যার পানিতে চাপে জেলার ইসলামপুরের ইসলামপুর-পচাবহলা-পাঁচবাড়িয়া সড়কের দুটি স্থানে ভেঙে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।অন্যদিকে পানির স্রোতে দেওয়ানগঞ্জ থেকে খোলাবাড়ি ও যাওয়ার প্রধান সড়কের সেতুর পাশের মাটি সরে গেছে। ফলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এ ছাড়া কাঠারবিল এলাকায় আঞ্চলিক সড়ক ভেঙে গেছে। আর পানি বাড়ায় বিভিন্ন জায়গায় এসএসসি পরীক্ষার্থীরা পড়েছে বিপাকে।

জামালপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক আবদুল মান্নান বলেন, বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬১ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। ফলে বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। আগামী দুই দিন পানি বাড়তে পারে।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলী, নোয়ারপাড়া, কুলকান্দি, পাথর্শী, সাপধরী, বেলগাছা; দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিকাজানী, চুকাইবাড়ী ও বাহাদুরাবাদ; মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া, আদ্রা, মাহমুদপুর, নাংলা ও কুলিয়া ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে।পানি বেড়ে যাওয়ায় ইসলামপুর-গুঠাইল সড়কের দেলিরপাড় এলাকার ড্রাইভেশন ডুবে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া পানির তোড়ে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার দেওয়ানগঞ্জ-খোলাবাড়ি সড়ক ভেঙে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।জামালপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, যমুনা নদীতীরবর্তী এলাকাগুলোতে পানি প্রবেশ করছে। পানিবৃদ্ধি নিয়ে নদী তীরবর্তী অঞ্চলের তথ্য চাওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। জামালপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্ট ৬৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।জেলার সব নদ নদীর আগামী আরো ৭২ ঘণ্টা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড ।জামালপুরের জেলা প্রশাসক মাঃ শফিউর রহমান নয়া দিগন্তকে বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের সকল প্রকার প্রস্তুতি রয়েছে। ইতোমধ্যে সকল বিভাগের সাথে জেলা প্রশাসনের জরুরি বৈঠক হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রতিটি সেক্টর যার যার অবস্থান থেকে যথাযথভাবে কাজ করছেন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

নেত্রকোনায় পাহাড় না কেটেই রাস্তায় উন্নয়ন।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার লেংঙ্গুরা ইউনিয়নের একটি পুরোনো পাহাড়ি পথকে চলাচলযোগ্য করতে গিয়ে বন ও পরিবেশ ধ্বংসের অভিযোগ উঠলেও স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, প্রকৃতপক্ষে কোনো পাহাড় কাটা হয়নি, কাটা হয়নি গাছও। সাম্প্রতিক কালবৈশাখী ঝড়ে উপড়ে পড়া গাছগুলো সরিয়েই রাস্তাটি সংস্কারের কাজ চলছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লেংঙ্গুরা ইউনিয়নের কাঁঠালবাড়ী সুবেন ঘাঘড়ার টিলা থেকে চৈতানগর মহসিন মেম্বারের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ১ দশমিক ১২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পথ কয়েক দশক ধরে পাহাড়ি জনগোষ্ঠী এবং পর্যটকদের যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বর্ষায় কাঁদায় মাখা পিচ্ছিল এই পথে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে। দীর্ঘদিনের দাবি পূরণে স্থানীয় প্রশাসন কাবিখা প্রকল্পের আওতায় রাস্তাটির সমতলকরণ ও মাটি ফেলার কাজ শুরু করেছে।

লেংঙ্গুরা ইউপি চেয়ারম্যান ও কলমাকান্দা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সাইদুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, “এটি বহু পুরোনো চলাচলের রাস্তা। এখানে কোনো নতুন পাহাড় কাটা হয়নি। ঝড়ে ভেঙে পড়া কিছু গাছ রাস্তা থেকে সরিয়ে সংস্কারকাজ চলছে। এলাকাবাসীর বহুদিনের চাওয়া ছিল এই পথটি উন্নয়ন করার—এখন সেটিই বাস্তবায়ন হচ্ছে।”

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, পাহাড়ের গা ঘেঁষা পুরোনো এই পথে মাটি ফেলে সমান করা হয়েছে। আশপাশে পাহাড় কাটা বা গাছ কাটার কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি। স্থানীয় বাসিন্দারাও জানিয়েছেন, এটি পুরোনো পথ, নতুন করে কিছুই ধ্বংস করা হয়নি।

এই পথে হেঁটে যাচ্ছিলেন নব্বই বছরের ক্ষুদ্র নৃ-জাতিগোষ্ঠীর সদস্য সুবেন মানখিন। তিনি বলেন, “আমি ছোটবেলা থেকে এই রাস্তা দিয়ে বাবা-দাদার সঙ্গে চলাফেরা করেছি। অনেক কষ্ট করে চলতে হতো। এখন রাস্তা সংস্কার হওয়ায় আমরা খুব খুশি।”

স্থানীয়রা—তপন সাংমা, চুহিন হাজং, জুই ঘ্রা, পীযূষ বণিক ও রফিকুল ইসলাম—সবাই বলেন, “এটি পুরোনো রাস্তা, নতুন করে কিছুই কাটা হয়নি। বরং আমাদের চলাচলের সুবিধার জন্য যেই পথে আমরা আগে চলতাম, সেটাই উন্নয়ন করা হচ্ছে। এজন্য আমরা উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।” একইসঙ্গে তারা রাস্তা পাকাকরণের দাবি জানান সরকারের কাছে।

এ বিষয়ে লেংঙ্গুরা বনবিভাগের বিট অফিসে কর্মরত বনরক্ষী আখতারুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত বলেন, “এই রাস্তা পাহাড়ি জনগোষ্ঠী ও পর্যটকদের যাতায়াতের একমাত্র পথ। পুরোনো রাস্তাটিকে কাবিখা প্রকল্পের আওতায় সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন করে কোনো পাহাড় কাটা হয়নি।”

স্থানীয়দের অভিমত, উন্নয়ন প্রকল্পে পরিবেশ সংরক্ষণ ও জনগণের স্বার্থ—উভয়কেই সমান গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এই প্রকল্পে সেই ভারসাম্য বজায় রেখেই কাজ হচ্ছে বলে তারা মত দিয়েছেন।

নেত্রকোনা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি অনিক, সাধারণ সম্পাদক শামীম।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল নেত্রকোনা জেলা শাখার নতুন কমিটি ঘোষনা করা হয়েছে। জেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটির সভাপতি হলেন অনিক মাহবুব চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক শামছুল হুদা শামীম।

বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির তাদের যৌথ স্বাক্ষরিত এক পত্রে নেত্রকোনা জেলা ছাত্রদলের নয় সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি তথ্য জানা গেছে।

নেত্রকোনা ছাত্রদলের নতুন কমিটির সভাপতি অনিক মাহবুব চৌধুরী এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।নয় সদস্য বিশিষ্ট ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন- সিনিয়র সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম জিপু, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোকশেদুল আলম রাজীব, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আরাফাত বাবু ও আবুল কালাম আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান দোলন, প্রচার সম্পাদক (যুগ্ম-সম্পাদকের পদ মর্যাদা) আশরাফুল ইসলাম খান পাঠান প্রান্ত।

নবগঠিত নয় সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটির সদস্যবৃন্দকে আগামী এক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটির গঠন করে কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দেওয়ার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ