আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রামে সীমানা গুলোই সস্ত্রাসীদের নীরব আস্তানা : প্রশাসন নিরব

এম মনির চৌধুরী রানা চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী,পটিয়া,চন্দনাইশ ও রাঙ্গুনিয়া সীমান্তের জঙ্গলে গড়ে উঠেছে সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আস্তানা। কমিউনিটি পেট্রোল গ্রুপ (সিপিজি) সদস্যদের পোশাক পরে প্রায় প্রতিদিন বোয়ালখালী,পটিয়া,চন্দনাইশ ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পাহাড় থেকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে নিরীহ লোকজন। পরে হাত পা বেঁধে গহীন জঙ্গলের কমলাছড়ি এলাকায় উপজাতিদের একটি চায়ের দোকানে আটকে রেখে আদায় করছে মুক্তিপণ। ফলে বোয়ালখালী, পটিয়া,চনন্দনাইশ ও রাঙ্গুনিয়ার পাহাড়ে দেখা দিয়েছে (সিপিজি) সদস্য নিয়ে আতঙ্ক। রাঙ্গুনিয়ার পাহাড়ের বনায়ন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কমিউনিটি পেট্রোল গ্রুপ (সিপিজি) গঠন করা হলেও ওই সংগঠনের বেশ কয়েকজন সদস্য এখন নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। তাদের সঙ্গে রয়েছে উপজাতিদের (মগ) একটি গ্রুপ বোয়ালখালী উপজেলার করলডেঙ্গা ইউনিয়নের তালুকদার বাড়ি থেকে পাহাড়ে কাজ করতে যাওয়া ৫ জন ও পটিয়া উপজেলার পূর্ব হাইদগাঁও গ্রামের ১০ জন দিনমজুরকে গত (৪ জুলাই) বৃহস্পতিবার ধরে নিয়ে যাওয়ার পর গহীন জঙ্গলে সন্ত্রাসীদের এই আস্তানার তথ্য পাওয়া যায়। তবে মুক্তিপণ আদায় করতে না পারলেও দিনমজুরদের বন্দুকের বাঁট দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়। এই আতঙ্কে পাহাড়ের ঢালায় চাষাবাদ করা বিভিন্ন সবজি ক্ষেত, লেবু বাগান ও পেয়ারা বাগানের দিনমজুররা গত কয়েকদিন ধরে পাহাড়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। বন বিভাগ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে বোয়ালখালী, পটিয়া, চন্দনাইশ ও রাঙ্গুনিয়া পাহাড়ি সড়ক হয়ে প্রতিদিন দিনমজুর ছাড়াও অসংখ্য লোক চলাচল করে থাকে। পটিয়া সীমান্তে শ্রীমাই বিট, রাঙ্গুনিয়া সীমান্তে বোয়ালখালী ও চন্দনাইশ সীমান্ত দিয়ে ধোপাছড়ি সীমান্ত রয়েছে কমলছড়ি বিট। বিটগুলোর মাঝামাঝি গহীন জঙ্গলে রয়েছে উপজাতিদের একটি চায়ের দোকান। সন্ত্রাসীরা পাহাড়ের শীলছড়ি ব্লক, শ্রীমাই ব্লক, ঢোল ছড়া, কমলাছড়ি, ভাতখোলা ধোপাছড়ি সহ আশপাশের পাহাড়ি এলাকা থেকে দিনমজুর ও সবজিচাষিদের ধরে নিয়ে মুক্তিপণ আদায় করছে। পাহাড়ের পটিয়া সীমানায় ঢুকে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ায় ইতিমধ্যে রাঙ্গুনিয়া (সিপিজি) ১৪জন সদস্যের মধ্যে (কমলাছড়ি-৮জন ও কালীছড়ি-৬ জন) আবু তাহের ও নুরুল হককে সতর্কও করেছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়। অভিযোগ উঠেছে, কয়েকজন (সিপিজি) সদস্যদের সহযোগিতায় উপজাতির একটি গ্রুপ গহীন জঙ্গলে আস্তানা গড়েছে। পটিয়া উপজেলার পূর্ব-হাইদগাঁও গ্রামের দিনমজুর আবু তাহের (৪০), জাহেদুল হক (৪২) আবদুস ছালাম (৪৪), মো. সোলতান (২৭) ও মো. কালুুসহ (২৫) ১০ জন দিনমজুরকে পটিয়া থেকে ধরে নিয়ে প্রায় ৪ কিলোমিটার গহীন জঙ্গলের কমলাছড়ি বিট এলাকার উপজাতির চায়ের দোকানে হাত-পা বেঁধে মুক্তিপণের জন্য মারধর করার পর এই তথ্য ফাঁস হয়।
দক্ষিণ বন রেঞ্জের পটিয়া শ্রামীই বিট কর্মকর্তা এসএম কাউছার হোসেন এর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, (সিপিজি) সদস্যদের পোশাক পরে উপজাতির একটি গ্রুপ নিরীহ লোকজন ধরে নিয়ে মুক্তিপণ আদায় করছে বলে শুনেছি। তা পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। মুক্তিপণ আদায় বন্ধ করতে হলে বোয়ালখালী, পটিয়া,চন্দনাইশ ও রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশের সহযোগিতা দরকার।
এ প্রসঙ্গে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিম উদ্দীন বলেন, পোশাক পরে নিরীহ লোকজনকে ধরে নিয়ে মুক্তিপণ আদায়ের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় হাত–পা বাঁধা অবস্থায় খাইরুন নেছা (৬০) নামের এক বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর মানিকের বাঁধ এলাকার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী হলেন ঐ এলাকার মৃত রজব আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সকালেই মানিকের বাঁধের পাশে পানিতে ভেসে থাকা একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তাঁরা পুলিশে খবর দিলে ভেড়ামারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যা করে হাত–পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। তদন্তে যা বের হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ