আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

গ্রেফতারকৃত কোকেনের বাহক স্টাসিযা শান্তে রোলি বাহামার স্টোরের বিক্রয়কর্মী

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

আন্তর্জাতিক মাদক পাচারে নিরাপদ রুট বাংলাদেশ

আন্তর্জাতিক মাদক ব্যবসায়ী চক্ররা মাদক পাচারে নিরাপদ রুট হিসেবে বাংরাদেশকে ব্যবহার করছে। চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে কোকেনসহ ধরা পড়া বাহামা নাগরিক স্টাসিযা শান্তে রোলির মত বাহককে ওই চক্ররা ব্যবহার করছে। পুলিশের ধারণা স্টাসিয়া আন্তর্জাতিক মাদক ব্যবসায়ী চক্রে জড়িত হয়ে কোকেন বাহক হিসেবেই বাংলাদেশের রুট ব্যবহার করেছেন। তবে কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদেও তার গন্তব্য ও উদ্দেশ্য উদঘাটন হয়নি।গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় মাদক নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, স্টাসিয়া জানিয়েছেন তিনি বাহামার একটি স্টোরের বিক্রয়কর্মী। তিনি অবিবাহিত। তার বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকেন। চিকিৎসার প্রয়োজনে বাংলাদেশে এসেছেন। এরবাইরে তার কাছ থেকে অন্য কোনো তথ্য জানা যায়নি। তবে আমরা ধারণা করছি, কোকেন চোরাচালানকারী চক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে তিনি বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যবহার করার অপচেষ্টা করছিলেন। এখানে এই মাদকের ব্যবহার না থাকায় আমরা আপত দৃষ্টিতে বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যবহার করার বিষয়টি ধারণা করছি।
তার পাসপোর্টে কোন কোন দেশের ভিসা আছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তিনি ব্রাজিলে গিয়ে এই চক্রের সাথে জড়িত হয়েছে বলে আমাদের ধারণা। তার পাসপোর্টে দুবাইয়ের ভিসা আছে। তিনি দুবাই থেকে বাংলাদেশে এসেছেন অন-এরাইভ্যাল ভিসা নিয়ে। এরপরে তার গন্তব্য কোথায় সেটা জানার জন্য তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে একজন আইও (তদন্ত কর্মকর্তা) নির্বাচন করে তদন্ত করা হবে। তদন্তে এই চক্রের সাথে কারো জড়িত সেটাও জানার চেষ্টা করা হবে।
তিনি বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের সূত্রে যৌথভাবে গত ১২ জুলাই থেকে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে কোকেন বাহক স্টাসিয়া শান্তে রোলি এর জন্য যৌথভাবে অপেক্ষা করতে থাকেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন বাংলাদেশের একটি দল। ১৩ জুলাই সকাল ৮ টায় স্টাসিয়া শান্তে রোলি ফ্লাই দুবাইয়ের একটি (এফজে-০৫৬৩) ফ্লাইটে করে দুবাই থেকে চট্টগ্রাম বিমান বন্দরে অবতরণ করেন। ওই সময় তার কাছে কোনো ল্যাগেজ ছিল না। তিনি স্বাভাবিক নিয়মে বিমানবন্দর ত্যাগ করে আগ্রাবাদ হোটেলে অবস্থান করেন। ১৫ জুলাই তিনি তাঁর ল্যাগেজ নিতে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে আসলে ব্যাগ তল্লাশি করে একটি কার্টনের ভেতর প্রায় ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ৭ টি পলি প্যাকেট থেকে মোট ৩ কেজি ৯০০ গ্রাম কোকেন জব্দ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ এর আইনের আওতায় নগরের পতেঙ্গা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া স্টাসিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জের ধরে কোকেনের বাংলাদেশে অবস্থান গ্রাহকদের নজরদারিতে রেখে সংশ্লিষ্ট আরও ২ জন নাইজেরিয়ানকে ঢাকায় গ্রেফতার করা হয়। প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করে পরবর্তীতে সংশ্লিষ্টদের এই মামলায় গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা হবে।
এর আগে গত সোমবার চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আইনশঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ওই নারী যাত্রীর ব্যাগেজ তল্লাশি করে একটি ইউপিএস এর ভিতর থেকে ৩ কেজি ৯০০ গ্রাম ওজনের কোকেন এর প্যাকেট পাওয়া যায়।অভিযানে নেতৃত্বে দেন ঢাকার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি দল।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় হাত–পা বাঁধা অবস্থায় খাইরুন নেছা (৬০) নামের এক বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর মানিকের বাঁধ এলাকার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী হলেন ঐ এলাকার মৃত রজব আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সকালেই মানিকের বাঁধের পাশে পানিতে ভেসে থাকা একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তাঁরা পুলিশে খবর দিলে ভেড়ামারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যা করে হাত–পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। তদন্তে যা বের হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ