আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

চবিতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, মামলার জালে ১৫ ছাত্রলীগকর্মী

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শিক্ষার্থীদের ওপর গত ১৫ জুলাই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হামলার ঘটনায় ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেছেন এক শিক্ষার্থী। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে এই হামলার ঘটনায় উক্ত মামলায় আরও ৪০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। চবির ২০১৯-২০ সেশনের সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আবু হাসান বাদী হয়ে হাটহাজারী মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা এ মামলাটি গ্রহণ করেছি। তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
মামলার বাদি মো. আবু হাসান বলেন, সেদিন আমরা মিছিল নিয়ে শহীদ মিনার হয়ে যাচ্ছিলাম। তখন অভিযুক্তরা আমাদের উপর অতর্কিত হালমা চালায়। এতে আমার বন্ধু মাহবুবর রহমান গুরুতর আহত হয়। এ ঘটনায় ১৫ জনসহ ৪০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে আমি হাটহাজারী থানায় মামলা দায়ের করেছি। বেশকিছু অভিযুক্ত নাম না জানার কারণে মামলায় উল্লেখ করা হয়নি। তবে পুলিশের তদন্ত শেষে পরবর্তীতে বাকিদের ব্যাপারেও পুলিশ ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন- ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী সৌমেন দত্ত, একই শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মনিরুজ্জামান, শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি, অর্থনীতি বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী আবরার শাহরিয়ার, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মীর্জা খবির সাদাফ খান, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী খালেদ মাসুদ, ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সাইদুল ইসলাম সাঈদ, ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মিজান শেখ, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আকিব জাবেদ, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী অনুপ সরকার আকাশ, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী তায়েব পাঠান, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের বোটানি বিভাগের শিক্ষার্থী তানভীর আলম আকাশ, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুজ্জামান ওমর, ২০২০-২১ ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ নাঈম এবং ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের সমাজতত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী আরাফাত রায়হানসহ ৪০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে এ মামলায়।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ১৫ জুলাই বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের প্রাঙ্গণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ থেকে ৮০ জন শিক্ষার্থী কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে মিছিল করলে অভিযুক্ত সৌমেন দত্তের নেতৃত্বে এজাহারে থাকা বাকি অভিযুক্তরা হাতে থাকা ধারালো রামদা চাপাতি, কিরিস, লোহার রড, স্ট্যাম্প ও লাঠিসোটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময়ে সৌমেন দত্ত স্ট্যাম্প দিয়ে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী ভুক্তভোগী মো. মাহাবুবুর রহমানের মাথায় আঘাত করে। এতে তার মাথা ফেঁটে যায় এবং সে গুরুতর আহত হয়। এছাড়া আরেক অভিযুক্ত মোহাম্মদ নাইম কাঠের লাঠি দিয়ে ভুক্তভোগী মো. মাহাবুবুর রহমানকে এলোপাথাড়ি মেরে তার পিঠ থেঁতলে দেয়।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, অন্যান্য অভিযুক্তরা হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে এবং এলোপাথাড়ি সবাইকে মারধর করতে থাকে। এছাড়া অভিযুক্তরা আন্দোলনে থাকা নারী শিক্ষার্থীদের অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তা করে। সেইসঙ্গে কোটা সংষ্কার আন্দোলন থেকে সরে না দাড়ালে তারা আমাদের প্রাণ নাশের হুমকি দেয়৷

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান জামায়াতে যোগ দিলেন

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জামায়াতে যোগ দিয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান। শনিবার ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

জামায়াত আমিরের উপস্থিতিতে মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নীতি ও আদর্শ, দেশপ্রেম এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অবিচল অবস্থানের প্রতি গভীর আস্থা ও সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি সংগঠনের প্রাথমিক সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন।

আওয়ামিলীগের সাবেক পৌর কাউন্সিলর জুলফিকার মিয়ার বিএনপিতে যোগদান।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

লালমোহন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী জুলফিকার মিয়া বিএনপিতে যোগদান করেছেন। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি ঢাকায় বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ভোলা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম) এর বাসায় গিয়ে ফুল দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান সম্পন্ন করেন।

এ সময় মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ তাকে দলে স্বাগত জানান। দলীয় একটি সূত্র বলছে, আগাম রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে সামনে রেখে জুলফিকার মিয়ার এই যোগদান বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করবে বলে সকলে মনে করছেন।

অন্যদিকে বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে আওয়ামিলীগের এমপি নুরনবী চৌধুরী শাওন কর্তৃক নির্যাতিত, নিষ্পেষিত বিএনপির অনেক ত্যাগি নেতারা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। নাম জানাতে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন- বিএনপির এমন দিন আসবে কখনো চিন্তাও করিনি। তবে কী আওয়ামিলীগ দিয়ে বিএনপির ত্যাগীদের আবার নির্যাতনের স্বীকার করতে চায় মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ? কেন আমরা এতদিন নির্যাতিত ছিলাম? এই দিন দেখার জন্য?

এ বিষয়ে জুলফিকার মিয়াকে একাধিকবার ফোন করলে তার মুঠো ফোনটি বন্ধ দেখায়। তবে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে তার এই সিদ্ধান্ত ঘিরে আলোচনা সমালোচনার শুরু হয়েছে। কেউ কেউ মনে করছে; এভাবে আওয়ামিলীগ দ্বারা বিএনপি সাজাতে থাকলে ভোটের মাঠে এর প্রভাব বিস্তার করবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ