আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

জনগণের নৈতিকতা কীভাবে গণতান্ত্রিক নীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে?

মোঃ ইয়াসির আরাফাত

গণতন্ত্র হল জনগণের শাসন। এই সরকার পদ্ধতিতে জনগণই সর্বেসর্বা। এটি একটি নির্দিষ্ট দেশের সরকারের সাথে জনগণের সম্মতি এবং চুক্তির একটি ব্যবস্থা। প্রকৃতপক্ষে, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে একটি দেশের সরকার সাধারণ জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন বহন করে। জনগণের নৈতিকতা প্রতিটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রয়োজনীয় ব্যবস্থায় সক্রিয় অংশগ্রহণ, বিভিন্ন মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা এবং অধিকার রক্ষা করে এমন আইন মেনে চলার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক নীতিগুলোকে সমর্থন করে। একটি নৈতিকভাবে সচেতন সমাজ নেতাদের কাছ থেকে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা দাবি করে, একই সাথে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং প্রক্রিয়াগুলোকে শক্তিশালী করে।

তাই সরকারের কোনো শাখা যদি জনগণের আস্থা হারিয়ে অন্যায় ও বৈষম্যে ভরে যায়, জনগণকে তখন কথা বলতে হবে। বৃহত্তর বা জাতীয় যৌক্তিক স্বার্থের জন্য তাদের সব অনিয়ম রুখে দাঁড়াতে হবে এবং সরকারকে জবাবদিহি করতে হবে। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নীতিগুলো প্রায়শই বাঁধাগ্রস্ত হয়, কারণ এদেশের মানুষ মনে করেন যে, এই দেশের নাগরিক হিসাবে তাদের দায়িত্ব কেবল তাদের জন্য একজন নেতা বেছে নেওয়ার মাধ্যমেই (ভোট প্রদান) শেষ হয়ে যায়। কিন্তু, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য এটা কি যথেষ্ট?

আমার মতে, গণতন্ত্র শব্দটি হচ্ছে চারটি ধাপের একটি চুক্তি যার মধ্যে রয়েছে:
১. জনগণ-জনগণ চুক্তি,
২.জনগণ-প্রতিনিধি চুক্তি,
৩. প্রতিনিধি-জনগণ এবং
৪. প্রতিনিধি-প্রতিনিধি চুক্তি।

প্রথম ধাপটি বৃহত্তর জনস্বার্থে একজন উপযুক্ত ও যোগ্য ব্যক্তিকে বেছে নিতে জনগণের ঐক্য নির্দেশ করে। দ্বিতীয় ধাপে, একজন ব্যক্তিকে তাদের প্রতিনিধি হিসেবে বেছে নেওয়ার এবং দায়িত্ব প্রদানের জন্য জনগণের ঘোষণা প্রকাশ করা হয়। তৃতীয় এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপটি হল একজন প্রতিনিধি বা নেতার প্রতিটি জাতীয় কর্মকাণ্ডের জন্য জনগণের কাছে জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতার প্রমাণ। সবশেষে, চতুর্থ ধাপটি সর্বাধিক সংখ্যক মানুষের সর্বোচ্চ পরিমাণে সুখের জন্য বিভিন্ন প্রতিনিধি বা নেতাদের মধ্যে সমন্বয়ের প্রতীক। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও নীতিগুলো উল্লিখিত কোনো চুক্তির প্রকৃত বাস্তবায়ন না থাকার জন্য প্রশ্নবিদ্ধ। যেহেতু, “জনগণ-জনগণ” এবং “জনগণ-প্রতিনিধি” গণতন্ত্রের প্রাথমিক ধাপ, তাই এদেশের নাগরিকদের তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হতে হবে, যিনি জনগণের জিজ্ঞাসা ছাড়াই জবাবদিহিতা ও দায়িত্ব নিশ্চিত করবেন। অন্যথায়, পথভ্রষ্ট হয়ে বা ভুলভাবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা যেকোনোভাবে জনগণকে দমন ও বৈষম্যের দ্বারা শোষণের চেষ্টা করবে।

এই দেশের মানুষ একজন সফল প্রার্থীর কৃতিত্ব নিতে ভালোবাসে যিনি নিয়ম-কানুন মেনে কাজ করেন, কিন্তু যোগ্য নয় এমন একজনকে নির্বাচন করার দায়ভার নিতে তারা প্রস্তুত নয়। ফলস্বরূপ, দুর্নীতি ও অসঙ্গতি দেখা দেয়। এমনকি তারা প্রতিনিধিকে তার কর্ম ও সিদ্ধান্তের জন্য জবাবদিহি করতে ভয় পায়। জনগণকে জানতে হবে প্রতিনিধি বিশেষ কিছু নয়। তিনি কেবল জনসেবা ও জনগণের প্রয়োজনীয়তা সমন্বয় ও বিতরণের জন্য কাজ করছেন, তাদের প্রতিনিধি হিসাবে জনগণের প্রয়োজন অনুসারে নীতি প্রণয়ন করছেন। এরই সাথে, অধিকার ও সমতার বিচ্যুতি ঘটলে তাকে অপসারণ করতে হবে ও আইনগতভাবে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে, যা জনগণ কর্তৃক নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে সম্পন্ন হবে।

বাংলাদেশে আরেকটি গণতন্ত্র হত্যার প্রক্রিয়া হল আর্থিক সেবা বিতরণের নির্বাচনী প্রচারণা এবং মানুষকে আকাশ-কুসুম স্বপ্ন দেখানো যা অসাধু প্রার্থীরা নির্বাচনের কিছু সময় পূর্বে একটি দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা অর্জনের জন্য করে থাকেন। এটাতে জনগণও সাই দেয়। বিভিন্ন নেতার কাছে সাময়িক নানা পদের খাবার ও সুযোগ-সুবিধা পেয়ে তারাও সন্তুষ্ট থাকে। একজন প্রার্থী সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা থাকা সত্ত্বেও জনসাধারণ এসব নেতা দ্বারা প্রতিশ্রুত সাময়িক আর্থিক সহায়তা এবং লোভনীয় সুবিধার প্রলোভনে তাদের যাবতীয় অতীত ইতিহাস ও কর্মকাণ্ড ভুলে গেলেও নির্বাচিত হয়ে তাদের কথার বাস্তবায়নে ভিন্ন প্রেক্ষাপট লক্ষ্য করা যায়।

সুতরাং, গনতান্ত্রিক এই দেশে সঠিক লোকের পাশাপাশি ভুল ব্যক্তিকে নির্বাচন করার জন্যেও কিন্তু জনগণই দায়ী। তারা যেন কোনো ভণ্ডামি দ্বারা সম্মোহিত না হয়। দেশের সার্বিক উন্নয়ন লক্ষ্যে সঠিক ও প্রকৃত প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য বিভিন্ন শ্রেণি, চিন্তা ও মতাদর্শের মানুষকে একযোগে এগিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশের জনগণকে একটি বিশেষ দলের যেকোনো ধরনের কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। পরমতসহিষ্ণুতা বাড়াতে হবে এবং অন্যের যৌক্তিক কথা বা দাবি সহজে মেনে নেওয়ার মানসিকতা সৃষ্টি করতে হবে, নিজের ভুল স্বীকার করার ক্ষমতা থাকতে হবে। যে ব্যক্তি নিজের চিন্তা-চেতনা ও কর্মকাণ্ডের ভুল যত সহজে উপলব্ধি ও স্বীকার করতে পারে, সে ততটা বেশি ভালো মানুষ। জনসাধারণকে অবশ্যই একজন ব্যক্তিকে তার নেতৃত্ব এবং ব্যক্তিত্বের গুণাবলী দ্বারা বিচার করতে হবে, দলীয়ভাবে নয়। একটি দলের আনুগত্যের ফলে তৈরি হয় সীমাবদ্ধতা, পছন্দের দলের অযোগ্য ও অসৎ প্রার্থীর গণ্ডি পেরিয়ে যোগ্য ব্যক্তিকে ভোট দিতে না পারার সীমাবদ্ধতা!

এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয় ও কার্যাবলীর কঠোর ও নির্ভুল মনিটরিং প্রক্রিয়া, প্রার্থীদের শিক্ষাগত ও অন্যান্য যোগ্যতা বৃদ্ধি, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা নিয়ন্ত্রণ, নির্বাচন ও গণতন্ত্র সম্পর্কিত বিষয় সম্পর্কে জনসচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া এবং প্রতিষ্ঠা করা, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা ও প্রতিটি ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা বজায় রেখে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নীতি প্রতিষ্ঠা করতে পারে। শুধু তাই নয়, জনপ্রতিনিধিদের উপযুক্ত পরিমাণে বেতন দিতে হবে যাতে জনসম্পদ থেকে চুরির প্রলোভন সৃষ্টি না হয়।

জনগণই গণতন্ত্রের প্রাণ। তারা একটি দেশের সরকার গঠনে রাষ্ট্রের প্রতিবিম্ব। “জনগণের নৈতিকতা, দায়িত্বশীল আচরণ, ন্যায়বিচার এবং স্বচ্ছতা”, এই নীতিগুলোর প্রতিটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা দ্বারা একটি গনতান্ত্রিক জাতি ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়। জনগণের ন্যায়বিচার রাষ্ট্রের ন্যায়বিচারে পরিণত হয় এবং জনগণের অন্যায় ও অনৈতিকতা রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা ও অসঙ্গতি আনে। তাই, বাংলাদেশ সাংবিধানিকভাবে একটি গণতান্ত্রিক দেশ হওয়ায় জনগণকে অবশ্যই গণতন্ত্রের প্রকৃত অর্থ ও মূলনীতি জানতে হবে। প্রান্তিক পর্যায় থেকে শুরু করে রাজধানী পর্যন্ত গণতন্ত্রের উপযুক্ত শিক্ষাকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে প্রসারিত করতে হবে। অন্যথায়, জনগণ অসঙ্গতি ও অধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সর্বদা নীরব থাকবে এবং সরকারকে জবাবদিহি করতে এগিয়ে আসবে না, যতক্ষণ না তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে যায়। সরকারকে এই গণতান্ত্রিক দেশে প্রতিটি ক্ষুদ্র অপকর্মেরও জবাব দিতে হবে! এজন্য জনগণকে প্রথমে ন্যায়পরায়ণ ও যুক্তিবাদী হতে হবে এবং ফলস্বরূপ প্রতিটি ব্যবস্থা স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু হয়ে উঠবে।

শিক্ষার্থী, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
ই-মেইল: [email protected]

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মশা নিধনে আমেরিকান প্রযুক্তির লার্ভিসাইড বিটিআই ব্যবহার শুরু চসিকের।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন প্রথমবারের মতো মশা নিয়ন্ত্রণে আমেরিকান প্রযুক্তির লার্ভিসাইড বিটিআই ব্যবহারের কার্যক্রম শুরু করেছে। সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের নির্দেশক্রমে সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় ৩৯ নং দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ড কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি শুরু হয়। কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব মো. আশরাফুল আমিন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মোঃ শরফুল ইসলাম মাহি, কীটতত্ত্ববিদ রাশেদ চৌধুরী এবং অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) মশা নিয়ন্ত্রণে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করে নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর আগে গত ২৬ মার্চ নগরীর ১৭ নম্বর বাকলিয়া ওয়ার্ডের সৈয়দ শাহ রোডের সামনের খালে পরীক্ষামূলকভাবে বিটিআই লার্ভিসাইড প্রয়োগ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকে আজ থেকে ওয়ার্ড পর্যায়ে বিটিআই প্রয়োগ শুরু করল চসিক।

চসিকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত ফগিং, লার্ভিসাইড ছিটানো, নালা–নর্দমা পরিষ্কার, আবর্জনা অপসারণ এবং জনসচেতনতা কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে। নতুন প্রজন্মের আমেরিকান প্রযুক্তির বিটিআই ব্যবহারে মশার লার্ভা ধ্বংসে আরও কার্যকর ফল পাওয়া যাবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।

বিটিআই হলো একটি প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন ব্যাকটেরিয়াভিত্তিক লার্ভিসাইড, যা বিশেষভাবে মশা, ব্ল্যাক ফ্লাই ও ফাঙ্গাস গ্ন্যাটের লার্ভা দমনে ব্যবহৃত হয়। এটি পানিতে প্রয়োগ করার পর লার্ভা খাদ্যের সঙ্গে বিটিআই গ্রহণ করে এবং ব্যাকটেরিয়ার উৎপাদিত ক্রিস্টাল প্রোটিন টক্সিন লার্ভার পরিপাকতন্ত্রে কার্যকর হয়ে তাদের দ্রুত নিধন ঘটায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বিটিআই মানুষের শরীর, গৃহপালিত প্রাণী, মাছসহ অন্যান্য পরিবেশবান্ধব প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর নয়; এমনকি উদ্ভিদ ও জলজ বাস্তুতন্ত্রেও কোনো বিষাক্ত প্রভাব ফেলে না। বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গু, জিকা ও চিকুনগুনিয়ার মতো বাহক–বাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে এটি একটি নিরাপদ ও বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত সমাধান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

অধস্তন আদালতও ট্রাইব্যুনালের সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের অধীনে অন্তর্ভুক্ত করনের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশন।

অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের অধীনে অন্তর্ভুক্ত করণের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন চট্টগ্রাম বিভাগ। ৩০ নভেম্বর চট্টগ্রাম ই ফ্যামিলি কোর্ট উদ্বোধন করতে এলে আইন সচিব লিয়াকত আলী মোল্লাএর সাথে বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশন,

চট্টগ্রাম বিভাগ ও চট্টগ্রাম জজশীপ কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ এর নেতৃবৃন্দ সাক্ষাৎকালে তাদের দীর্ঘদিনের ন্যায্য দাবি বাস্তবায়নের দাবি জানান।তারা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও আইন মন্ত্রণালয় এর ন্যায় পদ -পদবী পরিবর্তন ও বেতন স্কেল নির্ধারণের ও দাবি জানান।নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ বিচার বিভাগ আইনের ধারক ও বাহক।
Pp

কিন্তু অধস্তন আদালতের কর্মকর্তাও কর্মচারীগন বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাই বৈষম্য দূরীকরণের জোর দাবি জানান।আইন সচিব অবিলম্বে দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস প্রদান করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের সিনিয়র জেলা জজ মোহাম্মদ হেমায়েত উদ্দিন, মহানগর দায়রা জজমোঃ হাসানুুল ইসলামও চট্টগ্রামের সকল স্তরের বিচারক মন্ডলী।উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এনামুল হক আকন্দ ।বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন পারভেজ, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মোহাং শামসুল হক, , চট্টগ্রাম জজশীপ কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ এর সভাপতি বিপ্লব কান্তি দাশ ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ