আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

বোয়ালখালীতে মসজিদ-মন্দির পাশাপাশি : নেই সংঘাত

মনির চৌধুরী রানা বোয়ালখালী

চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে স্বাধীনতার পর থেকে পাশাপাশি মসজিদ ও মন্দিরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে নামাজ ও শারদীয় দুর্গাপূজা। বোয়ালখালী সদরের কানুনগোপাড়া এলাকায় সম্প্রীতি বজায় রেখে চলছে নামাজ ও পূজা। এবার ও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। মসজিদের পাশেই মন্দিরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুর্গাপূজা। আজান ও নামাজের সময় বন্ধ থাকছে পূজার কার্যক্রম। উভয় ধর্মের লোকজন বলছে তারা দীর্ঘদিন ধরে সব সময় সম্প্রীতির সঙ্গেই নিজ নিজ ধর্মের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এ যেন সকল ধর্মের সম্প্রীতির এক মেল বন্ধন। সরেজমিনে শনিবার কানুনগোপাড়া বাস চালক সমিতি জামে মসজিদ ও শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গ বাড়ি মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, একসাথে মসজিদ-মন্দির, ব্যবধান শুধু একটি রাস্তার। মন্দিরে চলছে পূজা-অর্চনা। পূজারী ও দর্শনার্থীরা আসছেন প্রতিমা দেখতে এবং পূজায় অংশ নিতে। নির্ধারিত সময়ে আজান শুরুর আগেই থেমে যায় পূজার যাবতীয় কার্যক্রম। নামাজ শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পর আবার বেজে উঠলো মন্দিরের মাইক, ঢাক-ঢোলসহ উলুধ্বনি। শুরু হয় পূজার কার্যক্রম। নামাজি ও পূজারীরা জানান, এখানকার মানুষ শান্তি প্রিয়। কোনো দিন কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি দুই ধর্মের মানুষদের মধ্যে। সবাই সম্প্রীতির সঙ্গে পাশাপাশি মসজিদ ও মন্দিরে নিজ-নিজ ধর্মের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এতে কোনদিন কার ও কোন প্রকার সমস্যা বা ঝামেলা হয়নি। তাদের প্রত্যাশা যুগযুগ ধরে চলতে থাকবে এই সম্প্রীতি। পুজা দিতে আসা সুদীপ্ত ঘোষ বলেন, এই পূজাটা অনেক আগের পুরোনো। এখানে পূজা উদযাপিত হচ্ছে, পাশেই মসজিদ আছে হিন্দু মুসলমান আমরা একত্রিত হয়ে পূজা উদযাপন করি। আমাদের অনেক ভালো লাগে । স্থানীয় দোকানদার মিন্টু দে,বলেন, আমি ১০ বছর ধরে এস মন্দিরে দুর্গাপূজা দেখতে এবং পূজার আনন্দ উপভোগ করতে আসছি। মুসলামানদের নামাজের সময় আমাদের সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকছে। নামাজ শেষে পুনরায় পূজার কার্যক্রম করা হচ্ছে। মন্দির কমিটি সাধারণ সম্পাদক রনি চৌধুরী বলেন, শৈশবকাল থেকে আমরা এখানে পূজা করছি। নামাজের সময়সূচি মেনে আমরা দুর্গাপূজা পালন করছি। নামাজের সময় আমার পূজার কার্যক্রম বন্ধ থাকে। তারাও আমাদেরকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে থাকে। মসজিদের লোকজন আমাদের সার্বিক সহযোগিতা করছে। আমরাও তাদের সহযোগিতা করছি। তিনি আরও বলেন, মুসলিমরা ঈদের সময় মসজিদে নামাজ আদায় করছেন। আমরা পূজার সময় সুন্দরভাবে পূজা করছি। এখন পর্যন্ত কোন ধরনের সমস্যা হয়নি। মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ তারেক বলেন, ভ্রাতৃত্বপূর্ণভাবে আমরা যার যার ধর্ম পালন করছি। আমরা এখানে কোন ভেদাভেদ করি না কে হিন্দু বা মুসলমান। বিপদে আপদে আমরা সব সময়ই তাদের সহযোগিতা করছি। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে এটি যেনো নিদর্শন হয়ে থাকে, দেশের সমস্ত জায়গার মানুষ যেনো এভাবে চলতে পারে। এমন মূল্যবোধ ধারণ করলে পৃথিবীতে কোথাও অশান্তি হবে না।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ভোলায় জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত ।

দ্বীপজেলা ভোলার আধুনিক সাহিত্য সংগঠন জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের ১৫ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়েছে ।গতকাল ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যায় ভোলা সদরের গঙ্গাকীর্তি হারুন অর রশিদ স্মৃতি পাঠাগারে অনুষ্ঠিত জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের সাধারণ সভায় সংগঠনের আহ্বায়ক শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম এর সভাপতিত্বে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ রোদসী কৃষ্টিসংসারের চেয়ারম্যান ও জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র প্রভাষক কবি রিপন শান, জাতীয় সাহিত্য সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট ভোলা জেলা শাখার সদস্য সচিব প্রভাষক কবি মিলি বসাক, জলসিঁড়ির সদস্য সচিব কবি মহিউদ্দিন মহিন, জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সাংগঠনিক সম্পাদক ও জলসিঁড়ির সংগঠক কবি নীহার মোশারফ, আবৃত্তিশিল্পী সমাজসেবক মীর মোশারেফ অমি প্রমুখ ।

সভায় উপস্থিত সদস্যদের ভোটাভুটির মাধ্যমে শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম কে সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সাংবাদিক কবি রিপন শানকে নির্বাহী সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সংগঠক মহিউদ্দিন মহিনকে সাধারণ সম্পাদক, কবি গবেষক কবি নীহার মোশারফ কে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি ২০২৫- ২০২৭ গঠন করা হয়েছে ।

কমিটির সহ-সভাপতিগণ হচ্ছেন- সিনিয়র প্রভাষক কবি মিলি বসাক, কবি মোঃ জুলফিকার আলী। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গণ হচ্ছেন- কবি আল মনির, আবৃত্তিশিল্পী মীর মোশারেফ অমি । অর্থ ও দপ্তর সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি বিলকিস জাহান মুনমুন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি শাহনাজ পারুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন সাংবাদিক মুহাম্মদ নুরুল্লাহ আরিফ । নির্বাহী সদস্যগণ হচ্ছেন- অধ্যক্ষ কবি এম এস জালাল বিল্লাহ, কবি দিলরুবা জ্যাসমিন, কবি চৌধুরী সাব্বির আলম এবং কবি এরশাদ সোহেল ।

আসছে ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ শনিবার বিকেল ৪ টায় ভোলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিতব্য জলসিঁড়ির মাসিক সাহিত্য সভায় নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত হবে ।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ