আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

গাজীপুরে এক সাংবাদিককে মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে তদন্তের নির্দেশনা আইজিপি’র

সুরুজ্জামান রাসেল গাজীপুর প্রতিনিধি

গাজীপুরে দৈনিক বাংলাদেশের আলো পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মোঃ আনোয়ার হোসেনকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে মেট্টোপলিটন সদর থানার সাবেক ওসি সৈয়দ রাফিউল করিম ও এসআই আবু ছাঈদের বিরুদ্ধে তদন্তে নির্দেশনা দিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি।

গত রবিবার (১৯মে ২০২৪) সন্ধ্যায় আনোয়ার সংবাদ সংগ্রহ করার জন্য রাজেন্দ্রপুর হোটেল এক্সে যায়। ঐসংবাদিকের তথ্যের ভিত্তিতে উল্লেখিত তারিখের কয়েকদিন পূর্বে হোটেল এক্সসহ আরও কয়েকটি হোটেলকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছিল। পূর্ব বিরোধের জেরে গাজীপুরের বনখড়িয়া এলাকার মাটি বিক্রেতা আইনুদ্দিন ও রাজেন্দ্রপুর এলাকার মাসুমের স্ত্রী মাহমুদা তাদের নিজস্ব বাহিনীর ২০/২৫ জন সন্ত্রাসী দিয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আনোয়ারকে জোরপূর্বক আটক করে মাহমুদার হুকুমে আনোয়ারকে ধরে গজারী বনে নিয়ে গিয়ে মারধর করতে থাকে। তখন প্রতক্ষদর্শী শ্রী সৌরভ মজুমদার ৯৯৯ ফোন করে এই বিষয়ে জানালে তাৎক্ষণিক সদর থানার এসআই আবু ছাঈদ সাদা রংয়ের নোয়া গাড়ি দিয়ে আসে। জঙ্গল থেকে আনোয়ারকে উদ্ধার করে। আনোয়ার ও মাহমুদাকে পুলিশের গাড়িতে করে সদর থানায় নিয়ে যায়।

ইতিপূর্বে সদর থানার সাবেক ওসি সৈয়দ রাফিউল করিমের বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচার এবং আনোয়ারের স্ত্রী নারী পুলিশ কনস্টেবল রুবিনার সাথে সাংসারিক জীবনে বনিবনা না হওয়ায় পূর্ব থেকেই আনোয়ারকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছিল। পুলিশ মাহমুদা ও আনোয়ারকে থানায় নিয়ে আসার পর পুলিশ আনোয়ারকে অমানবিক শারীরিক নির্যাতন করে। আনোয়ারের শারীরিক পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় পুলিশ গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। ঐদিন রাতেই সদর থানার পুলিশের যোগসাজশে মাহমুদার স্বামী মাসুমের গাড়ির কাউন্টারের সুপারভাইজার ইব্রাহীমকে বাদী করে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে চাঁদা বাজি মামলা রুজু করে। পুলিশ এমামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডের আবেদনসহ আনোয়ারকে কোর্টে সোপর্দ করে।

এঘটনায় গত শনিবার (১২ অক্টোবর) পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ৪৪.০১.০০০০.১০১.৩৯.০৩৩.২৪/৩৮৭০ নং স্মারকে উক্ত চাঁদা বাজির মিথ্যা মামলা রুজু করার অভিযোগে সদর থানার সাবেক ওসি ও এসআই এর বিরদ্ধে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে তদন্তের নির্দেশনা দিয়েছেন।

এঘটনায় ৯৯৯’এর সংবাদ দাতা শ্রী সৌরভ মজুমদার বলেন, গত রবিবার (১৯মে ২০২৪) সন্ধ্যার পর আইনুদ্দিন ও মাহমুদার বাহিনীর সদস্যরা আনোয়ারকে জঙ্গলে ধরে নিয়ে মারধোর করতে থাকে। তখন আমি ৯৯৯’এ ফোন দিয়ে জানালে পুলিশ এসে গজারী বন থেকে আনোয়ারকে উদ্ধার করে। মাহমুদা ও আনোয়ারকে এসআই আবু ছাঈদ থানায় নিয়ে যায়। আমি ৯৯৯ ফোন করায় পুলিশের এসআই আবু ছাঈদ আমার বাড়ীতে গিয়ে আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকী প্রদান করিতেছে।

এবিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অপরাধ উত্তর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) নাজির আহমেদ জানান, উক্ত বিষয়ে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ শাহাদত হোসেন সুমা অনুসন্ধান করছেন। যা বর্তমানে তদন্তাধীন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ভোলায় জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত ।

দ্বীপজেলা ভোলার আধুনিক সাহিত্য সংগঠন জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের ১৫ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়েছে ।গতকাল ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যায় ভোলা সদরের গঙ্গাকীর্তি হারুন অর রশিদ স্মৃতি পাঠাগারে অনুষ্ঠিত জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের সাধারণ সভায় সংগঠনের আহ্বায়ক শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম এর সভাপতিত্বে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ রোদসী কৃষ্টিসংসারের চেয়ারম্যান ও জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র প্রভাষক কবি রিপন শান, জাতীয় সাহিত্য সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট ভোলা জেলা শাখার সদস্য সচিব প্রভাষক কবি মিলি বসাক, জলসিঁড়ির সদস্য সচিব কবি মহিউদ্দিন মহিন, জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সাংগঠনিক সম্পাদক ও জলসিঁড়ির সংগঠক কবি নীহার মোশারফ, আবৃত্তিশিল্পী সমাজসেবক মীর মোশারেফ অমি প্রমুখ ।

সভায় উপস্থিত সদস্যদের ভোটাভুটির মাধ্যমে শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম কে সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সাংবাদিক কবি রিপন শানকে নির্বাহী সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সংগঠক মহিউদ্দিন মহিনকে সাধারণ সম্পাদক, কবি গবেষক কবি নীহার মোশারফ কে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি ২০২৫- ২০২৭ গঠন করা হয়েছে ।

কমিটির সহ-সভাপতিগণ হচ্ছেন- সিনিয়র প্রভাষক কবি মিলি বসাক, কবি মোঃ জুলফিকার আলী। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গণ হচ্ছেন- কবি আল মনির, আবৃত্তিশিল্পী মীর মোশারেফ অমি । অর্থ ও দপ্তর সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি বিলকিস জাহান মুনমুন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি শাহনাজ পারুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন সাংবাদিক মুহাম্মদ নুরুল্লাহ আরিফ । নির্বাহী সদস্যগণ হচ্ছেন- অধ্যক্ষ কবি এম এস জালাল বিল্লাহ, কবি দিলরুবা জ্যাসমিন, কবি চৌধুরী সাব্বির আলম এবং কবি এরশাদ সোহেল ।

আসছে ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ শনিবার বিকেল ৪ টায় ভোলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিতব্য জলসিঁড়ির মাসিক সাহিত্য সভায় নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত হবে ।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ