আজঃ বুধবার ১২ মার্চ, ২০২৫

ডেঙ্গুতে চট্টগ্রামে মৃত্যুর হার কমেছে :চসিক মেয়র

চট্টগ্রাম ব্যুরো

: আপাতত বিদেশি একটি ‘রিসার্চ প্রোডাক্ট’ দিয়ে এডিস মশার লার্ভা নিধনের উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য উন্নত দেশ থেকেও ওষুধ সন্ধানের কথা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। বিশেষ করে মশা মারতে গতানুগতিক ওষুধের বাইরে গিয়ে নতুন ওষুধ ব্যবহারের পথে হাঁটছেন তিনি।বৃহস্পতিবার নগরের চকবাজার সিটি করপোরেশনের কাঁচা বাজারে বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযানের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
চসিক মেয়র বলেন, একই স্প্রে মারতে থাকলে মশা সেটায় অভ্যস্ত হয়ে যাবে। তার স্থায়িত্বকাল বাড়বে। এই মশা আর মরবে না। কাজেই নতুন নতুন কিছু উদ্ভাবন আমাদের ৩-৪ বছর পরপর করতে হবে। এটাতে ফল পাওয়া যাবে।
নতুন একটি ওষুধের সন্ধান পাওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা একটি নতুন ওষুধ বের করেছি রিসার্চ প্রোডাক্ট। সেটা হচ্ছে মসকিউটো এন্ড সলিউশান, এডিস মশার লার্ভাসহ অন্যান্য লার্ভা ধ্বংস করার জন্য। আমি আরও রিসার্চ প্রোডাক্ট বিশ্বের প্রতিটি দেশের উন্নত দেশে খোঁজ নিচ্ছি। আরেকটি রিসার্চ প্রোডাক্ট আমরা পেয়েছি। সেটিও আমরা আনবো এবং দুটোর গুণগত মান আমরা দেখবো কোনটায় মশা বেশি মারা যাচ্ছে।
ডেঙ্গুতে চট্টগ্রামে মৃত্যুর হার কমেছে উল্লেখ করে ডা. শাহাদাত বলেন,এখন ডেঙ্গুর মৌসুম চলছে। যা বাংলাদেশে মহামারি আকার ধারণ করেছে। চট্টগ্রামে আমরা দেখতে পাচ্ছি গত তিন চারদিনে মৃত্যুর হার শুন্যের কোটায় আছে। আমরা ডেঙ্গুর পাশাপাশি জনসচেতনার পাশাপাশি চিকুনগুনিয়াসহ অন্য মশাবাহিত যেসকল রোগ আছে সেগুলোর জন্য আমরা স্প্রে দিচ্ছি এবং সেই স্প্রে ঠিকমতো দিচ্ছে কিনা তা তদারকি করছি। এছাড়া জনগণের মাঝে লিফলেট বিতরণ করছি।
নগরবাসীকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, একটা জিনিস মনে রাখবেন, আমি হাজার হাজার কোটি টাকা জলাবদ্ধতা এবং পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য এবং মশা মারার জন্য যদি খরচ করে যদি জনগণকে সচেতন করতে না পারি তখন এই নগরকে আপনি সুন্দর রাখতে পারবেন না। যার কারণে আমি বলেছি, আমি এসি রুমে বসে থাকার জন্য আসিনি। আমি রাস্তায় কাজ করার জন্য, জনগণের পাশে থাকার জন্য এসেছি।
পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মচারীদের তদারকি করা হচ্ছে জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘আমি আপনাদেরকে বলেছি আমি নগরপিতা নই, নগরসেবক হিসেবে কাজ করতে চাই। জনগণের দুর্ভোগ যাতে না হয়। পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার ওপর আমি বেশি জোর দিচ্ছি। ক্লিন সিটি, গ্রিন সিটি এবং হেলদি সিটি। যার প্রেক্ষিতে গত সরকারের আমলে প্রতিটি কাউন্সিলর প্রতিটি ওয়ার্ডে ৬০ থেকে ৭০ জন পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা রেখেছে। তারা ঠিকমতো জনগণের কাজ করছে কিনা সেটি তদারকির জন্য আমি তাদের নাম ধরে ডাকছি। আমি জনগণকে জিজ্ঞেস করছি তাদেরকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানে দেখা গিয়েছিল কিনা। কারণ তাদের কাজটাই সেটা। এর জন্য তারা একেকজন ১৪ থেকে ১৭ হাজার টাকা পর্যন্ত নিচ্ছে। এজন্য প্রতিটা ওয়ার্ডে আমি যাচ্ছি। পূর্ব বাকলিয়া গিয়েছি, পশ্চিম বাকলিয়া গিয়েছি এবং আজকে চকবাজার ওয়ার্ডে এসেছি। এভাবে প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে যাচ্ছি। আর জনগণ যাতে ময়লা-আবর্জনা রাস্তা-নালায় না ফেলে ডাস্টবিনে ফেলে সেই জনসচেতনতা বৃদ্ধি করছি।
‘কাজেই আমি মনে করি যারা চট্টগ্রামের ৪১টি ওয়ার্ডে আছেন ৭০ লক্ষ লোক বাস করছেন, যে জায়গায় পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন কর্মচারীরা আপনাদের সেবা দিচ্ছেন না আপনারা আমাদের জানাবেন। ইনশাআল্লাহ জনগণের যেকোনো সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছি। ইতিমধ্যে আপনারা জানেন ডেঙ্গুর জন্য প্রথমদিন থেকে ম্যানেজমেন্ট সেন্টার এবং সেল সেন্টার খোলা হয়েছে। যেখানে ডেঙ্গুর যে টেস্ট সেটি বিনামূল্যে করে দিচ্ছি। আমরা ওইখানে ১০টি বেড রেখেছি। যেকোনো সময় মুমূর্ষু রোগী সেখানে চিকিৎসা নিতে পারবে।
প্রতিটি ওয়ার্ডে গত সরকারের আমলে মেয়র-কাউন্সিলররা দুর্নীতি করেছেন অভিযোগ করে মেয়র বলেন, ‘আমি প্রতিটি ওয়ার্ডে গিয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু দুর্নীতির চিত্র দেখতে পাচ্ছি। বিশেষ করে আপনারা দেখেছেন শোলকবহর ওয়ার্ডের বিপ্লব উদ্যানে গিয়েছি সেখানে ২৫টি দোকান থেকে অলরেডি ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা লোপাট হয়ে গিয়েছে। অথচ সেখান থেকে পুরো এক বছরে করপোরেশন পেতো এক লাখ টাকা করে গত ১০ বছরে। অথচ ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা প্রতিবছর আয় করার কথা ছিল। কাজেই এই যে দুর্নীতি মেয়র এবং কাউন্সিলররা করেছেন আমি একে একে সব দেখতে পাচ্ছি। শুধু একটি ওয়ার্ড নয়, প্রতিটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর এবং মেয়ররা মিলে দুর্নীতি করেছে এটার শ্বেতপত্র বের হওয়া উচিৎ এবং জনগণ সেটা জানা উচিত।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

দেশব্যাপী নারী হেনস্থার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের মানববন্ধন

দেশব্যাপী নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, নিপীড়ন, ধর্ষণ, অনলাইনে হেনস্তা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক অবনতি ও বিচারহীনতার প্রতিবাদে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে চট্টগ্রামে কেন্দ্র ঘোষিত মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল।

আজ সোমবার (১০ মার্চ) সকালে চট্টগ্রামে স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মানববন্ধন করেছে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল এবং পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ছাত্রদল । এসময় প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি প্রাঙ্গণে মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদল নেতা মোঃ আরমান হোসেন, মোঃ মানিক রতন তানিম, সামির হায়দার, হৃদয় মোল্লা, আহসান আলমগীর চৌধুরী, সামিরা নুর সহ নেতৃবৃন্দ।

পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি প্রাঙ্গণে মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদল নেতা
রিয়াদুল হক রিয়াদ, আতিক, জিসান সহ ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ।

আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের মাসিক কল্যাণ ও অপরাধ সভা অনুষ্ঠিত

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের হেডকোয়ার্টারে সোমবার (১০ মার্চ) আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মাসিক কল্যাণ ও অপরাধ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত কল্যাণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ড. মো.নাজমুল করিম খান।

উক্ত কল্যাণ সভায় পুলিশ কমিশনার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারগণ এবং উপ-পুলিশ কমিশনারগণসহ পুলিশের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ পুলিশের সার্বিক কল্যাণ এবং শৃঙ্খলা নিয়ে তাদের মূল্যবান মতামত প্রদান করেন। এছাড়াও গত মাসে পুলিশের ওয়ারেন্ট তামিল এবং ভাল কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ মাননীয় পুলিশ কমিশনার পুলিশ সদস্যদের মধ্যে অর্থ পুরস্কার বিতরণ করেন।

পুলিশ কমিশনার ঈদের কেনাকাটা নির্বিঘ্ন করতে এবং ছিনতাই প্রতিরোধে জিএমপি পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটকে নির্দেশনা প্রদান করেন এবং ঈদে ঘরে ফেরা যাত্রীদের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে ট্রাফিক বিভাগকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন। এছাড়াও তিনি মুলতবি মামলার দ্রুত নিষ্পন্ন করণ এবং ওয়ারেন্ট তামিলে আরো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। সাধারণ মানুষ যাতে কোন ভাবেই হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে সতর্কদৃষ্টি রাখতে সবাইকে নির্দেশনা দেন। পরিশেষে সকলের সর্বাঙ্গীর মঙ্গল কামনা করে অনুষ্ঠান সমাপ্তি করেন।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ