আজঃ বুধবার ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

রংপুর এসিআই মটরস লিমিটেড থেকে কিস্তিতে ট্রাক্টর কিনে প্রতারণায় পড়ে নিঃস্ব হয়েছেন কৃষক আনারুল ইসলাম আঙ্গুর

লালমনিরহাট প্রতিনিধি।

লালমনিরহাট সদরের রাজপুর ইউনিয়নের খলাইঘাট এলাকার বাসিন্দা মৃত ফরমান আলীর ছেলে মো: আনারুল ইসলাম আঙ্গুর এসিআই মটরস লিমিটেড রংপুর অফিস থেকে ২৮/০৫/২০১৬ ইং তারিখে সোনালীকা D145RX(A) মডেলের একটি ট্রাক্টর কিস্তিতে ক্রয় করেন। ট্রাক্টরটির নির্ধারিত মূল্যে ছিল ১১,৫০,০০০ টাকা। সে অনুযায়ী ননজুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তিবদ্ধ হয়ে রংপুর এসিআই মটরস হতে ট্রাক্টরটি কিনে নেন তিনি।এবং নিয়ম মেনে ১০,১০,৫০০ টা বিভিন্ন সময়ে কিস্তির টাকাও পরিশোধ করেন।

দীর্ঘ আশা ছিল ট্রাক্টরটি কিনে চাষাবাদ করে জীবনের ভাগ্য বদলের , কিন্তু তার সেই আশায় গুড়ে বালি হয়ে গেছে। আর্থিক অসুবিধার কারণে বাকী কিস্তির টাকা পরিশোধে বিলম্বিত হওয়ায় ১৬/১১/২০১৫ইং তারিখে রংপুর-কাউনিয়া মহাসড়ক হতে ট্রাক্টরটি আটকিয়ে রংপুর ধাপ অফিসে নিয়ে আসেন এসিআই মটরস লিমিটেড কর্তৃপক্ষ। সেই সচল ক্রয়কৃত ট্রাক্টরটি পরবর্তীতে শর্তমোতাবেক বিলম্ব ফি-সহ বাকী পাওনা টাকা প্রদানে মো: আনারুল ইসলাম আঙ্গুর ট্রাক্টরটি ফেরত নিতে চাইলে এসিআই মটরস লিমিটেড ট্রাক্টরটি ফেরত দিতে অস্বীকার জানালে তিনি ১২/০৬/২০১৬, ২০/১২/২০১৬ ও ১৭/১০/২০১৭ইং তারিখে লিগ্যাল নোটিশ দিয়ে ট্রাক্টরটি ফেরত নিতে চান কিন্তু এসিআই মটরস লিমিটেড ট্রাক্টরটি ফেরত না দেয়ায় পরবর্তীতে আনারুল ইসলাম আঙ্গুর নিজেই বাদী হয়ে এসিআই মটরস-এর রংপুর অফিসের কর্মকর্তা মোঃআতিয়ার রহমান, রিজিওনাল সেলস্ অফিসার, মো: বাবুল হোসেন, রফিকুল ইসলামকে আসামী করে ৪০৬, ৪০৯ ও ৪২০ ধারায় রংপুরের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে বিগত ০৫/০৭/২০১৮ইং তারিখে মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর-২০৩/১৯। উক্ত মামলায় বিজ্ঞ আদালত আসামীগণের বিরুদ্ধে সমন ইস্যু করেন এবং আসামীগণ

জামিনপ্রাপ্ত হয়ে মামলা দীর্ঘায়িত করে দীর্ঘ বৎসর মামলা পরিচালনা করান। বিজ্ঞ আদালত গত ১৬/০৫/২০২৪ইং তারিখে মামলার বাদীকে ২,৭০,০০০ টাকা গ্রহণ সাপেক্ষে ট্রাক্টরটি ফেরত প্রদানের জন্য আদেশ প্রদান করেন। সে আদেশ অনুযায়ী আনারুল ইসলাম আংগুর বাকী টাকা প্রদান করতে ইচ্ছুক হন এবং এসিআই মটরস-এর রংপুর অফিস হতে ট্রাক্টরটি ফেরত নিতে গিয়ে দেখতে পায় যে, এসিআই মটরস-এর লোকজন ইতিমধ্যে উক্ত ট্রাক্টরের মূল টায়ার বদল করে পুরাতন অচল টায়ার লাগিয়ে রেখেছে। ট্রাক্টরের হাল যন্ত্র, ব্যাটারী এবং মূল্যবান যন্ত্রাংশ গুলো খুলে নিয়েছে। অর্থাৎ ট্রাক্টর নামের খোলসটি শুধু পড়ে রয়েছে বর্তমানে যা পরিত্যাক্ত অবস্থায় রয়েছে।

দোকানে ভাংড়ি হিসাবে বিক্রয় করা হলে আনুমানিক মূল্য সর্বোচ্চ ১ (এক) লক্ষ টাকা হতে পারে বলে জানান ভুক্তভোগী।

এক মাত্র সম্বল টুকু হারিয়ে অসহায় কৃষক আনারুল ইসলাম আঙ্গুর ট্রাক্টরটি সাবেক অবস্থায় উদ্ধারে বার বার ব্যর্থ হয়ে রংপুরের বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৯৮ অনুযায়ী গত ১৯/০৫/২০২৪ইং তারিখে

মামলা দায়ের করেন, মামলার নম্বর মিছ পিটিশন ৮৬/২৪ইং এবং বর্তমানে কোতয়ালী থানায় তদন্তাধীন অবস্থায় রয়েছে। কিস্তিতে ট্রাক্টর কিনে প্রতারণার স্বীকার হয়ে বছরের পর বছর হয়রানী ও আর্থিক ক্ষতির শিকার কৃষক পরিবারটি অর্থনৈতিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। বারবার বিচার চেয়েও কোন সঠিক বিচার মিলেনি । পরিশ্রমের টাকায় ক্রয় কৃত ট্রাক্টরটি সচল অবস্থায় ফিরে পাবে বলে আশায় রয়েছে অসহায় কৃষক আনারুল ইসলাম আঙ্গুর।

এসিআই মটরস-এর রংপুর অফিসের কর্মকর্তগণের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা অজুহাত দেখিয়ে বলেন, আদালতের সিদ্ধান্তে বিষয়টি সুরাহা হবে নতুবা বাকি ২,৭৫,০০০ টাকা দিয়ে বর্তমান যে অবস্থায় আছে সেই অবস্থায় ট্রাক্টরটি ফেরত নিতে বলেন বর্তমান যার বাজার মূল্য ১ লক্ষ টাকার নিচে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আনারুল ইসলাম আঙ্গুর ট্রাক্টরটি কিনে রংপুর এসিআই মোটরস এর ফাঁদে পড়ে এর পিছনে একেবারেই নিঃস্ব হয়ে গেছেন এবং তিনি কোন সুবিচার পাচ্ছেন না।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

রাণীশংকৈলে কৃষি যন্ত্রের মাধ্যমে চাষাবাদের উদ্বোধন 

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে রবি ২০২৪-২৫ মৌসুমে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচীর আওতায় বোরো ধান (উফশী) সমলয় ব্লক প্রদর্শনীর রাইস ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্রের মাধ্যমে চারা রোপণের শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে।  কাশিপুর ইউনিয়নে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর আয়োজনে ৫০ একর জমিতে চারা রোপণের মাধ্যমে এর উদ্বোধন করা হয়। 

এসময় ইউএনও রকিবুল হাসান এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম, কৃষি প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন, জামায়াতের সেক্রেটারি রজব আলী, কৃষক আফজাল হোসেন আফাজ প্রমুখ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কৃষি অফিসার সহিদুল ইসলাম বলেন,সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদে উৎপাদন খরচের অতিরিক্ত সময় ও ব্যয়ের  হাত থেকে রক্ষা করতে যন্ত্রের মাধ্যমে চাষাবাদ ভূমিকা রাখছে।কৃষিতে যান্ত্রিকীকায়ণের ফলে সমলয় চাষাবাদে কৃষির উৎপাদন খরচ অর্ধেকের কম নেমে এসেছে ফলে কৃষক লাভবান হচ্ছে।
এ সময় শতাধিক স্থানীয় কৃষক কৃষানি উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন উপসহকারী কৃষি অফিসার সাদেকুল ইসলাম।

পাবনার চলনবিলে অপরিকল্পিতভাবে বানিজ্যিক পুকুর খনন

পাবনা জেলার চলনবিলের বিভিন্ন  এলাকার  এ কৃষিজমিতে দেশের প্রচলিত আইন অমান্য করে শ্রেণি পরিবর্তন করা হচ্ছে। জমির উপরিভাগের মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে ইটভাটায়। রাতের আধারে কৃষিজমিতে খনন করা হচ্ছে পুকুর। প্রতি বছর কৃষিজমির বড় একটি অংশ চলে যাচ্ছে বানিজ্যিক পুকুর খননে।
জেলার বিভিন্ন এলাকায় কিছু কিছু অসাধু ব্যক্তি আবাদি জমিতে অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খনন করছে। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে রাতের আধারে ভেকু মেশিন দিয়ে চলছে পুকুর খননের মহোৎসব। ইটভাটার মালিক ও মাটি ব্যবসায়ীরা কৃষকদের অর্থের লোভ দেখিয়ে তিন-চার ফসলি জমির মাটি কেটে পুকুরে পরিনত করছে।
১৯৮৯ সালের ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রন আইন ( সংশোধিত ২০০১) অনুযায়ী, কৃষিজমির টপ সয়েল বা উপরিভাগের মাটি কেটে শ্রেণি পরিবর্তন করা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ রয়েছে।
এ কাজে জড়িত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা জরিমানা এবং দুই বছরের কারাদন্ড দেয়ার বিধান আছে। এ ক্ষেত্রে এ কাজের সাথে জড়িত জমি ও ইটভাটার মালিক উভয়ের জন্যই সমান শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।
জেলার ৯টি উপজেলায় অবাধে চলছে জমির মাটি কাটার ঘটনা। মাটি কাটা হচ্ছে স্কেভেটরে (ভেকু মেশিন)। পরে ট্রাকে করে মাটি সরবরাহ করা হচ্ছে ইটভাটাসহ বিভিন্ন জায়গায়। ভাঙ্গুড়া,ফরিদপুর  চাটমোহর,বেড়া, সুজানগর, সাঁথিয়া,আটঘড়িয়া, ঈশ্বরদী উপজেলায় কৃষিজমি কেটে বানিজ্যিক পুকুর খনন করা হয়েছে। এরমধ্যে আটঘড়িয়া সাঁথিয়া  ভাঙ্গুড়া ও চাটমোহর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি পুকুর খনন করা হয়েছে, হচ্ছে।
গত কয়েক বছর ধরেই ভাঙ্গুড়া,ফরিদপুর, চাটমোহর, আটঘড়িয়া, ঈশ্বরদী,সাঁথিয়া, সুজানগর বেড়া উপজেলা এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে ফসলী জমিতে পুকুর খননের মহোৎসব চলছে।
 সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শ্রেণি পরিবর্তন করে আবাদযোগ্য জমিতে পুকুর খননের সুযোগ নেই আইনে। তারপরও এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি নানান কৌশলে পুকুর খনন করে যাচ্ছে। বিশেষ করে বিল ও নিচু এলাকাগুলোকে অনাবাদি বিংবা এক ফসলি দেখিয়ে পুকুর খনন করছেন তারা।
পুকুর খনন বিষয়ে জানতে চাইলে পাবনা সদর  উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি ও  নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্যাট  মোঃ মুরাদ হোসেন বলেন, সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে পুকুর খনন করা যাবে না। এ বিষয়ে আমাদের অভিযান চলমান আছে। ইতিমধ্যে অনেককে জরিমানাসহ আইনের আওতায় আনা হয়েছে।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ