আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রামে সুন্নি জনতার বিক্ষোভে আজমির শরীফ নিয়ে চক্রান্ত বন্ধ করার দাবি

চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রামে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বীর চট্টলার সুন্নি জনতা। ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, জাতীয় পতাকা পোড়ানো এবং আজমীর শরীফকে মন্দির দাবি করার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার জুমার নামাজের শেষে নগরের জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ প্রাঙ্গণে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে এক বিক্ষোভ মিছিল জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে বের হয়ে আলমাস সিনেমা হল এলাকা ঘুরে আবার মসজিদ প্রাঙ্গণে ফিরে আসে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগ, ক্ষোভ ও হতাশার সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, সম্প্রতি ভারতে দুটি অত্যন্ত নিন্দনীয় ও উদ্বেগজনক ঘটনা ঘটেছে। প্রথমত, ত্রিপুরার আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে হামলা ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা পোড়ানোর মতো জঘন্য ঘটনা ঘটেছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড কেবল কূটনৈতিক শিষ্টাচার ও আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
তারা বলেন, ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর, ভারত সরকার ও ভারতীয় মিডিয়া বাংলাদেশ নিয়ে যে পরিমাণ অপপ্রচার করেছে তা পৃথিবীতে নজিরবিহীন। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশের জনগণ ভারতের বিরুদ্ধে যেভাবে ঐক্য গড়ে তুলেছে, তা দেখে ভারত সরকারের শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত।
নেতৃবৃন্দ বলেন, এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্য ভারত সরকারকে বাংলাদেশে সরকার ও জনগনের নিকট ক্ষমা চাইতে হবে। দ্বিতীয়ত, উগ্র হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসীরা ভারতের ঐতিহাসিক পবিত্র স্থান আজমীর শরীফকে মন্দির বলে দাবি করে বিভাজনের রাজনীতি চালাচ্ছে। এটি শুধু মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতই নই বরং সারা বিশ্বের মুসলমানদের সাথে শত্রুতার সামিল। ভারত সরকারের উচিত পৃথ্বীরাজের ইতিহাস স্মরণ করা। বর্তমান ভারত সরকার নিশ্চয় সে সময়কার পৃথ্বীরাজের চেয়ে বেশি শক্তিশালী না।
তারা বলেন, গরিবে নেওয়াজ হাবীবুল্লাহ হযরত খাজা মঈনুদ্দীন চিশতী আল হিন্দ রহমুতুল্লাহি আলাইহি যখন আজমীর শরীফ আগমন করেন তখন তিনি ও তার খাদেমগন মিলিয়ে কয়েকজন আল্লাহ পাক এর বান্দা ছিলো। পৃথ্বীরাজ এর মতো শাসক যাদের সামনে টিকতে পারেনি। আর আজ সারা বিশ্বে তিনশো কোটি মুসলমান। ভারত সরকার যদি বেশি বাড়াবাড়ি করে, তাহলে ভারত নামক এই হিন্দত্ববাদী রাষ্ট্রকে বিশ্বের মানচিত্র থেকে গায়েব করে দেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ্।
ভারতকে সাবধান করে দিয়ে আরও বক্তারা বলেন, ভারত সরকারকে সাবধান করে দিয়ে বলছি, আজমীর শরীফ নিয়ে চক্রান্ত বন্ধ করুন। আল্লাহ এর ঘর মসজিদ ভাঙা ও মুসলমানদের উপর নির্যাতন বন্ধ করুন। নচেৎ মুহম্মদ বিন ঘউরী রহমতুল্লাহি আলাইহি, মাহমুদ গজনবী রহমতুল্লাহি আলাইহি এর আগমন ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না।
সমাবেশ থেকে অবিলম্বে রিপাবলিক বাংলাসহ বাংলাদেশ নিয়ে অপপ্রচারকারী ভারতীয় সমস্ত চ্যানেল এবং উগ্র হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকন, হিন্দু জাগরণ মঞ্চ, সনাতনী বিদ্যার্থী সংসদ নামক সংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ করতে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানান তারা।
একই সঙ্গে দেশের সকল তরুণদের সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা এবং চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত প্রত্যেকে আইনের আওতায় আনারও দাবি জানান তারা। পাশাপাশি বিভিন্ন মাজার ও মসজিদে হামলার সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরকেও আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
মাওলানা হারুনুর রশিদের সভাপতিত্বে ও মুহাম্মদ মোশারফ হোসেনের সঞ্চালনায় এসময় উপস্থিত ছিলেন মাওলানা এনাম রেজা, আমান সমরকন্দি, মুহাম্মদ এনামুল হক, মুহাম্মদ মঞ্জু, সাকিব রিদুয়ান, নুর মোহাম্মদ, আমির আলী প্রমুখ।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের দোয়া মাহফিল খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায়

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রেস ক্লাবের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা, সিনিয়র সাংবাদিক এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

দোয়া মাহফিলে বক্তারা বলেন, দেশের গণমাধ্যমের উন্নয়ন, সাংবাদিক সমাজের কল্যাণ এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বেগম খালেদা জিয়া ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অবদান চট্টগ্রামের সাংবাদিক সমাজ চিরদিন স্মরণ করবে। বক্তারা ঐতিহাসিক অবদান স্মরণ করতে গিয়ে উল্লেখ করে বলেন, ১৯৭৮ সালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের উন্নয়নে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ২ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছিলেন।

১৯৮০ সালে বায়েজিদের শেরশাহ এলাকায় সাংবাদিকদের আবাসনের জন্য সাংবাদিক হাউজিং সোসাইটি-তে ১৬ একর জমি বরাদ্দ দেন, যা ১৯৮১ সালে বিচারপতি আব্দুস সাত্তার সরকারের আমলে তা রেজিস্ট্রি করা হয়। ১৯৯৪ সালে প্রেস ক্লাবের আর্থিক সংকট মোকাবিলায় তৎকালীন মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমানের অনুরোধে প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ১৫ লাখ টাকা অনুদান প্রদান করেছিলেন।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের শৃঙ্খলা ও ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মইনুদ্দীন কাদেরী শওকত বলেন, বেগম খালেদা জিয়া প্রেস ক্লাবের জন্য অসামান্য অবদান রেখেছেন। আমি অতীতে তাকে আজীবন সদস্যপদ দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলাম, কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি। এখন আবারও অনুরোধ জানাই—বেগম খালেদা জিয়াকে প্রেস ক্লাবের আজীবন সদস্যপদ প্রদান করা হোক।

দোয়া মাহফিলে দেশ ও জাতির শান্তি, কল্যাণ ও স্থিতিশীলতার পাশাপাশি বেগম খালেদা জিয়ার সুস্বাস্থ্য কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন শাহ আনিস জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন।
দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন প্রেস ক্লাবের অন্তবর্তী কমিটির সদস্য মুস্তফা নঈম, চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান, প্রেস ক্লাবের সাবেক লাইব্রেরি সম্পাদক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলামসহ অন্য সদস্যরা।মাহফিল শেষে বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘায়ু ও সুস্থতার জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার উদ্যেগে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সাইবার ভিত্তিক সংগঠন জিয়া সাইবার ফোর্স (জেডসিএফ) চট্টগ্রাম দক্ষিণ উদ্যোগে বিএনপির চেয়ারপার্সন আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও পরিপূর্ণ সুস্থতা কামনায় জিয়া সাইবার ফোর্স- (জেডসিএফ), চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার উদ্যেগে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত। গত শনিবার বাদে মাগরিব পটিয়া তৈয়াবিয়া এতিমখানা, হেজখানা, খতমে কোরআন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত দোয়া মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন আহ্বায়ক মোঃ আবুল বশর চৌধুরী। সঞ্চালনায় ছিলেন সদস্য সচিব এডভোকেট আজিজুল হক।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী বাহাউদ্দীন ফারুক মুন্না। উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক আরাফাত চৌধুরী, কাজী মোঃ বাদশা, নাবিদুর রহমান, মোঃ রবিউল হোসেন আলভী, মোহাম্মদ মাহিম, তানবির জিহান সহ দক্ষিণ জেলার সকল নেত্ববৃন্দ। দোয়া ও মোনাজাতে মহান আল্লাহর দরবারে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য রোগ থেকে পরিপূর্ণ সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এসময় দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করেও দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ