আজঃ মঙ্গলবার ২০ মে, ২০২৫

শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে লেপ তোশক কারিগরদের ব্যস্ততা

সাহিদ বাদশা বাবু , লালমনিরহাট ::

লালমনিরহাটে শীতের তীব্রতার সঙ্গে বেড়েছে লেপ, তোশক,জাজিম সহ কম্বলের কদর। ফলে এসব সামগ্রী তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে কারিগররা। সরেজমিনে লালমনিরহাটের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতাদের চাহিদা হরেক রকমের তুলা দিয়ে ছোট বড় লেপ বা তোশক তৈরি করার।

বর্তমানে কারিগরদের ব্যস্ততা সঙ্গে ক্রেতাদের ভিড়ও বেড়েছে। দোকানিরা ক্রেতাদের বিভিন্ন মানের কাপড় ও তুলা দেখাচ্ছেন, নিচ্ছেন অর্ডার। কারিগররা তৈরি করছেন বিভিন্ন সাইজের লেপ- তোশক- জাজিম। জেলার শহরের লেপ-তোশক তৈরির ১৪ থেকে ১৫টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মযজ্ঞ চলছে সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত। বাজারে সব রকমের জিনিসের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লেপ-তোশক তৈরির উপকরণের খরচও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার প্রতি গজ লেপ তৈরির কাপড়ের দাম
৫০-৬০ টাকা, তোশকের প্রতি গজ কাপড়ের দাম ৪৫-৫০টাকা এবং প্রতি গজ জাজিম তৈরির কাপড়ের দাম রাখা হচ্ছে ১২০-১৫০ টাকা করে। প্রকারভেদে গার্মেন্টস তুলা ৫০ থেকে ১০০ টাকা, ফোম তুলা ২০০, শিমুল তুলা ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি জুটের দাম রাখা হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা করে। এ বছরের প্রায় সব ধরনের তুলার কেজিতে ২০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। এ বছর এক পিস রেডিমেট লেপ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে, তোশক বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১৭০০ টাকার মধ্যে। এছাড়া জাজিম বিক্রি হচ্ছে ২৫০০ টাকা থেকে ৪০০০ টাকার মধ্যে। এ ছাড়া বালিশ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ২০০ টাকায়।

বড়বাড়ী বাজারে লেপ-তোশকের কারিগর
শরিফুল ইসলাম (২২) বলেন, ঠান্ডা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজের চাপ ও বাড়ছে। এখন রাত ১২টা পর্যন্ত কাজ করেও মহাজনের চাহিদা পূরণ করতে পারছি না। এবার গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করছি ।

কারিগর মাসুদ বলেন (৩৫), প্রতিবছরের মতো এবারও শীতের আগে ব্যস্ততা বেড়েছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত লেপ-তোশক তৈরির কাজ চলে আমাদের। একটি লেপ তৈরি করলে আকারভেদে ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা এবং তোশক তৈরি করতে পারলে প্রতিজন ১৫০-৩০০ টাকা মজুরি পাই।

ক্রেতা আকবর (৫৪) বলেন, লেপের জন্য দোকানে গিয়ে অর্ডার দিচ্ছি দুটি লেপের।
এতে মোট খরচ পড়েছে চার হাজার ৪০০টাকা । রাতে শীতের তীব্রতা বাড়ে। কাঁথা দিয়ে শীত নিবারণ হয় না। এ কারণে অল্প টাকা দিয়ে লেপ বানিয়ে নিচ্ছি।

প্রবীণ কারিগর আমজাদ হোসেন(৬০)বলেন, ‘বছরের বেশিরভাগ সময়ই আমাদের বসে থাকতে হয়। শীতের তিন মাস সিজন, এ সময়ে ব্যস্ততা বেশি থাকে। এবারে আগেভাগেই মৌসুম চলে এসেছে। লেপ-তোশক তৈরির কাজের চাপ বেড়েছে। সকাল থেকে রাত অবধি কাজ করে ক্রেতাদের চাহিদামতো ডেলিভারি দিতে হচ্ছে। একেকজন কারিগর প্রতিদিন গড়ে ৪-৫টি করে লেপ বানাতে পারে। এতে ৫০০-৬৯৯ টাকা আয় হয়। বর্তমানে এ আয় দিয়ে চলতে হিমশিম খেতে হয়।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ভোলা- বরিশাল সেতু দ্রুত বাস্তবায়নসহ ৮ দাবি নিয়ে মানববন্ধন

চট্টগ্রামস্থ ভোলাবাসীর সর্ব ঐক্য মানববন্ধন সোমবার বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। ভোলা জেলা সমিতি-চট্টগ্রাম এর সহযোগিতায় মানববনআধন থেকে ৮ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।

দাবিগুলো হলো, ভোলা-বরিশাল সেতুর কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন, চট্টগ্রামে অবস্থানরত সকল ভোলাবাসীর সুবিধার্থে ইলিশা-মতিরহাট ফেরী ঘাটের কাজ বাস্তবায়ন, ভোলার প্রত্যেক ঘরে ঘরে গ্যাস লাইন দ্বারা ভোলায় উত্তোলিত গ্যাস সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ, নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষায় ভোলার চতুর্দিকে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ,

বিদ্যমান জরাজীর্ণ চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকারি মেডিকেল কলেজ ও উন্নতমানের হাসপাতাল স্থাপন, পর্যটন শিল্পের বিকাশে সরকারি উদ্যোগ, গ্যাস ভিত্তিক শিল্প কলকারখানা স্থাপন, চরাঞ্চলের উন্নয়নে গবেষণা ভিত্তিক উদ্যোগ।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রামস্থ ভোলাবাসির সর্ব ঐক্য মানববন্ধন বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক লায়ন আতিকুল্লাহ বাহার। যুগ্ম আহবায়ক মো: ফিরোজ চৌধুরীর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, সাংবাদিক কিরন শর্মা, সদস্যসচিব- মাহবুবুর রহমান সেলিম, যুগ্ম সচিব আলী আজগর, সদস্য (অর্থ) কাঞ্চন মাঝি,সদস্য (মিডিয়া) নুরুন্নবী শাওনসহ ৪৮ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি। মানবন্ধনে ভোলা জেলা সমিতি-চট্টগ্রাম সহ ভোলার ২৫ টি পেশাজীবী সংগঠন অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধনে বক্তাগণ বলেন -অন্তবর্তী সরকার ভোলা – বরিশাল সেতু আগামী জানুয়ারি ২০২৬ উদ্বোধন করার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এজন্য একনেকে ১৭ হাজার কোটি টাকা অনুমোদন দেয়ার জন্য মানব বন্ধন
থেকে সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়।

জেলা ভোলায় প্রাকৃতিক গ্যাস খনি রয়েছে। এখানকার গ্যাস সম্পদ রয়েছে ব্যবহারের জন্য জনপদের মানুষ দাবিদার।

নেত্রকোনায় পাহাড় না কেটেই রাস্তায় উন্নয়ন।

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার লেংঙ্গুরা ইউনিয়নের একটি পুরোনো পাহাড়ি পথকে চলাচলযোগ্য করতে গিয়ে বন ও পরিবেশ ধ্বংসের অভিযোগ উঠলেও স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, প্রকৃতপক্ষে কোনো পাহাড় কাটা হয়নি, কাটা হয়নি গাছও। সাম্প্রতিক কালবৈশাখী ঝড়ে উপড়ে পড়া গাছগুলো সরিয়েই রাস্তাটি সংস্কারের কাজ চলছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লেংঙ্গুরা ইউনিয়নের কাঁঠালবাড়ী সুবেন ঘাঘড়ার টিলা থেকে চৈতানগর মহসিন মেম্বারের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ১ দশমিক ১২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পথ কয়েক দশক ধরে পাহাড়ি জনগোষ্ঠী এবং পর্যটকদের যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বর্ষায় কাঁদায় মাখা পিচ্ছিল এই পথে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে। দীর্ঘদিনের দাবি পূরণে স্থানীয় প্রশাসন কাবিখা প্রকল্পের আওতায় রাস্তাটির সমতলকরণ ও মাটি ফেলার কাজ শুরু করেছে।

লেংঙ্গুরা ইউপি চেয়ারম্যান ও কলমাকান্দা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সাইদুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, “এটি বহু পুরোনো চলাচলের রাস্তা। এখানে কোনো নতুন পাহাড় কাটা হয়নি। ঝড়ে ভেঙে পড়া কিছু গাছ রাস্তা থেকে সরিয়ে সংস্কারকাজ চলছে। এলাকাবাসীর বহুদিনের চাওয়া ছিল এই পথটি উন্নয়ন করার—এখন সেটিই বাস্তবায়ন হচ্ছে।”

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, পাহাড়ের গা ঘেঁষা পুরোনো এই পথে মাটি ফেলে সমান করা হয়েছে। আশপাশে পাহাড় কাটা বা গাছ কাটার কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি। স্থানীয় বাসিন্দারাও জানিয়েছেন, এটি পুরোনো পথ, নতুন করে কিছুই ধ্বংস করা হয়নি।

এই পথে হেঁটে যাচ্ছিলেন নব্বই বছরের ক্ষুদ্র নৃ-জাতিগোষ্ঠীর সদস্য সুবেন মানখিন। তিনি বলেন, “আমি ছোটবেলা থেকে এই রাস্তা দিয়ে বাবা-দাদার সঙ্গে চলাফেরা করেছি। অনেক কষ্ট করে চলতে হতো। এখন রাস্তা সংস্কার হওয়ায় আমরা খুব খুশি।”

স্থানীয়রা—তপন সাংমা, চুহিন হাজং, জুই ঘ্রা, পীযূষ বণিক ও রফিকুল ইসলাম—সবাই বলেন, “এটি পুরোনো রাস্তা, নতুন করে কিছুই কাটা হয়নি। বরং আমাদের চলাচলের সুবিধার জন্য যেই পথে আমরা আগে চলতাম, সেটাই উন্নয়ন করা হচ্ছে। এজন্য আমরা উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।” একইসঙ্গে তারা রাস্তা পাকাকরণের দাবি জানান সরকারের কাছে।

এ বিষয়ে লেংঙ্গুরা বনবিভাগের বিট অফিসে কর্মরত বনরক্ষী আখতারুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত বলেন, “এই রাস্তা পাহাড়ি জনগোষ্ঠী ও পর্যটকদের যাতায়াতের একমাত্র পথ। পুরোনো রাস্তাটিকে কাবিখা প্রকল্পের আওতায় সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন করে কোনো পাহাড় কাটা হয়নি।”

স্থানীয়দের অভিমত, উন্নয়ন প্রকল্পে পরিবেশ সংরক্ষণ ও জনগণের স্বার্থ—উভয়কেই সমান গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এই প্রকল্পে সেই ভারসাম্য বজায় রেখেই কাজ হচ্ছে বলে তারা মত দিয়েছেন।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ