আজঃ রবিবার ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫

অতিরিক্ত গতি এবং দুর্ঘটনারোধে এলিভেটেডের উভয়পাশে আরো ১০টি ক্যামেরা ও স্পিড সাইন বসানো হচ্ছে

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

চট্টগ্রাম নগরীর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে বসানো হয়েছে স্পিড ক্যামেরা। ইতোমধ্যে গাড়ির গতি মনিটরিং করছে এই ক্যামেরা। অতিরিক্ত গতি এবং দুর্ঘটনারোধে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) সম্প্রতি এই স্পিড ক্যামেরা বসিয়েছে।কোন গাড়ি ৬০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে চললে ক্যামেরায় ওই গাড়ির ছবি উঠবে এবং অটো জরিমানা হবে। জরিমানা পরিশোধের জন্য একটি সময় বেঁধে দেয়া হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জরিমানা আদায় না করলে মামলার ব্যবস্থাও থাকবে। এছাড়া বিআরটিএ ও ট্রাফিক পুলিশের মাধ্যমেও এই জরিমানা আদায়ের সুযোগ থাকবে।
এদিকে পরবর্তীতে লালখানবাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত এলিভেটেডের উভয়পাশে ১০টি ক্যামেরা ও স্পিড সাইন বসানো হবে। যেখানে ক্যামেরা থাকবে তার একটু আগেই স্পিড সাইন থাকবে, চালকদের সতর্ক করতে এই সাইন বসানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে কোন যানবাহন নির্ধারিত গতির (ঘণ্টায় সর্ব্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার) বেশি চালালে এই ক্যামেরায় তা ধরা পড়বে। সেই সাথে বিআরটিএ ও ট্রাফিক পুলিশের মাধ্যমে যানবাহন চালককে জরিমানার আওতায় আনা হবে। প্রথম কিছুদিন পরীক্ষামূলক এই ক্যামেরা চললেও কিছুদিনের মধ্যে জরিমানা কার্যকর হবে বলে জানায় সিডিএ।
এদিকে, আগামী ৩ ডিসেম্বর থেকে টোলের আওতায় আসছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। টোল আদায় শুরু হলে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ফ্রিতে যানবাহন চলাচল বন্ধ হবে। টোল আদায়ের জন্য নগরীর পতেঙ্গাপ্রান্তে চারটি অস্থায়ী টোলবুথ প্রস্তুত করা হয়েছে। পরবর্তীতে নগরীর লালখানবাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে ১০টি টোলবুথ বসানো হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম বলেন, আগামী ৩ ডিসেম্বর থেকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে টোল আদায় শুরু হবে। ওইদিন সকালে উদ্বোধন শেষে টোল আদায় শুরু হবে। এরপর থেকে নির্ধারিত যানবাহন টোল আদায়ের মাধ্যমে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করতে পারবে। ইতোমধ্যে গাড়িভেদে টোলের হার মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন হয়েছে। পতেঙ্গাপ্রান্তে টোলবুথ প্রস্তুত রয়েছে।
এর আগে গত বছরের ১৪ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি চট্টগ্রাম শহরের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করেন। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের সাড়ে নয় মাস পর গত ২৬ আগস্ট পরীক্ষামূলকভাবে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস চললেও পরবর্তীতে মোটরসাইকেলসহ সবধরনের যানবাহন চলাচল শুরু করে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে জিইসি মোড় থেকে উঠে পতেঙ্গাসহ বিভিন্ন স্থানে নামার সুযোগ থাকবে। আবার পতেঙ্গা থেকে উঠে নগরীর টাইগারপাস, লালখানবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে নামার জন্য র‌্যাম্প রয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় জিইসি মোড়, আগ্রাবাদ, টাইগারপাস, নিমতলা, কেইপিজেড, ফকিরহাট, সিইপিজেডে ওঠানামার নয়টি র‌্যাম্প থাকবে।
জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১১ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পের নির্মাণব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। পরবর্তীতে প্রকল্পের ব্যায় বেড়ে হয়েছে ৪ হাজার ২৯৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। খরচ বেড়েছে ১ হাজার ৪৮ কোটি টাকা। ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সংশোধিত প্রকল্প একনেকের সভায় অনুমোদিত হয়। তিন বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের কাজ ২০২০ সালের জুনে শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু কাজই শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে। পরে দফায় দফায় সময় বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়।
স্পিড ক্যামেরা প্রসঙ্গে সিডিএ চেয়ারম্যান বলেন, গাড়ির গতি সীমিত রাখতে ও দুর্ঘটনারোধে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে স্পিড ক্যামেরা বসানো হয়েছে। পাইলট প্রকল্প হিসেবে আপাতত এই ক্যামেরা বসানো হয়েছে। পরবর্তীতে এটি কার্যকরের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ইমতিয়াজ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান পাইলট প্রকল্প হিসেবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে এই স্পিড ক্যামেরা বসিয়েছে। জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো এই স্পিড ক্যামেরা বসানো হয়েছে। আপাতত পাইলট প্রকল্প হিসেবে পতেঙ্গাপ্রান্তে একটি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কোন গাড়ি ৬০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে চললে ক্যামেরায় ওই গাড়ির ছবি উঠবে এবং অটো জরিমানা হবে। জরিমানা পরিশোধের জন্য একটি সময় বেঁধে দেয়া হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জরিমানা আদায় না করলে মামলার ব্যবস্থাও থাকবে। এছাড়া বিআরটিএ ও ট্রাফিক পুলিশের মাধ্যমেও এই জরিমানা আদায়ের সুযোগ থাকবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় বিষাক্ত অ্যালকোহল পানে কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যু

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বিষাক্ত অ্যালকোহল পানে হাকিম আহমেদ (২১) নামের এক কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর ) রাতে তাকে অসুস্থ অবস্থায় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই তার মৃত্যু হয়।চিকিৎসকরা নিশ্চিত করে জানান, অতিরিক্ত অ্যালকোহল পানে পয়জনিংয়ের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।

এ ঘটনায় তার বন্ধু হযরত উদ্দিন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি আছে।
নিহত হাকিম আহমেদ খলিসাকুন্ডি ডিগ্রী কলেজের এইচএসসির শিক্ষার্থী।সে দৌলতপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের চকঘোগা পূর্বপাড়ার মোঃ হাসিবুল ইসলামের ছেলে। অসুস্থ অপরজন হলেন মোঃ হয়রত (২০)। সে একই গ্রামের বিচার উদ্দিনের ছেলে।

নিহত শিক্ষার্থীর চাচাতো ভাই মাসুম জানান, হাকিম তার এক বন্ধুকে সাথে নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় গ্রামের একটি লিচু বাগানে বসে বিষাক্ত অ্যালকোহল পান করলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাদের দৌলতপুর হাসপাতালে নিলে অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাকিমের মৃত্যু হয়। এবং তার বন্ধু হযরত উদ্দিন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।

বিচার ব্যবস্থায় মৌলিক রূপান্তর ইতিহাসে মাইলফলক : চট্টগ্রামে প্রধান বিচারপতি।

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, ব্যবসায়িক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে দ্রুত ও আধুনিক বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য একটি ডেডিকেটেড বা বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার আহ্বান করে এসেছিল, যা শিগগিরই বাস্তবে রূপ নিতে চলেছে। তিনি বলেন, গত দেড় বছরে সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সাংবিধানিক স্বচ্ছতার ভিত্তিতে বিচার ব্যবস্থায় যে মৌলিক রূপান্তর সাধিত হয়েছে, তা দেশের বিচারিক ইতিহাসে এক মাইলফলক। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ এক নতুন প্রাতিষ্ঠানিক যুগে প্রবেশ করেছে।

শনিবার সকালে রেডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে-ভিউ হোটেলের কনফারেন্স কক্ষে বাণিজ্যিক আদালত নিয়ে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও ইউএনডিপির যৌথ উদ্যোগে ‘অপারেশনালাইজিং কমার্শিয়াল কোর্ট’ শীর্ষক এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ, ২০২৫ প্রণয়নের মাধ্যমে বহুদিনের দ্বৈত প্রশাসনিক সীমাবদ্ধতা দূর হয়েছে এবং সুপ্রিম কোর্ট প্রথমবারের মতো পূর্ণ প্রশাসনিক ও আর্থিক স্বায়ত্তশাসন লাভ করেছে। এর ফলে বিচার বিভাগ এখন নিজস্বভাবে পদসৃজন, বাজেট বরাদ্দ, প্রশিক্ষণ উন্নয়ন, নীতিমালা প্রণয়নসহ বিচার সংস্কারকে দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই ধারা হিসেবে এগিয়ে নেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করেছে।
প্রধান বিচারপতি অন্তবর্তী সরকারের প্রশংসা করে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের প্রস্তাবসমূহ সরকার দ্রুততার সঙ্গে অনুমোদন করেছে, যা শক্তিশালী ও স্বাধীন বিচারব্যবস্থা নির্মাণে জাতীয় ঐকমত্যকে প্রতিফলিত করে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ