
নেত্রকোনার পূর্বধলায় হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে চুরি- ডাকাতি। প্রতিনিয়তই ঘটছে নানা রকম চুরির ঘটনা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে চুরির খবর পাওয়া যাচ্ছে। চুরির ভয়ে রাতে সাধারণ মানুষ চরম আতঙ্কে রয়েছে।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর থেকে পুলিশের দায়িত্ব পালনে শিথিলতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঘিরে থানা ও পুলিশের ওপর হামলা, আগুন, পুলিশ হত্যা-এসব কারণে পুলিশের প্রশাসনিক কাঠামো একেবারেই ভেঙে পড়েছে। অনেকাংশেই কমে গেছে পুলিশর মনোবলও। পুলিশ সদস্যরা কর্মস্থলে ফিরে এলেও দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে শিথিলতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

কেউ কেউ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আর এরই সুযোগে চোর-ডাাকাত ও অপরাধীরা আগের চেয়ে বেশি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে চুরির ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে সংঘবদ্ধ চোর ও ডাকাতচক্র।
খোজ নিয়ে জানাযায়, গত ২১ ডিসেম্বরে পূর্বধলার হিরনপুরে লিজা আক্তারের দিলশান ভিলা ও আব্দুর রহমান নামে এক ব্যবসায়ীর বাসায় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকাতরা দিলশান ভিলা থেকে ৩ ভরি সোনা নগদ ৩৫ হাজার টাকা ও আব্দুর রহমানর বাসা থেকে নগদ ১৯ লাখ টাকা, বিদেশি মুদ্রা ও ৩৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কারসহ অর্ধকোটি টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।

ডাকাতরা গ্রিল কেটে দুটি বাসাতেই প্রবেশ করে পারিবারের সদস্যদের বেঁধে রেখে এসব মালামাল ও নগদ টাকা লুটপাট করে পালিয়ে যায়।
গত ২ জানুয়ারি হোগলা চৌরাস্তা বাজারে ব্যবসায়ী মো রবিকুল ইসলামের মুদির দোকান চুরি হয়। গত ৯ জানুয়ারি দিবাগত রাতে উপজেলার খলিশাউড় ইউনিয়নের পাজুনিয়া গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী শরিফ আহমেদ’র গোয়াল ঘরের শিকল কেটে তিনটি ষাঁড় গরু ও দুটি গাভী চুরির ঘটনা ঘটে। চুরি যাওয়া ৫টি গরুর মূল্য আনুমানিক ৪ লাখ টাকা। গরু চুরির ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। এর আগে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে একাধিক গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে।
গত ১৮ জানুয়ারি দিবাগত রাতে পূর্বধলা সদরের মধ্যবাজারে মা কসমেটিক্স স্টোর, আরবী স্টোর ও নুরুল আমিনের জুতার দোকানে চুরি ঘটনা ঘটে। এসময় সংঘবদ্ধ চোর চক্র দোকানগুলোর ঘরের চালের টিন ও পিছনের দরজা কেটে অনুমানিক আড়াই লক্ষাধিক টাকার মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়। সিসিটিভির ফুটেজে ২জন চোরের চুরির দৃশ্য ধরা পড়েছে। ভূক্তভোগী ব্যবসায়ীরা পূর্বধলা থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। এদের দ্রুত আটকের দাবি জানান তারা। এমন দূর্ধষ চুরির ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে চোর আতংক বিরাজ করছে। তারা চুরি রোধে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল জোরদারের দাবি জানিয়েছেন।অপর দিকে ময়মনসিংহ – জারিয়া লোকাল ট্রেনে একাধিক ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
সাধারণ মানুষের অভিযোগ, রাতে পুলিশ টহল না থাকায় বারবার চুরির ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনায় কেউ কেউ থানায় অভিযোগ করলেও অনেকেই জামেলা ভেবে পুলিশকে জানান না। পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় আইনশৃঙ্খলারক্ষাকািদের নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন মহল।
তবে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, এ ধরনের ঘটনা ঠেকাতে নিয়মিতই অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। শিগগির দোষীদের গ্রেফতার করা হবে বলেও আশ্বস্ত করছেন তারা।
স্থানীয়রা বলছেন, পুলিশ প্রকৃত চোরদের আটক করতে না পারায় তারা বেশ বেপরোয়া হয়ে উঠছে। চুরি অধিকাংশই রাত ১টা থেকে সাড়ে ৩টার মধ্যে বিভিন্ন বাসা-বাড়ি এবং দোকানে সংঘটিত হচ্ছে। তারা পুলিশের টহল বাড়াতে এবং বিভিন্ন বাজারগুলোর কমিটির পক্ষ থেকে সিকিউরিটি জোরদার করার দাবি জানান। পাশাপাশি গ্রাম পুলিশকে রাতে টহল জোরদারের কাজে লাগানোর আহবান জানান ।
পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রিয়াদ মাহমুদ বলেন, জনবল সংকট থাকলেও টহল জোরদার করা হয়েছে। এসব ঘটনার অভিযোগ আসলে মামলা নেওয়া এবং ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।