আজঃ বুধবার ১২ মার্চ, ২০২৫

চমেক হাসপাতালের একমাত্র এমআরআই মেশিন বন্ধে রোগীদের সীমাহীন ভোগান্তি

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের একমাত্র এমআরআই মেশিন বন্ধে প্রতিনিয়ত রোগীদের সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। প্রায় চার বছর ধরে নষ্ট রয়েছে মেশিনটি। এতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা করাতে ৮ থেকে ১৫ হাজার টাকা লাগছে। ফলে গরিব রোগীরা পরীক্ষাটি করাতে পারছেন না।

জানা গেছে, দুই হাজার ২০০ শয্যার চমেক হাসপাতালে গড়ে দিনে রোগী ভর্তি থাকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার। বহির্বিভাগে প্রতিদিন চিকিৎসা নেন অন্তত তিন হাজার রোগী। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী বলেন, এত বড় হাসপাতালে এমআরআই মেশিন মাত্র একটি। তাও সেটি বছরের পর বছর অকেজো। কোনো সভ্য দেশে এমন হতে পারে না। রোগীদের ভোগান্তির দায় এড়াতে পারে না কর্তৃপক্ষ।

তবে চমেক কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, এমআরআই মেশিন সচল করতে বিভিন্ন দপ্তরে অন্তত ৪০ বার চিঠি দেওয়া হয়েছে। শুধু সচল হচ্ছে-হবে প্রতিশ্রুতি দিয়ে দায় সারছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ফলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৪১টি ওয়ার্ডের পাশাপাশি ১৫ উপজেলার অসংখ্য রোগীর কপাল পুড়ছে। সরকারিভাবে যেখানে মাত্র তিন হাজার টাকায় পরীক্ষা হয়, সেখানে কয়েক গুণ অর্থ খরচ করতে হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৭ সালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রায় ১০ কোটি টাকার জাপানি হিটাচি ব্র্যান্ডের (১.৫ টেসলা) এমআরআই মেশিন চমেক হাসপাতালকে দেয়। ঢাকার মেডিটেল প্রাইভেট লিমিটেড এটি সরবরাহ করার পর ওই বছরের ২৪ অক্টোবর হৃদরোগ বিভাগের নিচতলায় স্থাপন করা হয়। ২০১৮ সালের ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হয় কার্যক্রম। তিন বছরের ওয়ারেন্টির সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই ২০২০ সালের অক্টোবরে মেশিনটি অচল হয়ে পড়ে। প্রায় সাত মাস পর ২০২১ সালের মে মাসে মেরামত করে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। তবে মাস না যেতে আবারও অকেজো হয়ে যায়। সেই থেকে হাসপাতালে বন্ধ রয়েছে এমআরআই সেবা।

চমেক হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন জানান, অত্যন্ত জরুরি এমআরআই মেশিন সচলের জন্য চিঠি চালাচালি করে তারা নিজেরাই এখন বিরক্ত। মেরামতে প্রায় সাত কোটি টাকা লাগবে। আবার নতুন মেশিন কিনতে গেলে লাগবে প্রায় ১৮ কোটি টাকা। অর্থ বরাদ্দের বিষয় চূড়ান্ত না হওয়ায় এটি নষ্ট রয়েছে বলে জানান তিনি।

কয়েক মাস আগে সড়ক দুর্ঘটনায় মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পান শিক্ষার্থী ইমাম হোসেন। ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালানো পঙ্গু রমিজ হোসেন তাঁকে নিয়ে আসেন চমেক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগে। চিকিৎসক দেখে এমআরআই করতে বলেন। কিন্তু বাবা-ছেলে এমআরআই কক্ষের সামনে গিয়ে দেখেন, তালা ঝুলছে। পরে

হাসপাতালের লোকজন জানান, চার বছর ধরেই তালা ঝুলছে এমআরআই কক্ষে। বাইরে খবর নিয়ে ৮ থেকে ১৫ হাজার টাকার কথা শুনে আর পরীক্ষা করা হয়নি। রমিজ হোসেন বলেন, এক টাকা দিয়ে পরীক্ষা করানোর সামর্থ্য নেই। এ জন্য বেশ কয়েকবার হাসপাতালে এসেছি। প্রতিবার ফেরত গেছি। ছেলের সুস্থতা আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছি।

আরেক রোগীর মেয়ে জিন্নাত আরা বলেন, মা অন্যের বাসায় কাজ করেন। হঠাৎ এক দিন কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে বাসের ধাক্কায় মাথা, হাত, বুক ও পায়ে আঘাত পান। চিকিৎসক এমআরআই করতে দিয়েছেন। বেসরকারিতে করার সামর্থ্য নেই। চমেক হাসপাতালে অনেকবার এসেছি। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। খুব দুশ্চিন্তায় রয়েছি।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

অটোরিক্সায় মহিলাকে হেনস্তা, অবশেষে গ্রেফতার

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় নারীকে হেনস্তা করা মো. রানাকে (৪২) নওগাঁ থেকে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ) অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে।

বুধবার (১২ মার্চ) সকালে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আটককৃত রানা রাজশাহী মহা নগরীর কেশবপুর এলাকার বাসিন্দা।

জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলে অটোরিকশায় বসে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করে এক নারীকে হেনস্তা করেন রানা। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে রানাকে আটকের দাবি ওঠে। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাকে আটকের জন্য নগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ জানতে পারে নওগাঁয় অবস্থান করছে রানা। এরপর রাতে নওগাঁয় অভিযান চালিয়ে রানাকে আটক করে পুলিশ।

এ বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, রানাকে নওগাঁ থেকে আটক করে রাজশাহীতে নিয়ে আসা হচ্ছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

ঠাকুরগাঁওয়ে পঙ্গু ও দুস্থ শ্রমিকের মাঝে চেক বিতরণ ।

ঠাকুরগাঁওয়ে জেলা ট্রাক ট্যাংকলরী, কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ৫৭ জন পঙ্গু-দুস্থ ও অসহায় শ্রমিকের মাঝে চেক বিতরণ করা হয়েছে। ১ মার্চ শনিবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও জেলা ট্রাক ট্যাংকলরী, কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ শ্রমিক ইউনিয়নের প্রধান কার্যালয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে চেকগুলো বিতরণ করেন জেলা ট্রাক ট্যাংকলরী, কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ শ্রমিক ইউনিয়নের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলাম শরিফ।

চেক বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মামুনুর রশিদ মামুন, ঠাকুরগাঁও জেলা ট্রাক ট্যাংকলরী কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু কাশেম, দপ্তর সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাবু,সড়ক সম্পাদক সাকিব বাবু, ঠাকুরগাঁও জেলা ট্রাক ট্যাংকলরী, কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ভুট্ট, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জব্বার, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমানসহ নেতা কর্মীরা। পরে এক আলোচনা শেষে ৫৭ জন পঙ্গু অসহায় ও দুস্থদের মাঝে প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার চেক বিতরণ করা হয়।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ