আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় সংখ্যালঘু পরিবার কে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে

পাবনা প্রতিনিধিঃ

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় সংখ্যালঘু এক পরিবারের বাড়ির সামনে বাঁশের বেড়া দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো: মোজাফ্ফর এর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মন্ডতোষ ইউনিয়নের দহপাড়া গ্রামে। অভিযুক্ত ইউপি সদস্য দহপাড়া গ্রামের নাসির হোসেন প্রমাণিকের ছেলে ও মন্ডতোষ ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে ওই ইউপি সদস্য।

ভূক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, দহপাড়া গ্রামের শ্রী জয়দেবচন্দ্রের পুত্র সন্তান না থাকায় তার বড় মেয়ে পঞ্চমী রানী ও মেয়ে জামাই সুকুমারচন্দ্রকে ২০১৮ সালে তার বাড়িতে নিয়ে এসে রাখে। এমতো অবস্থায় জয়দেব চন্দ্র ২০২০ সালে মারা যায়। জয়দেব মারা যাওয়ার পর তার সৎকারের জন্য টাকার প্রয়োজন হলে জয়দেবের স্ত্রী অনিমা রানী তার বসতভিটার জায়গা বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন। এ সময় জয়দেবের বড় মেয়ে পঞ্চমী রানী ও ছোট মেয়ে সুমি রানী তার মায়ের কাছ থেকে ১৮ শতাংশ বসত ভিটা নগদ আড়াই লক্ষ টাকা দিয়ে কিনে নেয়। এরপর থেকে দীর্ঘদিন দুই বোন মাকে নিয়ে বাড়িতেই বসবাস করে আসছিল। হঠাৎ করে গত শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখে তাদের বাড়ির সামনে ইউপি সদস্য মোজাফ্ফর হোসেন সহ আরো কিছু লোকজন বাঁশের বেড়া দিয়েছে।

পঞ্চমী রানী বলেন, বেড়া দেয়ার বিষয়ে মোজাফ্ফরকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন আমি তোমার চাচাতো ভাই স্বপনের কাছ থেকে প্রায় এক বছর আগে এই বসতভিটার জায়গা কিনেছি এবং কিছুদিন আগে অন্য একজনের কাছে আমি এ জায়গা বিক্রিও করে দিয়েছি। যাদের কাছে বিক্রি করেছি তারা হয়তো এখানে বেড়া দিয়েছে। এখন আমরা বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না এক প্রকার না খেয়েই দিন পার করছি।

অনিমা রানী বলেন, আমার স্বামীর সৎকারের জন্য আমার দুই মেয়ের কাছে ১৮ শতাংশ জায়গা বিক্রি করি। সেই জায়গার উপরে বেড়া দিয়ে আমাদেরকে বাড়ি বন্দি করে রেখেছে। মেম্বার প্রভাবশালী তার ভয়ে থানায় যেতে পর্যন্ত সহজ পাচ্ছি না। এ ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টার মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, আমি কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে জয়দেবচন্দ্রের ভাতিজা স্বপন চন্দ্রের কাছ থেকে জায়গাটা কিনেছিলাম। কিছুদিন আগে আমি আমার ক্রয় কৃত জায়গা অষ্টমনিষা ইউনিয়নের গদাইরূপসী গ্রামের মনির হোসেনের কাছে বিক্রি করে দেই। শুনেছি মনিরের শশুর বাড়ির লোকজন এসে এখানে বেড়া দিয়েছে।

এ বিষয়ে স্বপন চন্দ্র বলেন, দাদার সম্পত্তির আমার বাবার যে অংশটুকু পায় আমি মেম্বার এর কাছে সেটুকই বিক্রি করেছি। এখন মেম্বার কার কাছে বিক্রি করেছে সেটা তার ব্যাপার।

ভাঙ্গুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: শফিকুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে এখনো কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় হাত–পা বাঁধা অবস্থায় খাইরুন নেছা (৬০) নামের এক বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর মানিকের বাঁধ এলাকার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী হলেন ঐ এলাকার মৃত রজব আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সকালেই মানিকের বাঁধের পাশে পানিতে ভেসে থাকা একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তাঁরা পুলিশে খবর দিলে ভেড়ামারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যা করে হাত–পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। তদন্তে যা বের হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ