আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় সংখ্যালঘু পরিবার কে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে

পাবনা প্রতিনিধিঃ

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় সংখ্যালঘু এক পরিবারের বাড়ির সামনে বাঁশের বেড়া দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো: মোজাফ্ফর এর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মন্ডতোষ ইউনিয়নের দহপাড়া গ্রামে। অভিযুক্ত ইউপি সদস্য দহপাড়া গ্রামের নাসির হোসেন প্রমাণিকের ছেলে ও মন্ডতোষ ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে ওই ইউপি সদস্য।

ভূক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, দহপাড়া গ্রামের শ্রী জয়দেবচন্দ্রের পুত্র সন্তান না থাকায় তার বড় মেয়ে পঞ্চমী রানী ও মেয়ে জামাই সুকুমারচন্দ্রকে ২০১৮ সালে তার বাড়িতে নিয়ে এসে রাখে। এমতো অবস্থায় জয়দেব চন্দ্র ২০২০ সালে মারা যায়। জয়দেব মারা যাওয়ার পর তার সৎকারের জন্য টাকার প্রয়োজন হলে জয়দেবের স্ত্রী অনিমা রানী তার বসতভিটার জায়গা বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন। এ সময় জয়দেবের বড় মেয়ে পঞ্চমী রানী ও ছোট মেয়ে সুমি রানী তার মায়ের কাছ থেকে ১৮ শতাংশ বসত ভিটা নগদ আড়াই লক্ষ টাকা দিয়ে কিনে নেয়। এরপর থেকে দীর্ঘদিন দুই বোন মাকে নিয়ে বাড়িতেই বসবাস করে আসছিল। হঠাৎ করে গত শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখে তাদের বাড়ির সামনে ইউপি সদস্য মোজাফ্ফর হোসেন সহ আরো কিছু লোকজন বাঁশের বেড়া দিয়েছে।

পঞ্চমী রানী বলেন, বেড়া দেয়ার বিষয়ে মোজাফ্ফরকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন আমি তোমার চাচাতো ভাই স্বপনের কাছ থেকে প্রায় এক বছর আগে এই বসতভিটার জায়গা কিনেছি এবং কিছুদিন আগে অন্য একজনের কাছে আমি এ জায়গা বিক্রিও করে দিয়েছি। যাদের কাছে বিক্রি করেছি তারা হয়তো এখানে বেড়া দিয়েছে। এখন আমরা বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না এক প্রকার না খেয়েই দিন পার করছি।

অনিমা রানী বলেন, আমার স্বামীর সৎকারের জন্য আমার দুই মেয়ের কাছে ১৮ শতাংশ জায়গা বিক্রি করি। সেই জায়গার উপরে বেড়া দিয়ে আমাদেরকে বাড়ি বন্দি করে রেখেছে। মেম্বার প্রভাবশালী তার ভয়ে থানায় যেতে পর্যন্ত সহজ পাচ্ছি না। এ ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টার মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, আমি কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে জয়দেবচন্দ্রের ভাতিজা স্বপন চন্দ্রের কাছ থেকে জায়গাটা কিনেছিলাম। কিছুদিন আগে আমি আমার ক্রয় কৃত জায়গা অষ্টমনিষা ইউনিয়নের গদাইরূপসী গ্রামের মনির হোসেনের কাছে বিক্রি করে দেই। শুনেছি মনিরের শশুর বাড়ির লোকজন এসে এখানে বেড়া দিয়েছে।

এ বিষয়ে স্বপন চন্দ্র বলেন, দাদার সম্পত্তির আমার বাবার যে অংশটুকু পায় আমি মেম্বার এর কাছে সেটুকই বিক্রি করেছি। এখন মেম্বার কার কাছে বিক্রি করেছে সেটা তার ব্যাপার।

ভাঙ্গুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: শফিকুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে এখনো কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক গ্রেফতার

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় নবম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক কে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। কথিত প্রেমিকের নাম বুলবুল (২০)। তিনি উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের চাচকিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলী ফকিরের ছেলে।রবিবার(৭ ডিসেম্বর) সকালে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে চাচকিয়া বিলের মধ্য নিয়ে গিয়ে ওই স্কুল ছাত্রী কে তার প্রেমিক বুলবুল সহ বন্ধুরা মিলে দলবদ্ধ ভাবে ধর্ষণ করে।

এ ঘটনায় শনিবার রাতে ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে ভাঙ্গুড়া থানায় ধর্ষণ মামলা রজ্জু করেন। মামলায় তথিত প্রেমিক বুলবুল সহ ৪ জন কে আসামি করা হয়।

ধর্ষণের খবর পেয়ে এএসপি সার্কেল (চাটমোহর) আবু বক্কার সিদ্দিক ও থানার ওসি মোঃ শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

জানা গেছে, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর সঙ্গে বুলবুল এর প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। ঘটনার দিন গত শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে ওই স্কুল ছাত্রীকে চাচকিয়া বিলের মধ্যে ডেকে নিয়ে গিয়ে বুলবুল তার বন্ধু সোহানুজ্জামান ও তাওহিদ মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এসময় তারা মেয়েটির অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে এবং ঘটনাটি কাউ কে জানালে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরদিন শনিবার দুপুরে ঘটনা জানার পর ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত বুলবুল কে দুপুরে পাবনা আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাবনা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

সাঘাটায় নবযোগদানকৃত ইউএনও আশরাফুল কবীরকে সাংবাদিকদের ফুলেল শুভেচ্ছা

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় নবযোগদানকৃত উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশরাফুল কবীরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা। বৃহস্পতিবার সকালে ইউএনও কার্যালয়ে এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।

সাংবাদিকরা ইউএনওকে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানান এবং সাঘাটার সার্বিক উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তাঁর সাফল্য কামনা করেন। এসময় ইউএনও আশরাফুল কবীর সাংবাদিকদের শুভেচ্ছা গ্রহণ করে বলেন,
“সাঘাটার উন্নয়ন ও জনসেবার মানোন্নয়নে প্রশাসন ও গণমাধ্যম পরস্পরের পরিপূরক। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সংবাদকর্মীদের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”তিনি আরও বলেন,সাঘাটা উপজেলার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একটি জনবান্ধব প্রশাসন গড়ে তুলতে চাই। এ কাজে গণমাধ্যমের গঠনমূলক ভূমিকা অব্যাহত থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”

শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সাংবাদিকরা নতুন ইউএনওর সঙ্গে বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা, প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং স্থানীয় সমস্যাবলি নিয়ে মতবিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় মহলে ধারণা করা হচ্ছে, ইউএনও আশরাফুল কবীরের যোগদানে সাঘাটা উপজেলায় প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড আরও গতিশীল হবে এবং উন্নয়ন কার্যক্রমে নতুন দিগন্ত যুক্ত হবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ