আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

সুনামগঞ্জের শাল্লায় সালিসীদের বাঁধার মুখে ধর্ষণ চেষ্টার শিকার পঞ্চম শ্রেণিতে পড়–য়া স্কুল ছাত্রীর পরিবার আইনি সহায়তা নিতে পারছেন না!

সিলেট সংবাদদাতা ঃ

সালিসীদের বাঁধার মুখে ধর্ষণ চেষ্টার শিকার পঞ্চম শ্রেণিতে পড়–য়া স্কুল ছাত্রীর পরিবার আইনি সহায়তা নিতে পারছেন না!অভিযুক্তর নাম, মানিক লাল দাস (৩০)। সে সুনামগঞ্জের শাল্লার উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের পুটকা গ্রামের প্রভাবশালী সুদর্শন দাসের গুণধর ছেলে।

শনিবার শাল্লার ভিকটিম স্কুল ছাত্রীর পরিবার ও স্থানীয় এলাকার লোকজন জানান, শাল্লার প্রত্যন্ত এলাকায় স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়–য়া দরিদ্র পরিবারের এক শিশু কন্যাকে তাদেও বাড়ির পাশেই মায়ের সামনে বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সন্ধায় উপজেলার পুটকা গ্রামের বখাটে মাদকাসক্ত মানিক লাল দাস জোর পূর্বক ধর্ষণ চেষ্টা চালায়।

বিষয়টি জানাজানি হলে ঘটনার রাতেই পুটকা গ্রামে থাকা ভিকটিমের এক আত্বীয়ের বাড়িতে সালিস বৈঠকে বসেন গ্রামের তিন পাড়ার কয়েকজন প্রভাবশালী সালিসীগণ।
ওই সালিস বৈঠকে স্থানীয় ইউপি সদস্য দ্বিজেন্দ্র সহ গ্রাম্য সালিসী রণজিৎ সরকার,বকুল দাস,বিকাশ দাস, সচিন্দ দাস, রানু দাস, কৃষ্ণপদ দাস, রাজ কুমার দাস, সোম চাঁদ দাস, সুনিল দাস, ইন্দ্রজিৎ দাস, সজল দাস, আশিষ দাস কেনু দাস সহ আরো অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

প্রথমে ধর্ষণ চেষ্টায় অভিযুক্ত প্রভাবশালী পরিবারের বখাটে মানিক লাল দাসকে সালিস বৈঠকে আনা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে সালিসীগণের সামনে মানিক উপস্থিত হলেও ছিলেন নেশাগ্রস্থ্য। ভবিষ্যতে এ ধরণের আর কোন ঘটনা ঘটাবেনা মানিক, ভিকটিমের পরিবার যেন থানায় গিয়ে অভিযোগ না করে এসব বলে কোন রকম ধামাচাঁপা দিয়ে সালিসের সমাপ্তি ঘটে ওই রাতে।

তবে এ ধরণের ঘটনায় ধামাচাঁপা বিষয়টি কোন কোন সালিসীগণ এমনকি গ্রামের মানুষজন অনেকটা উদ্ভেগ প্রকাশ করে বললেন, এঘটনার পুর্বেও গ্রামে কমপক্ষে তিনটি ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ঘটিয়েছে মানিক লাল দাস। বরাবরই পারিবারীক প্রভাবে প্রতিটি ঘটনা এভাবেই ধামাচাঁপা দেয়া হয়েছে।

শনিবার শাল্লার পুটকা গ্রামে গেল বৃহস্পতিবার রাতে সালিসে উপস্থিত থাকা রণজিৎ সরকার বলেন, সালিসে আমি একা নই ইউপি সদস্য দ্বিজেন্দ্র বাবু সহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, সালিসীগণ গ্রামবাসীকে নিয়ে সালিসে বসার পর অভিযুক্ত মানিককে সালিনস বৈঠকে উপস্থিত করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে নেশাগ্রস্থ্য হয়ে সালিসীগণ ও গ্রামবাসীর সামনে উপস্থিত হয়েছেন মানিক লাল দাস।

শাল্লার পুটকা গ্রামে সালিস বৈঠকে থাকা বিকাশ দাস বলেন, ধর্ষণচেষ্টার বিষয়টি এভাবে ধামাচাপা দেয়া আদৌ ঠিক হয়নি। তিনি আরো বলেন, গ্রামের অনেক নারী , কিশোরী, শিশুকন্যারা মানিক লাল দাসের ভয়ে শঙ্কিত হয়ে বসবাস করছেন।

শাল্লায় প্রত্যন্ত গ্রামে যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়–য়া শিশুকন্যা ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হয়েছেন সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক বললেন, এরকম ঘটনা শুনে মর্মাহত হয়েছি, ভিকটিমকে আইনি সহায়তা দিতে আইন শুস্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সহযোগিতা প্রত্যাশা করি, যেন ভবিষ্যতে এ ধরণের অপকর্ম করার মত দু:সাহস দৃষ্টতা যেন কেউ দেখাতে না পারে, এসব ঘটনা যেন আর দেশবাসীকে আর দেখতে হয় না হয় ।

শনিবার ভিকটিম স্কুল ছাত্রীর পরিবার জানায়, আমরা আইনি সহায়তা পেতে থানায় াভিযোগ করতে চাইলেও গ্রাম্য সালিসীগণের কারো কারো নিষেধ থাকায় থানায় গিয়ে অভিযোগ করতে পারছিনা।
শনিবার সকালে জানতে চাইলে শাল্লা থানার ওসি মো..শফিকুল ইসলাম বলেন,এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে অভিযুক্তকে গ্রেফতারে পুলিশী অভিযান চালিয়েও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় হাত–পা বাঁধা অবস্থায় খাইরুন নেছা (৬০) নামের এক বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর মানিকের বাঁধ এলাকার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী হলেন ঐ এলাকার মৃত রজব আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সকালেই মানিকের বাঁধের পাশে পানিতে ভেসে থাকা একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তাঁরা পুলিশে খবর দিলে ভেড়ামারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যা করে হাত–পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। তদন্তে যা বের হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ