আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন

জুলাই অভ্যুত্থান কারো একক নেতৃত্বে হয়নি, বৈষম্য বিরোধী প্লাটফর্ম গুটিয়ে নেয়া অবান্তর।

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সম্মেলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতারা বলেছেন, ইদানীং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্মটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। অনেকে মনে করছে এই প্ল্যাটফর্ম বিলুপ্ত। আমরা সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান কারো একক নেতৃত্বে হয়নি। যখন কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারীরা অনেকটা আপোষের দিকে যাচ্ছিল, তখন আমরা চট্টগ্রাম থেকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলাম। আমরা

লাশের উপর দিয়ে আপোষ করতে পারব না, প্রয়োজনে ঢাকাকে বাদ দিয়ে আমরা আন্দোলন চালাব। তাছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থাকবে কি থাকবে না, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো আমরা অনেকেই আছি, যারা নতুন রাজনৈতিক দলে যাইনি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম জোনের নবগঠিত কমিটির পরিচিতি ও কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরতে আয়োজিত  সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন চট্টগ্রামের সমন্বয়করা।

সংবাদ সম্মেলনে কমিটির আহ্বায়ক আব্দুর রহমান, সদস্যসচিব হোসাইন মাসুম, মুখ্য সংগঠক রুবায়েত সম্রাট ও মুখপাত্র তানিয়া আক্তারসহ অন্যান্য সদস্যদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জুলাই মাসের চেতনাকে ধারণ করে এই কমিটি ন্যায়বিচার ও সংস্কারের লক্ষ্যে কাজ করবে। শিক্ষার্থীরা যাতে বৈষম্যের শিকার না হয় এবং তাদের ন্যায্য অধিকার পায়, সে লক্ষ্যে এই কমিটি সর্বদা সচেষ্ট থাকবে।

সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক আবু নাঈম, চৌধুরী সিয়াম এলাহী এবং রিদুয়ান সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা কমিটির সদস্যদের সাথে নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এবং কমিটির ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন। তাঁরা আশা প্রকাশ করেন, এই কমিটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক রিদুয়ান সিদ্দিকী বলেন, “আন্দোলনের মাঝামাঝি সময়ে যখন সব স্থানে পুলিশ র‍্যাব যৌথভাবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা করছিল, তখন ঢাকায় রামপুরা, বাড্ডা, উত্তরা এবং সিলেট ও চট্টগ্রামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের হাল ধরেছিল। মধ্যবিত্ত শ্রেণি এবং উচ্চ মধ্যবিত্ত শ্রেণি, যাদের শেখ হাসিনা রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন, এখন তারা কথা বলতে শিখেছে। সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা বেসরকারি
বিশ্ববিদ্যালয়ের জুলাই বিপ্লবের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করা, মুজিববাদী আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে স্থায়ীভাবে নির্মূল করা এবং গণ-অভ্যুত্থানের স্পিরিটকে সমুন্নত রাখতে একটি সার্বজনীন ব্যানার হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাহাত্ম্য বজায় রাখা হবে আমাদের প্রধান দায়িত্ব।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক চৌধুরী সিয়াম ইলাহী বলেন, ‘  বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থাকবে কি থাকবে না, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো আমরা অনেকেই আছি, যারা নতুন রাজনৈতিক দলে যাইনি। আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে খুব শীঘ্রই নতুন করে ঢেলে সাজাব এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অসম্পূর্ণ কাজগুলো, যেমন আন্দোলনকারীদের মামলা নিষ্পত্তি, আহত-নিহত পরিবারের পুনর্বাসন, গণহত্যা কারীদের বিচারের জন্য কাজ করব। অরাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম
হিসেবে আমরা গণ-অভ্যুত্থানের পর যেভাবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সরকারের আলোচনা সমালোচনা করেছি, তেমনি গণ-অভ্যুত্থানের উপর দাঁড়ানো দলের আলোচনা এবং সমালোচনাও করব। তরুণদের রাজনীতিতে আসার যে নতুন সুগম পথ তৈরি করে দিয়েছে নতুন রাজনৈতিক দল, তার জন্য বাংলাদেশের রাজনীতিতে তাদের স্বাগত জানাই, আমাদের প্রত্যাশা তাদের হাত ধরে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরি হবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক আবু নাঈম বলেন, “সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নতুন কোনো প্ল্যাটফর্ম নয়, এটি জুলাইয়ের ২০ তারিখেই আমাদের আহ্বায়ক মঞ্জু ভাইয়ের নেতৃত্বে গঠিত হয় এবং এতে ৩৫ জন সদস্য ছিল। সুতরাং, জুলাইয়ের প্ল্যাটফর্ম নিয়ে একক সিদ্ধান্ত কেউ নিতে পারবে না। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সম্মিলিত বেসরকারি
বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম এর নবগঠিত কমিটির সবাই আপনাদের সামনে হাজির হয়েছে এবং তাদের কর্মপরিকল্পনা আপনাদের জানিয়েছেন। আশা রাখছি তাদের হাত ধরে জুলাইয়ের অসম্পূর্ণ কাজগুলো সম্পন্ন হবে।”

এতে আরও বক্তব্য রাখেন নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক আব্দুর রহমান। তিনি বলেন, “জুলাই কারো একার না, জুলাই কারো বাবারও না। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী সন্ত্রাসী ছাড়া কারো অবদানকে ছোট করে দেখার কোনোভাবেই সুযোগ নেই। কিন্তু অভ্যুত্থান পরবর্তী দেখা গেছে আন্দোলনের অন্যতম স্টেকহোল্ডার প্রাইভেটিয়ান, মাদ্রাসা শিক্ষার্থী, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের অনেক দিক থেকে মাইনাস করার পাঁয়তারা করছে। অথচ আমরা আমাদের ভাইদের রক্ত দেখে বসে না থেকে প্রাইভেট পাবলিক সবাই একত্রে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আন্দোলন সফল করি। এখন কেন বেসরকারি, মাদ্রাসা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, পলিটেকনিক বলে আড়চোখে দেখবে? আমাদের কথা হবে চোখে চোখ রেখে, কাজ হবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। কেউ দাদাগিরি করতে আসলে তা কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবেনা।

আমাদের এই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি কাজ করবে জুলাই স্পিরিট ধারণ করে। কাজ করবে জুলাই আকাঙ্ক্ষা পূরণে। হাসিনার ফ্যাসিবাদী সময় থেকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পর্যন্ত যত গুম, খুন, ধর্ষণ, হত্যা হয়েছে, সব কিছুর বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা লড়াই করব। আমরা কাজ করব আমাদের নিহত ও আহত সহযোদ্ধাদের পুনর্বাসনে। এবং আমাদের আরও কাজ হবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে।”

নবনিযুক্ত সদস্য সচিব হোসাইন মাসুম বলেন, “জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান অনস্বীকার্য। তবে ৫ আগস্টের পর থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে সবখানে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। আমরা নতুন কমিটির পক্ষ থেকে এই বৈষম্যের অবসান চাই।”

মুখপাত্র তানিয়া আক্তার বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানে যেসব বিপ্লবীদের মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছিল, তাদের অচিরেই মামলা থেকে খালাস দিতে হবে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যারা আহত হয়েছিল, তাদের চিকিৎসার বিষয়টি দেখার ব্যবস্থা করতে হবে।”

এখানে আরও উপস্থিত ছিলেন, নতুন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম, আতিকুল ইসলাম সোহাগ, সহ-মুখপাত্র হুরাইন হুরে, আন্তর্জাতিক ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় এর আহবায়ক মুহাম্মদ রাফিউ প্রমুখ।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ‘খুঁজি তাঁরে’ শীর্ষক অনুষ্ঠান।


চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে গাঙ্গেয় বদ্বীপের সংগীত ব্যক্তিত্ব যোগী স্বপন কুমার দাশ’র রচিত আধ্যাত্মিক ও দেহতত্ত্ব বিষয়ক গান নিয়ে ‘খুঁজি তাঁরে’ শীর্ষক গত ৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সাংবাদিক কিরন শর্মার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রদীপ প্রজ্জ্বলক ও প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম এর পরিচালক মো.মাহফুজুল হক। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের পর প্রখ্যাত সাধক শ্রীমৎ স্বামী সত্যানন্দ ব্রহ্মচারী’জীকে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে ‘খুঁজি তাঁরে’ অনুষ্ঠানটি উৎসর্গ করা হয়।

বিশেষ অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযুদ্ধা রাখাল চন্দ্র ঘোষ (যুদ্ধকালিন কমান্ডার), আব্দুর রহিম (লোক ও মরমি শিল্পী), রূপম ভট্টাচার্য (সাংবাদিক), স ম জিয়াউর রহমান(সাংবাদিক), দিদারুল ইসলাম (সংগীত পরিচালক ও কন্ঠ শিল্পী), তন্দ্রা দাশগুপ্তা, সংগীত শিল্পী সঞ্জয় রক্ষিত সহ প্রমুখ। সংবর্ধিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত

ছিলেন পাপিয়া আহমেদ (সংগীত প্রযোজক বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম), অপু বর্মন (সংগীত শিল্পী বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন এবং সংগীত শিক্ষক জেলা শিল্পকলা একাডেমি, চট্টগ্রাম), অপু সেনগুপ্ত (বিশিষ্ট গীতিকার বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন), দীপ্ত দত্ত সংগীত শিল্পী (বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন)।

অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন, খ্যাতনামা মরমি কন্ঠ শিল্পী শিমুল শীল, বাউল শিল্পী বাবুল শীল, অভিষেক দাশ, বাউল জুয়েল দ্বীপ, শিউলী চৌধুরী, আনন্দ প্রকৃতি(মো:তৌহিদুল ইসলাম), আধাত্মিক শিল্পী সুরনাথ, কাওয়ালী শিল্পী মেঘলা। ওস্তাদ মোহনলাল দাশ স্মৃতি প্রতিযোগিতার সেরা কন্ঠ শিল্পী বাঁধন ঘোষ, ইন্দ্রিলা ঘরজা, মিম দাশ, অধরা চৌধুরী রাত্রি, আরাধ্যা মজুমদার, সৈয়দ রাসতিন, অরূপ কুমার শীল, ঊর্মি নাগ সংগীত পরিবেশন করেন।

যন্ত্র সংগীত শিল্পীতে ছিলেন- কীবোর্ডে রুবেল ঘোষ, অক্টোপ্যাডে পাপন, তবলায় উৎস, বাংলা ঢোলে হৃদয় বাঁশিতে নিলয়। সংগীত তত্বাবধানে যোগী স্বপন কুমার দাশ, অনুষ্ঠান তত্বাবধানে মো: মোহসীন(সাধারণ সম্পাদক, ওস্তাদ মোহনলাল দাশ স্মৃতি সংসদ)। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মো: সাইফুর রহমান ও ববিতা ইসলাম।

তারা রক্তাক্ত হাতে ক্ষমতায় এসেছিল রক্তাক্ত হাতেই বিদায় নিয়েছে : জামায়াত আমির।

ক্ষমতায় না গিয়েও অনেকে ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ৫ আগস্ট বিপ্লবের পরদিন থেকে একটি গোষ্ঠী প্রভাব বিস্তারের জন্য জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। চাঁদাবাজি, দুর্নীতি অব্যাহত রেখেছে। ক্ষমতায় না গিয়েও অনেকে ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে। প্রশাসনের ওপর প্রভাব বিস্তার করছে।

শুক্রবার দুপুর ২টায় ৮ দলের উদ্যোগে আয়োজিত চট্টগ্রাম বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।তিনি আরও বলেন, আমরা ৮ দলের বিজয় চাই না, ১৮ কোটি মানুষের বিজয় চাই। সেই আকাঙ্খার বিজয় হবে কুরআনের মাধ্যমে। চট্টগ্রাম থেকে ইসলামের বিজয়ের বাঁশি বাজানো হবে। আগামীর বাংলাদেশ হবে কুরআনের বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, গাড়ি দিয়ে পালানোর সাহস তারা হারিয়ে ফেলেছিল। সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবিকে এই অপকর্মে লাগানোর চেষ্টা করেছিল। দেশের সবকিছু তারা ধ্বংস করেছিল। ফ্যাসিবাদ বিদায় নিলেও দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়নি। ফ্যাসিবাদকে নতুন করে রুখে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না।

জামায়াতের আমির বলেন, তারা নিজেদের উন্নয়ন করেছিল। রাস্তাঘাট তৈরি করেছিল রডের বদলে বাঁশ দিয়ে। বাংলাদেশের টাকা লুট করে সিঙ্গাপুরে গিয়ে তারা ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে। শাপলা চত্বরে অসংখ্য মাওলানাকে হত্যা করা হয়েছিল। এরপর কুখ্যাত প্রধানমন্ত্রী বলেছিল রঙ দিয়ে শুয়ে ছিল। তারা রক্তাক্ত হাতে ক্ষমতায় এসেছিল রক্তাক্ত হাতেই বিদায় নিয়েছে।
আন্দোলনরত ৮ দলের ৫ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথের লড়াই অব্যাহত থাকবে ঘোষণা দিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ইসলামি দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই ঐক্য আমাদেরকে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত নিয়ে যাবে। প্রয়োজনে আবারও ৫ আগস্ট সংঘটিত হবে বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি।

৮ দলের প্রধানদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির আমির অধ্যক্ষ মাওলানা সরওয়ার কামাল আজিজী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম আনোয়ারুল ইসলাম চাঁন।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশের ইসলামি শক্তিকে কেউ নিস্তব্ধ করতে পারবে না। আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামপন্থীদের। এখানে কোনো ষড়যন্ত্র বরদাস্ত করা কবে না।তিনি বলেন, আসুন আমরা ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে চট্টগ্রামকে ইসলামের ঘাঁটি বানাই। চট্টগ্রামের মাটি ইসলামের ঘাঁটি। ৮ দলের এই শক্তি ক্ষমতায় গেলে আপনারই দেশ শাসন করবেন। কারও দাদার শক্তিতে এ দেশ আর চলবে না।

এটিএম আজহার বলেন, বাংলাদশ এমন পর্যায়ে দাঁড়াবে বিদেশিরা এখানে পড়ালেখা করতে আসবে। আসুন আমরা সবাই মিলে সেই দেশ গড়ি।খেলাফতে মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, আগামীতে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের বিজয়ের মাধ্যমে কোরআনের শাসন শুরু হবে। সোনার বাংলাদেশ দেখা শেষ, ডিজিটাল বাংলাদেশ দেখা শেষ- এবার আল কোরআনের বাংলাদেশ দেখতে চাই, ইসলামের বাংলাদেশ দেখতে চাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশে আমাদের অধিকার চাই, মালিকানা কায়েম করতে চাই। গরিব মেহনতী মানুষকে ইসলামের বার্তা পৌঁছে দিতে চাই। ইসলাম যে বৈষম্যহীনের কথা বলা হয়েছে। পুঁজিবাদর অর্থ ব্যবস্থা করব দিয়ে কোরআনের অর্থ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে হবে।

মামুনুল হক বলেন, বাংলাদেশে কোরআনের অর্থ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে নিজেদের অধিকার ও মালিকানা কায়েম করতে। পুঁজিবাদী অর্থ ব্যবস্থার কবর তৈরি করে সেই ধ্বংস স্তূপের ওপর আল্লাহর কুরআনের ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হবে ইনশাআল্লাহ। আমাদের বিগত দিনগুলো শুধু উন্নয়নের গল্প শুনানো হয়েছে। কিন্তু নিজেরাই হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেছে।

সাধারণ কেটে খাওয়া মানুষের কোন পরিবর্তন হয়নি। এই তো উন্নয়ন। বাংলার মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ উল্লেখ করে মামুনুল হক বলেন, দলীয় প্রতীকে ভোট দেওয়ার পাশাপাশি হ্যাঁ ভোটের বাক্স ভরতে হবে। নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা দেখা দিলে সরকারকে তার দায় নিতে হবে। এসময় তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেন।
সমাবেশে ৮ দলের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির নায়েবে আমির আলহাজ¦ মাওলানা আব্দুর রহমান চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের যুগ্ম

সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মুন্সি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব আলাউল্লাহ আমিন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব আল্লামা মুফতি মুসা বিন ইজহার, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আলী উসমান, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান, খেলাফত মজসিলের যুগ্ম মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সাল, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক আহসানুল্লাহ ভূঁইয়া, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য আলহাজ¦ শাহজাহান চৌধুরী, ইসলামী আন্দোলন

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুফতি রেজাউল আববার, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরী আমির মুহাম্মদ জান্নাতুল ইসলাম, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চট্টগ্রাম মহানগরী সহ-সভাপতি এডভোকেট আব্দুল মোতালেব, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আবু মুজাফফর মোহাম্মদ আনাছ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগর আমির মাওলানা এমদাদ উল্লাহ সোহাইল, খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি অধ্যাপক খুরশিদ আলম এবং বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি চট্টগ্রাম মহানগর আমির মাওলানা জিয়াউল হোসাইন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ