আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

রূপগঞ্জে কৃষি জমির টপসয়েল যাচ্ছে অবৈধ ইটভাটা। স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে মানুষ

মাহাবুবুর রহমান রনি, রূপগঞ্জ(নারায়ণগঞ্জ)প্রতিনিধি:

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভোলাবো, মাসাবো, আতলাপুর, তেতলাবো, বরপা, আওখাবো, কর্ণগোপ, সাওঘাট, গোলাকান্দাইল, বলাইখা, বেলদি, দেবই, কামালকাঠি, চারিতাল্লুক, বিরাবো, কাঞ্চন পৌরসভাসহ আশপাশের এলাকার অবৈধ ইটভাটায় অবাধে তিন ফসলি কৃষি জমির মাটি যাচ্ছে। এখন তিন ফসলি জমির টপসয়েল বিক্রির হিড়িক পড়েছে। স্থানীয় ভ‚মিদস্যুদের দাপটে অসহায় সাধারণ কৃষক ও স্থানীয় অধিবাসীরা।

এছাড়া মাটিবোঝাই ভারী ডামট্রাক সড়কে চলার কারণে নষ্ট হচ্ছে রাস্তা। ধুলাবালিতে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।
বিরাবো ইসলামপুর গ্রামের প্রবাসী আহাদ আলীর স্ত্রী আলেয়া আক্তার বলেন, তার স্বামী ও সন্তান সৌদী প্রবাসী। তাদের অনুপস্থিতিতে ভ‚মিদস্যরা দিন-রাত আমাদের বাড়ির পাশের ধান ক্ষেত বেকু দিয়ে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। যে কোন সময় আমার বাড়িটি সৃষ্ট গর্তে পরে বিলিন হয়ে যেতে পারে। আমি তাদের বাঁধা দেওয়ায় সন্ত্রাসীরা আমাকে হুমকি প্রদান করছে। আমরা এখন চরম নিরাপত্তহীনতায় রয়েছি।
দাউদপুরের খৈসাইর গ্রামের কৃষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, তিন ফসলী জমির মাটি গভীর করে কেটে ইটভাটায় নেওয়ার পর সৃষ্ট গর্তে আমার জমির সবুজ রংয়ের ধানগাছসহ ধসে পড়ছে। এরই মধ্যে ভ‚মিদস্যূরা আমার ধান ক্ষেতের দুই পাশের জমির মাটি বেকু দিয়ে গভীর করে কেটে নিয়ে গেছে। আশপাশের লোকজন কেউ প্রতিবাদ করলে হামলা, মামলা, ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ইটভাটার চিমনি দিয়ে কালো ধোঁয়া বের হচ্ছে। কোনো কোনো ভাটার সামনে কয়লার স্ত‚প থাকলেও আড়ালে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। ভাটার ভেতরে রয়েছে কাঠের স্ত‚প। আশপাশের গাছগুলো বিবর্ণ। মরেও গেছে অনেক গাছ। এক্সকাভেটর দিয়ে কৃষি ও ফসলি জমির টপ সয়েল কাটা হচ্ছে। কোনো কোনো জমি ১৫ থেকে ২০ ফুট গভীরে মাটি কাটা হচ্ছে। আর ভেঙে পড়ছে আশপাশের জমি। ইটভাটায় মাটি নেওয়ার কাজে ব্যবহৃত ভটভটির দাপটে সড়কগুলোতে দেখা দিচ্ছে খানাখন্দ। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
কোন জমিতে সবুজ ধান গাছ। আবার কোন জমিতে ভরা গমের শীষ। পাশের জমিগুলো ১৫ থেকে ২০ফুট গভীর করে মাটি কেটে নেওয়া হয়েছে। সৃষ্টি হয়েছে গর্তের। আলু, গম ধানসহ ফসলি জমি কিছুই রেহাই পাচ্ছে না ভ‚মিদস্যুদের হাত থেকে। কৃষি জমির টপসয়েল হারিয়ে কৃষকরা এখন বোবা কান্নায় কাঁদছেন। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মতিন চৌধিরীর ইসলামপুর গ্রামের পৈত্রিক সম্পত্তিও ভ‚মিদস্যুদের থাবা থেকে রক্ষা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।

রূপগঞ্জে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা শতাধিক অবৈধ ইটভাটা কৃষিজমির টপ সয়েল গিলে ফেলছে। মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। হুমকির মুখে পড়ছে জনজীবন। সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। স্থানীয় প্রশাসন অবৈধ ইটভাটায় অভিযান চালালেও থামেনি অনিয়ম। অবৈধ ইটভাটার মালিকদের আন্দোলন, সংগ্রাম, সভা, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে থমকে গেছে প্রশাসনের অভিযান।

জনবসতিপূর্ণ এলাকায় স্থাপিত এসব অবৈধ ইটভাটায় কৃষিজমির টপ সয়েল ব্যবহার করায় উর্বরতা হারাচ্ছে ফসলি জমি। জনবসতি এলাকার এক কিলোমিটারের মধ্যে কেউ ইটভাটা করতে পারবে না। সরকারের পক্ষ থেকে এমন নির্দেশনা থাকলেও তা মানছেন না কোনো ইটভাটার মালিক। ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রূপগঞ্জবাসী।
ভোলাবো ইউনিয়নের আতলাপুর এলাকার কৃষক করিম মিয়া বলেন, আমার চার বিঘা জমিতে ধান চাষ করি। কিন্তু এ বছর পাশের জমিতে ভেকু দিয়ে গভীর খনন করে মাটি কেটে নেওয়ায় আমার জমি ভেঙে পড়েছে। তাই ফসলও করতে পারছি না।

বেদলী এলাকার কৃষক আব্দুল খালেক বলেন, ইটভাটায় মাটি কেটে নেওয়ায় অস্বাভাবিকভাবে কমছে কৃষি জমি। মাটি পরিবহণে লন্ডভন্ড হয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ সড়ক। তৈরি হয়েছে পরিবেশগত ব্যাপক বিশৃঙ্খলা। গ্রামীণ সড়কগুলো এক বছরও টিকছে না।
কৃষি জমির টপ সয়েল কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইটভাটার মালিকদের বিরুদ্ধে। ইট প্রস্তুতের জন্য বিভিন্ন গ্রামের কৃষি জমি থেকে নেওয়া মাটি স্ত‚প করা হচ্ছে ইটভাটাগুলোতে। এসব ইটভাটার কারণে একদিকে ক্ষতি হচ্ছে ফসলি জমির অন্যদিকে মাটিবাহী ট্রলির আঘাতে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে সড়কের।

ইটভাটার বেশ ক’জন মালিক বলেন, কৃষক জমির মাটি বিক্রি করছেন তাই কিনেছি। জোর করে তো আর মাটি কাটছি না। আমরা ছাড়াও আরও চারটি ইটভাটা রয়েছে। তারাও কৃষকের কাছ থেকে মাটি কিনছেন। মাটি কিনছি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। তারা কোথা থেকে মাটি তুলছেন তা জানা নেই।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, অবৈধ ইটভাটায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নিয়ম বর্হিভ‚তভাবে কোন কাজ করতে দেওয়া হবে না।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এ, এইচ, এম রাসেদ বলেন, অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অন্য স্থানের ন্যয় রূপগঞ্জ উপজেলাও রয়েছে। অভিযান অব্যাহত আছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, কেউ নিয়মবহির্ভ‚তভাবে ইটভাটা চালালে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

পদক্ষেপ বাংলাদেশ এর বিজয় মাসের প্রথম প্রভাত ।

পদক্ষেপ বাংলাদেশ-এর আয়োজন, কর্মসূচী ব্যতিক্রম ও বৈচিত্র্যময়। তারই ধারাবাহিকতায় ঢাকার পরিবাগস্থ সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রের উন্মুক্ত মঞ্চে জাতীয় সংগঠন ও শিল্পীদের অংশগ্রহণে ‘বিজয় মাসের প্রথম প্রভাত’ শীর্ষক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ১ ডিসেম্বর ২০২৫, সোমবার সকাল ৭টায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সাংস্কৃতিক পর্ব—দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে : শিল্পবৃত্ত, পদক্ষেপ বাংলাদেশ। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে : কথা আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র, শিল্পবৃত্ত, ঢাকা স্বরকল্পন, মুক্তধারা সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র। একক আবৃত্তি করেন : মীর বরকত, নায়লা তারান্নুম চৌধুরী কাকলি। কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ করেন : গোবিন্দলাল সরকার, মো: তাজুল ইসলাম, খাইরুল আলম।

উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ। সম্মানিত অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন আবৃত্তিশিল্পী মীর বরকত, জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জেবুন্নেসা জেবা, উদয়ন স্কুল এন্ড কলেজ শিক্ষক সবিতা সাহা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পদক্ষেপ বাংলাদেশ-এর সভাপতি বাদল চৌধুরী। স্বাগব বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল্লাহ সাঈদ। ঘোষণাপত্র পাঠ করেন সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী মতিয়ারা মুক্তা।

ঘোষণাপত্রে বলা হয়- বহু ত্যাগ, সংগ্রাম আর প্রত্যাশার ফসল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। এ শুধু পতাকা আর জাতীয় সঙ্গীত বদল নয়, খোল-নলচে সব পাল্টে নতুন এক আদর্শকে রাষ্ট্র ও সমাজ জীবনে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্নের নবযাত্রা। এই স্বপ্নের প্রধান এবং একমাত্র উপজীব্য মানুষ। মানুষের কল্যাণ, মানুষের মুক্তি, মানুষের মর্যাদা এবং মানুষের স্বাধীন ভূমিই শেষ কথা। কত মাতা, কত ভগ্নি, কত জানা-অজানা নারী তাঁর সম্ভ্রম হারিয়েছে শুধু এই মানুষকে মানুষের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। মানুষ কল্পনাবিলাসী কিন্তু নিজেতো সে কাল্পনিক নয়Ñএ ভূমিতেই তার সৃষ্টি, বেড়ে ওঠা, ভালো-মন্দের স্বাদ নেয়া, অতঃপর ভূমিতেই মিলিয়ে যাওয়া। এ ভূমির প্রতি তার প্রচ- ভালোবাসা।

মাতৃক্রোড়ে যেমনিভাবে শিশু বেড়ে ওঠে; একইভাবে কাদা-মাটি গায়ে মেখে আলো-বাতাসে অবগাহন করে এই ভূমিকেই মাতৃক্রোড় ভেবে একদিন চিরবিদায় নেয় প্রতিটি মানবশিশু। জন্ম আর মৃত্যুতে যে ভূমিকে কখনো আলাদা করা যায় নাÑতারই অমার্যাদা করবে ভিনদেশী তস্কর! তা কি করে মেনে নেয় ধুলো-বালি গায়ে মেখে বেড়ে ওঠা এ জনপদের মানুষেরা। এ ভূমিরই সাহসী-ত্যাগী- পোড়খাওয়া এক নামÑশেখ মুজিব। মাটি আর মানুষের সাথে ছিলো যাঁর আজন্ম সখ্য, ভিনদেশী হায়েনার হিংস্র থাবায় বারবার ক্ষতবিক্ষত হয়েছে তাঁর হৃদপি-; তবুও ভূমি আর মানুষের স্বাধীনতায় অবিচল থেকেছেন তিনি।

তাঁরই অঙ্গুলী হেলনে সাড়ে সাত কোটি মানুষ পরিণত হয়েছে এক একজন নেতাজী সুভাষ বসু, ক্ষুদিরাম, সূর্যসেন, প্রীতিলতা, তিতুমীর, বাঘাযতিন, লক্ষ্মীবাই, ভগৎসিং, রফিক, শফিক, সালাম, জব্বার, সালাউদ্দিন, বরকত, আসাদ, মনুমিয়া’য়। এ গাঙ্গেয় বদ্বীপের তেরোশত নদীর জোয়ার আর পাখিদের কলতানে উচ্চারিত হয়েছে ভিনদেশী হায়েনার বিনাশ- ধ্বনি। লাঙলের ফলা থেকে তৈরি উর্বর মাটির প্রতিটি চাকা পরিণত হয়েছে শত্রুবিনাশী আনবিক বোমায়। বাঁশঝাড় উজাড় করে তৈরি হয়েছে চকচকে বেয়নেট।

নিঃশঙ্ক চিত্তে নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার অগ্নিপুরুষ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সঞ্চারিত হয়েছে সাড়ে সাত কোটি মানুষের প্রতিটি রক্ত কণিকায়Ñবিজয় অর্জিত হয়েছে মানুষের সংগ্রাম আর আত্মদানের। বিজয় মাসের সূচনালগ্নে আমরা নতুন করে উদ্দীপ্ত হতে চাইÑমাটি আর মানুষের কল্যাণ কামনায়। আমরা বিনাশ চাই সেই নরপশুদের যারা মাটির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে ভিনদেশী হায়েনাদের সঙ্গী হয়েছিলো মনুষত্বের বিনাশ সাধনে। সেই সাথে চাই আজকের এই দিনটিকে ‘মুক্তিযোদ্ধা দিবস’-এর সরকারি স্বীকৃতি। মাটি আর মানুষের জয় হোক, জয় হোক শুভ চিন্তা আর আদর্শের।

ঠাকুরগাঁওয়ে মির্জা পরিবারের দানে গড়ে উঠছে এতিম শিশু ও নারীর ক্ষমতায়ন কেন্দ্র 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পরিবারের দান করা জমিতে এতিম শিশুদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতে ও নারীর স্কিল ডেভলপমেন্টের জন্য গড়ে উঠছে মির্জা রুহুল আমিন এন্ড ফাতেমা মেমোরিয়াল কমপ্লেক্স। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের আদর্শ কলোনিতে কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ চলছে। 

 আর কমপ্লেক্সটি বাসমাহ ফাউন্ডেশনের তত্বাবধানে শত শত এতিম শিশুদের মৌলিক অধিকার পাওয়ার ঠিকানা হিসেবে পরিণত হবে। যেখানে এতিম শিশুরা খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা সহ গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক অধিকারগুলো বিনামূল্যে নিশ্চিৎ হবে। নারীদের স্কিল ডেভলপমেন্টে কাজ করবে। 

গত এক বছর যাবৎ এ কমপ্লেক্সটির কাজ শুরু হয়ে এখন পর্যন্ত চার ভাগের তিন ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ইতিমধ্যে শতাধিক এতিম শিশুকে নিয়ে কমপ্লেক্সটিতে প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এসব তথ্য নিশ্চিৎ করেছেন  কমপ্লেক্সে দায়িত্বে থাকা  বাসমাহ অরফানস হোম এর এডুকেশন ইনচার্জ আহম্মেদ আমিন।

তিনি আরও জানান, এই কমপ্লেক্সে বাসমাহ অরফানস হোম, বাসমাহ স্কুল এন্ড কালচারাল সেন্টার এবং বাসমাহ ওমেন্স এন্ড স্কিল ডেভলপমেন্ট সেন্টার হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করবে। বৃহস্পতিবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ। এক কক্ষে চলছিলো একটি দোয়ার আয়োজন। জানা যায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা ও দেশের মঙ্গল কামনায় মির্জা পরিবারের উদ্যোগে এতিম শিশুদের নিয়ে এ দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। 

ঠাকুরগাঁওয়ে এতিম শিশুদের মৌলিক অধিকার  ও নারীদের ডেভলপমেন্টের জন্য এমন একটি উদ্যোগকে বাস্তবায়নের পেছনের ব্যপারে জানতে চাইলে অরফান হোম এর এডুকেশন ইনচার্জ বলেন, আমাদের বাসমাহ ঠাকুরগাঁও সহ সারা দেশে পাঁচটি শাখা আছে। নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁর একটি শাখাতে মির্জা ফখরুল ইসলামের পরিবারের সদস্যগণ পরিদর্শন করেন।  আমাদের কার্যক্রেম তাদের ভালো লাগে এবং এতিম শিশুদের জন্য এমন উদ্যোগ ঠাকুরগাঁওয়ে বাস্তবায়নের জন্য তারা উৎসাহ প্রকাশ করেন এবং ৭৫ শতক জমি এতিমদের জন্য দান করেন৷ এই কর্মকর্তা বলেন বাসমাহ’র  সমস্ত পক্রিয়া মেনেই এটি গড়ে উঠছে।

বাসমাহর সিইও মীর সাখাওয়াত হোসাইন এর বরাতে প্রতিষ্ঠানটির এডুকেশন ইনচার্জ আরও বলেন  বাসমাহ ফাউন্ডেশনের তত্ত্ববধানে সারা দেশ জুড়ে সেবামূলক কার্যক্রম চলমান রয়েছে ।বাসমাহ স্কুল এন্ড কালচারাল সেন্টার,বাসমাহ ওরফান্স হোম,বাসমাহ উইমমেন্স স্কিল এন্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার।এ ছাড়াও শীতকালীন শীত বস্ত্র বিতরণ,কুরবানি প্রোগ্রাম,ইফতার প্রোগ্রাম পরিচালিত হয়।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ