আজঃ শনিবার ১৫ নভেম্বর, ২০২৫

১০ কোটি টাকা আত্মসাত, কারাবন্দী সাবেক সাংসদ নদভীকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ।

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রামে কারাবন্দী আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (আইআইইউসি) ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সম্মেলন কক্ষে দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সুবেল আহমেদের নেতৃত্বে একটি দল তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। প্রায় ঘন্টাখানেক জিজ্ঞাসাবাদের পর কারাগার ছেড়ে যান দুদক কর্মকর্তারা।

দীর্ঘসময় জামায়াতে ইসলামীর ঘরানার সঙ্গে যুক্ত থাকা ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এরপর ২০১৪ ও ২০১৮ সালের বিতর্কিত দুই সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) দুই দফায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান, তবে স্বতন্ত্র

প্রার্থীর কাছে হেরে যান। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর রাতে নদভীকে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে ডিএমপির গোয়েন্দা ইউনিট (ডিবি)। এরপর থেকে তাকে ঢাকা-চট্টগ্রামের একাধিক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে দফায় দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সুবেল আহমেদ বলেন, নেজামুদ্দিন নদভী আইআইইউসি’র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি এবং আরও লোকজন মিলে ওই ট্রাস্ট থেকে সম্মানীর নামে প্রায় দশ কোটি টাকা আত্মসাতের একটি অভিযোগ আমরা অনুসন্ধান করছি। আদালতের অনুমতি নিয়ে আজ (বৃহস্পতিবার) তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অনুসন্ধান কার্যক্রম শেষে অভিযোগের সত্যতা পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, সাবেক সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি ওই পদ হারান। এরপর নদভী ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টের অধিভুক্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ‘আইআইইউসি টাওয়ার’ সম্মানীর নামে দশ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। দুদক সেই অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করেছে। গত জানুয়ারিতে দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে নদভীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
এরপর গত ১২ মার্চ অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা দুদকের সমন্বিত চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক সুবেল আহমেদ কারাবন্দী নদভীকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন করেন। রোববার শুনানি শেষে আদালত দুদকের আবেদন মঞ্জুর করেন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি একই দিন গণভোট করার সিদ্ধান্ত একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ- মুহাম্মদ শাহেদ

জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাবেক সহ-সভাপতি ও চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শাহেদ বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি একই দিন গণভোট করার সিদ্ধান্ত একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এদেশে আ’লীগের রাজনীতির কবর রচিত হয়েছিল ৫ আগস্ট। তারই ধারাবাহিকতায় হাসিনার ডাকে লকডাউন প্রত্যাখ্যান করেছে এদেশের আপামর জনসাধারণ। ফ্যাসিবাদের দোসর সন্ত্রাসী চাঁদাবাজদের ঠিকানা বিএনপি যুবদলে হবে না। কেউ যদি বিএনপি-যুবদলের নাম ভাঙিয়ে চাঁদা বাজি করে তাহলে সাথে সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিএনপি যুবদলের মহানগর নেতৃবৃন্দকে জানানোর অনুরোধ করেন।

তিনি গতকাল ১৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ৪২নং নাসিরাবাদ সাংগঠনিক ওয়ার্ড যুবদলের উদ্যোগে চট্টগ্রাম-১০ নির্বাচনী এলাকায় আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর পক্ষে নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধি ও কেন্দ্র ভিত্তিক স্থানীয় জনগণের সাথে উঠান বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন-বিএনপির রাজনীতি এদেশের মাটি ও মানুষের জন্য। সবার আগে বাংলাদেশ এটাই আমাদের রাজনৈতিক দর্শন। আগামী নির্বাচনে ধানের শীষ মনোনীত প্রার্থী সংসদীয় আসন (চট্টগ্রাম -১০), বীর চট্টলার কৃতি সন্তান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করতে যুবদল দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এই আসনটি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আসন ছিলো ১৯৯১ সালে। সুতরাং এটা আমাদের জন্য অন্য আসনের চেয়ে অধিক তাৎপর্য বহন করে। ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থ-লোভ- লালসা ত্যাগ করে নি:স্বার্থভাবে ধানের শীষের জন্য কাজ করতে হবে। প্রতিটি ঘরে ঘরে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বার্তা তথা ৩১ দফা পৌঁছে দিতে হবে। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব ইঞ্জি: জমির উদ্দিন নাহিদ, ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য সচিব ইব্রাহিম খলিল, নগর যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম রাসেল, সাবেক প্রচার সম্পাদক জিল্লুর রহমান জুয়েল, মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আসিফ চৌধুরী লিমন, ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রফিক, মুহাম্মদ কামাল, ইব্রাহিম খান। ৪২নং ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক মাসুদ আলমের সভাপতিত্বে উঠান বৈঠকে আরও বক্তব্য রাখেন মহানগর যুবদল নেতা ইলিয়াস হাসান মঞ্জু, শাবাব ইয়াজদানী, কলিম উল্লাহ, প্রফেসর সাঈদুল হক সিকদার, মুহাম্মদ আলী, নুরুল কবির পলাশ, মুহাম্মদ মাহবুব, আফতাব আহমেদ, শফিউল বাশার শামু, শাকিল চৌধুরী, মুহাম্মদ উল্লাহ চৌধুরী রিটু, মুহাম্মদ ইউসুফ, জহির, আমির হোসেন, বশর, ফিরোজ, ফারুক, নুরুল হক, খোকন মোল্লা, রশিদ, বাবুল, ইব্রাহিম, হালিম, আলম, শরীফ, পাঁচলাইশ থানা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মীর শাহরিয়ার, শুভ রায়, রুবেল, মিনহাজুল হক মিনার, ওয়াহিদুল আলম সুমিত, প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

 

সাঘাটায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের কঠোর অবস্থান।

 

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেছে। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল থেকেই উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে টহল জোরদার করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ১৩ নভেম্বর ‘লকডাউন’ পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ওই ঘোষণার প্রেক্ষিতে প্রশাসন আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। সকাল থেকেই উপজেলা সদর, গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা, সড়ক-মহাসড়ক ও জনবহুল এলাকায় পুলিশ ও সেনা টহল দল সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাও মাঠপর্যায়ে অবস্থান শক্ত করেছে।
সাঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনির হোসেন বলেন,

বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক রয়েছে। কোনোভাবেই নাশকতা বা সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ঘটতে দেওয়া হবে না। পুলিশ সার্বক্ষণিকভাবে মাঠে রয়েছে।”
অন্যদিকে, সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মীর মো. আল কামাহ তমাল বলেন,
জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের সকল বিভাগকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”

এদিকে, বৃহস্পতিবার বিকেলে বিএনপি ও জামায়াতের নেতৃত্বে পৃথকভাবে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। তবে এ পর্যন্ত কোনো সহিংসতা বা নাশকতার ঘটনা ঘটেনি বলে জানা গেছে।
সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যমতে, পুরো সাঘাটা উপজেলায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। তবে সম্ভাব্য যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ প্রশাসন সর্বোচ্চ প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ