আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

ইসলামের মর্মবাণী-সত্যবাণীর দিকে,কুরআনের আদর্শ কুরআনের শিক্ষার দিকে-হুজুর গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী (ক.) আমাদেরকে আহ্বান করেছেনঃ রাহবারে আলম হযরত সৈয়দ মোহাম্মদ হাসান মাইজভাণ্ডারী (মঃ)।

বলাই আচায্য বলাই

মহান ২২ চৈত্র গাউসুল আজম বিল বিরাসাত হযরত সৈয়দ গোলামুর রহমান মাইজভাণ্ডারী (কঃ)-র পবিত্র ৮৯তম বার্ষিক ওরশ শরীফ উপলক্ষে রাত ১০ টায় মাইজভাণ্ডার শরীফ গাউসিয়া হক মনজিল এর কেন্দ্রীয় মিলাদ কিয়াম শেষে সমগ্র সৃষ্টির কল্যাণ কামনায় অনুষ্ঠিত মুনাজাতে অংশগ্রহণ করে মহান আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করে তিনি একথা বলেন।

পবিত্র ওরশ শরীফের মাহাত্ম্য বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি তার মুনাজাতে বলেন, “আপনার মহান অলির জন্ম- মৃত্যু এবং পুনরুত্থান দিবসকে আপনি শান্তিপূর্ণ করে ঘোষণা করেছেন।
মওলা,এই শান্তি লাভের আশায়,বরকত লাভের আশায়, আপনার মহান-পূণ্যবান বান্দাগণের ফয়েজ-বরকত হাসিলের আশায় আপনার মহান বন্ধুগণের নজরে-করম লাভের আশায় আপনার বান্দারা দূর-দূরান্ত থেকে দরবারে পাকে হাজির হয়েছে।
এই হাজেরীর ভেতর দিয়ে,এই জিন্দেগীর যে সময়টুকু তারা কুরবানী করেছে,যে সম্পদ কুরবানী করেছে,যে শ্রম কুরবানী করেছে-মুনিবের দরবারে এই আসা-যাওয়ার মাধ্যমে-এর ভেতর দিয়ে তারা আপনার-আপনার পেয়ারা হাবিবের (সাঃ) সন্তুষ্টি কামনা করছে।সকলকে মনজিলে মকসুদে কবুল করুন।

আপনার বান্দারা এই মহান ২২শে চৈত্রকে সামনে রেখে যে সমস্ত পুণ্য কর্মের মাঝে নিজেদেরকে- আমলে-সোয়াহলের মাঝে নিজেদেরকে নিবেদিত রেখেছে এগুলোকে আমাদের জন্যে নাজাতের ওয়াছিলা বানিয়ে দিন।”

তিনি বলেন আউলিয়াকে কেরামগণ ও হুজুর গাউসুল আজম মাইজভাণ্ডারী(কঃ)’র অবদান বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, “আপনার আউলিয়ায়ে কেরামগণ-আপনার মহান প্রেরিত দ্বীনের দায়ী হিসেবে,সমস্ত মানবজাতিকে, আপনার দিকে-সত্যের দিকে ডেকেছেন মাওলা,আপনার পেয়ারা হাবিবের (সাঃ) দিকে ডেকেছেন মাওলা, কুরআনের সত্যের দিকে ডেকেছেন মাওলা। তারা দিনের দায়ী হিসেবে সর্বোত্তম প্রচেষ্টায় নিজেদেরকে দ্বীনের মুয়াজ্জিন হিসেবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন,দ্বীনের দিকে সবাইকে ডেকেছে।পবিত্র ইসলামের দিকে ডেকেছে। আপনার পেয়ারা হাবিব (সাঃ)-‘ব যে শিক্ষা-আদর্শ-বাণী, সে বাণীর-সে জামায়াতের, ইসলামের যে,ন্যায়ের যে কাফেলা,সে কাফেলায় মুকাব্বির হিসেবে এই আহ্বানকে তারা বুলন্দ করেছে,মাওলা।
তার চেষ্টায়-আহ্বানের চেষ্টায় মুয়াজ্জিন হিসেবে, বুলন্দ করার চেষ্টায় মুকাব্বির হিসেবে,তারা যুগে যুগে দেশে দেশে নিজেদেরকে উৎসর্গিত করেছে।

তার-ই ধারাবাহিকতায় আমরা হুজুর গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী (ক.)-কে পেয়েছি।ইসলামের মর্মবাণীর দিকে, ইসলামের সত্য বাণীর দিকে, কুরআনের আদর্শের দিকে, কুরআনের শিক্ষার দিকে- হুজুর গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী (ক.) আমাদেরকে আহ্বান করেছেন।

সে বাণীকে হুজুর গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী (ক.) বুলন্দ করার জন্যে নিজের সমস্ত জিন্দেগীকে উৎসর্গিত করেছেন।যার ফলে দিগ-বিদিক আলোকিত হয়েছে।
অসংখ্য ইনসানে কামেল দিকে দিকে, মাওলা,তাঁর মাধ্যমে-এই জমিন অসংখ্য ইনসানে কামেলকে আপনার পক্ষ হতে উপহার হিসেবে পেয়েছে।

ইসলামের যে মহান বাণী,যে মহান মর্মবাণী,সাম্য,ন্যায়-নীতি-দয়াগুণের-যে শিক্ষা,হুজুর গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী তা আদলে মোতলাকের মাধ্যমে, উসুলে সাবআ-র মাধ্যমে, আমাদেরকে শিক্ষা দান করেছেন-মাওলা।এই আদর্শ-সাম্যের আদর্শ,সমতার আদর্শ,ন্যায় নীতির আদর্শ, ন্যায়- নিষ্ঠতার আদর্শ,দয়ার আদর্শ, দয়াশীলতা-দয়া প্রদর্শনের আদর্শ।

ইসলামের এই মূলনীতির মাধ্যমে সমাজে ইসলাম কায়েমের জন্যে, প্রত্যেকের অধিকার কায়েমের জন্যে,যার যে অধিকার , প্রত্যেককে জাতি- ধম বর্ণ নির্বিশেষে নিজ নিজ অধিকার, নানান জাতিগোষ্ঠীর, সমাজের নানান অংশ, প্রত্যেকের নিজ নিজ অধিকার,যে অধিকার ইসলাম নিশ্চিত করেছেন, আপনার মহান গাউছুল আজম মানবের সেই অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যে আমাদেরকে মহান আদর্শ শিক্ষা দিয়েছেন,মাওলা।

সে আদর্শে অসংখ্য ইনসানে কামেল প্রস্তুত হয়েছে, মাওলা।
তারাও মানব এই জগতকে, এই অত্র অঞ্চলকে ,এই বিশ্ববাসীকে সেই মহান আলোর পথে সকলকে আহ্বান করেছেন,মাওলা।এই মহান নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করার মত যোগ্যতা আমাদের কাছে নেই।এই মহান দিনে আপনার বান্দারা সমবেত হয়ে, আপনার এই মহান নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করছে, মাওলা।

আমরা যাতে এই শিক্ষাকে,এই আদর্শকে, আমরা যাতে দিকে-দিকে পৌঁছে দিতে পারি,সে তওফিক আমাদেরকে দান করুন।বিশ্বঅলি শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভান্ডারী কিবলা কাবার গোলামেরা, এই বাণীকে দিকে দিকে পৌছে দেওয়ার জন্যে,এই শিক্ষাকে দিকে দিকে পৌছে দেওয়ার জন্যে জায়গায় জায়গায় যে সমস্ত খেদমতের আঞ্জাম দিচ্ছেন, সে সমস্ত খেদমতকে আপনি কবুল করুন।

সমাজকে ইসলামের সেই মর্মবাণীর উপরে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে,ইসলামী উম্মাহকে-যে উম্মাহ আজকে ইসলামের সে মর্মবাণী থেকে বিচ্যুত হয়ে দুর্দশা-গ্রস্থ অবস্থায় পতিত হয়েছে- হুজুর গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী-(ক.)-র সেই মহান আদর্শকে উম্মাহর মাঝে তুলে ধরার জন্যে যারা-গাউছুল আজম মাইজভাণ্ডারী (কঃ)র গোলামেরা, মাইজভান্ডারী গাউছিয়া হক কমিটির সদস্যরা দিকে দিকে- দেশে দেশে নানানভাবে যারা খেদমত করছেন,মাওলা,এই খেদমতকে কবুল করুন।

এই মানব জাতির অধিকার প্রতিষ্ঠায়, মানবজাতির শান্তি প্রতিষ্ঠায়, মজলুমের মুক্তির প্রত্যাশায় আপনার বান্দারা- হুজুর গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী (ক.)’র গোলামেরা,বিশ্বঅলি শাহানশাহ্ হক ভান্ডারী (ক.)’র গোলামেরা, মাইজভান্ডারী তরিকার খাদেমরা, মাইজভান্ডারী গাউছিয়া হক কমিটির সদস্যবৃন্দ-যারা দিন-রাত পরিশ্রম করে এই খেদমতের আঞ্জাম দিচ্ছেন,এই আদর্শকে প্রতিষ্ঠার জন্যে চেষ্টা করে চলেছেন, রাব্বুল আলামীন তাদের এই প্রচেষ্টাকে আপনি কামেয়াবী দান করুন। ”

তিনি সকলের গুনাহ-খাতা ভূল-ক্রুটি, সীমাবদ্ধতাকে ক্ষমা করার জন্য ফরিয়াদ জানিয়ে বলেন, “আজকের এই মহান বরকতময়, শান্তিময় এই দিনের উছিলায় আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের শান্তিময়,স্বচ্ছল একটি জিন্দেগী, নিরাপদ একটা জিন্দেগী আমরা কামনা করছি।

এই পবিত্র রাতের উছিলায়,এই মহান বরকতময় রাতের উছিলায় আমরা মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করছি। মুসলিম উম্মাহ যাতে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের মাধ্যম বিশ্ববাসীর কল্যাণ সাধনে সক্ষমতা অর্জন করে যে সক্ষমতা আমরা এখন হারিয়েছি,সে সক্ষমতা যেন অর্জন করতে পারে সে তওফিক দান করুন।

এই পবিত্র বরকতময় ২২শে চৈত্রের উছিলায় সমস্ত বিশ্ববাসীর উপর আপনি রহমত বর্ষিত করুণ বিশ্বের প্রতিটি মানবসন্তানের উপর রহমত বর্ষণ করুণ।”

তিনি ন্যায়-নীতির প্রতিষ্ঠার নামে আমরা দয়া গুণকে যেন বিসর্জন না দিই, ন্যায় নীতি প্রতিষ্ঠার নামে আমরা যাতে সাম্যকে বিসর্জন না দিই-সাম্য,ন্যায়,নীতি,দয়াগুণ এই সমস্ত গুনাবলীকে ভারসাম্যের মধ্যে রেখে ইসলামের এই মহান শিক্ষাকে সামনে রেখে আমরা যাতে দ্বীন ইসলামের মহত্ত্ব, মাহাত্ম্য,গুরুত্ব উপযুক্তভাবে তুলে ধরতে পারী সেই তওফিক প্রদান করার জন্য ফরিয়াদ করেন।

এবং এই চেষ্টার মধ্যে গাউছুল আজম মাইজভান্ডারীর গোলামেরা যে মেহনত করছেন,খেদমত করছেন,এই খেদমতকে কামেয়াবী দান করার জন্য-এই খেদমত,এগিযে নিয়ে যাওয়ার জন্যে যে শিক্ষা – দীক্ষা প্রয়োজন,যে দক্ষতার প্রয়োজন,যে চিন্তাশীলতার প্রয়োজন,যে সৃজনশীলতার প্রয়োজন,সে সমস্ত কিছু যাতে অর্জন করতে পারে সে তওফিক দান করার জন্য ফরিয়াদ করেন।

তিনি সকলের সচ্ছল,কর্মময়, কর্জমুক্ত জিন্দেগীর জন্য ফরিয়াদ করেন। তিনি জালিমের জুলুম থেকে হেফাজত করার জন্য এবং আমাদের দ্বারা যাতে কোনো জুলুম সংগঠিত না হয়,সে অবস্থা সকলকে হেফাজত করার জন্য ফরিয়াদ করেন।

তিনি মাইজভান্ডারী গাউছিয়া হক কমিটির সদস্যরা যে খেদমতের মধ্যে আছেন, আরও বৃহৎ ভাবে ব্যাপকভাবে সে খেদমত করার জন্যে সকলকে জালে মালে তওফিক দান করার জন্য ফরিয়াদ করেন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

পদক্ষেপ বাংলাদেশ এর বিজয় মাসের প্রথম প্রভাত ।

পদক্ষেপ বাংলাদেশ-এর আয়োজন, কর্মসূচী ব্যতিক্রম ও বৈচিত্র্যময়। তারই ধারাবাহিকতায় ঢাকার পরিবাগস্থ সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রের উন্মুক্ত মঞ্চে জাতীয় সংগঠন ও শিল্পীদের অংশগ্রহণে ‘বিজয় মাসের প্রথম প্রভাত’ শীর্ষক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ১ ডিসেম্বর ২০২৫, সোমবার সকাল ৭টায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সাংস্কৃতিক পর্ব—দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে : শিল্পবৃত্ত, পদক্ষেপ বাংলাদেশ। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে : কথা আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র, শিল্পবৃত্ত, ঢাকা স্বরকল্পন, মুক্তধারা সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র। একক আবৃত্তি করেন : মীর বরকত, নায়লা তারান্নুম চৌধুরী কাকলি। কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ করেন : গোবিন্দলাল সরকার, মো: তাজুল ইসলাম, খাইরুল আলম।

উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ। সম্মানিত অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন আবৃত্তিশিল্পী মীর বরকত, জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জেবুন্নেসা জেবা, উদয়ন স্কুল এন্ড কলেজ শিক্ষক সবিতা সাহা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পদক্ষেপ বাংলাদেশ-এর সভাপতি বাদল চৌধুরী। স্বাগব বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল্লাহ সাঈদ। ঘোষণাপত্র পাঠ করেন সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী মতিয়ারা মুক্তা।

ঘোষণাপত্রে বলা হয়- বহু ত্যাগ, সংগ্রাম আর প্রত্যাশার ফসল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। এ শুধু পতাকা আর জাতীয় সঙ্গীত বদল নয়, খোল-নলচে সব পাল্টে নতুন এক আদর্শকে রাষ্ট্র ও সমাজ জীবনে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্নের নবযাত্রা। এই স্বপ্নের প্রধান এবং একমাত্র উপজীব্য মানুষ। মানুষের কল্যাণ, মানুষের মুক্তি, মানুষের মর্যাদা এবং মানুষের স্বাধীন ভূমিই শেষ কথা। কত মাতা, কত ভগ্নি, কত জানা-অজানা নারী তাঁর সম্ভ্রম হারিয়েছে শুধু এই মানুষকে মানুষের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। মানুষ কল্পনাবিলাসী কিন্তু নিজেতো সে কাল্পনিক নয়Ñএ ভূমিতেই তার সৃষ্টি, বেড়ে ওঠা, ভালো-মন্দের স্বাদ নেয়া, অতঃপর ভূমিতেই মিলিয়ে যাওয়া। এ ভূমির প্রতি তার প্রচ- ভালোবাসা।

মাতৃক্রোড়ে যেমনিভাবে শিশু বেড়ে ওঠে; একইভাবে কাদা-মাটি গায়ে মেখে আলো-বাতাসে অবগাহন করে এই ভূমিকেই মাতৃক্রোড় ভেবে একদিন চিরবিদায় নেয় প্রতিটি মানবশিশু। জন্ম আর মৃত্যুতে যে ভূমিকে কখনো আলাদা করা যায় নাÑতারই অমার্যাদা করবে ভিনদেশী তস্কর! তা কি করে মেনে নেয় ধুলো-বালি গায়ে মেখে বেড়ে ওঠা এ জনপদের মানুষেরা। এ ভূমিরই সাহসী-ত্যাগী- পোড়খাওয়া এক নামÑশেখ মুজিব। মাটি আর মানুষের সাথে ছিলো যাঁর আজন্ম সখ্য, ভিনদেশী হায়েনার হিংস্র থাবায় বারবার ক্ষতবিক্ষত হয়েছে তাঁর হৃদপি-; তবুও ভূমি আর মানুষের স্বাধীনতায় অবিচল থেকেছেন তিনি।

তাঁরই অঙ্গুলী হেলনে সাড়ে সাত কোটি মানুষ পরিণত হয়েছে এক একজন নেতাজী সুভাষ বসু, ক্ষুদিরাম, সূর্যসেন, প্রীতিলতা, তিতুমীর, বাঘাযতিন, লক্ষ্মীবাই, ভগৎসিং, রফিক, শফিক, সালাম, জব্বার, সালাউদ্দিন, বরকত, আসাদ, মনুমিয়া’য়। এ গাঙ্গেয় বদ্বীপের তেরোশত নদীর জোয়ার আর পাখিদের কলতানে উচ্চারিত হয়েছে ভিনদেশী হায়েনার বিনাশ- ধ্বনি। লাঙলের ফলা থেকে তৈরি উর্বর মাটির প্রতিটি চাকা পরিণত হয়েছে শত্রুবিনাশী আনবিক বোমায়। বাঁশঝাড় উজাড় করে তৈরি হয়েছে চকচকে বেয়নেট।

নিঃশঙ্ক চিত্তে নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার অগ্নিপুরুষ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সঞ্চারিত হয়েছে সাড়ে সাত কোটি মানুষের প্রতিটি রক্ত কণিকায়Ñবিজয় অর্জিত হয়েছে মানুষের সংগ্রাম আর আত্মদানের। বিজয় মাসের সূচনালগ্নে আমরা নতুন করে উদ্দীপ্ত হতে চাইÑমাটি আর মানুষের কল্যাণ কামনায়। আমরা বিনাশ চাই সেই নরপশুদের যারা মাটির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে ভিনদেশী হায়েনাদের সঙ্গী হয়েছিলো মনুষত্বের বিনাশ সাধনে। সেই সাথে চাই আজকের এই দিনটিকে ‘মুক্তিযোদ্ধা দিবস’-এর সরকারি স্বীকৃতি। মাটি আর মানুষের জয় হোক, জয় হোক শুভ চিন্তা আর আদর্শের।

ঠাকুরগাঁওয়ে মির্জা পরিবারের দানে গড়ে উঠছে এতিম শিশু ও নারীর ক্ষমতায়ন কেন্দ্র 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পরিবারের দান করা জমিতে এতিম শিশুদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতে ও নারীর স্কিল ডেভলপমেন্টের জন্য গড়ে উঠছে মির্জা রুহুল আমিন এন্ড ফাতেমা মেমোরিয়াল কমপ্লেক্স। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের আদর্শ কলোনিতে কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ চলছে। 

 আর কমপ্লেক্সটি বাসমাহ ফাউন্ডেশনের তত্বাবধানে শত শত এতিম শিশুদের মৌলিক অধিকার পাওয়ার ঠিকানা হিসেবে পরিণত হবে। যেখানে এতিম শিশুরা খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা সহ গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক অধিকারগুলো বিনামূল্যে নিশ্চিৎ হবে। নারীদের স্কিল ডেভলপমেন্টে কাজ করবে। 

গত এক বছর যাবৎ এ কমপ্লেক্সটির কাজ শুরু হয়ে এখন পর্যন্ত চার ভাগের তিন ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ইতিমধ্যে শতাধিক এতিম শিশুকে নিয়ে কমপ্লেক্সটিতে প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এসব তথ্য নিশ্চিৎ করেছেন  কমপ্লেক্সে দায়িত্বে থাকা  বাসমাহ অরফানস হোম এর এডুকেশন ইনচার্জ আহম্মেদ আমিন।

তিনি আরও জানান, এই কমপ্লেক্সে বাসমাহ অরফানস হোম, বাসমাহ স্কুল এন্ড কালচারাল সেন্টার এবং বাসমাহ ওমেন্স এন্ড স্কিল ডেভলপমেন্ট সেন্টার হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করবে। বৃহস্পতিবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ। এক কক্ষে চলছিলো একটি দোয়ার আয়োজন। জানা যায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা ও দেশের মঙ্গল কামনায় মির্জা পরিবারের উদ্যোগে এতিম শিশুদের নিয়ে এ দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। 

ঠাকুরগাঁওয়ে এতিম শিশুদের মৌলিক অধিকার  ও নারীদের ডেভলপমেন্টের জন্য এমন একটি উদ্যোগকে বাস্তবায়নের পেছনের ব্যপারে জানতে চাইলে অরফান হোম এর এডুকেশন ইনচার্জ বলেন, আমাদের বাসমাহ ঠাকুরগাঁও সহ সারা দেশে পাঁচটি শাখা আছে। নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁর একটি শাখাতে মির্জা ফখরুল ইসলামের পরিবারের সদস্যগণ পরিদর্শন করেন।  আমাদের কার্যক্রেম তাদের ভালো লাগে এবং এতিম শিশুদের জন্য এমন উদ্যোগ ঠাকুরগাঁওয়ে বাস্তবায়নের জন্য তারা উৎসাহ প্রকাশ করেন এবং ৭৫ শতক জমি এতিমদের জন্য দান করেন৷ এই কর্মকর্তা বলেন বাসমাহ’র  সমস্ত পক্রিয়া মেনেই এটি গড়ে উঠছে।

বাসমাহর সিইও মীর সাখাওয়াত হোসাইন এর বরাতে প্রতিষ্ঠানটির এডুকেশন ইনচার্জ আরও বলেন  বাসমাহ ফাউন্ডেশনের তত্ত্ববধানে সারা দেশ জুড়ে সেবামূলক কার্যক্রম চলমান রয়েছে ।বাসমাহ স্কুল এন্ড কালচারাল সেন্টার,বাসমাহ ওরফান্স হোম,বাসমাহ উইমমেন্স স্কিল এন্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার।এ ছাড়াও শীতকালীন শীত বস্ত্র বিতরণ,কুরবানি প্রোগ্রাম,ইফতার প্রোগ্রাম পরিচালিত হয়।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ