
বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ বরণে নগরের ডিসি হিল ও সিআরবির শিরীষতলায় চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। সম্মিলিত পয়লা বৈশাখ উদ্যাপন পরিষদ এবং নববর্ষ উদযাপন পরিষদ দুই সংগঠনই পেয়েছে জেলা প্রশাসনের আনুষ্ঠানিক অনুমতি। তাই পহেলা বৈশাখ ঘিরে চট্টগ্রামজুড়ে বইছে উৎসবের আমেজ। প্রতিবছরের মতো এবারও ডিসি হিলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে সম্মিলিত পয়লা বৈশাখ উদ্যাপন পরিষদ। বর্ষবরণের এই আয়োজনে অংশ নেবে ৫০টির বেশি সাংস্কৃতিক সংগঠন। অনুষ্ঠান শুরু হবে ১৪ এপ্রিল সকাল সাড়ে ছয়টা থেকে এবং চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
লোকজ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, নৃত্য, সংগীত, আবৃত্তি ও নাট্য পরিবেশনার মাধ্যমে বাঙালির প্রাণের উৎসবকে কেন্দ্র করে দিনটি উদযাপিত হবে। আয়োজকেরা জানিয়েছেন, এটি এ বছর ৪৭ বছরে পদার্পণ করল। পূর্বে দুই দিনব্যাপী বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ উদ্যাপন হলেও, করোনা-পরবর্তী বাস্তবতায় তা এখন একদিনেই সীমাবদ্ধ রাখা হচ্ছে।

জানা গেছে, প্রতিবছরের মতো এবারও ডিসি হিলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজনের জন্য গত ১৩ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করে আয়োজক সংগঠনটি। ১০ এপ্রিল জেলা প্রশাসনের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়। যেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সকাল থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠান চলবে।
এদিকে, সিআরবি শিরীষতলায় নববর্ষ উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হবে বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। ১৩ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত চলবে বর্ষবিদায়ের আয়োজন। পহেলা বৈশাখ অর্থাৎ ১৪ এপ্রিল সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বর্ষবরণের অনুষ্ঠান চলবে ঐতিহ্যবাহী এই শিরীষতলায়।
অন্যদিকে, নববর্ষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নগর পুলিশের উদ্যোগে গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ডিসি হিল, সিআরবি এবং শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠেয় বর্ষবরণ আয়োজকদের সঙ্গে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষা বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

বর্ষবরণ পরিষদের এক সদস্য বলেন, আমরা সংস্কৃতির মানুষ। বৈশাখ আমাদের প্রাণের উৎসব। প্রশাসনের সহযোগিতায় সীমিত সময়ের মাঝেও আমরা এই আয়োজন প্রাণবন্ত করে তুলতে চাই।
এদিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ঘিরে চলছে উৎসবের প্রস্তুতি।ঈদের ছুটি শেষে বিরামহীনভাবে চলছে প্রতিকৃতি ও মুখোশ তৈরির মহাযজ্ঞ। কাঠ, কাগজ, রঙ, ক্যানভাস আর হাসিমাখা মুখে তরুণ শিল্পীরা তৈরি করছেন বাঘ, পাখি, মাছসহ নানা লোকজ প্রতীক। মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। চলছে শেষ মুহূর্তের আচঁড়।
প্রতিবারের মতো এবারেও সকাল নয়টার দিকে চারুকলা ইনস্টিটিউটের সামনে থেকে বের হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। চট্টেশ্বরী মোড়-আলমাস মোড়-কাজীর দেউড়ি মোড়-এস এস খালেদ রোড-প্রেস ক্লাব ইউটার্ন-সার্সন রোড হয়ে পুনরায় চারুকলা ইনস্টিটিউটে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। আর সন্ধ্যায় চারুকলার মুক্তমঞ্চে থাকবে সাংস্কৃতিক আয়োজন। সেখানে স্থানীয় শিল্পীদেও অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।